What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঘরের অফিস এবার হোক গোছানো (1 Viewer)

bAqJoKI.jpg


করোনার সংক্রমণ বাড়ায় ৫ এপ্রিল থেকে দেশে চলছে এক সপ্তাহের লকডাউন। আবার ঘরে ফিরেছে মানুষ। অনেক কর্মজীবীর সঙ্গে আবার ঘরে ফিরেছে অফিসও। অনেকেই গত বছর হঠাৎ 'হোম অফিস' করেছিলেন। তাই ঠেকে শিখতে হয়েছে অনেক কিছু। তবে এবার একধরনের অভিজ্ঞতা তো আছেই। বাসায় অফিস করার জন্য কিছু বিষয় শুরুতেই গুছিয়ে নিলে পরে ঝামেলা কম হবে।

করপোরেট কোচের প্রধান পরামর্শক যিশু তরফদারও তা–ই মনে করেন, অনেক প্রতিষ্ঠান আবার নতুন করে হোম অফিসে গেছে। কেউ আবার গত বছর থেকে টানা বাড়িতেই অফিস করছেন। বাড়িতে অফিস করায় কর্মীর উৎপাদনক্ষমতা (প্রোডাক্টিভিটি) বাড়ছে। তবে বাড়িতে অফিসের কাজ করতে হবে অফিসের নিয়মেই।

কী সেই নিয়ম? অফিসে এসে যদি ১০টা-৫টা কাজ করতেন, এখন বাসায় বসেও সেটাকে রুটিন ধরে নিন। আর সেভাবেই নিজের কর্মপরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ কর্মীদের যে নির্দেশনা দেবে, সেটা বাড়িতে অফিস করলেও মেনে চলা জরুরি।

কাজ করুন নিয়ম মেনে

অফিসে গিয়ে কাজ করার জন্য আপনি রোজ যে সময়ে উঠতেন, এখনো সেই সময়েই ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। এরপর পরিচ্ছন্ন হয়ে নাশতা করুন। যিশু তরফদার বলেন, যিনি অফিসে যাওয়ার আগে শেভ করতেন, বাসায় অফিস হলেও শেভ করে নিন। ভার্চ্যুয়াল কোনো সভা–সেমিনার থাকলে তো অবশ্যই। চুলটাও পরিপাটি করে রাখা জরুরি। আপনি হয়তো আগে বাসার দূরত্বের সঙ্গে মিলিয়ে এক বা আধা ঘণ্টা আগে রওনা দিতেন। এখন তো সেই সময়টুকু বেঁচে যাচ্ছে। খাবার টেবিলে বসে আগে হয়তো নাকেমুখে খেয়ে দৌড়াতেন। এখন সময় নিয়ে পরিবারের বাকিদের সঙ্গে গল্প করতে করতে নাশতা সারুন। প্রয়োজনীয় কথা সেরে নিন স্বামী, স্ত্রী, সন্তান অথবা বাবা–মায়ের সঙ্গে। বাড়তি সময় হাতে থাকলে সেটাকে নিজের দক্ষতা বাড়াতেও কাজে লাগাতে পারেন।

কোন ঘরে কেমন অফিস

ঘরে বসে অফিস মানে আপনি বিছানায় শুয়েবসে কাজ করলেন, সেটা নয়। অফিসের মতোই বাসার একটি অংশ প্রস্তুত রাখতে পারেন। বাসায় যদি আলাদা ঘর ব্যবহারের সুযোগ থাকে তাহলে ভালো, নাহলে শোবার ঘরের একটি কোনা বেছে নিন। যেদিকে জানালা আছে, আলো–বাতাসের সুবিধা আছে, এমন কোণ বেছে নিতে পারেন। একটি টেবিল, চেয়ার আর ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার বসিয়ে নিন। টেবিলের ওপর রাখতে পারেন ছোট্ট কোনো গাছ। টেবিলল্যাম্প, দরকারি কাগজপত্র, ফাইল, কলম ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন এক পাশে। ইন্টারনেট সংযোগ হতে হবে শক্তিশালী, ব্রডব্যান্ড হলে ভালো। আপনি যেখানে বসেছেন, তার পেছন দিকটাও গুরুত্বপূর্ণ। জুম বা গুগল মিটের মতো ভিডিও চালু রাখতে হলে আপনার পেছনের দিকটা দেখা যাবে। তাই সেখানে সুন্দর কোনো ছবি, পর্দা ঝুলিয়ে দিতে পারেন। আপনার কাজের জায়গা হতে হবে শান্ত ও নিরিবিলি। যিশু তরফদার বলেন, 'সম্ভব হলে ঘরের দরজা বন্ধ করে অফিস করুন। পরিবারের কোনো সদস্যের দরকারে আগে টোকা দিতে বলুন দরজায়। আপনার ঘরে যে হুটহাট ঢোকা যাবে না, সেটা ছোটদের বুঝিয়ে বলুন।'

