What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other আশফাক নিপুণ: যার নাটকের জন্য মুখিয়ে থাকে দর্শক (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
WTzpDEc.jpg


দ্বন্ধ সমাস, ফেরার পথ নেই, সোনালী ডানার চিল ও এই শহরে। গত তিন বছরে আমাদের নাট্যঙ্গনে অন্যতম আলোচিত নাম। এই সময়গুলোতে নাট্যঙ্গন যেমন অস্থির সময়ে কেটেছে তেমনি বেশ সংখ্যক নাটক দর্শকদের তৃপ্তি দিয়েছে। তবে সেই কাজগুলোর ভিড়ে এই চারটি নির্মাণই স্বাতন্ত্র্যভাবে স্থান করে নিয়েছে। এই নির্মাণগুলোতে ফুটে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্ররূপ।

প্রশ্নফাঁস, গুম, গুজব থেকে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা- এই সমস্যাগুলো আমাদের জীবন যাত্রায় অস্থিতিশীল করে দিয়েছিল, আর এই সমস্যাগুলোই সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরেছেন এক নির্মাতা। চারটিরই নির্মাতা একজন, যে রাঘব বোয়ালদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই সাহসী নির্মাণ করেছেন। দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে এই নাটকগুলো গ্রহণ করেছেন, খেতাব দিয়েছেন সময়ের সেরা সাহসী নির্মাতা। তিনি এই মুহূর্তে বাংলা নাটকের সবচেয়ে আলোচিত, প্রশংসিত নির্মাতা আশফাক নিপুণ।

আজকাল অনেক নির্মাতারই ওজন ভার নির্নয় করা হয় ইউটিউব ভিউ দিয়ে,সেখানে কিছু সংখ্যক নির্মাতা থাকে তাদের নির্মাণে ভিউ মুখ্য বিষয় তো নহেই, কেউ সেটা হিসেবেও আনে না। আশফাক নিপুণ তেমনি একজন নির্মাতা, উৎসব এলেই দর্শকরা অপেক্ষা থাকে উনার নির্মাণের নাটক দেখার জন্য। আমাদের নাট্যঙ্গন কে সমৃদ্ধ করার পিছনে ছবিয়াল বেশ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছেন৷ গুরু মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ছবিয়ালের শিষ্য হয়ে অনেক তরুন তুর্কিই নাট্যনির্মাণে এসেছেন। আশফাক নিপুণের শুরুটাও সেভাবেই। এরপর তো নিজেকে নন্দিত করা পালা, সেখানে তিনি সফল, সামনে আরো করবেন।

নির্মাতা হিসেবে প্রথম নাটক 'মা-য়া', তবে দুঃখের বিষয় এই নাটকটি কোথাও আর পাওয়া যায় না। দ্বিতীয় নাটক 'টু ইন ওয়ান', তবে আলোচনায় আসেন তাহসান- মিথিলা কে নিয়ে নির্মিত নাটক 'মধুরেণ সপায়েৎ'। বিজ্ঞাপনে আগে দেখা গেলেও এই জুটির শুরু এই নাটক দিয়ে৷ তখন খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল৷ তাহসান-মিথিলাকে নিয়ে বেশ বিরতি নিয়ে একে একে নির্মাণ করেন ল্যান্ডফোনের দিনগুলিতে প্রেম, সে এবং সে, সুখের ছাড়পত্রের মত নাটক। দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা পার্থ বড়ুয়া ও অপি করিমকে নিয়ে অবাক ভালোবাসায় ও খুঁটিনাটি খুনসুঁটি নাটক নির্মাণ করে দর্শকপ্রিয় জুটি বানিয়েছেন৷ দর্শকরা এখনো ঈদ এলেই এই ত্রয়ী জুটির নাটক দেখতে চান৷ পার্থ বড়ুয়াকেই আবার ভিন্নরুপে এনেছিলেন 'ডাকাতিয়া বাঁশি' টেলিফিল্মে। 'মুকিম ব্রাদার্স' নামে একটি ধারাবাহিক নাটক বানিয়েছিলেন। মাহফুজ আহমেদকে নিয়েছিলেন 'কমলা রাঙা রোদ' নাটকে, অবশ্য এরপরে তাদের আর একসাথে দেখা যায়নি।

