What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other রগচটা, মানবিক এক সুপারস্টারের কথা (1 Viewer)

বিজয় দেবরাকোন্ডার জন্মদিন আজ। 'অর্জুন রেড্ডি'খ্যাত দক্ষিণ ভারতীয় এ অভিনেতা যে বাংলাদেশেও ভীষণ জনপ্রিয়, সেটা টের পাওয়া যায় ফেসবুকে বাংলাদেশি ফ্যান পেজগুলোতে ঢুঁ মারলে। মোটামুটি এক শ দিন আগে থেকে শুরু হয়েছিল তাঁর জন্মদিন উদ্‌যাপনের দিন গণনা। 'হান্ড্রেড ডেইজ টু গো', 'নাইনটি ডেইজ টু গো' বলে বলে দিন পার করছিলেন ভক্তরা। আজ দক্ষিণ ভারত, বলিউড, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের সঙ্গে বাংলাদেশি ভক্তরাও কেক কেটে হইচই করে উদ্‌যাপন করছেন বিজয়ের জন্মদিন। আজ বিজয় পা রাখলেন ৩২-এ!

FOoHoeb.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

বিজয় ছোটবেলা থেকেই ভীষণ রাগী। বড় হয়েও রগচটা ভাবটা কমেনি। সুপারস্টার হওয়ার পর বিজয়ের আরেকটা বৈশিষ্ট্যের কথা জানা গেছে। বিজয় ভীষণ মানবিক। করোনার মহামারিকালের শুরু থেকেই তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ১৭ হাজার ৭২৩টি মধ্যবিত্ত পরিবারের দিকে। করোনার শুরুতে এই তেলেগু অভিনেতা দিয়েছিলেন ১ কোটি ৩০ লাখ রুপি। তাঁর 'মিডল ক্লাস ফান্ড'-এর মাধ্যমে বিজয় অসহায়দের সহযোগিতা করেই যাচ্ছেন।

জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল দক্ষিণ ভারতের এক কিশোর। তার শেষ ইচ্ছা ছিল, বিজয় দেবরাকোন্ডার সঙ্গে দেখা করা। বিজয় ভিডিও কলে তার সঙ্গে দেখা করেন, গল্প করেন। আর বেশ কিছু উপহারও পাঠান ছেলেটার কাছে।

m0crzcF.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

করোনার শুরুতে বিজয় নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন। তখন তিনি কোয়ারেন্টিনে। দেখা গেল, সকালে ঘুম থেকে উঠে অর্জুন নিজের বিছানা নিজেই গোছান। এরপর ফ্রিজে পানি ভরে রাখেন, বাড়ির বর্জ্য ফেলেন। ভিডিও গেম খেলেন। বারান্দায় বসে সূর্যাস্ত দেখেন। আম দিয়ে আইসক্রিম বানান। সেটি নিয়ে মা আর ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে বসেন। আর এই ভিডিওটি করেছেন বিজয়ের বাবা। সারা দিন তিনি কী কী করেন, এমন ভিডিও নিজে পোস্ট করে অন্যদের বাড়িতেও এমন ভিডিও বানাতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। সেই ভিডিও সাড়া ফেলেছিল বেশ।

5GKs2uP.jpg


সর্বশেষ লিগার ছবির শুটিং শেষ করলেন বিজয়, ইনস্টাগ্রাম

১৯৮৯ সালের ৯ মে তেলেগু টেলিভিশন পরিচালক দেবরাকোন্ডা গোবর্ধন রাও ও দেবরাকোন্ডা মাধবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বিজয়। ২০১১ রবি বাবুর 'নুভভিল' চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় বিজয়ের। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত ছবি 'অর্জুন রেড্ডি'। সেখানে রগচটা এক মেডিকেল ছাত্রের ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে, যিনি অন্যদের গায়ে তো বটেই, হুটহাট নিজের বন্ধুদের গায়েও হাত তোলেন। এ নিয়ে পরে অবশ্য সমালোচনাও হয়েছে। ছবির হিন্দি রিমেক 'কবির সিং' মুক্তির পর ফের আলোচনায় এসেছে সেই প্রসঙ্গ।

rQiAVWs.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

বলিউডের 'কবির সিং' বক্স অফিসে তুমুল আলোড়ন তৈরি করলে বিজয়কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, শহীদ কাপুর অভিনীত রিমেক ছবিটি তিনি দেখেছেন কি না। উত্তরে কলার উঁচু করে বিজয় বলেছিলেন, 'কী সিনেমা? কেন দেখব? আমাদের তেলেগু গল্প, সন্দীপ ভাঙ্গা আমাদের পরিচালক। আমার অভিনীত ছবি। আরেকজন অভিনয় করেছে অন্য ভাষায়, অনেক টাকা আয় করেছে, সেটা দেখার কী আছে! এই ছবির সবই তো আমাদের।' বলা হয়ে থাকে, বলিউড টিকে আছে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ওপর ভর করে। বলিউডের বেশির ভাগ গল্পই সেখানকার। কিন্তু টাকার খেলায় বলিউড এগিয়ে।

