What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other কোন হলের পরিবেশ কেমন : সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
j2bmmCU.jpg


এই সিরিজটি লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো সারাদেশে টিকে থাকা সিনেমা হলের বর্তমান হালচাল কেমন সে ব্যাপারে অনিয়মিত দর্শকদের কিছুটা ধারণা দেওয়া। এতে করে তারা উক্ত সিনেমাহলের পরিবেশ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন।

এর আগে ঢাকা শহরে টিকে থাকা ২৮টি সিনেমাহলের বর্তমান অবস্থা কীরকম সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম। আজ আলোচনা করবো ঢাকা জেলার ৪টি উপজেলায় (সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ) টিকে থাকা হলের পরিবেশ সম্পর্কে, যেগুলো কালের পরিক্রমায় এখনো নতুন/পুরোনো সিনেমা চালিয়ে সচল রয়েছে।

১. সাভার উপজেলা: এই উপজেলায় টিকে থাকা সিনেমাহল সংখ্যা মোটে ৪টি-

ক. সেনা অডিটোরিয়াম
খ. চন্দ্রিমা সিনেমা
গ. বিলাস সিনেমা
ঘ. শিউলী সিনেমা

xGxbMwG.jpg


পরিবেশের দিক থেকে সেরা সিনেমাহল হলো সেনা অডিটোরিয়াম। সাভারবাসীদের কাছে বিপুল জনপ্রিয় হলটি নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত। মুক্তিপ্রাপ্ত নতুন ছবির সেল এখানে ভালো, তাই প্রযোজকেরাও হল দখলের লড়াইয়ে এ হলকে বিশেষ গুরুত্ব দেন।

হলের বাইরের পরিবেশ বেশ পরিষ্কার। বসার মতো তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই, তবে হাঁটাচলা ও গাড়িপার্কিং-এর জন্য বাইরে প্রশস্ত জায়গা রয়েছে। ভেতরের পরিবেশ বেশ ছিমছাম, পর্দার ঔজ্জ্বল্য ও শব্দের গুণাগুণ মোটামুটি মানের। ড্রেস সার্কেল বা ডিসি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এই হলকে মধ্যমমানের ক্যাটাগরিতে রাখা যায়।

সেনা অডিটোরিয়াম থেকে একটু দুরে আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ডে চন্দ্রিমার অবস্থান। এই হলকে মাস অডিয়েন্সের হল বলা যায়। গতানুগতিক ড্রামা রোম্যান্সে ভরপুর অ্যাকশন মাসালা ছবিগুলো ভালো চলে, দর্শকেরা বেশ আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করে। একটা নেতিবাচক দিকও আছে। চন্দ্রিমায় বখাটের উৎপাত বেশি। এরা সাধারণত বেপরোয়া প্রকৃতির হয়। যেখানে সেখানে ধুমপান করে। এতে করে সাধারণ দর্শক কিংবা যারা পরিবার নিয়ে আসে তাদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এই হলে তিন ধরনের টিকিট বিক্রি হয়; রিয়েল, ডিসি ও বক্স। বক্স সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেনা অডিটোরিয়ামের মতো এখানেও নিয়মিত নতুন ছবি প্রদর্শিত হয়। বছরের দুই ঈদে হলকে সম্পূর্ণভাবে ছোট ছোট পার্টিলাইটে মুড়ে ফেলা হয়; ঝিকমিক আলোতে রাতের বেলায় চন্দ্রিমার ডেকোরেশন দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। সব মিলিয়ে এর পরিবেশ নিম্ন-মধ্যমানের।

N5IZn5z.jpg


বাকি থাকা দুটি হল; বিলাস ও শিউলিতে নিয়মিত পুরোনো ছবি প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে বিলাসে মাঝেমধ্যে নতুন ছবি আসে, তবে সংখ্যায় তা খুবই কম। হলটি সাভার কাঁচাবাজার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত। বাইরের পরিবেশ মোটামুটি সন্তোষজনক হলেও, ভেতরের পরিবেশ খুবই খারাপ। পতিতাবৃত্তি তো চলেই, সেই সাথে অত্যধিক গরম ও ঘোলা পর্দা দর্শকদের নাভিশ্বাস তোলে।

অন্যদিকে শিউলী সিনেমাহলের অবস্থা খুবই করুণ। হলটি আশুলিয়ার বলিভদ্র বাজারে অবস্থিত। ২০১৫ সালে অশ্লীল সিনেমা প্রদর্শনের দায়ে সিলগালা করা হয়েছিল, বেশ ক'জন কর্মচারীকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। কয়েক মাসের বিরতির পর হলটি আবারো নিয়মিত অশ্লীল সিনেমা প্রদর্শন করা শুরু করে এবং এখনো তা চলমান। এই হলের পরিবেশ নিয়ে আলাদাভাবে কিছু বলার নেই, বিলাস হলের থেকেও খারাপ। এই দুটি হলকে অতিনিম্নমানের ক্যাটাগরিতে রাখা যায়।

