What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
yVuLe9K.jpg


কে ভুলতে পারে সেই `ভাত দে`র নারী শাবানাকে? পারে না ভুলতে। ক্ষুধার সাথে যুদ্ধ করে যে পৌঁছে গিয়েছিল এক লোকালয় থেকে অন্য লোকালয়ে। তার পরিবার ছিল, প্রেম ছিল, সংসার ছিল তবু ভাতের ক্ষুধা তার যায়নি। কে ভুলতে পারে `মরণের পরে`-র শাবানাকে? যে নারী তার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য নিজের চিন্তা বিন্দুমাত্রও করেনি। মৃত্যুর কাছে নিজেকে সঁপে দেয়ার আগে দত্তক রাখতে হয়েছে নাড়ি ছেঁড়া সন্তানদের।

এই নারী শাবানা বাংলাদেশের জল-মাটি-হাওয়ায় গঠিত একজন শ্বাশত নারী তাই তাকে লক্ষ্য করে হয় ছবির নাম-`বাংলার মা, বাংলার বধূ, রাঙ্গা ভাবী।` তাকে পর্দায় শুধুই অত্যাচারিত হতে দেখা যায়নি দেখা গেছে প্রতিবাদে জ্বলে উঠতেও `অগ্নিকন্যা` হয়ে।

কে ভুলতে পারে সেই `হাঙর নদী গ্রেনেড`-এর সুচরিতা বা বুড়ি চরিত্রকে? দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের সন্তানকে বিসর্জন দিয়েছিল। তাকে ঘিরেই দর্শক পর্দায় স্বাধীনতা পেয়ে গিয়েছিল। তার চোখের জলে দর্শক ব্যথিত হয়েছে। তার সাথে হেসেছে, কেঁদেছে। বুড়ি একটা অনুপ্রেরণা।

ydKzrjY.png


কে ভুলতে পারে সেই চিরসবুজ ববিতাকে? তার `রামের সুমতি, বিরাজ বউ, গোলাপী এখন ট্রেনে, গোলাপী এখন ঢাকায়, মায়ের অধিকার`। স্ত্রী, বৌদি, বোন, মা নারীর চিরকালের রূপগুলো তাকে শিক্ষণীয় করে তুলেছে। তার জন্যই রাম কথা শোনা ছেলে হয়ে যায়, বিরাজ বৌয়ের বাস্তবতায় অনেক নারীর জীবনের করুণ পরিণতি জানা যায়, গোলাপির জীবনের সংগ্রামে একটা অসাধারণ বাস্তব শিক্ষা মেলে, মায়ের অধিকার আদায়ের জন্য ছেলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠে।

কে ভুলতে পারে সেই `আম্মাজান`কে! কেউই পারে না। বাইশ বছর ছেলের সাথে কথা না বলে থেকেও মনে মনে ভালো চায় তার। মাকে খুশি রাখার জন্য ছেলে কি না করে! কোনটা ন্যায়, কোনটা অন্যায় সব ভুলে ছেলে শুধু মায়ের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে। মায়ের মুখে কথা শোনার পর ছেলের শেষ বাক্য হয়-`আপনি আমার সাথে কথা কইছেন আম্মাজান?`..♥

কে ভুলতে পারে সেই `পার্বতী`-কবরীকে? দেবদাস তার জন্য জীবনটাকে বোহেমিয়ান করে দিল! পার্বতীর প্রেমে ডুবে দেবদাসের জীবন উৎসর্গ করার ঘটনা বলে দেয় পার্বতীর কী প্রভাব!

কেউ ভুলতে পারে না জয়শ্রী কবির-কে। নারীর জাগরণে সভ্যতার প্রাচীন ধ্যান-ধারণার পরিবর্তনে `সূর্যকন্যা` সে। `সীমানা পেরিয়ে`-র সেই জাগরণী নারী যার চেতনায় একজন অশিক্ষিত মানুষ হয়ে গেল সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

মনে পড়ে সেই আধুনিক নারীকে যার বেশভূষা, কথাবার্তায় এগিয়ে যাওয়ার আহবান আছে। নাম তার সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবির নাম `ঘুড্ডি।`

কেউ কি ভুলতে পারে সেই `বেদের মেয়ে জোসনা`-অঞ্জুকে? আলবত না। ভুলতে পারে না `নরম গরম`-এর অঞ্জুকেও। প্রথমটা কোমল পরেরটা প্রতিবাদী। নারীর কঠিন-কোমল রূপের দুই সত্তা অঞ্জুতে মেলে এই দুই ছবিতে। তার হৃদয়ে প্রেমের অবারিত ধারা থেকে সে জীবনসঙ্গীকে বৃষ্টিভেজা রাতে চলে যেতে বারণ করে আর বলে-

`জীবনের আঁকাবাঁকা পথে
বলো কে রবে তোমার সাথে সাথে
সবাই যখন চলে যাবে
ওগো আমায় তখন পাশে পাবে।`
সবার জীবনসঙ্গীনি এমনটি হলে জীবন হত প্রেমময়।

ঐযে কঠিন-কোমল রূপের কথা বলা হলো `কঠিনেরে ভালোবাসিলাম` রবিঠাকুরের এই লাইনের মতো নিজের অধিকার আদায়ে ঘুরে দাঁড়ায় একজন `রাক্ষুসী` বা রোজিনা।

