What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made ইলেকট্রিক ওয়েভ (1 Viewer)

Joined
Aug 23, 2020
Threads
74
Messages
111
Credits
7,126
রাব্বি অনেকক্ষণ যাবত ওর স্মার্ট ফোনটার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে৷ কিছু করছেও না৷ ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা বিষয় ওকে খুব ভাবাচ্ছে৷ রাব্বির এই অস্বাভাবিক আচরণ এতক্ষণ যাবত খেয়াল করছিল ওর বেস্ট ফ্রেন্ড নিলয়। নিলয় রাব্বিকে ঠিক বুঝতে না পারায় ও প্রশ্ন করেই ফেলে।

- কিরে কি হইছে তোর? এভাবে ফোনের দিকে তাকায় আছিস ক্যান?
- দোস্ত আমার মনে হয় কি জানিস, এই ফোন আমাদের সারাদিন নজরে রাখে৷ আমরা কি বলি, কি করি সব এই ফোন খেয়াল রাখে। মানে আমাদের স্পাই করে৷

রাব্বির কথা শুনে ক্যাম্পাসের অনেকেই রীতিমতো হতভম্ব। নিলয় ওকে ধমক দিয়ে বলে,

- ধুর ব্যাটা! পাগল হইছছ নাকি? কি যা তা বলতাছছ! কিছু খাইছছ তাই না?
- দেখ আমি মজা করতাছি না। বাট কয়েকদিন যাবত অনেক কিছু খেয়াল করতাছি আমি। আমার মনে হয় দোস্ত এই স্মার্ট ফোন আমাদের কন্ট্রোল করতাছে৷ আমরা এই ফোনের কমান্ড অনুযায়ী চলি।
- ভাই তুই নিশ্চিত পাগল হইছছ। নাকি খিদা লাগছে বল? তাও এমন আজগুবি কথা বকিস না প্লিজ। সবাই কেমনে তাকায় আছে তোর দিকে দেখ৷

রাব্বি চুপচাপ উঠে পড়ে। ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ফোনটা পকেটে ভরে সোজা হাঁটা দেয়৷ পিছন থেকে নিলয় বলে উঠে,

- কিরে কই যাস? আড্ডা দিবি না?

রাব্বি আর কিছু না বলেই সোজা বাসায় চলে আসে৷ এই স্মার্ট ফোনের অজানা সব রহস্য ওকে বের করতে হবে৷ রাব্বি বাসায় এসে বেল দিতেই ওর ছোট বোন দরজা খুলে। রাব্বি ভিতরে ঢুকার সময় খেয়াল করে ওর বোনের হাতে ফোন। রাব্বির নজর যেতেই ওর বোন ফোনটা লুকিয়ে ফেলে ভয়ে৷ রাব্বি কিছু না বলে ওর রুমে যেতে নেয়৷ যাওয়ার পথে দেখে ওর মা ফোনে কথা বলছে আর রান্না করছে। ছেলে যে এসেছে তার কোন খবরই নেই৷ যেন ফোনটা ওর মাকে রোবট বানিয়ে ফেলেছে৷ রাব্বি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ওর রুমে যায়৷ বিছানার উপর ফোনটা ফেলে সোফায় বসে ফোনটার দিকে ও তাকিয়ে থাকে। মাথার উপর ফ্যানটা ভো ভো করে ঘুরছে। বাইরে শহরের বিষাক্ত কোলাহল। রাব্বি মাথার পিছনে দু'হাত দিয়ে এক ধ্যানে ওর ফোনটার দিকে তাকিয়ে আছে৷ যেন ও কিছু একটার জন্য অপেক্ষা করছে৷

হঠাৎই ওর ফোনটার স্ক্রিনের লাইট জ্বলে উঠে। মানে কেউ ম্যাসেজ দিয়েছে৷ রাব্বি বিছানা থেকে ফোনটা তুলে ওর হাতে নেয়৷ চেক করে দেখে ওর পুরনো ফ্রেন্ড মাইশা ম্যাসেজ দিয়েছে ওকে৷ রাব্বি ম্যাসেজ এর দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে, আমার এখন কি করা উচিৎ? মাইশার সাথে চ্যাট নাকি নিজেকে সময় দেওয়া? এ কথা ভাবতেই আবার টুংটুং করে ম্যাসেজ। রাব্বি এবারও চুপ করে তাকিয়ে আছে। কোন রিপ্লাই দিচ্ছে না। এবার নোটিফিকেশন আসে ইউটিউব থেকে। নতুন ভিডিও এসেছে তা দেখার জন্য। আবার নোটিফিকেশন আসে ফেইসবুক থেকে। এভাবে একের পর এক আহবান আসছে শুধু। রাব্বি চাইলেও না পারছে না মুখ ফেরাতে৷ সত্যি বলতে কেউই পারবে না। কারণ প্রতি মুহূর্তেই নতুন কিছুর তথ্য দিচ্ছে এই ফোন৷ আকৃষ্ট করছে নিজের প্রতি। তবে আজ রাব্বি দৃঢ়ভাবে বসে আছে৷ কোন ভাবেই এই ফোনকে ওকে কন্ট্রোল করতে দেওয়া যাবে না৷ ও ফোনটাকে আবার বিছানার উপর ছুড়ে মেরে সাওয়ার নিতে চলে যায়। কারণ ওকে দুপুরের নামাজ পড়তে হবে৷ কিন্তু এই ফোন ওকে তা করতে দিচ্ছিলো না। রাব্বি সাওয়ার নিয়ে নামাজ পড়ে এসে দেখে ওর ছোট বোন এখনো ফোন নিয়ে বসে আছে৷ ফোনের দিকে তাকিয়ে হাসছে৷ রাব্বি আড়ালে তা দেখে ওর মায়ের কাছে যায়৷ গিয়ে জিজ্ঞেস করে,

