What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বন্যার জমে থাকা পানিতে ত্বকের সমস্যা (1 Viewer)

Welcome! You have been invited by killer420 to join our community. Please click here to register.
1p3rq2h.jpg


বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি নামেনি। বানের পানি পেরিয়েই শিশুরা অনেক জায়গায় স্কুলে যেতে শুরু করেছে। বড়দের কাজ করতে হচ্ছে পানি সামলে। এই নোংরা পানির সংস্পর্শে দেখা দিচ্ছে নানা রোগবালাই। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ফাঙ্গাস বা ছত্রাকজনিত নানা সংক্রমণ। আমাদের শরীরের ত্বকে অবস্থান করে, এমন স্বাভাবিক অধিবাসী কিছু জীবাণু হঠাৎ করেই দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সৃষ্টি করে নানা ত্বকের রোগ।

দাদ

মূলত শরীরের ভাঁজগুলোতে ছত্রাক জন্মায়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে টিনিয়া করপোরিস আর সাধারণ মানুষ দাদ বা 'দাউদ' বলে থাকেন। প্রচণ্ড রকম চুলকানির পাশাপাশি কখনো কখনো এই সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করে। গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার এবং বুকে ও পিঠে এটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত ছোট গোল ক্ষত আকারে সৃষ্টি হয়ে বাড়তে বাড়তে এটি মানচিত্রের রূপ নেয়। কখনো এর ওপর নানা রকম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে এটিতে পুঁজ হতে পারে।

ছত্রাক সংক্রমণ শরীর ছাড়াও মুখে, ঠোঁটে এমনকি মাথার ত্বকেও হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এরা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। মাথার ত্বকে হলে এটাকে বলে টিনিয়া ক্যাপিটিস, কুঁচকিতে হলে টিনিয়া ক্রুরিস, হাত–পায়ে এর নাম টিনিয়া ম্যানাম ও টিনিয়া পেডিস।

সেবোরিক ডারমাটাইটিস

পানির সংস্পর্শে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখমণ্ডল, নাকের দুই পাশ, বুকের ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার মতো দেখা দেয়, যা অনেকটাই তৈলাক্ত ও হলুদাভ। প্রচণ্ড চুলকানির সঙ্গে মাথার চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালা ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়; যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে। ইস্ট নামের একধরনের ছত্রাক, যা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তার কারণেই এটি হয়। ফলাফল—খুশকি, চুলকানি, জ্বলুনি, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি যা কেড়ে নেয় শরীরের সব স্বস্তি।

KMFzEYm.jpg


বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি নামেনি

খোসপাঁচড়া

সারকোপটিস স্ক্যাবি নামের একধরনের পরজীবী শরীরের বিভিন্ন স্থানে দানা দানা গর্ত সৃষ্টি করে, যার চুলকানির তীব্রতা রীতিমতো ভয়ংকর। চুলকানির তীব্রতা রাতে মারাত্মক হয়। এটি এত বেশি ছোঁয়াচে যে একজনের হলে পুরো পরিবার আক্রান্ত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সময়মতো না হলে পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি করে। এটি কারও শনাক্ত হলে পরিবারের সবাইকে (আক্রান্ত না হলেও) একই সঙ্গে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ব্রণ

মূলত বয়ঃসন্ধিতে হলেও বর্ষাকালে আর আর্দ্র পরিবেশে এটা বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যেও দেখা দেয়। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, মুখমণ্ডল নিয়মিত পরিষ্কার করেন না, দীর্ঘ সময় ধরে প্রসাধনী ব্যবহার করেন বা চর্মরোগের ভুল ওষুধ খেয়ে গেছেন, তাঁদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি। মুখমণ্ডল ছাড়াও এটি বুক ও পিঠের মাঝখানে, গলায়, দুই বাহুতে দেখা দেয়। ত্বকের নিয়মিত অধিবাসী একধরনের জীবাণু প্রপিনো ব্যাকটেরিয়াম একনি আর্দ্র আবহাওয়ায় অনুকূল পরিবেশ পেয়ে দ্রুতই বংশবৃদ্ধি করে প্রদাহ করে, যা লোমকূপ আক্রান্ত করে দানা বা ক্ষত তৈরি করে। এটাই আসলে ব্রণের আকারে দেখা যায়।

খুশকি

সাধারণে প্রচলিত একটি ধারণা যে খুশকি শীতকালে হয়। খুশকির জন্য দায়ী আসলে একধরনের পরজীবী ছত্রাক। এটা বর্ষাকালেও কারও কারও মাথায় আক্রমণ করে, যা তীব্র চুলকানির পাশাপাশি কপালে, মুখে ক্ষতের সৃষ্টি করে। সঙ্গে চুল পড়াও বাড়িয়ে দেয় অস্বাভাবিক হারে।

কী করবেন

এ ধরনের সমস্যার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময়ে নিয়মিত প্রতিদিন পরিষ্কার পানিতে গোসল করা, মুখমণ্ডল পরিষ্কার করা জরুরি। পাশাপাশি যেহেতু রোগগুলো অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে, তাই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসপত্র যেমন চিরুনি, তোয়ালে, সাবান, বিছানা-বালিশ অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে।

ভেজা ও আর্দ্র ত্বক ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে ফেলতে হবে। ভেজা কাপড় ভালোভাবে না শুকিয়ে গায়ে দেওয়া, রোদ না থাকায় স্যাঁতসেঁতে ঘর, বিছানা, তোয়ালের কারণে এসবের ঝুঁকি বাড়ে। সব সময় তোয়ালে, ব্রাশ, চিরুনি—সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে। বৃষ্টির পানি শরীর এবং মাথা থেকে ভালোভাবে মুছতে হবে, বিশেষ করে হাত ও পায়ের আঙুলের ফাঁকা অংশ ভালোভাবে ধুয়ে মুছতে হবে। প্রতিদিন অন্তত দুবার জীবাণুনাশক সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করতে হবে। রাস্তার নোংরা ও বন্যার পানি এড়িয়ে চলতে হবে। একান্তই যদি চলাচল করতে হয়, তবে বাড়িতে ফিরে অবশ্যই ডেটল-মিশ্রিত বা সাবানপানি দিয়ে পা ও স্যান্ডেল ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপরও যদি এ রোগগুলো দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* লেখক: ডা. জাহেদ পারভেজ | সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top