জমিদারপ্রথার নারীলোভী ঘৃণ্য রীতির শিকার হওয়া একজন নারী অণ্জনা `রাজবাড়ি` ছবিতে হয়ে ওঠে নিজের গল্পকথক। নায়ককে তার গল্প ছায়া হয়ে ভৌতিক আবেশে বলে যায়। এই নারীর গুরুত্ব অনেক।

কে ভুলতে পারে `পদ্মানদীর মাঝি`-তে অবিচারের শিকার হওয়া মালা `চম্পা`-র কথা? কুবের কপিলাকে নিয়ে চলে গেল ময়নাদ্বীপে। খোঁড়া চম্পা তখন অকুল পাথারের যাত্রী তার সন্তান ও সংসার নিয়ে।

বন্দি শিবির থেকে বের হয়ে ভাইয়ের কোলে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়া নূতন-কে কে ভুলতে পারে `ওরা ১১ জন`-এ।

ভুলতে পারে না অনেকরকম চরিত্রে মিশে যাওয়া অনেকরকম সত্তার একজন দিতি-র কথা। `হীরামতি, প্রিয়শত্রু, আজকের হাঙ্গামা, স্বামী-স্ত্রী` ছবিগুলো সমাজের অনেক বাস্তব নারীর কথা বলে।

কেউ ভুলতে পারে না `নিরন্তর` চলতে থাকা শরীর বিক্রি করে সংসার টিকিয়ে রাখা নির্মম বাস্তবের শিকার হওয়া তিথির কথা। জানালা দিয়ে অসীমে তাকিয়ে মায়ের হাতের স্পর্শে রাগ করে সে বলে-`গায়ে হাত দিও না তো মা, গায়ে হাত দিলে কেমন যেন পুরুষের হাত মনে হয়।` পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে চরম ব্যঙ্গ করে সংলাপটি। তিথি বা শাবনূরের কথা লোকে ভুলবে কি করে! ভাষার সাথে বোবা নারীর কথা বলার আপ্রাণ চেষ্টাতে চোখ ভারি করে দেয় `বাঙলা।` সহজ-সরল হওয়ার যন্ত্রণায় করুণ পরিণতিতে সমাজের বলি হওয়া নারী `কাল সকালে` ছবিতে বাস্তবকে তুলে আনে।

4IiIVXA.jpg


মা ডাক শোনার চিরন্তন ইচ্ছায়, `মাতৃত্ব` লাভের চিরন্তন আশায় মগ্ন মৌসুমীকে কে বা ভুলতে পারবে! নারীর জীবনের পরম আবাঙ্ক্ষা এই মাতৃত্বের স্বাদ নেয়া। সবার মায়ের প্রতি সবার শ্রদ্ধার অনুভূতি হওয়া দরকার এটুকু। রোগ ও প্রতিরোধের সাথে সামাজিক সচেতনতার গুরুত্ব থেকে নারীর সামাজিক স্বীকৃতি-অস্বীকৃতির অসাধারণ চিত্রায়ণ `মেঘলা আকাশ।` মৌসুমীর চরিত্রে থাকে বাস্তবসম্মত ঘটনা যার সাথে অনেক নারীর সাদৃশ্য মিলবে।

ePCEkxP.jpg


নিশ্চিত মনে পড়বে প্রচলিত সমাজের বিরুদ্ধে নিজের সংগ্রামী হওয়া পপি-র কথা। `কারাগার, বিদ্রোহী পদ্মা, মেঘের কোলে রোদ` এগুলো সেই সংগ্রামের ধারা।

কেউ ভুলতে পারবে না ভাষাবিশিষ্ট বউ হতে না পারায় সংসারছাড়া `সুভা`-র গল্প। এমনকি `বউ গেলে বউ পাবো` সূত্রে তার করুণ পরিণতিও কাঁদিয়েছে দর্শককে। পূর্ণিমা-র সেই আবহমান নারীর বাস্তবতা ভোলা যায় না।

কঠিনকোমলের আরো এক সংযোজন হয়ে `ম্যাডাম ফুলি` বা `ধাওয়া`-র সিমলা। সমাজের চাহিদায় সমাজের মতো করে পরিবর্তন হয়। প্রতিবাদী, সাহসী ভূমিকায় নিজেকে আরো জীবন্ত করে তোলে।

`ডুবসাঁতার, ফিরে এসো বেহুলা, গেরিলা` নারীর জাগরণের এক একটি স্মরণীয় কাজ জয়া আহসানের। তাকেও মনে রাখবে দর্শক।

মনে রাখবে `থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার`-এর তিশাকে। তার মানসিক বিকাশের সাথে চারপাশের পরিবেশের প্রভাবটা সমাজের বাস্তব চিত্র। প্রেমে রোমান্টিক যেমন সে প্রতিবাদী তেমনি কৌশলে। প্রেম ও প্রতিবাদে `হালদা` তাকে মনে থাকব।

নারী আমাদের ঘরে-বাইরে চারপাশে ছড়িয়ে থাকা মানুষ। তাদের ভুলে কেউ থাকতে পারে না। মা, বোন, ভাবী, স্ত্রী, প্রেমিকা সত্তাগুলো চিরন্তন। সত্তাগুলো আমাদের চলচ্চিত্রে আছে নানাভাবে। নজরুলের কথা শুনতে শুনতে বাড়ি চলি –

`কোনোকালে একা হয় নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি,

প্রেরণা দিয়াছে শক্তি দিয়াছে বিজয়ী লক্ষী নারী।`
 

Users who are viewing this thread

Back
Top