২০১৭ সালে ছবিয়াল রিইউনিয়ন ও আয়নাবাজি অরিজিনাল সিরিজ উৎসব হয়েছিল, তিনিই একমাত্র নির্মাতা যে দুইটি উৎসবেই তার নাটক ছিল। ছবিয়াল উৎসবে হালকা মেজাজের নাটক 'ছেলেটা কিন্তু ভালো ছিল' অনেকেই পছন্দ করেনি৷ অন্যদিকে আয়নাবাজি অরিজিনাল সিরিজে 'দ্বন্ধ সমাস' নির্মাণ করে দারুন প্রশংসিত হয়েছিল। ধর্মীয় রহস্যজাল ভেঙ্গে দেওয়া এই নাটকের মূলভাব প্রথমেই অনেকে বুঝতে পারেনি, আমিও না। অতি সাধারণ মনে হচ্ছিল,তবে পরবর্তীতে আবার দেখায় বুঝলাম সত্যিকার অর্থেই সাধারণ ছাপিয়ে অসাধারণ হয়ে উঠেছিল। এই নাটকের জন্য প্রথমবারের মত মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।

২০১৮ সালে সামাজিক বার্তা নিয়ে এসেছিলেন ফেরার পথ নেই, সোনালী ডানার চিল ও কানামাছি ভোঁ ভোঁ নাটক দিয়ে- তিনটিই প্রচুর প্রশংসা পেয়েছিল। এইগুলোর কারনে যখন তিনি হয়ে উঠেছেন দুঃসাহসিক নির্মাতা,ঠিক তখন ই রোমান্টিক নাটক 'লায়লা, তুমি কি আমাকে মিস করো', বা তারুণ্য অনুপ্রেরণাকারী 'চাকা' নির্মাণ করে দিয়েছেন ভিন্নতার স্বাদ।

বেশ কয়েক বছর আগেও তিনি সাহসিকতা দেখিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের নাটক 'ফাঁদ ফোকর' বানিয়ে, তবে এই নাটকে বেশিরভাগ দর্শকদের কাছে অগোচরে থাকায় অনালোচিত থেকে গেছে। বাংলাদেশের টিভি জগতে সমকামিতা নিয়ে নাটক বানানো দুঃসাহসিক কাজ, 'রেইনবো' নামক নাটক নির্মাণ করেছিলেন। গুনগত মান নিয়ে কথা উঠতে পারে তবে আশ্চর্যজনক ভাবে নাটকটি কিছু অতি উৎসাহী দর্শকদের চাপে ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এই বছরের ঈদ উল ফিতরে হতাশাজনক সব নাটকের ভিড়ে অপি করিম কে দিয়ে 'মিস শিউলি' টেলিফিল্মটি ছিল স্বস্তির নিঃশ্বাস। কৌতুকাবহের নাটক নির্মাণ করে নিজের পুরনো আবহ ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। এই ঈদে তো 'এই শহরে' টেলিফিল্মটি দর্শকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যে গুজব ছেয়ে গিয়েছিল, সেটারই মূল বক্তব্য নিয়ে নির্মিত ছিল এটি, অন্য আরেকটি নাটক ছিল সামাজিক অবক্ষয়ের নমুনা ধর্ষণ নিয়ে নাটক 'আগন্তুক'।

সময়ের সেরা জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করতে পারেন তিনি। আশফাক নিপুণের নাটকে সত্যিই ভিন্ন মেহজাবীনকে পাওয়া যায়৷ সেটা তুমি না থাকলে হউক কিংবা ফেরার পথ নেই, এই শহরে। আশফাক নিপুণের নাটকে অভিনয়ের কারনে শত সমালোচনার মাঝেও আফরান নিশো দর্শকদের কাছ থেকে প্রশংসা আদায় করে নেন৷ তিশা, ইরেশ যাকের থেকে ইয়াশ রোহান, সাফা কবির সবার কাছ প্রানবন্ত অভিনয় আদায় করে নেন তিনি।

অভিযোগ অবশ্য আছে তিনি আবির মির্জাকে প্রতিভার তুলনায় বেশি সুযোগ দিয়েছেন। তবে তার 'আল্পনা কাজল' নাটকে আবির মির্জার অভিনয় সবাই প্রশংসা করেছিল৷ এক সময় স্ত্রী এলিটা করিমের গান তার নাটকে থাকবেই এটাই ছিল স্বাভাবিক,ত বে এখন নাটকের ধারা পরিবর্তন হওয়ায় আগের মত নেই। এলিটা করিম ও আবির মির্জাকে নিয়ে অসম প্রেমের নাটক বানিয়েছিলেন 'হোয়াই সো সিরিয়াস'।

ছবিয়ালের নাটকের পুরনো নির্যাস এখনো উনার নাটকেই পাওয়া যায়। আগে শখের বশে অভিনয় করতেন, এর মাঝে আদনান আল রাজীবের 'মিডলক্লাস সেন্টিমেন্ট' বেশ আলোচিত হয়েছিল।

নাট্যজগতে সফল পদচারণার পর দর্শকরা মুখিয়ে আছেন তাঁর সিনেমার নির্মাণের দিকে। আশা রাখি সিনেমাতেও তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখবেন৷ সুনিপুণ দক্ষতায় নিজেকে আরো সমুজ্জ্বল করবেন, এই শুভকামনা রইলো।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top