What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সৌন্দর্য চিকিৎসায় মাইক্রোডার্মাব্রেশন (1 Viewer)

1H31Mgw.jpg


যারা একটু বেশি সৌন্দর্য সচেতন, তাঁরা ত্বকের মালিন্য দূর করতে ফেসিয়ালের পাশাপাশি মাইক্রোডার্মাব্রেশনের সহায়তা নিচ্ছেন। প্রায় ননইনভেসিভ (শরীরে ছুরি, কাঁচি, সূচ ঢোকানো হয় না) এই প্রক্রিয়ায় সহজে, কম সময়ে ও অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভাবে চেহারার সরু ভাঁজ, বলিরেখা, এজ স্পট, ফ্রেকলস, ওপেন পোরস, অসুখ বা ব্রণ-র দাগ সব ম্যাজিকের মতো মুছে ফেলা যায়। মুখে তো বটেই, পছন্দসই পোশাক পরার অভিপ্রায়ে অনেকে হাতে, পায়ে বা শরীরের অন্য অংশেও মাইক্রোডার্মাব্রেশন করিয়ে নেন।

মাইক্রোটেকনিকের কেরামতি:

আগে ত্বক সুন্দর করে তোলার চিকিৎসার মধ্যে ডার্মাব্রেশনের খুব চল ছিল। ত্বকে দাগ, ছোপ, গর্ত থাকলে সেটিকে সমান করাতে গিয়ে 'ডার্মিস'কে 'অ্যাব্রেট' করা হত। অর্থাৎ চামড়ার উপরের অংশটাকে কেটে তুলে ফেলা হত। আলু, বেগুনে পোকা থাকলে যেমন যে স্তরে পোকার অংশটি রয়েছে, সেটা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, এ-ও অনেকটা তাই। শুনতে অদ্ভুত হলেও প্রক্রিয়াটি দারুণ কার্যকর। তবে ঝঞ্ঝাট ছিল প্রচুর। অজ্ঞান করার দরকার হত, ভর্তি থাকতে হত, বাইরে বেরোনোয় বিধিনিষেধ থাকত। এটিরই একটি স্বাচ্ছন্দ্যযুক্ত ও আধুনিকতর 'মাইক্রোটেকনিক' হল মাইক্রোডার্মাব্রেশন।

সূক্ষ্ম যন্ত্র ও উচ্চমানের উপকরণের সাহায্যে দাগ-গর্তযুক্ত ত্বকের উপরের অংশ তুলে দেওয়া হয়। ইটালিতে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগে এই পদ্ধতিটির উদ্ভব হয়। পরের বছরই ইউরোপের অন্যান্য দেশে মাইক্রোডার্মাব্রেশনের চল শুরু হয়। ইউএসএএফডিএ এটিকে ১৯৯৬ সালে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকে, প্রায় ২৪ বছর ধরে ভারতে মাইক্রোডার্মাব্রেশন করা হচ্ছে।

এটি একটি ব্যথাহীন মাইক্রোইনভেসিভ পদ্ধতি। অর্থাৎ এফএনএসি-র সাহায্যে ত্বক পরিষ্কার করা হয়। অজ্ঞান করার বা ইঞ্জেকশনের দরকার হয় না। তুলোয় অ্যালকোহল-বেসড ক্লিনার নিয়ে ত্বক ভাল ভাবে পরিষ্কার করে দাগ-গর্ত-ক্ষত মেরামত করা হয়। ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের উপরে একটি ব্যাটারিচালিত হ্যান্ড ডিভাইস ধরা হয়। তা আপনা হতে ঘুরে ঘুরে দাগ-ছোপের স্তরটি কুরে কুরে তুলে দেয়। মাইক্রোডার্মাব্রেশনের চল্লিশ মিনিট আগে অ্যানাস্থেটিক জেল লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ট্রিটমেন্টের সময়ে কোনও সংবেদন অনুভূত হয় না। মোটামুটি তিন ধরনের মাইক্রোডার্মাব্রেশনের চল আছে।

১. ডায়মন্ডটিপ হ্যান্ডপিস: যন্ত্রের মুখে হিরে থাকে। চাপ প্রয়োগ করে ত্বকের এক্সফোলিয়েশন করায়। যে অংশটি উঠে গেল, তা যন্ত্রই সাফ করে দেয়। অ্যাপ্লিকেটর এতটাই নিরাপদ যে, চোখের কাছাকাছি অংশে অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।

২. ক্রিস্টাল মাইক্রোডার্মাব্রেশন: অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বাইকার্বনেট ইত্যাদি স্ফটিকের সূক্ষ্ম গুঁড়ো স্প্রে করে চাপ দেওয়া হয়। ত্বকের মৃত কোষ উঠে আসে। মেশিনের ভ্যাকুয়াম সাকশন প্রক্রিয়ায় মৃত কোষ পরিষ্কার করে দেয়।

৩. হাইড্রোডার্মাব্রেশন: পরিস্রুত জল ব্যবহার করে ডার্মাব্রেশন করা হয়।

সাধারণত কোলাজেন নষ্ট হলেই ত্বকে ভাঁজ পড়ে। এই পদ্ধতিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত অংশে কোলাজেন তৈরি করে ত্বকের পুনরুজ্জীবনে সহায়তা করে। ত্বকের কতখানি অংশে ট্রিটমেন্ট হবে, তার উপরে নির্ভর করে ডার্মাব্রেশনে কত সময় লাগবে। মোটামুটি প্রত্যেক সিটিংয়ে পাঁচ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে।

এই চিকিৎসার খরচ নির্ভর করে কোন মেশিনে করছেন, ত্বকের অবস্থা কেমন, কতক্ষণ ধরে হচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ের উপরে। প্রত্যেক সিটিংয়ে ৩০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

কয়েকটি সাবধানতা:

এই প্রক্রিয়াগুলির কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে লালচে বা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। বরফ ঘষলে ঠিক হয়ে যাবে। চিকিৎসার পরে বাড়িতে থাকলে দিনে অন্তত দু'-তিন বার ময়শ্চারাইজ়ার লাগাতে পারেন। অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম লাগাতে পারেন। তবে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার দরকার নেই।

ট্রিটমেন্টের পরের দিন থেকেই বাইরে যাওয়া যেতে পারে। তবে উপরের পরতটা 'পিল অফ' করে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে ত্বক একটু স্পর্শকাতর হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দিন সাতেক চড়া রোদ এড়িয়ে চলা ভাল। নতুন ত্বক গঠিত হলে আর সমস্যা থাকবে না। তবে এর মধ্যে বাইরে বেরোলে দিনে তিন-চার বার ময়শ্চারাইজ়ারের উপরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এই চিকিৎসার পরে মুখে অন্তত দু'দিন সুগন্ধি বা রেটিনয়েড অ্যাসিড, আলফা হাইড্রক্সিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ বিউটি ক্রিম লাগাবেন না। জ্বালা করতে পারে।

১৮ বছর হলে মাইক্রোডার্মাব্রেশন করানো যেতে পারে। এক মাস অন্তর এটি করালে ভাল। তবে, যাঁদের ত্বক ততটা সেনসিটিভ নয়, পিগমেন্টেশন বা ফোটোড্যামেজ (রোদে বেরোলে ক্ষতি) তেমন হয় না- তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার সুফল আরও কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতেই পারে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top