পরীক্ষার রেজাল্ট
আজ দীপুদের স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে। অন্যান্য বছরের মতো এই বছরও সাধারন পাশ-ফেইল করা ছাত্রদের ফলাফল নিজ ক্লাস রুমে ক্লাশ টিচারদের মাধ্যমেই দেয়া হবে। শুধুমাত্র যারা খুব ভালোভাবে পাশ কিংবা ফেইল করেছে তাদের রেজাল্ট হেড স্যার শ্রেনী শিক্ষকদেরকে সাথে নিয়ে ওনার অফিস থেকে ঘোষনা করবেন। যথারীতি সাধারন ছাত্রদের ফলাফল ঘোষনা করার পর যারা বিশেষভাবে পাশ-ফেইল করেছে তাদের তালিকা ধরে হেড স্যারের অফিসে যাবার জন্য বলে দেয়া হলো। সেই দলে দীপুও ছিলো। দীপুর রেজাল্ট দিতে গিয়ে স্যার বললেন,
স্যারঃ এতো করে তোকে ইংরেজী শিখালাম, আর তুই কিনা ইংরেজীতে ফেইল করলি ?
দীপু মাথা চুলকে নিচের তাকিয়ে জবাব দিলো,
দীপুঃ ইংরেজীতে পাস করার জন্য কি আমরা ৫২তে ভাষা আন্দোলন করেছিলাম ? ৫২'র প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই আমি ইংরেজীতে ফেইল করেছি, স্যার !
স্যারঃ ও, তাই নাকি ! ভাষা আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা ! আচ্ছা, তা না হয় মানলাম। তবে অঙ্কে ফেইল করলি ক্যান ? ওখানে কোন আন্দোলন ছিলো ? দশে আর দশে যোগ করলে কি হয়, হতভাগা ? আর শূন্যটা নামাসনি ক্যান ? ওটা বাদ দিলে কোন আন্দোলনের অজুহাতে ?
দীপুঃ স্যার, আপনিই তো বলেছেন শূন্যের কোনো দাম নেই। যে জিনিষের দাম নেই সেটি শুধু শুধু লিখে লাভ কি ? সেজন্যই আমি শূন্যটা বাদ দিয়ে দিয়েছি...
স্যারঃ ইতিহাসেও তো ফেইল করলি। ওটাতে তো কিছু লিখিসইনি। তা ইতিহাসের পাতায় কিছু না লেখার কারনটা কি ? ওখানেও কি কোনো শূন্য ছিলো নাকি ?
দীপুঃ কি করে লিখবো, স্যার ? সব ৫০০ বছর আগের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। তখন কি আমার জন্ম হয়েছিলো ? এমনকি আমার বাবারও জন্মের বহু বছর আগেকার সব ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। বাপের আমলের হলেও না হয় বাবার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে লিখতাম... সেজন্য স্যার একেবারে না লিখেই ছেড়ে দিয়েছি !