What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইতিহাসের সর্বকালের সবচেয়ে জঘন্য শাসক কে? (1 Viewer)

NewAlien

Member
Joined
Mar 30, 2021
Threads
96
Messages
128
Credits
5,511
ইতিহাসে অনেক কুখ্যাত শাসকের গল্প জানা যায়। তন্মধ্যে কয়েকজনের কথা তুলে ধরা হলঃ

কিন শি হুয়াং (শাসনকাল : ২৪৭-২১০ খ্রিস্টপূর্ব)

খ্রিষ্টপূর্ব ২২১ সালে তিনি একীভূত চীনের প্রথম সম্রাট হন এবং কিং রাজবংশের প্রথম সম্রাট হিসেবে রাজ্য শাসন করেন। এই শাসক কুখ্যাত পরিচিত পেয়েছিলেন তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী পন্ডিতদের হত্যার জন্য এবং তার সমালোচনামূলক সকল বই পোড়ানোর আদেশের জন্য। চীনের প্রাচীরের প্রথম পরিকল্পনাকারী তিনিই। সম্রাট রাজ্যের প্রতিটি সক্ষম পুরুষদের প্রাচীর নির্মাণে পাঠিয়েছিলেন। দেওয়াল উঠল ঠিকই-তবে অজস্র প্রাণের বিনিময়ে। নির্মাণশ্রমিকদের অনেকেই অধিক পরিশ্রম এবং অপর্যাপ্ত বিশ্রাম-আহারে মৃত্যুবরণ করে। একদিকে যেমন কল্যাণকর অর্থনৈতিক সংস্কার করেছিলেন অন্যদিকে বেপরোয়া রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শেষ জীবনে অমরত্ব লাভের বড় সাধ ছিল সম্রাটের। সে জন্য সন্ধান করে বেরিয়েছেন অবিনশ্বর জীবনলাভে বিভিন্ন অলৌকিক ওষুধ। কথিত আছে, অমরত্ব লাভের আশায় পারদের তৈরি ভুল ওষুধ খেয়ে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তবে বেচেঁ থাকাকালীন সময়েই নিজের সমাধিসৌধ নির্মাণ ছিলেন তিনি। জমকালো আয়োজনের সমাধিসৌধটির মেঝেতে পারদের জলাশয়, ছাদে হিরে আর রুপোর নক্ষত্র আর ছয় হাজারেরও বেশি টেরাকোট সৈন্যর মূর্তি। এর নির্মাণশৈলী গোপন রাখতে শ্রমিকদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ক্যালিগুলা (শাসনকাল : ৩৭-৪১ খ্রিষ্টাব্দ)

ক্যালিগুলা রোমান ইতিহাসের এক কলঙ্কিত নাম, অন্ধকার যুগের প্রতীক। রোমান সাম্রাজ্যের তৃতীয় রোমান সম্রাট ছিলেন তিনি। তার পুরো নাম গাইউস জুলিয়াস সিজার জারমানিকাস। ক্ষমতা পাওয়ার লোভে তিনি তরুণ বয়সে লিপ্ত হয়েছিলেন ষড়যন্ত্রে। সাম্রাজ্যের বৈধ উত্তরাধিকারী টাইবেরিয়াসকে তিনি কৌশলে হত্যা করিয়েছিলেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর শুরুতে তিনি তার সামাজ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ট্যাক্স উঠিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে উন্মাদের মতো হয়ে যান। অস্বাভাবিক আচরণ, অত্যাধিক খরচ, অত্যাচার, ধর্ষণ, খুনের জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেন। ধনীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম রাজনৈতিক প্রতারণার অভিযোগ আনতে পারলেই সমস্ত সম্পত্তি জবরদখল করে সম্রাটের কোষাগারে নিয়ে নিতেন। তিনি মৌরিতানিয়ার রাজা টলেমিসহ তার উত্তরাধিকারী মার্ক অ্যান্টনিকে রোমে ডেকে এনে হত্যা করে সমস্ত সম্পত্তি জবরদখল করেন। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মৃত্যুদণ্ড দিতেন এবং তাদের পরিবারকে বাধ্য করতেন সেই মৃত্যুদণ্ড দেখার জন্য। এছাড়া নিছক আনন্দের জন্য নির্বিচারে মানুষ খুন করতেন। নির্যাতনের দৃশ্য দেখে পুলকিত হতেন। একবার বিচারিক প্রাঙ্গণে হত্যা করার মতো আর কোনো অপরাধী ছিল না। ক্ষুধার্ত পশুরা গর্জন করছিল। ক্যালিগুলা সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন দর্শকদের হিংস্র পশুদের খাঁচায় ঠেলে দিতে। বোনদের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ছিল এবং তাদের বাধ্য করতো অন্য পুরুষদের কাছেও নিজেদের সমার্পন করার জন্য। নিজে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তার ধর্ষণকামী স্বভাবের দরুন অন্যের বিবাহিত স্ত্রীদের সঙ্গে বিছানায় যেতেন। ক্যালিগুলা মাত্র চার বছর রোমান সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন। এই অল্প সময় শাসন করে তিনি স্বৈরাচারী, খুনি ও উন্মাদ সম্রাট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।

