What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ওষুধমুক্ত জীবনের জন্য গ্লাইসেমিক সূচক জানা জরুরি (1 Viewer)

XSDkUdj.jpg


আধুনিক চিকিৎসায় ডায়াবেটিস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; মানুষ এখন ডায়াবেটিস নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। অথচ ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা সুগার লেভেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মানুষের নানা ধরনের রোগের গভীরে প্রভাব বিস্তার করে; যা এমনকি মানুষের জীবন হরণের কারণও হতে পারে। বিশেষ করে কিডনি বিপর্যয়, দৃষ্টিশক্তি হারানো, দাঁত ও ত্বকে প্রভাব ইত্যাদি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সুগার লেভেলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সুগার লেভেল সঠিক মাত্রায় রাখার জন্য ইনসুলিন ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম উপায় বলে স্বীকৃত।

ডায়াবেটিস রোগে যাঁরা ভুগছেন এবং যাঁদের রক্তে চিনির মাত্রা বেশি থাকে, তাঁদের কার্বোহাইড্রেট কম খেতে বলা হয়। কিন্তু কার্বোহাইড্রেট আমাদের প্রধান খাদ্য উপাদান, তাই কার্বোহাইড্রেট খেতেই হবে। আর কার্বোহাইড্রেট সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, কোলাজেনের কারণে রক্তের চিনি কোষে পৌঁছায় না। যখন আমরা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাই, আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট থেকে চিনি ও শ্বেতসার ভেঙে শর্করা বা গ্লুকোজ তৈরি করে, যা রক্তের সঙ্গে মিশে যায়।

আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই, তা ইনডেক্স মেনে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদেরও সুগার লেভেল বাড়বে না। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার খেলেও সেটা হবে না। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ইনডেক্স মেনে চলতে পারলে ওষুধমুক্ত থাকা সম্ভব বলে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অভিমত।

ডায়াবেটিসকে বলা হয় লাইফস্টাইল ডিজিজ। লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে টাইপ টু ডায়াবেটিসে খাদ্য ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে ওষুধমুক্ত জীবন যাপন করা সম্ভব। এই লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে যে জ্ঞান জরুরি, তা হচ্ছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সম্পর্কে জানা। আমরা যে খাবার গ্রহণ করি, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বলে একটি সূচক আছে; যার ইনডেক্স যত বেশি থাকে, তা ততই শরীরের জন্য খারাপ।

আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই, তা ইনডেক্স মেনে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদেরও সুগার লেভেল বাড়বে না। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার খেলেও সেটা হবে না। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ইনডেক্স মেনে চলতে পারলে ওষুধমুক্ত থাকা সম্ভব বলে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অভিমত।

তাহলে কোন কার্বোহাইড্রেট খাব?

প্রতিদিনের ক্যালরির প্রায় ৪৫–৬৫ ভাগ আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে। কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা এনার্জি বা ক্যালরি পাই, যা আমাদের কোষের শক্তি, দৈহিক তেজ, কর্মক্ষমতা, তাপ উৎপাদন ও চর্বি গঠনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। এ–জাতীয় খাবারই আমাদের দেহ গঠন ও দেহ সংরক্ষণের প্রধান উপাদান। আমাদের দেহে প্রতি ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ৪.১ ক্যালরি দেয়।

2rWYPoD.jpg


প্রতিদিনের ক্যালরির প্রায় ৪৫–৬৫ ভাগ আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে

বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে, সেসব কার্বোহাইড্রেট রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম বা মাঝারি থাকে, সেগুলো রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না। তাই যাঁদের শরীরে ব্লাড সুগার সাধারণের চেয়ে বেশি, তাঁদের যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকে, তা কম খাওয়া ভালো।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের প্রকারভেদ