5Tqe3PV.jpg


২. ধামরাই উপজেলা: এই উপজেলায় বর্তমানে কোনো হল অবশিষ্ট নেই। সবশেষ সীমা নামক একটি সিনেমাহল বছরখানেক আগে ভেঙে ফেলা হয়।

৩. নবাবগঞ্জ উপজেলা: একটিমাত্র হল অবশিষ্ট আছে। প্রীতি সিনেমা হলটি নবাবগঞ্জের আগলায় অবস্থিত। এখানে নিয়মিত নতুন ছবির পাশাপাশি পুরোনো ছবি প্রদর্শন হয়। স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ করে যতটুকু বুঝতে পারলাম, হলটির পরিবেশ যথেষ্ট মানসম্পন্ন না হওয়ায় তারা ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। খুব শীঘ্রই বন্ধ হওয়ার তালিকায় যুক্ত হবে।

tJmC8b7.jpg


৪. কেরানীগঞ্জ উপজেলা: এই উপজেলায় মোট দুটি হল বর্তমানে অক্ষত আছে-

ক. নিউ গুলশান
খ. মিনি গুলশান

কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু দুরে জিঞ্জিরায় হল দুটি পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে। নিউ গুলশান সারাবছর চালু থাকে, কোনো সপ্তাহে একাধিক ছবি মুক্তি পেলে মিনি গুলশান চালু হয়।

মিনি গুলশানের ভেতরের পরিবেশ তুলনামূলক ভালো লেগেছে। হলটি ছোট তাই হয়তো বেশি ছিমছাম অবস্থায় দেখতে পেলাম। তবে নিউ গুলশানের পরিবেশও বেশ ভালো।

দুটি হলই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, তবে যথেষ্ট দর্শক না হলে সাধারণত এসি বন্ধ থাকে। এই দুই হলের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা আছে। হলের ভেতরে দর্শকদের বসার সুব্যবস্থা আছে। সবসময় চালু থাকা নিউ গুলশান হলে সাধারণত মাস অডিয়েন্সের সমাগম সবচেয়ে বেশি হয়। কেরানীগঞ্জে বর্তমানে অন্য কোনো সিনেমাহল না থাকায় আপামর সিনেপ্রেমীরা এই নিউ গুলশান হলে এসে জমায়েত হয়। এই হলে বর্তমানে অনেক নিয়মিত দর্শক আছেন যারা শাকিব খানের অন্ধভক্ত, তাই ছবির কোয়ালিটি ভালো হোক, খারাপ হোক, শাকিব খানের ছবি দারুণ ব্যবসা করে। সব মিলিয়ে পরিবেশ বিবেচনায় এই হলদুটিকে নিম্ন-মধ্যমমানের ক্যাটাগরিতে রাখা যায়।

Miss98u.jpg


যুগের পরিবর্তন ঘটছে; সেই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বড় বড় সিনেমাহলগুলো বন্ধ হচ্ছে বর্তমানে, অন্যদিকে ধীরে ধীরে মাল্টিপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় ৫টি মাল্টিপ্লেক্স/মিনিপ্লেক্স থাকলেও শহরের বাইরে উপজেলাগুলোতে একটিও নেই। অথচ ঢাকার বাইরে বিপুল পরিমাণে সিনেপ্রেমী আছেন যারা ভালো সিনেমা দেখতে ঢাকায় ছুটে আসেন। এক্ষেত্রে বিশেষকরে সাভার ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা দুটির কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়, এখানে প্রচুর সিনেপ্রেমী আছেন যারা মুখিয়ে থাকেন শুধুমাত্র ভালো পরিবেশের জন্য। তাদের কাছাকাছি যদি সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থা করা যেতো, তবে তারা সিনেমার নিয়মিত দর্শক হতে পারতেন।

সম্প্রতি জানা গেল, এককালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের লায়ন সিনেমাহলের কর্ণধার একই জায়গাতেই এক‌টি মাল্টিপ্লেক্স নির্মাণ করছেন, লায়ন সিনেমাস নামে। এখানে মোট ৪টি হল রয়েছে, যেখানে আমাদের দেশীয় সিনেমার পাশাপাশি ইংরেজী ছবিও প্রদর্শিত হবে। নিঃসন্দেহে কেরানীগঞ্জবাসীদের জন্য এ এক আনন্দের সংবাদ।

অন্যদিকে প্রায় ৬-৭ বছর আগে সাভারে যখন নিউ মার্কেট তৈরি হয়, তখন শুনেছিলাম এক‌টি রুফটপ মিনিপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে; সিনেম্যাক্স নামে। সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কতটুকু হলো, কিংবা আদৌ কোনোদিন বাস্তবায়িত হবে কিনা, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান। আশা করি তারা খুব দ্রুত সাভারবাসীদের এক‌টি মিনিপ্লেক্স উপহার দিতে পারবে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top