What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অন্তঃসত্ত্বা নারীর করোনা হলে (1 Viewer)

QjpJmKn.jpg


বিগত এক বছরে করোনা মহামারি আমাদের ছেড়ে যায়নি, বরং নতুনরূপে নতুন ধরনে আরও মারাত্মক আকারে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে দ্বিতীয় ঢেউ দেখা যাচ্ছে, তাতে অপেক্ষাকৃত কম বয়স্ক তরুণ–যুবারাও অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন আর কেউ কেউ জটিলতায়ও পড়ছেন। এবার দেখা যাচ্ছে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বেশিসংখ্যক হারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই কম বয়স্ক নারীদের মধ্যে এমন অনেকেই পড়ে যেতে পারেন, যাঁরা গর্ভধারণ করেছেন বা করবেন। করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে এই নারীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

এখন বাচ্চা নেবেন?

অনেকেই হয়তো এই সময় সন্তান ধারণের পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁদের প্রতি আমাদের উপদেশ, অতিমারি নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখাই ভালো। করোনার সংক্রমণ গর্ভবতী নারী বা তাঁর অনাগত সন্তানের বাড়তি কোনো ক্ষতি করে বলে এখনো প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গ আক্রান্ত হওয়া, অক্সিজেন কমে যাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য ঝুঁকি যে কারও মতোই রয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ইত্যাদি সমস্যায় আগে থেকেই ভুগছিলেন। তার ওপর হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রচণ্ড চাপ, পরিবহনসংকট, বাইরে বের হলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি—সব মিলিয়ে এই সময়টা গর্ভধারণের জন্য খুব একটা ভালো সময় নয়। তাই সুযোগ থাকলে আর কিছুদিন সময় নিন।

যদি গর্ভকালে করোনা হয়

গর্ভধারণের শুরুর দিকে বা মাঝামাঝি কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তবে তাঁর চিকিৎসাব্যবস্থা আর দশজন করোনা রোগীর মতোই হবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মেডিসিন ও সংশ্লিষ্ট অন্য বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকেরা রোগের তীব্রতা অনুযায়ী নির্দেশিকা অনুসরণ করে চিকিৎসা দেবেন। অবশ্যই নিজে নিজে বা কারও পরামর্শে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখে কোনো ওষুধ সেবন করবেন না। গর্ভকালে করোনা হলে প্রয়োজন বোধ করলে বিশেষ শিল্ড ব্যবহার করে বুকের এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করতেও কোনো বাধা নেই।

গাইডলাইনে নির্দেশিত চিকিৎসা, যেমন স্টেরয়েড বা ডেক্সামেথাসোন, রক্ত পাতলা করার ওষুধ ইনোক্সাপাইরিন, দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে। অক্সিজেনের মাত্রার ওপর নির্ভর করে অক্সিজেনও। মৃদু মাত্রার রোগীরা বাড়িতে থেকেই সেবা–শুশ্রূষার মাধ্যমে সেরে উঠবেন। তবে অক্সিজেন কমে গেলে বা শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। করোনা সংক্রমণ হলেও গর্ভধারণ চালিয়ে যেতে কোনো সমস্যা নেই। বেশির ভাগই সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারবেন যদি নিজে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

আর যদি গর্ভধারণের একেবারে শেষ দিকে এসে কেউ করোনায় আক্রান্ত হন, তবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। প্রসব বা সিজারের সময় দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব, যাতে এর মধ্যে তিনি সেরে ওঠেন। আর যদি প্রসবব্যথা শুরু হয়ে যায় বা পানি ভেঙে যায় বা জরুরি পরিস্থিতি হয়, তবে আর দশজন মায়ের মতো স্বাভাবিক প্রসব বা সিজারিয়ান করা যেতে পারে, তবে সব সতর্কতা অবলম্বন করে। করোনা হলেই সিজারিয়ান লাগবে তা নয়, স্বাভাবিক প্রসবও সম্ভব। এ ক্ষেত্রে অপারেশন থিয়েটার বা লেবার রুমে সংক্রমণ প্রতিরোধের সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো পন্থা

তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই সময়টাতে বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে খুবই সাবধানে রাখা উচিত। মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি পালন করা, ভিড় এড়িয়ে চলা ইত্যাদি সযত্নে মানুন। এ সময় অকারণে বা বাজারসদাই করতে বাড়ির বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারও বাড়িতে যাবেন না, বাইরের কাউকে আসতেও বলবেন না।

বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে নিজেকে তার থেকে আইসোলেশন করে ফেলুন এবং মাস্ক পরে থাকুন। গর্ভকালীন অবস্থায় যে ৮ বার প্রসব–পূর্ববর্তী চেকআপ প্রচলিত আছে, করোনাকালে তার ৪টা অনলাইনে বা ভার্চ্যুয়ালি করার পক্ষে মত দিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। কর্মজীবী হলে হোম অফিসের সুবিধা নিন বা কাজে গেলে সব সময় মাস্ক পরে থাকুন। বারবার হাত ধোয়ার মতো সতর্কতা পালন করুন।

শারীরিক যেকোনো সমস্যায় আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনে বা অনলাইনে পরামর্শ করুন। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা, স্বাদহীনতা, দুর্বলতা ইত্যাদি যেকোনো উপসর্গে দ্রুততম সময়ে করোনার টেস্ট করিয়ে রাখুন। আর সন্তান প্রসবের সময় এগিয়ে এলে তার আগে আগেও একবার করোনা টেস্ট করতে হবে। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার খান, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করে ফিট থাকুন। অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ নেবেন না। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। সম্ভব হলে রোদে কিছুক্ষণ বসুন। ইমিউনিটি বাড়াতে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো পালন করুন।

* অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ এবং সদস্য, জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি
 

Users who are viewing this thread

Back
Top