1zWOrmn.jpg


সহকর্মীর সঙ্গে বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক গুণী শিল্পী, চিত্রনাট্যকার, কলাকুশলী, মিউজিশিয়ান থাকা সত্ত্বেও এটি একটি ছোট ইন্ডাস্ট্রি। তাই দক্ষিণ ভারতের এই ইন্ডাস্ট্রিকে কিছুটা অবজ্ঞার চোখে দেখে বলিউড। সেই জায়গা থেকে বিজয়ের 'বলিউডকে পাত্তা না দেওয়া' এই মন্তব্য বেশ আলোড়ন ফেলেছিল। বিজয়ের এ পাত্তা না দেওয়া ব্যক্তিত্বই পর্দার বাইরে তাঁর তুমুল জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।

nC2hStb.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

বিজয়ের প্রিয় অভিনেতার তালিকা লম্বা। রজনীকান্ত, মোহনলাল, কমল হাসান, মামুট্টি, মহেশ বাবু, ধানুশ, আল্লু অর্জুন, প্রভাস, রাম চরণ, এন টি রামা রাও, এন টি রামা রাও জুনিয়র, রাম চরণ, রানা দাগুবতি। এ তালিকায় নেই কোনো বলিউড তারকার নাম। উল্টো বলিউডের জাহ্নবী কাপুর ও সারা আলী খান দুজনই জানিয়েছেন, তাঁরা বিজয় দেবরাকোন্ডার ভক্ত। বিজয় মনে করেন, বলিউডের চেয়ে দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র ভারত ও বিশ্ব চলচ্চিত্রকে দিয়েছে অনেকে বেশি, পেয়েছে অনেক কম। দক্ষিণের শিল্পী ও কলাকুশলীরা তাঁদের যোগ্য সম্মান পান না। তাই তিনি বলিউডমুখী না হয়ে বরং নিজেদের ইন্ডাস্ট্রির ব্র্যান্ডিং করতে চান।

SQltrs6.jpg


ভক্তদের সঙ্গে বিজয়, ইনস্টাগ্রাম

'ডিয়ার কমরেড' ছবিতেও বিজয় এক রাগী তরুণ। ব্যক্তিজীবনেও রগচটা মেজাজের জন্য বদনাম হওয়ায় মোটেও বিব্রত নন বিজয়। তাঁর ভাষায়, 'প্রতিটা মানুষই আলাদা। আমি চাই সব সময়ই সৎ থাকতে, আর এটাই আমার শেষ কথা। নিজেকে মুখোশ পরিয়ে রাখতে পারি না। মনে যা আসে বলে দিই। সেটা অনেকে পছন্দ করেন না। তবে আমার তাতে কিছু যায় আসে না।' বিজয়ের এই 'কিছু আসে যায় না' মনোভাবই তাঁকে অন্য তারকাদের থেকে আলাদা করেছে।

F71kykL.jpg


বিজয় দেবরাকন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

ক্যারিয়ারের শুরুতে তেমন সাড়া পাননি বিজয়। বেশ কয়েকটি ছবি ফ্লপ করেছিল। একসময় বিজয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় সহকারী পরিচালক নাগ আশ্বিনের, যিনি বিজয়কে 'যেবাদে সুব্রামানিয়াম' সিনেমায় একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র দেন। ছবির মূল চরিত্রে ছিলেন নানি, বিজয়ের অভিনয়ও দারুণ আলোচিত হয়। এরপর ২০১৬ 'পেল্লি চুপুলু' হিট হয়। তারপর আর বিজয়কে কে ঠেকায়! এরপর বাকিটা বিজয়ের বিজয় নিশান ওড়ানোর গল্প। ২০১৯ সালে ফোর্বস-এর 'থার্টি আন্ডার থার্টি' তালিকায় নাম ছিল এই অভিনয়শিল্পী ও প্রযোজকের। তাঁর প্রযোজনা কোম্পানি কিং অব দ্য হিল এন্টারটেইনমেন্ট ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রশংসিত ছবি উপহার দিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। শুধু তা–ই নয়, ২০১৯ সালে দক্ষিণ ভারতে সবচেয়ে বেশি গুগল করা মানুষটিও এই বিজয় দেবরাকোন্ডা।

