What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

    ১৬ দেশকে নিয়ে ১৯৩৪ সালে ফ্যাসিবাদের ছায়ায় যেভাবে বিশ্বকাপ হয়েছিল? (1 Viewer)

    Littlegraveyard

    Littlegraveyard

    New Member
    Joined
    Dec 15, 2018
    Threads
    3
    Messages
    5
    Credits
    678
    ইতালিকে টুর্নামেন্টটির ভেন্যু হিসেবে নির্বাচিত করতে ফিফার ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন মুসোলিনি। আজ্জুরিদের (ইতালির জাতীয় ফুটবল দলের উপনাম) চ্যাম্পিয়ন করতে অবলম্বন করেছিলেন নানা বিতর্কিত ও কুখ্যাত পন্থার। প্রতিটি ম্যাচের রেফারি নির্বাচন করতেন নিজে। অভিযোগ আছে, স্বাগতিকদের নানা সুবিধা প্রদানের জন্য প্ররোচিত করা হতো তাদের।
    ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপে ইতালির টিম। ছবি: এএফপি

    183214-gpldxygfmh-1669107891_0.jpg


    ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবকিছুই যে আনন্দের, এমনটা নয়। এতে বেদনাদায়ক ঘটনার স্থান যেমন আছে, তেমনি এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। এই যেমন- ১৯৩৪ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ। একনায়ক বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদ প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবে পরিচিত হয়ে যায় সে বছরের টুর্নামেন্টটি। চিরকাল বিতর্কিত সেবারের বিশ্বকাপের মঞ্চে ফ্যাসিবাদের ছায়ায় খেলতে হয়েছিল ১৬টি দেশকে। তথ্যসূত্র স্ক্রলইন।
    ১৯৩০ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই আসর। চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ঘরে তোলে স্বাগতিক দেশ উরুগুয়ে। এরপরের টুর্নামেন্ট অর্থাৎ বিশ্বকাপ ১৯৩৪ অনুষ্ঠিত হয় বেশ 'নাটকীয়তা'র সাথে।
    অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই এই আসর নিয়ে শুরু হয় নানা বিতর্ক। তৎকালীন রাজনৈতিক এবং সামাজিক আবহাওয়াকে এড়াতে পারেনি ১৯৩৪ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত এ বিশ্বকাপ। খেলার উন্মাদনার চেয়ে বেশি ছিল রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার গভীরতা। এমনকি স্বৈরশাসক ও ফ্যাসিবাদী নেতা বেনিতো মুসোলিনির নানা হস্তক্ষেপের কারণে অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয় ফুটবল বিশ্বকাপের গৌরব।
    প্রথম বিশ্বকাপ গণবয়কট করেছিল ইউরোপীয়রা। এই ক্ষোভে ১৯৩৪ সালের আসরে অংশ নেয়নি প্রথম চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। এখনো পর্যন্ত এ দেশটিই একমাত্র দল, যারা আগের আসরে জেতার পরও শিরোপা জয় অক্ষুণ্ণ রাখার লড়াইয়ে অংশ নেয়নি। তবে তাদের না খেলার পেছনে লাতিন আমেরিকার মন্দা অর্থনীতির ভূমিকাও কম ছিল না। এছাড়াও মুসোলিনির একনায়কতন্ত্রের বিরোধিতাও ছিল একটি কারণ।
    ইতালিকে টুর্নামেন্টটির ভেন্যু হিসেবে নির্বাচিত করতে ফিফার ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন মুসোলিনি। আজ্জুরিদের (ইতালির জাতীয় ফুটবল দলের উপনাম) চ্যাম্পিয়ন করতে অবলম্বন করেছিলেন নানা বিতর্কিত ও কুখ্যাত পন্থার। প্রতিটি ম্যাচের রেফারি নির্বাচন করতেন নিজে। অভিযোগ আছে, স্বাগতিকদের নানা সুবিধা প্রদানের জন্য প্ররোচিত করা হতো তাদের।