রোমান সভ্যতায় মৃত সম্রাটদের মূর্তি তৈরি করে পুজা করা হতো। কিন্তু ক্যালিগুলা চাইতেন বেঁচে থেকেই লোকে তাকে পুজো করুক। এজন্য নিজেকে তিনি একসময় দেবতা হিসেবে ঘোষণা করেন। এ উপলক্ষে উপাসনালয় নির্মাণ করেন। উপাসনালয়ে নিজের মূর্তি স্থাপন করার নির্দেশ দেন। রোমান দেবতাদের পোশাক পরে ক্যালিগুলা জনগণের সামনে আসতেন। রোমান উপাসনালয়ে পুজার জন্য নিজের মূর্তি বসানোর নির্দেশ দেন। তার অস্বাভাবিক আচরণে ক্ষেপে উঠে রোমান সিনেটসহ সব শ্রেণীর জনগণ। ক্যালিগুলা তার ইনসিটাটাস নামক প্রিয় ঘোড়াকে নিজের পরামর্শদাতা নিয়োগ করেছিলেন। ৪১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি প্রক্টোরিয়ান গার্ডের ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে বেশিরভাগ রোমান সিনেটরের সমর্থন ছিল। ক্যালিগুলাকে প্রায় তিরিশ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। ক্যালিগুলার দেহরক্ষী ছিল। কিন্তু তারা আসার আগেই উন্মাদ সম্রাট নিহত হন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৮ বছর। তার স্ত্রী এবং কন্যাকেও হত্যা করা হয়।

আতিলা দ্য হান (শাসনকাল : ৪৩৪-৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দ)

ভাই খুন হওয়ার পর আতিলা দ্য হান হয়ে ওঠেন হুন জাতির শাসক। রোমান সাম্রাজ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর আক্রমনকারীদের একজন হয়ে ওঠেন। তিনি ছিলেন পশ্চিম ও পূর্ব রোমান সাম্রাজের অন্যতম ভীতির কারণ। আতিলা একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী, অত্যন্ত নিপীড়ক শাসক ছিলেন। একজন সাহসী যোদ্ধা হিসেবেও তাকে দেখা হয় ইতিহাসে। এই দুর্ধর্ষ যোদ্ধার শাসনামলে হুনিক সাম্রাজ উরাল নদী হতে রাইন নদী এবং দানিউব নদী হতে বাল্টিক সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তিনি দানিউব নদী দুইবার পার হন এবং বলকান অঞ্চল লুট করেন, কিন্তু কন্সট্যান্টিনোপল দখল করতে ব্যর্থ হন। আতিলা রোমান গল (আধুনিক ফ্রান্স) জয় করারও চেষ্টা চালান। তিনি ৪৫১ খ্রিস্টাব্দে রাইন নদী পার হয়ে অরেলিয়ানাম (অরলিন্স) শহর পর্যন্ত মার্চ করে যান। এখানে কাতালোনিয়ান প্লেইন্স এর যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন। এর কিছুদিন পরই তিনি ইতালি আক্রমণ করেন এবং উত্তর প্রদেশসমূহে ধ্বংসযজ্ঞ চালান কিন্তু রোম দখল করতে অসমর্থ হন। রোমানদের বিরুদ্ধে তার আরো অভিযান চালানোর পরিকল্পনা ছিল কিন্তু তার আগেই ৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে আতিলা মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর ব্যাপারে শোনা যায়, আগে থেকেই আতিলার নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা ছিল, তার ওপরে বিয়ের দিন রাতে অতিরিক্ত খাওয়া আর মদ্য পান করে নিজের ওপর তাল হারিয়ে ফেলেন এবং পরদিন সকালে তার নিজের রক্তে ডুবন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।

