What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other তাঁর সিনেমার পাঁচালী (1 Viewer)

২ মে কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার, লেখক ও শিল্পী সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ। তাঁকে আমরা স্মরণ করছি শ্রদ্ধার সঙ্গে...

uIifFxD.jpg


বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বড় লেখক লিখেছিলেন নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের কথা। সে গ্রামে জলের ওপর উড়ে বেড়ায় জোনাকি। আর কাশবনে হাত ধরে দৌড়ে বেড়ায় দুই ভাই–বোন—অপু ও দুর্গা। আমাদের জাদুকর সত্যজিৎ রায় বড় যত্ন করে সেই অপু-দুর্গাকে বইয়ের পাতা থেকে তুলে আনলেন সেলুলয়েডের পর্দায়, ১৯৫৫ সালে। তাঁর বদৌলতে অপু–দুর্গার সঙ্গে সমগ্র বিশ্ব সেবার দারুণ বিস্ময় নিয়ে দেখল ঝিকঝিক রেলগাড়ি। ছায়াঘেরা আমবাগানে ভাই–বোনের লুকিয়ে কাঁচা আম খাওয়ার দৃশ্য মনে গেঁথে গেল সবার।

সেবারই প্রথম সিনেমা নামের জাদু দেখাতে শুরু করেন সত্যজিৎ। প্রথম জাদুতেই জিতে নেন দর্শকহৃদয়। তবে তোমাদের পথের পাঁচালী দেখার কারণ কিন্তু কিছুটা ভিন্নই হবে। তোমরা হয়তো রেলগাড়ি দেখে ঠিক বিস্মিত হবে না। তবে আমি বাজি ধরে বলতে পারি, ছোট্ট অপু যখন মিঠাইওয়ালার পেছনে দৌড়ে বেড়াবে, একচিলতে হাসি ফুটে উঠবে তোমার ঠোঁটের কোণে। দুর্গা যখন নিঃশব্দে মায়ের বকুনি খাবে, তখন নিজেদের কথাও মনে পড়ে যাবে। আর সিনেমার শেষ দৃশ্যে যখন অপু এক গোপন উদ্দেশ্য নিয়ে পুকুরপাড়ে গিয়ে দাঁড়াবে...থাক, এটা আর না বলি! তোমরাই বরং জানিয়ো অপুকে দেখে চোখ ছল ছল করেছিল কি না!

১৯৬৪ সালে মুক্তি পাওয়া টু সিনেমাটি তোমার দেখা অন্য যেকোনো সিনেমার চেয়ে নিঃসন্দেহে ভিন্ন হবে। এর অভিনেতা মাত্র দুটি শিশু। একে–অপরকে তাদের প্রিয় খেলনা দেখাচ্ছে—এতেই জমে ওঠে সিনেমার গল্প। পুরো সিনেমায় কোনো সংলাপ নেই, তবে গল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছুটে চলে মানানসই সংগীত। শুধু সংগীত আর অভিনয়ের ডানায় ভর করে সিনেমার গল্প কীভাবে এগোয়, তা জানতে ঝটপট দেখে নিতে পারো সিনেমাটি।

এবার বলি গুপী আর বাঘা নামের দুই সংগীতপ্রেমী বন্ধুর কথা। এদের সঙ্গে পরিচিত হতে চাইলে তোমাকে দেখতে হবে গুপী গাইন বাঘা বাইন সিনেমাটি। ভূতের রাজার সঙ্গে গুপী–বাঘার দারুণ খাতির। আরেকটা কথাও বলে রাখি, গুপী-বাঘার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর অন্তত এক সপ্তাহ তুমি সুর করে গাইবে, 'ভূতের রাজা দিল বর…'। গুপী গাইন বাঘা গাইন মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালে।

১১ বছর পর ১৯৮০ সালে হীরক রাজার দেশে সিনেমা দিয়ে আবারও পর্দায় ফিরেছিল গুপী-বাঘা। সেবার কিন্তু আর ভূতের রাজা ছিল না, ছিল সিংহাসনে বসা বিশালাকার হীরক রাজা। ছড়া আর গানে রাজার কাণ্ড, প্রজাদের গল্প আর যন্তরমন্তরের ধোঁকার কাহিনি বলেছিল গুপী-বাঘা। আর ছিল উদয়ন পণ্ডিত, যে সত্য বলে সোজা কথায়। তবে সত্য বললে সমস্যা কী? সেই সমস্যা আর সমাধানের গল্প দেখতে গুপী-বাঘা সিরিজের দ্বিতীয় পর্বটিও দেখে ফেলো।

ফেলুদাকে নিয়ে সত্যজিতের বানানো জমজমাট সিনেমার কথা না বললে চলবে কী করে! ফেলুদা সিরিজের সব সিনেমার আগে মাথায় আসে ১৯৭৪ সালে মুক্তি পাওয়া সোনার কেল্লার নাম। মুকুল নামের এক ছেলের হঠাৎ মনে পড়ে যাচ্ছে গত জন্মের স্মৃতি। সে স্মৃতিতে জয়সলমীর আছে, বিস্তীর্ণ মরুভূমি আছে। আর আছে এক সোনালি পাথরের কেল্লা। মুকুলের স্মৃতির খোঁজে বেরিয়ে পড়ে প্রদোষচন্দ্র মিত্র, মানে আমাদের ফেলুদা। ফেলুদার গল্প যারা পড়ে ফেলেছ, তারা তো বটেই, যারা পড়োনি, তারাও সময় করে দেখে ফেলতে পারো মুকুলের রহস্য উদ্ধারে উটের পিঠে চেপে ছুটে চলা থ্রি কমরেডসের অ্যাডভেঞ্চার!

১৯৭৯ সাল জাদুকর আবারও পর্দায় আনেন ফেলুদাকে। এবারের সিনেমার নাম জয় বাবা ফেলুনাথ। মরুভূমি থেকে এবার সোজা গঙ্গার ঘাটে; অর্থাৎ বেনারসে। দুর্গাপূজার ছুটিতে খুড়তুতো ভাই তপেস আর বন্ধু লালমোহনবাবুর সঙ্গে সেখানে বেড়াতেই গিয়েছিল ফেলুদা। তবে লড়াই করতে হলো মগনলাল মেঘরাজ নামের এক ভয়ানক লোকের বিরুদ্ধে। সে লোক এমনই ভয়ানক যে ফেলুদা পর্যন্ত একপর্যায়ে আক্ষেপ নিয়ে তোপসেকে বলেছিল, 'এবার গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেব রে!'
 

Users who are viewing this thread

Back
Top