What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review ইউ-টার্ন কি ঘুরে দাঁড়াবার গল্প? (1 Viewer)

Welcome! You have been invited by Bong_c to join our community. Please click here to register.

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
Rbf5KNt.jpg


হতে পারে এটা অমুকের প্রেমের গল্প, হতে পারে এটা তমুকের পদস্খলনের গল্প, হতে পারে এটা সমুকের অস্ত্র পাচারের গল্প। এমন অনেক কিছুই হতে পারে, কিন্তু না, এটা একেবারেই ঘুরে দাঁড়াবার গল্প। বলছিলাম ইংরেজী শব্দ "ইউটার্ন" ছবির কথা। এ পর্যন্ত নাটক পরিচালনায় যিনি সফলতার সুনির্দিষ্ট প্রমান রেখেছেন সেই সুপরিচিত আলভী আহমেদ পরিচালিত পূর্ন দৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ইউটার্নের শুরুটা ছিল এমনি – ছবির আধঘন্টা কেটে গিয়েছে,কিন্তু আমি ধরতেই পারছিলাম না, আসলে মূল গল্পটা কিসের?ইসরাফিল শাহিনের গ্যাং বাংলাদেশের ভেতরে সন্ত্রাসী আক্রমন করতে চায়। অন্যদিকে আরিফ হায়দারের গ্যাং চায় তা প্রতিহত করতে। ফলে শুরু হয়ে গ্যাং ওয়ার। এই ওয়ার পুরো ছবি জুড়েই চলতে থাকে, একটু পর পর ঢিসুম ঢাসুম,এই ক্ষেত্রে তাহলে বলা চলে ছবিটি একশনধর্মী। তবে তার মধ্যে ১০০ % প্রেম ঢেলে দিয়েছেন পরিচালক। আরিফ হায়দারের কন্যা মৌটুসীর সাথে ইরফানের এক অদ্ভূত প্রেম দেখানো হয়েছে, যেখানে ছবির পরিচালকের ভূমিকায় মৌটুসী কিছুতেই নায়ক ইরফানের পাশে নায়িকা চরিত্রে মেহজাবিনকে সহ্যই করতে পারছেন না পুরো ছবি জুড়েই। ইরফান সাজ্জাদ নাটকেই এসেছেন বেশি দিন হয়নি, তার উপর মোটা তাজা একজন নায়িকার পাশে থেকে এমন উদম নৃত্য-সত্যি চোখে লাগার মতোনই। একটা বাচ্চা যখন হাঁটতে শেখে,আমরা তাকে প্রথমে দৌঁড়াতে দেই। পড়ে গেলে আবার টেনে তুলি। এই করতে করতেই বছর পাঁচেক লেগে যায়, আর এখানে নায়ক ইরফান এসেই সোজা মৌটুসীর বিপরীতে যেখানে মৌটুসী একজন দক্ষ এবং বয়স্ক অভিনেত্রী। কেমিস্ট্রিটা ঠিক হজম করা গেল না। এক সময় পরিচালক গানের দৃশ্যটা পুনরায় ধারন করতে বলেন, এই ক্ষেত্রে দর্শকরাও হাত তালি দিয়ে ওঠে, কারন গানের কোন চিত্রায়নই হয়নি। বোঝাই যাচ্ছিল-পুরো দৃশ্যটা একে বারেই কোন রকম ভাবে শেষ করা হয়েছে।