উ জেতিয়ান (শাসনকাল : ৬৯০-৭০৫ খ্রিষ্টাব্দ)

উ জেতিয়ানকে চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নারী হিসেবে মনে করা হয়। তিনি ছিলেন চীনের একমাত্র সম্রাজ্ঞী যিনি নিজ অধিকার বলে সাম্রাজ্য শাসন করতেন। বুদ্ধি এবং সৌন্দর্যের জন্য খ্যাতি পাওয়া জেতিয়ান মাত্র ১৪ বছর বয়সে সম্রাট তাইজংয়ের উপপত্নী হিসেবে রাজপ্রাসাদে আসেন। সম্রাট তাইজংয়ের মৃত্যুর পর সম্রাট গাওজং ক্ষমতায় আসেন। সম্রাট গাওজংয় এরও সাধারণ উপপত্নীর তালিকায় জেতিয়ান থাকলেও পরবর্তীতে নানা কূটকৌশলে দ্রুত সম্রাট গাওজংয়ের প্রিয় উপপত্নী হয়ে ওঠেন। ইতিহাসবিদদের মতে, এমনকি জেতিয়ান তার নিজের কন্যা সন্তানকে হত্যা করে খুনের দায় সম্রাজ্ঞী ওয়াংয়ের ওপর চাপিয়ে সম্রাজ্ঞীকে সম্রাট কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে নিজে সম্রাজ্ঞী হয়ে ওঠেন। সম্রাটের মৃত্যুর পর জেতিয়ান নিজের জৌষ্ঠ পুত্রকেও সম্রাটের আসনে অধিষ্ঠীত হতে দেননি। শাসকের ভূমিকায় নিজে অবর্তীন হন। প্রতিপক্ষকে উৎখাত করার জন্য তাদের পদচ্যুত করা, নির্বাসিত করা অথবা ফাঁসির কাষ্ঠে হত্যাকরাসহ বিভিন্ন নির্দয় কৌশল অবলম্বন করতেন জেতিয়ান।

চেঙ্গিস খান (শাসনকাল : ১২০৬-১২২৭)

বিশ্বের ইতিহাসে মোঙ্গল সম্রাট চেঙ্গিস খান একজন ভয়ংকর যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন চেঙ্গিস খান। এক সাধারণ গোত্রপতি থেকে নিজ নেতৃত্বগুণে বিশাল সেনাবাহিনী তৈরি করেছিলেন। ইতিহাসে তিনি অন্যতম বিখ্যাত সেনাধ্যক্ষ ও সেনাপতি। তাকে মঙ্গোল জাতির পিতা বলা হয়ে থাকে। তবে বিশ্বের কিছু অঞ্চলে চেঙ্গিস খান অতি নির্মম ও রক্তপিপাসু বিজেতা হিসেবে চিহ্নিত। বীভৎস ধ্বংসলীলা ও নিষ্ঠুরতার মধ্য দিয়ে তার প্রতিটি আক্রমণ ও বিজয় পরিচালিত হয়েছিল। একের পর এক রাজ্য দখল করতে তার নির্দেশে সেনারা যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, এতে ঝরে যায় কয়েক কোটি প্রাণ। কোনো দেশ দখল করার পর তিনি পরাজিত সম্রাটের কাউকেই বাঁচিয়ে রাখতেন না। এমনকি শিশুদেরও না।

