পাশাপাশি বাসায় থাকার সুবাদে ভীষণ আন্তরিক প্রতিবেশী নিতু ও আঁখি। দুজনের খুব মিল, বন্ধুত্ব। সুযোগ পেলেই কাজের ফাঁকে একজন আরেকজনের বাসায় আসা-যাওয়া করেন, খাবার বিনিময় হয়, আড্ডাও চলে। এই আড্ডার মাঝেই একে অপরের অনেক কথা জেনে যান। নিজের অনেক ব্যক্তিগত কথা আলাপচারিতার মাধ্যমে জেনে ফেলেন আরেকজন। একদিন কথায় কথায় আঁখি তেমনই তার একান্ত গোপন কিছু কথা বলে ফেলে নিতুকে। যে কথা অন্য কাউকে কখনোই বলেনি। বিশ্বাস ছিল, নিতু সেই কথা গোপন রাখবে, প্রকাশ করবে না কারও কাছে।
কিছুদিন পরে দুজনের বন্ধুত্বে অবনতি ঘটে। একদিন কথায় কথায় নিতু আঁখিকে ইচ্ছা করে নানার কথার ফাঁকে সেই পুরোনো কথাকে মনে করিয়ে কষ্ট দেয়। সেই গোপন কথাটির উদাহরণ টেনে অন্য কাউকে বলে দেবে এমনটি বলতেও ছাড়ে না। আঁখি বিব্রত হয়, নিতুর কাছে অনুরোধ করে, যাতে সে না বলা কথাটি অন্য কারও কাছে না বলে গোপনেই রাখে। নিজের ওপর নিজের রাগ হয়, কেন সে নিতুকে ব্যক্তিগত কথা বলতে গেল। তাই তো সে সেই স্মৃতির কথা মনে করিয়ে মনে আঘাত দিল। তবে কি নিজের কথা নিজের ভেতরেই রাখতে হবে চিরকাল? কাউকেই কি বিশ্বাস করে কখনো একান্ত কথা বলা যাবে না? অবশ্যই বলা যাবে; বরং নিজের ভেতরে চেপে রাখা কথা মনের কষ্ট বাড়ায়। মানুষ তাই কাছের মানুষের কাছে সেসব কথা বলে নিজের কষ্টের ভার কমাতে চায়। কিন্তু দ্বিতীয়জনকে না জানানোর শর্তে বলা সেই গোপন কথা হঠাৎ সবার সামনে বলে দেওয়া মানে বিশ্বাস ভাঙা, যা মোটেও উচিত নয়।
বিশ্বাসের মর্যাদা রাখুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ (সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক) ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মানুষ যখন অন্য কারও কাছে ব্যক্তিগত কথা বা গোপন কথা বিশ্বাস করে বলে, অপরজনের উচিত তার মর্যাদা রক্ষা করা, গোপন কথা গোপন রাখা। তবু যিনি ব্যাপারটি জেনে যান, আসলে তিনি কতটুকু বিশ্বস্ত, গোপন কথা কতটা গোপন রাখবেন, তিনি কতটা সততার পরিচয় দেবেন, তার সবটাই নির্ভর করছে সেই ব্যক্তির মনমানসিকতার ওপর। তবে কারোরই এমনটি করা মোটেও উচিত নয়, যাতে মানুষে মানুষে বিশ্বাসের ঘাটতি হয়।'
অন্যের গোপন কথা প্রকাশ করার হুমকি দেওয়া অন্যায়। বারবার গোপন কথাকে সামনে আনা, বাজে উদাহরণ দেওয়া, কটূক্তি করা একেবারেই অনুচিত। এগুলো অসৎ আচরণ, ভদ্রবেশী অপরাধ, অনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রত্যেক ব্যক্তিকে এমন বাজে কাজ বা আচরণ থেকে দূরে থাকা উচিত। ভেবে দেখা উচিত, নিজের সঙ্গে অন্য কেউ এমন আচরণ করলে তিনি কতটা কষ্ট পেতেন। এই ভাবনা ভেতরে থাকলেই এমন কাজ করা থেকে সহজে দূরে থাকা যায়। তবে, কারও গোপন কথা জেনে গেলে বা কেউ তার কষ্টের কথা কিংবা স্মৃতি কারও সঙ্গে খোলামেলাভাবে আলোচনা করলে যিনি জানলেন, তার খেয়াল রাখতে হবে ভুক্তভোগী ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা গোপন কথা যাতে কোনোভাবেই পাঁচকান না হয়।
সব থেকে বড় কথা, কাউকেই ইচ্ছা করে আঘাত দিয়ে কথা বলা উচিত নয়। সেটা পরিচিত, অপরিচিত, বন্ধু বা প্রতিবেশী—যাকেই হোক না কেন। প্রত্যেক মানুষেরই সম্মান আছে। কারও কথায় বা আচরণে মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হয়, এমনটি মেনে নেওয়া কঠিন। মানুষে মানুষে সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলাটা খুব জরুরি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ (সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক) ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মানুষ যখন অন্য কারও কাছে ব্যক্তিগত কথা বা গোপন কথা বিশ্বাস করে বলে, অপরজনের উচিত তার মর্যাদা রক্ষা করা, গোপন কথা গোপন রাখা। তবু যিনি ব্যাপারটি জেনে যান, আসলে তিনি কতটুকু বিশ্বস্ত, গোপন কথা কতটা গোপন রাখবেন, তিনি কতটা সততার পরিচয় দেবেন, তার সবটাই নির্ভর করছে সেই ব্যক্তির মনমানসিকতার ওপর। তবে কারোরই এমনটি করা মোটেও উচিত নয়, যাতে মানুষে মানুষে বিশ্বাসের ঘাটতি হয়।'
অন্যের গোপন কথা প্রকাশ করার হুমকি দেওয়া অন্যায়। বারবার গোপন কথাকে সামনে আনা, বাজে উদাহরণ দেওয়া, কটূক্তি করা একেবারেই অনুচিত। এগুলো অসৎ আচরণ, ভদ্রবেশী অপরাধ, অনৈতিক কর্মকাণ্ড। প্রত্যেক ব্যক্তিকে এমন বাজে কাজ বা আচরণ থেকে দূরে থাকা উচিত। ভেবে দেখা উচিত, নিজের সঙ্গে অন্য কেউ এমন আচরণ করলে তিনি কতটা কষ্ট পেতেন। এই ভাবনা ভেতরে থাকলেই এমন কাজ করা থেকে সহজে দূরে থাকা যায়। তবে, কারও গোপন কথা জেনে গেলে বা কেউ তার কষ্টের কথা কিংবা স্মৃতি কারও সঙ্গে খোলামেলাভাবে আলোচনা করলে যিনি জানলেন, তার খেয়াল রাখতে হবে ভুক্তভোগী ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা গোপন কথা যাতে কোনোভাবেই পাঁচকান না হয়।
সব থেকে বড় কথা, কাউকেই ইচ্ছা করে আঘাত দিয়ে কথা বলা উচিত নয়। সেটা পরিচিত, অপরিচিত, বন্ধু বা প্রতিবেশী—যাকেই হোক না কেন। প্রত্যেক মানুষেরই সম্মান আছে। কারও কথায় বা আচরণে মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হয়, এমনটি মেনে নেওয়া কঠিন। মানুষে মানুষে সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলাটা খুব জরুরি।