গুম হবার সঠিক ঠিকানা
এবারো দীপু এস.এস.সি পরীক্ষায় উর্তীর্ণ হতে পারলো না। খবরটা সে সন্ধ্যা রাতেই জেনে গেছে তার এক ওস্তাদ বন্ধুর কারিশমাতে। যদিও আগামীকাল সকালে অফিসিয়ালী ফলাফল প্রকাশ পাবে। তাই রেজাল্ট বেরোবার আগের রাত থেকেই প্ল্যান চলছিলো মাথায়। কাল সকালে যখন সবাই রেজাল্ট দেখায় ব্যস্ত থাকবে তখন শ্রেফ তার উধাও হয়ে যেতে হবে। কিন্তু কোথায় যাওয়া যায়, সেটা নিয়েই ভাবনা চলছে রাতভর। অবশেষে শেষ রাতের দিকে বিদ্যুতের মতোই মাথাটা খুলে গেলো তার। ঠিকই তো, ওখানে গেলেই তার সবদিক দিয়ে ভালো হয়। রথে চড়া, আবার কলাও বেচা... কিন্তু রাহা খরচের জন্য যে তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই ! সারা রাতের ভাবনায় সে আর পানি ঢালতে চাইলো না। অতো ভেবে যখন একটা জায়গা বাছা গেছে, যাবার রাস্তাও একটা হয়ে যাবে। সেটা যখনকারটা তখন ভেবে নেয়া যাবে।
যেই ভাবা সেই কাজ। খুব ভোরে কাক ডাকার আগেই দীপু তার ব্যাগ গুছিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে সোজা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে চলে এলো। ঢাকা টু কক্সবাজার লেখা ছোট্ট টিকিট ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কাউন্টারের লোকটার সাথে তার আলাপ চলছিলো...
দীপুঃ কক্সবাজার যাবো , ভাড়া কত??
কাউন্টারের লোক (কা লো ) ১৩০ টাকা
দীপুঃ পেছনের সিটে বসে গেলে ৫ টাকা কম হবে না?
কা লোঃ আচ্ছা দিয়েন
দীপুঃ আচ্ছা আমি যদি অর্ধেক সিটে বসে যাই তাহলে ভাড়া অর্ধেক হবে না?
কা লোঃ আচ্ছা অর্ধেকই দিয়েন
দীপুঃ আচ্ছা আমি যদি দাড়িয়ে যাই তাহলে ভাড়া আরও কম হবে না?
কা লোঃ অই মিয়া, কক্সবাজার যাইবেন, লগে কি ট্যাকা পয়সা কিছু নিয়া আহেন নাই ? এমন করতাছেন কেন ?
দীপুঃ আপনি কি ভেবছেন আমি ওখানে ঘুরতে যাচ্ছি ? মাসুম বাচ্চা, রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছি, যাতে বাবা মা খুজে না পায়। ওখানে বন্ধুদের সাথে ডাব বেচবো !...
কা লোঃ ভাই থামেন, পালাইতে চাইলে অই সামনের বাসে উইঠা নারায়নগঞ্জ যান। কেউ খুইজাও পাইব না। শ্রেফ গুম হইয়া যাইবেন !