What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review চার বছরের ফসল ‘নয়নের আলো’ (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
bPdpilj.jpg


'আমার বুকের মধ্যিখানে', 'আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি' কিংবা 'আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন'_প্রতিটি গানই মানুষের মুখে মুখে ফিরছে তিন যুগ ধরে। এক ছবির এত গান জনপ্রিয় হওয়ার রেকর্ড বাংলাদেশে আগে ছিল না। শুধু গানই নয়, ছবিটিও হয়েছিল দারুণ জনপ্রিয়। এ ছবিতেই সুবর্ণা মুস্তাফা, কাজরী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরীর মতো তারকার জন্ম। সোনালি এই ছবিটি নিয়ে কালেরকন্ঠে লিখেছেন সুদীপ কুমার দীপ, বাংলা মুভি ডেটাবেজ (বিএমডিবি)-র পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল।

১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাসের কথা। পরিচালক বেলাল আহমেদের প্রথম ছবি 'নাগরদোলা' মাত্র এক মাস আগে মুক্তি পেয়েছে। ভালো ব্যবসাও করছে ছবিটি। কিন্তু বেলাল ভাবলেন, এবার অফট্র্যাকের গল্প নিয়ে ছবি নির্মাণ করবেন, যেখানে সর্বোচ্চ দু-একজন তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রী থাকবেন। বাকি সবাই নতুন। শুরু হলো গল্প তৈরির কাজ। এক বছর লাগল গল্পটি তৈরি করতে। সেই গল্প নিয়ে তিনি ১৯৮১ সালে গেলেন সপ্তরূপা ফিল্মসের কাজী ফরিদের কাছে। ফরিদ গল্পটি দারুণ পছন্দ করলেন। বললেন সংলাপ তৈরি করতে। হিরণ দেকে বাসায় ডাকলেন বেলাল। এক মাস ধরে দুজন মিলে গল্পটির সংলাপ তৈরি করলেন।

এবার দরকার গান। গানের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। শুরু হলো সুরকার খোঁজার পালা। আগে থেকেই আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গে পরিচয় ছিল বেলালের। বুলবুল তখনো কোনো ছবিতে সংগীত পরিচালনা করেননি। চ্যালেঞ্জ হিসেবেই বুলবুলকে বেছে নিলেন বেলাল। প্রতিদিনই বেলালের বাসায় চলত গানের মহড়া। প্রতিটি গান লিখতে দিস্তা দিস্তা কাগজ খরচ করলেন বুলবুল। কারণ যে করেই হোক গানকে জনপ্রিয়তা পাওয়াতেই হবে। চেষ্টা চলল মাসখানেক ধরে। অবশেষে কথাগুলো চূড়ান্ত হলো। এবার পালা সুরের। সেখানেও এঙ্পেরিমেন্ট করতে চান বেলাল। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। 'আমার বুকের মধ্যিখানে' গানটির তিনটি সুর করেছিলেন বুলবুল। সামিনা তখন বেলালের বাসার পাশেই থাকেন। বিখ্যাত শিল্পী মাহমুদুন্নবীর মেয়ে তিনি। বেশ ভালো কণ্ঠ তাঁর। তাঁকেই ডাকলেন বেলাল। এই গানটির তিনটি সুরেই সামিনাকে দিয়ে গাওয়ালেন। অবশেষে পাণ্ডুলিপি পড়তে পড়তে বুঝলেন দ্বিতীয় সুরটিই দর্শকরা পছন্দ করবেন। সামিনার সঙ্গে এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠ যেন সোনায় সোহাগার মতো লাগল সবার। এফডিসির সবাই গান শুনে অভিভূত হলেন।

u1i6wb9.jpg


এবার বাকি থাকল অভিনয়শিল্পী নির্বাচন। বেলাল তো সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন যদ্দুর সম্ভব নতুনদের নিয়ে কাজ করবেন। সুবর্ণা আর কাজরীকে নিলেন নায়িকা হিসেবে। সুবর্ণা এর আগে অভিনয় করলেও খুব জনপ্রিয় হননি। অন্যদিকে কাজরী একেবারেই নতুন। তবে নায়ক চরিত্রে পছন্দ করলেন জাফর ইকবালকে। এর আগে জাফর ইকবাল ফ্যাশনেবল শহুরে ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দর্শকরা তাঁকে সেভাবেই দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু এ ছবিতে তাঁর চরিত্রটি গ্রামের একটি অতি সাধারণ ছেলের, যে যাত্রাপালায় গান করে বেড়ায়। বেলাল বেশ দ্বিধান্বিত হয়েই জাফর ইকবালকে প্রস্তাবটি দিলেন। কিন্তু জাফর ইকবাল তা সাদরে গ্রহণ করলেন।

১৯৮২ সালে শুরু হলো শুটিং। মানিকগঞ্জের প্রশিকাতে থেকেই সেখানকার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং করা হলো। ছবিটির প্রায় ৯০ শতাংশ শুটিং এখানে সম্পন্ন হলো। বাকিটুকু হলো ঢাকায়। তখন সব ছবিই এফডিসিতে ডাবিং, এডিটিং, এমনকি ফাইনাল প্রিন্টিংও করা হতো। কিন্তু এ ছবিটি গতানুগতিক ধারায় গেল না। বরং এসব কাজ করা হলো মিরপুরের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন স্টুডিওতে।

একে একে সব কাজই চূড়ান্ত হলো। কিন্তু এরই মধ্যে কেটে গেল দুটি বছর। ১৯৮৪ সাল। এবার ছবিটি মুক্তি দিতে চান বেলাল। কিন্তু একমাত্র জাফর ইকবাল ছাড়া তো ছবিটিতে আর কোনো তারকা নেই। তার ওপর জাফর ইকবাল আবার তাঁর গতানুগতিক চরিত্রের বাইরে কাজ করেছেন। প্রযোজক ঠিক করলেন, মাত্র ১৩টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি দেবেন। অযথা ঝুঁকি নিতে চান না তিনি। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। ১৩টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল ছবিটি। কিন্তু প্রযোজক-পরিচালক যে ভয় পেয়েছিলেন সেটা দূর হয়ে গেল মাত্র এক সপ্তাহে! রমরমা ব্যবসা করল ছবিটি। পরে প্রিন্টও বাড়ানো হলো। তা ছাড়া গানগুলোও পেল আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। রাতারাতি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরীরা তারকা বনে গেলেন। সে বছর এই ছবিটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন এই তিনজন। তা ছাড়া প্রবীর মিত্র ও চিত্রগ্রাহক বেবী ইসলামও পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top