- মা রান্না হয়েছে?
~ না রে৷ আর ১ ঘন্টা লাগবে৷ তোর আন্টির সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে সময় গেল টেরই পেলাম না।
- রান্নার পরে কথা বলতা।
~ আরে মন চাইলো তাই কল দিলাম। ভাবলাম অল্প সময় কথা হবে৷ কিন্তু দেখ কথা বলতে বলতে অনেক সময় চলে গেল। তোর কি বেশী ক্ষুধা লাগছে?
- না। তুমি রান্না শেষ করো।
~ আচ্ছা৷

রাব্বি হতাশ হয়ে ড্রয়িং রুমে সোফায় এসে বসে। ওর মাথায় যেন শুধু এই স্মার্ট ফোন এর বিষয়টাই ঘুরছে৷ রাব্বি কড়া গলায় ওর ছোট বোন ঈশিতাকে ডাক দেয়। ঈশিতা দ্রুত চলে আসে। রাব্বি রাগী গলায় বলে,

- কয়টা বাজে এখন?
~ ২.২৯ মিনিট। (ফোনের দিকে তাকিয়ে)
- তোর চোখের সামনে দেয়ালে ঘড়ি ঝুলানো। তা না দেখে ফোনের দিকে তাকালি ক্যান? সারাদিন এই ফোন নিয়ে বসে থাকিস। নামাজ কালামের কোন খবর নাই। ফোন আমার কাছে জমা দে। তারপর গোসল করে নামাজ পড় যা।

ঈশিতা মাথা নাড়িয়ে না করে। রাব্বি চোখ গরম করলে ঈশিতা ভয়ে ফোন জমা দিয়ে চলে যায়৷ রাব্বি ঈশিতার ফোনটা পাশে রেখে ভাবছে, কি এমন আছে এই ফোনে যে ভাই-বোনের সম্পর্কের মধ্যে ব্যবচ্ছেদ আনলো। তাহলে কি সত্যিই এই ফোন আমাদের কন্ট্রোল করে? নিশ্চয়ই এই ফোন আমাদের কন্ট্রোল করে৷ আমরা বাস্তব দুনিয়া থেকে হারিয়ে যাচ্ছি এই ফোনের জন্য। এর রহস্য আমাকে বের করতেই হবে৷ রাব্বি এসব ভেবে ওর রুমে চলে যায়। অনেক তথ্য ওকে বের করতে হবে। একটা ফোন বানাতে কি কি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এবং কীভাবে এই ফোন সারা বিশ্বের সাথে সংযোগ রাখতে পারে তা ওকে ভালো ভাবে জানতে হবে। রাব্বি ওর ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে। অনেক কিছু জানতে হবে ওকে। এদিকে ওর ফোনটা বারবার ওকে ডাকছে। একের পর এক ম্যাসেজ, কল, নোটিফিকেশন আসছেই। ও যে কাজটা করবে তা যেন ওকে করতেই দিচ্ছে না। রাব্বি শেষমেশ ফোনটা অফ করে ঈশিতার ফোনের পাশে রেখে দেয়।

রাত ১ টা। রাব্বি এখন অনেক সব কিছু না জানলেও অনেক কিছু জেনে গেছে এই স্মার্ট ফোন সম্পর্কে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো ইলেকট্রিক ওয়েভ! এই ইলেকট্রিক ওয়েভই সব কিছুর মূল। এই ইলেকট্রিক ওয়েভ কতটা ভয়াবহ আমাদের জন্য তা ভেবেই রাব্বির ভিতরটা কেঁপে উঠে। হঠাৎই রাব্বির ফোনে আলো উঠে। কিন্তু ওর ফোন তো অফ ছিল! তাহলে কীভাবে অন হলো। রাব্বি ফোন হাতে নিয়ে দেখে...

চলবে..
 

Users who are viewing this thread

Back
Top