ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরে নানাভাবেই পা জোড়া ময়লার সংস্পর্শে আসছে প্রতিদিন। ঘরের পরিষ্কার মেঝেতে হাঁটলেও পা ময়লা হয়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিতভাবেই পা পরিষ্কার রাখতে হবে।
আপাতদৃষ্টে পা জোড়া পরিষ্কার দেখালেও তাতে লেগে থাকতে পারে রাজ্যের ধুলা। এভাবেই জমে তাতে ময়লার আস্তরণ। শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে পা জোড়াই প্রতিদিন ময়লা হওয়ার ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই রোজ বাইরে থেকে ফিরেই পা পরিষ্কার করা আবশ্যক। এ জন্য কেবল সাবানপানিতে পা ধুয়ে ফেলাই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সামান্য একটু বাড়তি পরিচর্যার। সারা দিন বাড়িতে থাকলেও রাতে পা পরিষ্কার করতে হবে। পায়ের নিয়মিত যত্ন সম্পর্কে এমনই নানান পরামর্শ দিলেন রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
পা পরিষ্কারের জন্য নরম ব্রিসলের ব্রাশ বেছে নিন।
পরিচ্ছন্ন পা জোড়া
কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে নিয়ে পা জোড়া ভিজিয়ে নিন সেই পানিতে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অন্যান্য ধাপের কাজ (যেমন মেকআপ তোলা, মুখ ধোয়া প্রভৃতি) করতে থাকুন এরপর (দাঁড়িয়েই করতে পারবেন)। তাহলে এই মিনিট পাঁচেক সময় পা জোড়া ভেজা থাকল। অর্থাৎ পা ভিজিয়ে রাখার জন্য আলাদা সময় রাখতে হলো না। এই মিনিট পাঁচেক সময় পেরোনোর পর নরম ব্রিসলের ব্রাশ দিয়ে পা পরিষ্কার করে নিন। অবশ্য নিয়মিত পা জোড়া পরিষ্কার করা হলে এই পাঁচ মিনিট সময়েরও প্রয়োজন হয় না। পা পরিষ্কারের জন্য দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি লম্বা আর আধা ইঞ্চি চওড়া ব্রাশ বেছে নেওয়া ভালো। গোড়ালির দিকে শুষ্ক অংশ থাকলে গোড়ালি পরিষ্কার করার পাথরও প্রয়োজন পড়বে। এর বাইরেও রোজ গোসলের সময় সাবানপানি বা বডিওয়াশ দিয়ে পা পরিষ্কার তো করবেনই। কোনো কোনো দিন যদি আলাদাভাবে পা পরিষ্কার করার সময়-সুযোগ না-ও মেলে, তবু যেন অন্তত পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেওয়া হয়। আর প্রতিবার পরিচ্ছন্নতার শেষে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না যেন। নিয়মিত এই সামান্য যত্নে পায়ের ত্বক থাকবে নরম ও পরিষ্কার, পায়ের শুষ্কতা ও পা ফাটার সমস্যা এড়ানো যাবে। অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন ত্বকে অন্যান্য সমস্যা আর হবে না। আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন, নখ খুব বড় না রাখা
নেইল কাটার দিয়ে গভীর করে নখ কাটবেন না
বিশেষ যত্নে
• পায়ের যত্নের জন্য মাসে অন্তত একবার সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্রে যাওয়া উচিত। দক্ষ হাতে করা পেডিকিউরে আপনার পায়ের ত্বক, নখ ও নখের ভেতরের ও পাশের অংশ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে, যা বাড়িতে অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। নখের আকৃতিও করে নিন পছন্দমতো।
• এ ছাড়া পায়ের যত্ন নিতে সপ্তাহে এক দিন কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে (বোল বা গামলায় নিতে পারেন) তাতে পা ডুবিয়ে রাখুন ২০ মিনিটের জন্য। এরপর একইভাবে পাথর (প্রয়োজন হলে) ও ব্রাশ দিয়ে ঘষে পা পরিষ্কার করুন। পায়ের মৃত কোষ উঠে যাবে। এরপর কিউটিকল কাটার দিয়ে নখের পাশের বাড়তি শক্ত অংশ (চামড়া) কেটে ফেলুন, নেইল কাটার দিয়ে নখ কেটে নিন পছন্দমতো আকৃতিতে (তবে খুব গভীর করে নখ কাটবেন না)। এরপর নেইল বাফারের সাহায্য নিয়ে নখ চকচকে, সুন্দর করে তুলতে পারেন (নেইল পলিশ পরলে অবশ্য নেইল বাফারের অংশটুকু বাদ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে)। সবশেষে পা ধুয়ে বেশ খানিকটা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। মোজা পরে ফেলুন এবং পরদিন সকাল অবধি মোজা জোড়া থাকুক পায়েই। এতে সেদিন আর পায়ে তো ময়লা লাগবেই না, উপরন্তু পা জোড়া হয়ে উঠবে কোমল।
বছরজুড়ে ফাটছে গোড়ালি?
গোড়ালি ফাটা থাকলে সহজেই ময়লা ঢুকে যায়। নিজেই কষ্ট পান ওই ব্যক্তি আর দেখতেও ভালো লাগে না। শীতে অনেকেরই পা ফাটে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে সারা বছরই পা ফাটতে দেখা যায়। তাঁরা এই সাপ্তাহিক যত্নের নিয়মই মেনে চলবেন সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন। নিয়মমাফিক ব্যবহারে এতেই পাবেন সমাধান।
লেখক: রাফিয়া আলম, ঢাকা