তৈমুর (শাসনকাল : ১৩৭০-১৪০৫)

তৈমুর ছিলেন ১৪শ শতকের একজন তুর্কী-মোঙ্গল সেনাধ্যক্ষ। তিনি পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিজ দখলে এনে তিমুরীয় সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার কারণেই তিমুরীয় রাজবংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তার সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল আধুনিক তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক, কুয়েত, ইরান থেকে মধ্য এশিয়ার অধিকাংশ অংশ যার মধ্যে রয়েছে কাজাখস্তান, আফগানিস্তান, রাশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজিস্তান, পাকিস্তান, ভারত এমনকি চীনের কাশগর পর্যন্ত। তৈমুরের সৈন্যবাহিনী ছিল বিশ্বের ত্রাস। রাজ্য জয়ের যুদ্ধে সব জায়গাতেই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন তৈমুর ও অনেক জনপদ বিরান করে ফেলা হতো। সাবজাওয়ার রাজ্যে, যা বর্তমানে আফগানিস্তান, সেখানে তৈমুরের নির্দেশে টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছিল জীবিত একজন পুরুষের ওপর আরেকজনকে রেখে সিমেন্ট, বালি এবং পানি ‍মিশ্রিত করে। ইরানের ইসপাহানে বিদ্রোহের শাস্তি দিতে জনসাধারণকে গণহত্যার আদেশ দিয়েছিলেন এবং ৭০ হাজার মাথার সমন্বয়ে মিনার তৈরি করেছিলেন।

ভ্লাদ ৩ (শাসনকাল : ১৪৪৮; ১৪৫৬-১৪৬২; ১৪৭৬)

শূলে চড়ানোর মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি কুখ্যাত প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের ওয়ালেশিয়া রাজ্যের যুবরাজ তৃতীয় ভ্লাদ। শত্রুদের মৃত্যুদণ্ড দিতে ভ্লাদ শূল ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন, যা ছিল সবচেয়ে নৃশংস একটি পদ্ধতি। এতে শত্রুরা দারুণ ভয় পেত। কিন্তু পদ্ধতিটি ছিল রীতিমতো নিষ্ঠুর রুচির পরিচায়ক। ১৪৬২ সালে এক যুদ্ধে ভ্লাদের সৈন্যরা বন্দি করেছিল প্রায় ২০ হাজার তুর্কিকে। যাদের প্রত্যেককে শূলে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সে সময়ে ওটোম্যান সম্রাট দ্বিতীয় মেহমেত ওয়ালেশিয়া জয়ের জন্য আক্রমন চালান কিন্তু ভ্লাদের রাজধানীর কাছে এক অঞ্চলে শূলে চরানো ২০ হাজার মৃতদেহ দেখে, নিষ্ঠুরতা চাক্ষুষ করেই অসুস্থবোধ করেন। এছাড়া কোনো কোনো ইতিহাসবিদ দাবি করেছেন, ভ্লাদ মানুষের রক্ত পান করতেন। তাই এই যুবরাজ ড্রাকুলা পরিচয়েও পরিচিত। ইতিহাসবিদের মতে ব্রাম স্টোকারের বিখ্যাত উপন্যাস 'ড্রাকুলা' চরিত্র সৃষ্টি হয়েছিল ভ্লাদ ৩-এর ইতিহাসে উদ্বুদ্ধ হয়ে। ১৫ শো শতকের এক জার্মান কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছেম ভ্লাদ তার বন্দিদের সঙ্গে নিয়ে বসে খাবার খেতেন। তাদের টেবিলেই মেরে তাদের রক্তে রুটি ভিজিয়ে নিতেন। হাত ধুতেন শত্রুর রক্ত দিয়ে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top