    এই আসর দিয়েই বাছাইপর্বের সূচনা হয় ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে। বাছাইপর্বে ৩২টি দলের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল মোট ১৬টি দল। এ টুর্নামেন্টের ধরন ছিল অনেকটা ফ্যাসিবাদী দর্শনের মতোই। প্রথম পর্বেই ছেঁটে ফেলা হয়েছিল 'দুর্বল' দলগুলোকে। প্রথম রাউন্ডটিই ছিল 'ছাঁটাই পর্ব' অর্থাৎ নকআউট পর্ব, যেখানে আটটি ম্যাচে বাদ পড়েছিল আটটি দল। এবং সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল একই দিনে, ২৭ মার্চে।
    এ বিশ্বকাপকে জাতীয়তাবাদ প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন এই একনায়ক। তার নির্দেশে স্থানীয় ফুটবলারদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদানসহ বাধ্য করা হয়েছিল জাতীয় ফ্যাসিস্ট পার্টিতে যোগদান করতে।
    ইতালিসহ অন্যান্য দলগুলোরও রাজনৈতিক চাপে পড়তে হয়েছিল। ফুটবল ইতিহাস নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন বইয়ে উল্লেখ আছে যে ম্যাচের আগে নিজেদের জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় জার্মান এবং ইতালীয় দল রোমান স্যালুট প্রদর্শন করেছিল।
    প্রকৃতপক্ষে সব দলকেই এই অভিবাদন জানাতে হয়েছিল যা ফ্যাসিবাদী স্যালুট বা নাৎসি স্যালুট বলেও পরিচিত। ডান হাত অনেকটা উঁচুতে সম্পূর্ণ সামনে এগিয়ে, পাঁচ আঙুলকে পরস্পরের স্পর্শে রেখে করতল সামান্য নোয়ানোর এই অভিবাদন ছিল হিটলার এবং মুসোলিনি- এই দুই স্বৈরশাসকের স্বতন্ত্র অঙ্গভঙ্গি।
    এই স্যালুট প্রদর্শন বহু পত্রপত্রিকার মনোযোগের আকর্ষণে পরিণত হয়েছিল। যেমন, সেবছরের মে মাসের ২৭ তারিখে আর্জেন্টাইন এবং সুইডিশ খেলোয়াড়েরা একে অপরকে এই স্যালুটের মাধ্যমে অভিবাদন জানিয়েছিলেন। এ ঘটনাকে আর্জেন্টাইন সংবাদপত্র লা নেসিওন বর্ণনা করেছিল ঠিক এভাবে, 'আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা ইতালির নেপলস বন্দরে অবতরণের পর (বিশ্বকাপ খেলতে আগত) সরকারপ্রধান বেনিতো মুসোলিনিকে অভিবাদন জানিয়ে একটি টেলিগ্রাম প্রেরণ করেছে।'
    একই প্রতিবেদনে বলা হয়, 'একই দিনে মুসোলিনির পিতামাতার কবরে পুষ্প অর্পণ করতে ফুটবলার এবং নেতারা ফোরলি শহরে গিয়েছেন।'
    ইউরোপে যে স্বৈরাচারী হাওয়া বইছিল এ দুটি ঘটনা তারই প্রমাণ।
    মোটকথা- বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে মুসোলিনি বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছিলেন ফ্যাসিবাদই ভবিষ্যৎ। নিজেদের মহিমা কিংবা 'ফ্যাসিবাদের মাহাত্ম্য' বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মুসোলিনি তথা 'এল দুচে'। চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ট্রফি হিসেবে কেবল জুলে রিমে নয়, আরও দেওয়া হয়েছিল কোপা ডেল দুচ নামক অতিরিক্ত ট্রফি। ব্রোঞ্জে মোড়ানো এবং মূল ট্রফি জুলে রিমের তুলনায় ছয়গুণ বড় এই ট্রফি বহন করেছিল ফ্যাসিবাদের বার্তা।
     
    • Informative
    Reactions: BRICK

    Users who are viewing this thread

  • Top