প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র

লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে এভাবে অফিস চলতে থাকবে বাড়িতে। তাই স্ট্যাপলার, স্টিকি নোট, পেনসিল, হেডফোন, পাওয়ার ব্যাংক, মাল্টিপ্ল্যাগ, জেমস ক্লিপের মতো ছোট জিনিসপত্রও গুছিয়ে হাতের কাছে রাখুন। আপনার দৈনন্দিন বাসার অফিস আরও সহজ করে দেবে এসব জিনিস। কাগজ ছাপাতে হলে একটা ছোট্ট প্রিন্টারও কিনে নিতে পারেন।

বাসাতেও পরিপাটি

হোয়াটস অ্যাপ, জুম বা গুগল মিট ভিডিও হলে তো পোশাক–পরিচ্ছদ অবশ্যই জরুরি। যিশু তরফদার জানান, 'আপনি যখন পরিপাটি পোশাকে থাকবেন, নিজের ভেতরে একধরনের উৎসাহ–উদ্দীপনা কাজ করে। তাই বাড়িতে অফিস করার সময়েও পরিচ্ছন্ন, আনুষ্ঠানিক (ফরমাল) বা সেমিফরমাল পোশাকে থাকা জরুরি। লুঙ্গি বা শর্টস পরে অফিসের কাজ করতে বসার দরকার নেই। মেয়েরা পরতে পারেন থ্রি–পিস, টপ বা শাড়ি।'

কাজে বিরতি ও খাবারদাবার

বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করলেও নিয়মিত বিরতি নিন। প্রতি ২৫ মিনিট বসে কাজ করার পর পাঁচ মিনিটের একটা ছোট্ট বিরতি নিন। এতে কাজ ভালো হবে। মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে। চা-কফি বা স্ন্যাকস খেতে ছোট্ট বিরতি নিতে হবে। দুপুরের খাবারের সময় হলে রুম থেকে বের হয়ে খাবার টেবিলে আসুন। কাজের টেবিলে বসে খেতে খেতে কাজ করার দরকার নেই। অফিসে যে সময়টুকু খাবারের বিরতি হিসেবে নিয়মিত নিতেন, এখানেও সেই সময়টুকু খাবারের পেছনে দিন।

পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, কাজ করতে করতে অনেক সময় আমরা বেশি খেয়ে ফেলি। যেহেতু সেই সময় অন্যদিকে মনোযোগ থাকে, তাই খাবারটা ঠিকমতো উপভোগ করা হয় না। আবার খেতে খেতে বেশি খাওয়া হয়ে পড়ে। তাই নিজেকে ফিট রাখতে বাড়িতে অফিস হলেও খাবারের টেবিলে এসে দুপুরের খাবার খেতে হবে।

বাসায় একা থাকলে চুলায় কিছু চাপিয়ে রেখে অফিসের কাজে বসা ঠিক হবে না। এতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেশি। নিজের খাবার নিজেকে রান্না করতে হলে সেটা অফিসের কাজে বসার আগে শেষ করে নিন। চা বা কফি বানিয়ে ফ্লাক্সে ভরে রাখতে পারেন। কাজের টেবিলে রাখতে পারেন একটি পানির বোতল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পর্যাপ্ত পানি পান করতেৃ হবে।

কাজ হোক আরও উন্নত

বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। যিশু তরফদার মনে করেন, বাড়িতে কাজ করার দিনগুলোতে 'সেলফ ডিসিপ্লিন' বাড়াতে পারলে নিজেকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা সহজ। নিজের যে দিকগুলো আরও উন্নতির সুযোগ আছে, সেটার চর্চা করে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। দেশ–বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান বাড়িতে বসে অফিস করার সুবিধা বুঝে গত বছর থেকে টানা হোম অফিসেই আছে। কেউ কেউ আবার অফিসে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ২০২২ বা ২৩ সালে। তবে করোনা পরিস্থিতি দেশের মানুষকে যে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তা থেকে হঠাৎ করে মুক্তি মেলা কঠিন। তাই সময়ের সঙ্গে থেকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে মিলিয়ে নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top