জন্মদিনের আগে থেকেই শুভেচ্ছাসিক্ত হচ্ছেন অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী। আজ তাঁর জন্মদিন। সকাল থেকেই হাজার হাজার ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহকর্মী ফেসবুক ও মোবাইলে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, যা আবেগে আপ্লুত করেছে এই অভিনেতাকে। তিনি মনে করেন, এত ভালোবাসার যোগ্য তিনি নন। তবে কাজের মাধ্যমে এই অমূল্য ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চান তিনি। আর সেই পথচলার এখনো অনেকটাই বাকি।
জন্মদিন উদ্যাপন করা নিয়ে তেমন উৎসাহী নন চঞ্চল। গত রাতে কেক নিয়ে তাঁর বাসায় গিয়ে হাজির হন চিত্রনাট্যকার বৃন্দাবন দাস ও অভিনয়শিল্পী শাহনাজ খুশি দম্পতি। পরিবারের পক্ষ থেকেও ছিল আয়োজন ছিল। জন্মদিনে চঞ্চলের একমাত্র ছেলে শুদ্ধ বাবাকে একটি চিঠি লিখেছে। সেই চিঠি পড়ে আবেগাপ্লুত চঞ্চল চৌধুরী। জন্মদিনে এত ভালোবাসা আর শুভেচ্ছাসিক্ত হয়ে কেমন লাগছে? কীভাবেই বা তিনি উদ্যাপন করছেন দিনটি? এ প্রসঙ্গে চঞ্চল বলেন, 'দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটাচ্ছি। জন্মদিনটি নিয়ে আমার কখনোই আলাদা কোনো উৎসাহ থাকে না। ফেসবুকে কিছু মানুষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এটা আমাকে ইমোশনাল করে দিচ্ছে। তাঁদের ধন্যবাদ জানানোর চেষ্টা করছি।'
জন্মদিন উদ্যাপন করা নিয়ে তেমন উৎসাহী নন চঞ্চল, ছবি: ফেসবুক থেকে
থিয়েটার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, সংগীতসহ বিনোদন অঙ্গনের মানুষের অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরীকে। তাঁর ফেসবুক ওয়ালে হাজারো মানুষের এসব শুভেচ্ছাবার্তাই জন্মদিনে পাওয়া তাঁর সেরা উপহার। একজন অভিনয়শিল্পীর এর চেয়ে বেশি প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে না বলে মনে করেন তিনি। এই ভালোবাসা তাঁর কাছে ঋণের মতো। ভালো অভিনয় করে এই ঋণ তিনি পরিশোধ করতে চান। তিনি বলেন, 'হাজার হাজার মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, আমি হয়তো এর যোগ্য নই। তবে এটুকু বুঝতে পারি, আমার দায়বদ্ধতা আরও বাড়ছে। সবার ভালোবাসা আমাকে পথচলতে সাহায্য করবে। এগুলোকে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখি। আমি আমার পথে এখনো হাঁটছি। কর্মের মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা পেলেই আমি সার্থক।'
ছেলের সঙ্গে চঞ্চল, ছবি: ফেসবুক থেকে
শৈশবে চঞ্চল চৌধুরীদের পরিবারে ঘটা করে জন্মদিন উদ্যাপন করা হতো না। ছেলের জন্মদিনে মা পায়েস রান্না করতেন, এটুকুই ছিল আয়োজন। যখন অভিনয় শুরু করলেন, খ্যাতি অর্জন করলেন, তখন সহকর্মী এবং কাছের মানুষ আগ্রহভরে দিনটি উদ্যাপন করতে শুরু করেন। পরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন থেকে তাঁর জন্মদিন ঘিরে নানা আয়োজন করা শুরু হয়। এভাবেই শুরু হয় জন্মদিন উদ্যাপন। চঞ্চল বলেন, 'আমার জন্মদিন নিয়ে অনেকেই আগ্রহ দেখান, এটা আমার ভালো লাগে। মাঝেমাঝে বিব্রতও বোধ করি। নিজের জন্মদিন নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করে না। সবাই ভালোবাসে বলে তাদের বিব্রত করতে চাই না, তাই কথা বলতে হয়।'
শৈশব থেকেই অভিনয়ে আগ্রহ ছিল চঞ্চলের, ছবি: ফেসবুক থেকে
শৈশব থেকেই অভিনয়ে আগ্রহ ছিল চঞ্চলের। ঢাকায় এসে যোগ দেন আরণ্যক নাট্যদলে। পড়াশোনার পাশাপাশি নাটকের এ দলেই তিনি অভিনয় শিখতে শুরু করেন। একটু একটু করে গড়তে শুরু করেন নিজেকে। দেশের মানুষ এখন তাঁকে চেনেন, ভালোবাসেন। আজ চঞ্চল চৌধুরী হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান কার? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমার গুরু মামুনুর রশীদ। আজ যদি আমি একটি জায়গায় পৌঁছে থাকি, এ জন্য পরিবার, সহকর্মী, অনেক নির্মাতাসহ প্রচুর মানুষের অবদান রয়েছে। আমার সন্তানের বয়স ১৫ বছর। তাঁকে বড় করে তোলার সময় যদি আমার স্ত্রীর সহযোগিতা না পেতাম, তাহলে হয়তো আমার এত কিছু করা সম্ভব হতো না। বলা যায়, আমার আজকের অবস্থানের পেছনে এত মানুষের অবদান আছে যে সবার নাম বলে শেষ করা যাবে না। আমি তাঁদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।'
চঞ্চল চৌধুরী, ছবি : সংগৃহীত
টেলিভিশন নাটকের এক ব্যতিক্রমী নাম চঞ্চল চৌধুরী। তার অভিনীত 'হাড়কিপটে', 'সাকিন সারিসুরি', 'ঘরকুটুম', 'আলতা সুন্দরী', 'সার্ভিস হোল্ডার' নাটকগুলো এখনো ভোলেনি মানুষ। অনেকেই বলেন, তিনি 'মনপুরা', 'আয়নাবাজি', 'দেবী'খ্যাত অভিনেতা। ভক্তদের মুখে মুখে এখনো শোনা যায় তাঁর চরিত্রগুলোর সংলাপ। এগুলোকে তিনি নিজের অর্জন মনে করেন, তেমনি ভালো কাজের অনুপ্রেরণাও পান এসব থেকে।
গত রাতে কেক নিয়ে তাঁর বাসায় গিয়ে হাজির হন চিত্রনাট্যকার বৃন্দাবন দাস এর পরিবার, ছবি: ফেসবুক থেকে