ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টিকর খাবার। পুষ্টিকর খাবারে রোগীর রক্তচাপ কমে যাওয়া, অরুচি, বমি বমি ভাব, রক্তপাত ও পানিশূন্যতার ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে।
রোগীর খাবার
■ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল–জাতীয় খাবার খেতে দিতে হবে। দৈনিক অন্তত তিন লিটার পানি পান করতে হবে। অরুচি ও বমির কারণে অনেকেই এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে পারেন না। তাই ডাবের পানি খুবই উপকারী। এতে প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ পাওয়া যায়। ফলের শরবত, বিশেষ করে আম, কমলা, মাল্টা, আনারস, বেদানা ও তরমুজের রস করে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিদিন আদার রস, আদা–চা, গ্রিন টি, হারবাল টি পান করুন। অবশ্যই দৈনিক লেবুর শরবত পান করতে হবে।
■ দ্রুত আরোগ্য লাভে প্রোটিনযুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে হবে। বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে ২–৩টি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
■ ডেঙ্গু রোগীর জন্য স্যুপ খুবই উপযোগী। সবজি ও মুরগির মাংস দিয়ে স্যুপ করে দিতে পারেন রোগীকে। এতে রোগীর প্রয়োজনীয় পুষ্টির পাশাপাশি পানির চাহিদাও পূরণ হয়।
■ মাছের মধ্যে শিং, মাগুর, পাবদা ও বোয়ালের ঝোল করে খাওয়া ভালো। মাছ ভাজা ও ভুনা না খাওয়াই ভালো।
■ কয়েক প্রকারের ডাল পাতলা করে রান্না করে দিতে পারেন। এতে প্রোটিনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদাও পূরণ হয়।
■ সহজপাচ্য সব খাবার এ সময় রোগীকে খেতে দিতে হবে। জাউভাত, ক্ষীর, পাতলা খিচুড়ি ও দই রোগীর জন্য উপকারী।
■ ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টযুক্ত ফল, যেমন আমলকী, পেয়ারা, কিউই, বেরিস ও পেঁপে খেতে দিতে হবে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি–যুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। পাশাপাশি মুখের রুচি বাড়াতেও সাহায্য করে।
এড়িয়ে চলুন
■ ভাজা–পোড়া, ফাস্ট ফুড ও বাইরের খাবার এড়াতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে অনেক সময় লিভার এনজাইম এসজিপিটি বেড়ে যায়, তাই সহজপাচ্য খাবার ভালো। তেল–মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
■ যেসব খাবার হজম হতে সময় নেয়, সে ধরনের কোনো খাবার, যেমন লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস এড়িয়ে চলুন।
লেখক: উম্মে সালমা তামান্না | পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা
