What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গর্ভকালের খাওয়াদাওয়া (1 Viewer)

qQQTkSL.jpg


নারী জীবন সার্থক হয় মা ডাক শোনায়, সেটাই স্বাভাবিক। প্রতিটি মেয়েরই একটি অনন্ত আকাঙ্ক্ষার বিষয় হচ্ছে মা হওয়া। গর্ভধারণ থেকে শিশুর জন্ম দেওয়া পর্যন্ত একজন মাকে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়। দশ মাস অনেক কষ্টের পর একজন নারী মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন।

fGjY1OH.jpg


আপনি গর্ভধারণ করেছেন, তার মানে কিন্তু এই নয় যে আপনাকে শুরু থেকেই দ্বিগুণ খাবার খেতে হবে

আজকের এই বিজ্ঞাননির্ভর সময়েও আমাদের দেশের মায়েরা অনেকটাই মান্ধাতা আমলের চিন্তাভাবনা পোষণ করে থাকেন, যা খুবই দুঃখজনক। এর মধ্যে একটি অন্যতম ভুল ধারণা হচ্ছে, গর্ভধারণের দিন থেকে দ্বিগুণ খাবার খেতে হবে। মায়েরাও সেটা মানতে শুরু করে দেন। আপনি গর্ভধারণ করেছেন, তার মানে কিন্তু এই নয় যে আপনাকে শুরু থেকেই দ্বিগুণ খাবার খেতে হবে। আবার এটাও ভাববেন না যে এ সময় মায়ের বাড়তি যত্নের দরকার নেই। অবশ্যই বাড়তি যত্নের দরকার আছে, তবে সেটা কখনোই মাত্রাতিরিক্ত নয়।

একজন মায়ের পুরো গর্ভকালে ৯-১২ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়াটা স্বাভাবিক। এর বেশি হলে সেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, আমাদের দেশের মেয়েরা ১৫ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়িয়ে ফেলেন, যা সন্তান প্রসবের সময় শিশু ও মা উভয়ের জন্য অনেক ঝুঁকির কারণ হয়ে ওঠে। আর গর্ভধারণ করার আগে থেকেই যদি আপনি একটু বেশি ওজনের হয়ে থাকেন, তাহলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।

মনে করুন, আপনার উচ্চতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ওজন থাকার কথা ৬০ কেজি। কিন্তু আপনার ওজন আছে ৭০ কেজি। আপনি গর্ভধারণ করার পর সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত আপনার ওজন আরও ২০ কেজি বেড়ে ৯০ কেজি হয়ে গেল। এখন আপনার অবস্থা কী হতে পারে, আপনিই একটু ভেবে দেখুন। আবার আলট্রাসনোগ্রাফি করে দেখলেন যে শিশুর ওজন অনেক কম। তার মানে মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে শুধু আপনার ওজনই বেড়েছে কিন্তু শিশুর ওজন ঠিকভাবে বাড়েনি।

এখন দেখা যাবে, অতিরিক্ত ওজনের কারণে আপনার পায়ে পানি চলে এসেছে, আপনি বিছানায় শুয়ে থাকলে আর উঠতে পারছেন না, সারা রাত ঘুমাতে পারছেন না, ডায়াবেটিস হয়ে যাচ্ছে, বিপি বেড়ে যাচ্ছে—এমন বিভিন্ন ধরনের জটিলতা যেন আপনাকে ঘিরে রেখেছে। ফলাফল হিসেবে আপনার ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছেন, ঠিক সময়ের আগেই সিজার করে সন্তান প্রসব করাতে হবে। আপনি একটি কম ওজনের অপরিণত শিশুর জন্ম দিচ্ছেন। জন্মের পর থেকেই আপনার শিশু বুকের দুধের ঘাটতিতে ভুগবে। অসুখ-বিসুখ যেন আপনার শিশুর সঙ্গে খেলার সাথির মতো লেগে থাকবে।

KJxXClo.jpg


পুরো গর্ভকালে খুব সতর্কতার সঙ্গে খাদ্যতালিকা মেনে চলুন।

তাই পুরো গর্ভকালে খুব সতর্কতার সঙ্গে খাদ্যতালিকা মেনে চলুন, যেন আপনি এবং আপনার শিশু দুজনই ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারেন। এ জন্য অন্য কারও পরামর্শ না শুনে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউব বিশেষজ্ঞদের টিপস গ্রহণ না করে বরং একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

একজন পুষ্টিবিদ আপনার পুরো গর্ভকালকে তিন ভাগে ভাগ করে আপনার জন্য একটি খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করে দেবেন। কোন সময়ে কোন খাবার কী পরিমাণে খেতে হবে, তা ঠিক করে দেবেন। সেটা মেনে চললে গর্ভকালের পুরো যাত্রায় আপনার নিজের ওজন যেমন ঠিক থাকবে, তেমনি আপনার শিশুও সুস্থ–স্বাভাবিকভাবে সঠিক ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে। মা এবং নবজাতক দুজনেরই সঠিক ওজন ভবিষ্যৎ সুস্থতার জন্য জরুরি।

লেখক: মো. ইকবাল হোসেন | পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top