What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কোভিডের মধ্যেও কীভাবে স্কুল করব (1 Viewer)

2vzXlam.jpg


আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কোভিড। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ, ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের রেকর্ড। এর মধ্যে আবার অমিক্রন ধরনটি অতিসংক্রমণশীল হওয়ায় অনেক জায়গায় ডেলটাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।

সংক্রমণ কমে আসায় ইতিমধ্যেই শিশুদের লেখাপড়ায় গতি ফিরিয়ে আনতে স্কুল খোলা হয়েছে। স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্ম, পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যেই নতুন শ্রেণির এ কোভিডের আবির্ভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অমিক্রন ধরনে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ও জটিলতা নেহাত কম নয়, বরং বেশি। বিভিন্ন দেশে কম বয়সী শিশু–কিশোররা অমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকদের মনে শঙ্কা ও অস্থিরতা। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে লেখাপড়া অব্যাহত রাখাও জরুরি। এ অবস্থায় কোভিডের মধ্যেই লেখাপড়া চালিয়ে যেতে শিশুদের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি মানায় সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট ও সতর্ক হলে হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা সম্ভব হবে।

অভিভাবকদের দায়িত্ব

  • সারাক্ষণ শিশুকে মাস্ক পরানোর কাজটা সোজা নয়। তাদের চঞ্চল মানসিকতা ও চলাফেরায় মাস্ক একটা বাধা, অস্বস্তি। আর দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকা তার জন্য কষ্টকরও। তাই শুধু পরিয়ে দিলেই হবে না, যদি এর গুরুত্ব তার সঙ্গে আলোচনা না করা হয় বা মাস্কভীতি দূর না করা যায়, তাহলে শিশু মুখে-নাকে মাস্ক রাখবে না। সুতরাং প্রতিদিন শিশুদের মাস্ক সম্পর্কে বলুন। কীভাবে মাস্ক সঠিকভাবে পরতে হবে, না পরলে কী কী বিপত্তি হতে পারে, কীভাবে মাস্ক খুলতে ও পরতে হয়, তা তাদের শেখাতে হবে। একবার ব্যবহৃত ময়লা মাস্ক আবার পরা যাবে না, এটাও শেখাতে হবে।
  • স্কুলের সামনে জনসমাগম কিন্তু কমছে না। যত বেশি জনসমাগম, তত বেশি সংক্রমণ। ভিড় বা জনসমাগম এড়িয়ে স্কুলে নিরাপদ দূরত্ব মেনে অবস্থান ও চলাফেরা করা সত্যিই মুশকিল। এ ছাড়া গণপরিবহনে আসা–যাওয়ার সময়ও স্বাস্থ্যবিধি মানা গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবকেরা চেষ্টা করবেন স্কুলের গেটের সামনে জটলা না করতে। শিশুকে আনা–নেওয়ার সময় যত কম সময় সম্ভব স্কুলে অবস্থান করুন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়া বা আলোচনা করার সুযোগ নেই। আর অভিভাবকেরাও সব সময় মাস্ক পরে থাকবেন।
  • হাঁচি–কাশি দেওয়ার আদবকেতা বারবার শিশুকে বলুন। সঙ্গে হাত ধোয়ার বিষয়টিও। বিশেষ করে সবার স্পর্শ লাগে, এমন কোনো কিছু স্পর্শ করলেই হাত ধুতে হবে। যেমন ফ্যান বা লাইটের সুইচ, দরজার হাতল ইত্যাদি। এগুলো নিয়মিত অভ্যাসের ব্যাপার, এক দিনে হবে না।
  • স্কুলব্যাগে টিস্যু পেপার বা পরিষ্কার রুমাল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বাড়তি মাস্ক দেবেন। টিফিন বক্স বা পানির বোতল অন্যের সঙ্গে আর শেয়ার করা যাবে না, এমনকি কলম, পেনসিল, রংপেনসিল কিছুই নয়।
  • টিফিনে এমন খাবার দিন, যা খুব একটা হাতের স্পর্শ না লাগিয়েই চামচে করে খেয়ে ফেলা যায়।
  • স্কুল থেকে ফেরার পর জামাকাপড়, ব্যাগ, টিফিন বক্স—সব ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। শিশুকে ভালোভাবে গোসল করাতে হবে। স্কুলের জুতা ঘরে ঢোকানো যাবে না।

স্কুলের দায়িত্ব

  • অমিক্রনের মধ্যেই শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নতুন করে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। ক্লাসরুমের আসনবিন্যাস, ভিড় এড়াতে দুই শিফটে স্কুল চালানো, সপ্তাহে একেক দিন একেক শ্রেণির ক্লাস, অনলাইন ও সশরীর—দুভাবে মিশ্র পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।
  • স্কুলে সাবান-পানির ব্যবস্থা থাকলেই হবে না, আসা–যাওয়ার আগে শিশুরা নিয়মিত হাত ধোয় কি না, সেদিকে দেখভাল করতে হবে।
  • কীভাবে অ্যাসেম্বলি বা স্কুল শুরুর সমাবেশে দূরে দূরে দাঁড়াবে, কীভাবে ক্লাসে দূরে দূরে বসবে, টিফিন খাবার সময় কীভাবে বসতে হবে—এগুলো শিক্ষকেরা স্কুলে উপদেশ দেবেন। বাড়ি থেকেও জানানো দরকার।
  • স্কুলে স্বাস্থ্যবিধিগুলো নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করলে এগুলো মেনে চলার গুরুত্ব বাড়বে।
  • স্কুলের কর্মকর্তা–কর্মচারী সবাইকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
  • স্কুল শুরু বা ছুটির সময় গেটে অযথা ভিড়–বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • কোনো শিশুর জ্বর বা সর্দি–কাশি হলে যেন স্কুলে না আসে আর তার অনুপস্থিতি বিবেচনায় আনা হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আক্রান্ত শিশুকে দ্রুত আলাদা করে ফেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

টিকা গুরুত্বপূর্ণ

এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ বছরের বড় শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বেশিসংখ্যক শিশুকে এর আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তবে টিকাকেন্দ্রেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না, সেদিকে লক্ষ রাখা দরকার।

লেখক: অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা | বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top