সাধারণভাবে, কোনো খাবার যত বেশি প্রক্রিয়াজাত হয়, তত বেশি তার জিআই হয় এবং কোনো খাবারে ফাইবার বা ফ্যাট বেশি থাকলে জিআই কম হয়।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তিন প্রকারের হয়—নিম্ন, সহনীয় ও উচ্চ। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স, এটি আপনার রক্তে শর্করার উত্থানকে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ করে, তার ওপর ভিত্তি করে একটি খাদ্যকে একটি সংখ্যা বা স্কোর দেয়। খাঁটি গ্লুকোজকে (চিনি) ১০০-এর মান দেওয়া হয়, এমন খাবারগুলো শূন্য থেকে ১০০ স্কেলে র‌্যাঙ্ক করা হয়। কোনো খাবারের গ্লাইসেমিক সূচক যত কম হয়, সেই খাবার খেয়ে ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার উত্থান ঘটে। সাধারণভাবে, কোনো খাবার যত বেশি প্রক্রিয়াজাত হয়, তত বেশি তার জিআই হয় এবং কোনো খাবারে ফাইবার বা ফ্যাট বেশি থাকলে জিআই কম হয়।

এবার জানতে হবে কোন কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কতটা আছে। নিচে অনেকগুলো কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কত তা দেওয়া হলো।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা ধরা হয় নিম্ন ৫৫-এর নিচে, সহনীয় ৫৬ থেকে ৬৯, উচ্চ ৭০ থেকে ওপরে।


  • সাদা ময়দার রুটি ৭৫-৭৭
  • লাল গমের আটার রুটি ৫৩-৫৫
  • ময়দার পরোটা ৭৭-৮০
  • ঘরে বানানো লাল আটার চাপাতি ৫২-৫৬
  • সাদা চালের ভাত ৭৩-৭৭
  • লাল চালের ভাত ৬৮-৬৯
  • বার্লিতে মাত্র ২৮ (যা খুবই নিরাপদ)
  • মিষ্টি ভুট্টা ৫২-৫৭
  • চালের নুডলস ৫৩-৬০
  • কর্নফ্লেক্স ৮১-৮৭
  • বিস্কুট ৬৯-৭১
  • ওটস ৫৫-৫৭
  • ইনস্ট্যান্ট ওটস ৭৯-৮২

ফল

  • আপেল ৩৬-৩৮
  • কমলা ৪৩-৪৬
  • কলা ৫১-৫৪
  • আনারস ৫৯-৬৭
  • আম ৫৬-৫৯
  • তরমুজ ৭৬-৮০
  • খেজুর ৪২-৪৬

তবে ফলের জুস করলে ইনডেক্স বেড়ে যায়

UzZ9m2V.jpg


ফলের জুস করলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেড়ে যায়


সবজি

  • আলু ৮৭-৯১
  • গাজর ৩৯-৪৩
  • মিষ্টি আলু ৬৩-৬৯
  • মিষ্টিকুমড়া ৬৪-৭১
  • কাঁচকলা ৫৫-৬১
  • মিক্সড ভেজিটেবল সুপ ৪৮-৫৩ (টেস্টিং সল্ট ছাড়া)

দুগ্ধজাত খাদ্য


EyRNlUn.jpg


পূর্ণ ননীযুক্ত দুধের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৩৯-৪২


  • পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ ৩৯-৪২
  • ননীমুক্ত দুধ ৩৭-৪১
  • আইসক্রিম ৫১/৫৪
  • দই ৪১/৪৩
  • সয়ামিল্ক ৩৪/৩৮

অন্যান্য

rIMhVUJ.jpg


ডার্ক চকলেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৪০-৪৩


  • ডার্ক চকলেট ৪০-৪৩
  • পপকর্ন ৬৫-৭০
  • পটেটো চিপস ৫৬-৫৯
  • রাইস ক্র্যাকার্স ৮৭/৮৯
  • সফট ড্রিংকস ৫৯-৬২
  • সাধারণ চিনি ১০৩-১০৬
  • মধু ৬১-৬৪

এই তালিকা ধরে খাওয়ার ক্ষেত্রে ইনডেক্স মেনে চলা যায় তাহলে ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল আস্তে আস্তে কমতে থাকবে এবং হয়তো একসময় ইনসুলিনের প্রয়োজন না–ও হতে পারে। তাই কম ইনডেক্সের খাবার গ্রহণের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

* লেখক: আলমগীর আলম | খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top