আরিফ হায়দারের চরিত্রে সেলিম ভাইয়ের পোষাক দেখে আমি খানিকটা ভড়কে গেলাম-আবার চোরা বালি দেখতে চলে আসি নাইতো? না, তার কন্ঠস্বরের ভিন্নতা প্রমান করে দিল – তিনি আসলেই ভার্সাটাইল অভিনেতা। একিরকম পোষাকের আবর্তে থেকেও ভিন্ন দুটি চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন যে সে কথা না। এই ব্যাপারে কিন্তু মিশা সওদাগর আরো কয়েক ডিগ্রী এগিয়ে। জীবনেতো নেগেটিভ ক্যারেক্টার অনেক করলেন, কিন্তু একটার পর আরো একটা ছাপিয়ে গেল। কোনকালেই দর্শকের কাছে তিনি এক ঘেঁয়ে হননি। একেই বলে জাত অভিনেতা। মূলত এই দুইজন অভিনেতাই শুরু থেকে শেষ অব্দি ছবিটাকে টেনে নিয়ে গেছেন। এখানে নাটকের কিছু নতুন অভিনেতাকে দেখা গেছে যাদের নাম পত্রিকাতে আসেনি, কিন্তু তারা দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন।

ছবির কাহিনী নিয়ে এমন কিছু বলার নাই, কারন এখানে একি বিষয় ঘুরে ফিরে এসেছে। অনেকটা গরুর জাবর কাটার মতোন অবস্থা। সব চেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে ছবির প্রযোজক আরশাদ আদনানের উপস্থিতি, এমন বিশাল আকৃতির ভুড়ি নিয়ে কিভাবে বাচ্চা একটা মেয়ে আইরিনের বিপরীতে কাস্ট করা হলো তা কেবল পরিচালক বলতে পারবেন। ছবিতে টাকা ঢাললেই কি যাকে যে চরিত্রে যায় না তাকে দিয়েই তা করাতে হবে? দর্শক তাহলে কি ?পরিচালক যা খাওয়াবে তাই খেতে বাধ্য আমরা? এক্ষত্রে অবশ্য তারা বলতেই পারেন-ভালো না লাগলে হলে যাইয়েন না, তাহলে এতো টাকা দিয়ে ছবি বানানো হচ্ছে কাদের জন্যে?

rWY27UL.jpg


আইরিন যতোবার ক্যামেরার সামনে এসেছে তার দুটো ফর্সা পা থেকে শ্যুট করা হয়েছে। একসময় সে বসের মুখের সামনে উল্টায় পড়ে গেলো,বুকের ভাঁজ থেকে শুরু করে একদম অন্তর্বাস কিছুই চোখের আড়াল হলো না দর্শকের?কিন্তু কেন এই অযাচিত সুড়সুড়ি?

বিখ্যাত লোকের চ্যানেল মালিক ছেলে দেনার দায়ে ডুবে প্রেমে সাঁতার কাটছেন একজন হাটুর বয়সী পি এসের সাথে। যেই পি এসের গায়ের কাপড় থাকে কোমরের উপর। দেশের কোন চ্যানেলে এমন এক্সিকিউটিভ আছে তা আজো আমার জানা হয় নাই। আইরিন যতোবার ক্যামেরার সামনে এসেছে তার দুটো ফর্সা পা থেকে শ্যুট করা হয়েছে। একসময় সে বসের মুখের সামনে উল্টায় পড়ে গেলো,বুকের ভাঁজ থেকে শুরু করে একদম অন্তর্বাস কিছুই চোখের আড়াল হলো না দর্শকের?কিন্তু কেন এই অযাচিত সুড়সুড়ি?এই সুড়সুড়িতো পরিচালকের আইটেম গানে দেখানো দরকার ছিল। আইটেম গানে দর্শকের মনে নাড়া দেওয়া খুবি জরুরী, কিন্তু মিশা সওদাগর ছাড়া আর একটা মানুষো আইটেম গার্লের সাথে দুলে উঠলো না-এ আমার চরম হতাশা।তাহলে কেন এই আইটেম সং? পুরো ছবিতে ইউটার্ন না পেলেও শেষ দিকে আনুশকা চরিত্রের ইউটার্ন কিন্তু ভালোই ছিল।

