What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

লো প্রেশার কেন হয় (1 Viewer)

T70IvR5.jpg


অনেকে বলেন, আমার 'লো প্রেশার', সব সময় রক্তচাপ কম থাকে। অনেকে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। আসলেই কি কারও লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ থাকতে পারে? কেনই–বা হয়?

রক্তচাপ মাপার সময় আমরা দুটো পরিমাপ দেখি। ওপরেরটা হলো সিস্টোলিক রক্তচাপ। আর নিচেরটা হলো ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ। সিস্টোলিক রক্তচাপ ১২০ মিলিমিটার পারদের কম আর ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৮০ মিলিমিটার পারদের কম থাকা উচিত, এটাই রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা। কিন্তু কত কম পর্যন্ত স্বাভাবিক?

আসলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মিলিমিটার পারদের কম অথবা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিলিমিটার পারদের কম না হলে নিম্ন রক্তচাপ বা 'লো প্রেশার' বলা হয় না। তার মানে ৯০/৬০ মিলিমিটার পারদ থেকে ১২০/৮০ মিলিমিটার পারদ পর্যন্ত মাত্রা হলো স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকে সামান্য কমের দিকে রক্তচাপ পেলেই তাকে কম রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ বা 'লো প্রেশার' ভাবেন, যা ঠিক নয়।

দিনের বিভিন্ন সময় আমাদের রক্তচাপের তারতম্য হয়। হাঁটাচলা, ব্যায়াম, পরিশ্রম, পানিশূন্যতা, বিশ্রাম বা ঘুম—অনেক কিছুর সঙ্গে রক্তচাপের সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘ সময় দাঁড়ানো, শোয়া বা বসে থাকাও রক্তচাপের ওপর প্রভাব ফেলে। মধ্যরাতে ঘুমের মধ্যে রক্তচাপ সবচেয়ে কম থাকে। বাড়তে শুরু করে ভোর থেকে। দুপুর ও বিকেলে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে কমতে থাকে সন্ধ্যা থেকে। এই ওঠানামা সাধারণত সিস্টোলিকের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ মিলিমিটার এবং ডায়াস্টোলিকের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ মিলিমিটারের মধ্যে থাকে। তাই বিভিন্ন সময় পরিমাপ একটু এদিক–ওদিক পাওয়াটা স্বাভাবিক।

নিম্ন রক্তচাপ উচ্চ রক্তচাপের মতো কোনো রোগ নয়। নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে অন্য কোনো রোগের উপসর্গ। তাই কারও নিম্ন রক্তচাপ হলে (৯০/৬০ মিমি পারদের কম), তার সঠিক কারণ বের করে চিকিৎসা করতে হবে। আর যদি হঠাৎ করে এমনটা হয় তাহলে অন্যান্য উপসর্গ বিবেচনা করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা যখন কমের দিকে

  • অ্যাথলেট, দৌড়বিদ বা নিয়মিত ভারী পরিশ্রম করেন এমন ব্যক্তিদের রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবেই কমের দিকে থাকে।
  • বয়স্ক ব্যক্তিদের নানা কারণে রক্তচাপ কমতে পারে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো নানাবিধ ওষুধের ব্যবহার।
  • শোয়া বা বসা থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ একটু কমে যায়। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্যা থাকে।
  • রাতে, ঘুমের মধ্যে বা ঘুমের পরে এবং খাওয়ার পর রক্তচাপ খানিকটা কম থাকে।
  • অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার প্রথম দিকে রক্তচাপ কম থাকতে পারে।

রক্তচাপ কমে যাওয়া যখন উপসর্গ

  • ডায়রিয়া, বমি, রক্তক্ষরণ, রক্তশূন্যতা বা পানিশূন্যতায় রক্তচাপ কমার আশঙ্কা থাকে।
  • হরমোনজনিত কিছু সমস্যা, বিশেষ করে থাইরয়েড ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির হরমোন সমস্যায় রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
  • হৃদ্‌রোগ যেমন হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর, হার্ট-ভালভের অসুখ এবং জন্মগত হৃদ্‌রোগ থেকেও রক্তচাপ কম হতে পারে।

কম রক্তচাপের লক্ষণ

রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে সাধারণত যেসব লক্ষণ দেয়, তা হলো:

  • মাথা ঝিমঝিম, মাথা ঘোরা বা মাথা হালকা বোধ করা।
  • বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে ভারসাম্যহীনতা।
  • দুর্বল লাগা।
  • চোখে ঘোলা বা অন্ধকার দেখা।
  • খুব তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া।
  • হঠাৎ পড়ে যাওয়া বা জ্ঞান হারানো।
  • স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত গতির হৃৎস্পন্দন।
  • হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা।
  • প্রস্রাব কম হওয়া।

রক্তচাপ কমলে করণীয়

অনেকেরই রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবে একটু কমের দিকে থাকে। এতে তাঁদের কোনো সমস্যা হয় না। এ নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁরা অনেক সময় স্বাভাবিক বা একটু কমের দিকে রক্তচাপ পেলে ভয়ে ওষুধ বন্ধ করে দেন। এটাও ঠিক না। দরকার হলে ওষুধ বা এর মাত্রা পরিবর্তন করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না। তবে রক্তচাপ বেশি কমে গিয়ে কারও সমস্যা হলে বা কোনো উপসর্গ দেখা দিলে, সমস্যার কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা নিতে হবে। রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ড রক্তস্বল্পতায় ভুগতে পারে এবং তা থেকে এসব অঙ্গের নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

হঠাৎ রক্তচাপ কমে গেলে

কম রক্তচাপ কোনো অসুখের উপসর্গ হলে, হঠাৎ তা দেখা দিতে পারে। এ সময় নাড়ির গতি বা পালস স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত গতির হয় এবং রোগীর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে। এটি শকের লক্ষণ। নানা কারণে রোগী শকে যেতে পারে। ডায়রিয়া, বমি, রক্তক্ষরণ, রক্তশূন্যতা, পানিশূন্যতা, ইনফেকশন এবং হৃদ্‌রোগে হঠাৎ নিম্ন রক্তচাপ থেকে শকের ঘটনা বেশি ঘটে।

প্রতিরোধ

  • দীর্ঘ সময় এক স্থানে বসা বা শুয়ে থাকার পর ধীরে উঠতে হবে। ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের এটা অবশ্যই করা উচিত।
  • লম্বা সময় খালি পেটে থাকা উচিত নয়। দীর্ঘ কাজের ফাঁকে হালকা নাশতার অভ্যাস করা ভালো।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। গরমের দিনে অতিরিক্ত ঘামে যাতে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • অনেকে ভুল ধারণাবশত খাবারের তালিকা থেকে লবণ একেবারে বাদ দিয়ে দেন। এটা ঠিক নয়। সব মিলিয়ে দৈনিক এক চামচের মতো লবণ খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
  • ডায়রিয়া বা বমি হলে যাতে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন, তরল খাবার, ডাবের পানি পান এবং স্বাভাবিক খাবার খেতে হবে।

লেখক: ডা. শরদিন্দু শেখর রায় | হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ
 

Users who are viewing this thread

Back
Top