2iNNbZj.jpg


ওয়ার্ল্ড ফেমাস লাভার ছবিতে বিজয়, ইনস্টাগ্রাম

সন্দীপ ভাঙ্গা বিজয়কে নিয়ে বানান 'অর্জুন রেড্ডি'। সেই ছবি রীতিমতো ইতিহাস তৈরি করে। রাতারাতি তেলেগু সিনেমার সুপারস্টার বনে যান বিজয়। তাঁর বাড়িতে প্রযোজকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। এরপর 'নোটা', 'গীতা গোবিন্দাম'ও ভালো ব্যবসা করে। এরপর আবার বাজিমাত, 'ডিয়ার কমরেড' দারুণ হিট হয়। ভারতের প্রধান আঞ্চলিক সব ভাষাতেই মুক্তি দেওয়া হবে ছবিটি। 'বাহুবলি'র পর এটাই একমাত্র আঞ্চলিক ছবি, যা একসঙ্গে চার ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে 'কবির সিং'-এর সাফল্য দেখে তড়িঘড়ি করে মুক্তির আগে 'ডিয়ার কমরেড'-এর হিন্দি স্বত্ব কিনে নেন করণ জোহর। তা-ও আবার রেকর্ড করা দামে।

7MtWgnM.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

'ডিয়ার কমরেড' সমালোচক থেকে বক্স অফিস—সবখানেই বাজিমাত করেছে। চারদিকে বিজয়ের নামডাক ছড়িয়ে পড়েছিল। বিজয়ের ছবির হিন্দি স্বত্ব কেনার হিড়িক পড়লেও অভিনেতা জানিয়েছেন, হিন্দিতে তিনি অভিনয় করবেন না। যেমন পরিচালকের অনেক অনুরোধের পরও 'কবির সিং' করেননি, করণ জোহরকে জানিয়ে দিয়েছেন, 'ডিয়ার কমরেড'-এর হিন্দিও করবেন না। বিজয়ের 'ওয়ার্ল্ড ফেমাস লাভার' ছবিটিও খুব সুনাম কুড়ায়।

cizvAdr.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

'মিডল ক্লাস ফান্ড'-এর মাধ্যমে বিজয় অসহায়দের সহযোগিতা করেছেন বলে এক বিবৃতি দিয়েছিলেন। করোনার এই পরিস্থিতি নিয়ে এক খোলা চিঠিতে বিজয় লেখেন, 'অনেক বছর পর করোনার এই দিনগুলো স্মৃতি হয়ে যাবে। মনে পড়বে ভয়ে আমাদের হ্যান্ডশেক করা, জড়িয়ে ধরা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেউ কাশি দিলে মনে হতো, বোমা ফাটল। আরও কত স্মৃতি জমে থাকছে। এগুলো মনে করে কেউ হাসবে, কেউ আবেগে ভাসবে। এমন দিনে অপরিচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথাও মনে থাকবে।'

বিজয় এই চিঠিতে আরও লিখেছেন, 'আমার মনে পড়বে ৫৩৫ জন মহৎ হৃদয়ের তরুণের কথা। যারা সবাই মিলে আমাকে 'মিডল ক্লাস ফান্ড' নামে একটি স্মৃতি উপহার দিয়েছে। এই চমৎকার স্মৃতি উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে আমার ভালোবাসা।'

EWiO21n.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

বিজয় দেবরাকোন্ডা বর্তমানে 'লিগার' সিনেমার শুটিং করছেন। এটি পরিচালনা করছেন পুরী জগন্নাথ। সিনেমাটিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছেন বলিউড তারকা অনন্যা পান্ডে। এই সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখবেন বিজয়। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পাঁচটি ভাষায় সিনেমাটি মুক্তি পাবে। এর মাধ্যমেই বলিউডে খাতা খুলবেন তিনি। বিজয়ের এখন সময় কাটছে পোষা কুকুরদের সঙ্গে। ইনস্টাগ্রামে বিজয়ের অনুসারী ১ কোটি ১৭ লাখ, যা কোনো দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। কেবল বিজয় না, তাঁর কুকুরদেরও অ্যাকাউন্ট আছে ইনস্টাগ্রামে। তাদেরও আছে হাজার হাজার ফলোয়ার।

NIFBPGa.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

লোকে বলে, বিজয়ের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস সিঙ্গেল। তবে করণ জোহরের পার্টিতে বিজয় আর বলিউড তারকা সারা আলী খানকে একত্রে দেখা গেছে। তা ছাড়া 'কবির সিং' তারকা কিয়ারা আদভানির সঙ্গেও বিজয়ের বেশ ভালো বন্ধুত্ব। তবে প্রেমের কথা তিনি স্বীকার করেননি কিছুতেই।

k6XXpth.jpg


বিজয় দেবরাকোন্ডা, ইনস্টাগ্রাম

বিজয়ের ৩২তম জন্মদিন কাটছে বাড়িতে, নিরিবিলি, পরিবারের সঙ্গে। মহামারিকাল ফুরালেই ইউরোপে উড়াল দেবেন তিনি। ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায় আর দশটা সাধারণ মানুষের মতোই ঘুরে বেড়াবেন। ছবি তুলবেন, নানা পদের খাবারের স্বাদ নেবেন। তারপর ফিরে এসে আবার মন দেবেন সিনেমায়।

J8mr2Nb.jpg


মায়ের সঙ্গে বিজয়, ইনস্টাগ্রাম
 

Users who are viewing this thread

Back
Top