ছবির কোন চরিত্রের কোন বেজমেন্ট আমি খুঁজে পাই নি। বর্ষা চরিত্রে সোনিয়া অসাধারন অভিনয় করেছে যদিও সে কোথা থেকে এলো, শিপনের সাথে বন্ধুত্ব কিভাবে তা পরিষ্কার না। কেবল মর্গে তার লাশ ধরে মাকে কাঁদতে দেখলাম-এ পর্যন্তই। আগাগোড়া তার মজার মজার সংলাপ দর্শকদের আনন্দ দিচ্ছিল। একদিকে সে সেলিমের মন্দ কাজকে মেনেও নিচ্ছিল আবার চট্রগ্রাম যাবার পর তাকে তার কাজ করতে বাঁধাও দিচ্ছিল। এমনি বুঝি হয় প্রেমিকারা। যাই হোক, সেলিম চরিত্রে শিপনের হাত কেঁটে যাবার পর ব্যান্ডেজটা সঠিক জায়গায় দিলে মনে হয় আরো বিশ্বাসযোগ্য হতো।
তবে এবার শিপন আমাদের আশহত করেনি। ভারত থেকে ছেলেটা ভালোই শিখে পড়ে এসেছে। দেশা দ্যা লীডারের মতোন হতাশ সে আমাদের করেনি, তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এ জন্য। আলভী ভাই তার কন্ঠে শতাব্দী ওয়াদুদের কন্ঠ বসিয়ে চমৎকার একটা কাজ করেছেন (এটা আমার প্রেডিকশন, ভুলও হতে পারে)।

একটা পূর্নদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে গান হতে পারে দর্শক ধরে রাখার অন্যতম মাধ্যম, কিন্তু এতো ভালো ভালো গীতিকার থাকা স্বত্তেও কোন গানই মনে রাখার মতোন ছিল না। "ছুঁয়ে দিলে মন"-ছবি রিলিজ পাওয়ার আগেই কিন্তু গানটা ইউটিউবে সর্বাধিক রেটিঙ্গে চলে গেছিল, এমন কোন আভাস এই ছবিতে পেলাম না। কোরিওগ্রাফির মধ্যেও এমন কোন কারিশমা ছিল না যা মনে গেঁথে রাখার মতোন।মনে হলো ফাইনাল পরীক্ষায় যেমন তিন ঘন্টার জন্য উত্তর মুখস্থ রাখলেই চলে, তারপরে ভুলে গেলে কোন সমস্যা নাই। এই ছবিতেও তাই –শেষের দৃশ্য দেখলে আগের দৃশ্য মনে থাকে না। তার মানে মনে রাখার কোন প্রয়োজনই নাই। একজনতো বলেই ফেললো-আলভী আহমেদের কাছে মসলা পাতি সবি ছিল, কিন্তু সময় মতো ঢালতে ভুলে গেছেন।

সে যাই হোক। সকল পরিচালকদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই রিকুয়েস্ট-আমরা যারা নিয়মিত রীতিমতোন টিকেট কেটে ছবি দেখতে হলে যাই তারা এক বুক আশা নিয়েই যাই। জানি সব দর্শককে এক সাথে খুশি করা কখনোই সম্ভব না। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ককে মর্যাদা দিতে গিয়ে নিজের মেধার এমন অবমূল্যায়ন কখনোই আমরা আশা করিনা।

আমি জানি এবং প্রমানিত সত্য যে আলভী আহমেদ একজন মেধাবী নির্মাতা। তিনি বলেও দিলেন ইউটার্ন নিয়ে দ্বিতীয়বার আসছেন-আর সেই আসাটা যেন আসলেই সত্যিকার অর্থেই ঘুরে দাঁড়াবার গল্পই হয় সেই প্রত্যাশাই করে যাব। সবাইকে হলে গিয়ে ছবিটি দেখার অনুরোধ রইলো, তা না হলে আমি যে এতো কথা লিখলাম তার কোন মানেই আর থাকলো না। ধন্যবাদ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top