দৈনিক কমপক্ষে আধঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত লবণ, অধিক ট্রান্স ফ্যাট-সমৃদ্ধ বেকারি বা ফাস্ট ফুডের খাবার, লাল মাংস এড়িয়ে চলুন।
হৃদ্যন্ত্রের কাজ হলো পাম্প করে রক্ত সংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের সব অঙ্গে রক্ত সরবরাহ করা। হৃদ্যন্ত্র থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ পৌঁছায় ঘাড়ের দুই পাশের রক্তনালি দিয়ে। ঘাড়ের রক্তনালিগুলোও কিন্তু চর্বি বা ক্যালসিয়াম জমার কারণে ব্লক হয়ে যেতে পারে। ব্লকের মাত্রা বেশি হলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের সরবরাহ ব্যাহত হয়।
সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ঝুঁকিও বাড়ে। ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লকের কারণে অন্য নানা সমস্যাসহ মস্তিষ্কের স্ট্রোকও হতে পারে।
যেসব কারণে হয়
বিজ্ঞানীদের মতে, পুরুষেরা ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে বেশি। রক্তের সম্পর্ক আছে, এমন কারও হৃদ্রোগ বা মস্তিষ্কের স্ট্রোকের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি। ধূমপান বর্জন, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম; নিদ্রাহীনতা ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ–উদ্বেগমুক্ত থেকে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। ইতিমধ্যে যাদের হৃদ্রোগ ধরা পড়েছে, তাদের ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।
উপসর্গ
ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাটির প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ থাকে না। রক্তনালির ভেতরের দেয়ালে চর্বি-ক্যালসিয়াম ইত্যাদি স্তরে স্তরে জমে একসময় মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহ এমন মাত্রায় কমে যায়, তখন ব্লকের তীব্রতা অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে যেসব উপসর্গ সচরাচর দেখা যায়, সেগুলো হলো—
■ মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা বোধ হওয়া।
■ কথা জড়িয়ে যাওয়া, ঘোলাটে কথা বা বাক্শক্তি হারানো।
■ দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা, ঘোলাটে দৃষ্টি বা কোনো জিনিস দুটি দেখা।
■ মুখমণ্ডলের দুর্বলতা, খাবার খেতে না পারা বা মুখ থেকে খাবার গড়িয়ে পড়া।
■ শরীরের একপাশে অংশবিশেষ বা পুরো পাশ দুর্বল, ভারসাম্যহীন অথবা অসাড় হওয়া।
এসব উপসর্গের কোনোটা যদি হঠাৎ দেখা দেয়, তবে তা মস্তিষ্কের স্ট্রোকের লক্ষণ। অনেক সময় মৃদু মাত্রার স্ট্রোকও হতে পারে। কখনো কখনো অবশ্য সামান্য মাত্রায় কোনো উপসর্গ দেখা দেয়। কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এসব সমস্যা। কাজেই ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এ ধরনের কোনো উপসর্গই অবহেলা করা চলবে না।
সতর্কতা
বয়স ৫০ বছর পার হলেই সতর্ক হতে হবে। এ সময় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ মাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল আছে কি না, আর উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কি না, তা দেখতে হবে। ধূমপান বা অন্যান্য তামাক-জর্দা সেবন বর্জন করুন। দৈনিক কমপক্ষে আধঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত লবণ, অধিক ট্রান্স ফ্যাট-সমৃদ্ধ বেকারি বা ফাস্ট ফুডের খাবার, লাল মাংস এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
চিকিৎসা
ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লকের মাত্রা ও উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে ওষুধের মাধ্যমে অথবা ওষুধের পাশাপাশি অস্ত্রোপচার কিংবা বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে রিং বা স্টেন্ট সংযোজন করে চিকিৎসা করা হয়। আগেভাগে রোগনির্ণয় করে চিকিৎসা করতে পারলে অনেকাংশে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়।
* ডা. শরদিন্দু শেখর রায়, হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ
হৃদ্যন্ত্রের কাজ হলো পাম্প করে রক্ত সংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের সব অঙ্গে রক্ত সরবরাহ করা। হৃদ্যন্ত্র থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ পৌঁছায় ঘাড়ের দুই পাশের রক্তনালি দিয়ে। ঘাড়ের রক্তনালিগুলোও কিন্তু চর্বি বা ক্যালসিয়াম জমার কারণে ব্লক হয়ে যেতে পারে। ব্লকের মাত্রা বেশি হলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের সরবরাহ ব্যাহত হয়।
সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ঝুঁকিও বাড়ে। ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লকের কারণে অন্য নানা সমস্যাসহ মস্তিষ্কের স্ট্রোকও হতে পারে।
যেসব কারণে হয়
বিজ্ঞানীদের মতে, পুরুষেরা ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে বেশি। রক্তের সম্পর্ক আছে, এমন কারও হৃদ্রোগ বা মস্তিষ্কের স্ট্রোকের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি। ধূমপান বর্জন, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম; নিদ্রাহীনতা ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ–উদ্বেগমুক্ত থেকে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। ইতিমধ্যে যাদের হৃদ্রোগ ধরা পড়েছে, তাদের ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।
উপসর্গ
ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লক একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাটির প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ থাকে না। রক্তনালির ভেতরের দেয়ালে চর্বি-ক্যালসিয়াম ইত্যাদি স্তরে স্তরে জমে একসময় মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহ এমন মাত্রায় কমে যায়, তখন ব্লকের তীব্রতা অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে যেসব উপসর্গ সচরাচর দেখা যায়, সেগুলো হলো—
■ মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা বোধ হওয়া।
■ কথা জড়িয়ে যাওয়া, ঘোলাটে কথা বা বাক্শক্তি হারানো।
■ দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা, ঘোলাটে দৃষ্টি বা কোনো জিনিস দুটি দেখা।
■ মুখমণ্ডলের দুর্বলতা, খাবার খেতে না পারা বা মুখ থেকে খাবার গড়িয়ে পড়া।
■ শরীরের একপাশে অংশবিশেষ বা পুরো পাশ দুর্বল, ভারসাম্যহীন অথবা অসাড় হওয়া।
এসব উপসর্গের কোনোটা যদি হঠাৎ দেখা দেয়, তবে তা মস্তিষ্কের স্ট্রোকের লক্ষণ। অনেক সময় মৃদু মাত্রার স্ট্রোকও হতে পারে। কখনো কখনো অবশ্য সামান্য মাত্রায় কোনো উপসর্গ দেখা দেয়। কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এসব সমস্যা। কাজেই ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এ ধরনের কোনো উপসর্গই অবহেলা করা চলবে না।
সতর্কতা
বয়স ৫০ বছর পার হলেই সতর্ক হতে হবে। এ সময় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ মাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল আছে কি না, আর উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কি না, তা দেখতে হবে। ধূমপান বা অন্যান্য তামাক-জর্দা সেবন বর্জন করুন। দৈনিক কমপক্ষে আধঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত লবণ, অধিক ট্রান্স ফ্যাট-সমৃদ্ধ বেকারি বা ফাস্ট ফুডের খাবার, লাল মাংস এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
চিকিৎসা
ঘাড়ের রক্তনালিতে ব্লকের মাত্রা ও উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে ওষুধের মাধ্যমে অথবা ওষুধের পাশাপাশি অস্ত্রোপচার কিংবা বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে রিং বা স্টেন্ট সংযোজন করে চিকিৎসা করা হয়। আগেভাগে রোগনির্ণয় করে চিকিৎসা করতে পারলে অনেকাংশে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়।
* ডা. শরদিন্দু শেখর রায়, হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