What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review মেন্টাল: থিমে এগিয়ে টেকনিকে পিছিয়ে (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
6lgnMHU.jpg


এই প্রথম কোনো সিনেমার রিভিউ লিখছি যেখানে রিভিউ শুরুর আগে সিনেমার হতাশার বিষয় নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। ঈদের সিনেমা 'মেন্টাল' এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল বছরদুয়েক আগে। কিন্তু নানা জটিলতা পেরিয়ে অবশেষে মুক্তি পেল এই ঈদে।সিনেমাটি সিনেমাহলে কেমন লেগেছে বা কি অনুভূতি সেটা জানাবার আগে সীমাবদ্ধতার কথা জানাতে হচ্ছে। সেগুলো এত আলোচনার জন্ম দিয়েছে যে ধাপে ধাপে কথা বলার অবকাশ আছে।

প্রথমত, 'মেন্টাল' সিনেমার প্রস্তুতিপর্বে টাইগার মিডিয়া ছিল এর নির্মাণে। এ প্রতিষ্ঠানের কাজ বরাবরই স্মার্টনেস প্রদর্শন করে দর্শকের আস্থার একটা জায়গা তৈরি করেছে। টাইগার মিডিয়া সরে যাবার পরে সিনেমাটির ব্যয় কিংবা টেকনিক্যাল সাপোর্টের দিক থেকে একটা সীমাবদ্ধতা আসে। যার ফলে প্রযোজকের ওপর বিশাল চাপ আসে। এর প্রভাব শেষ পর্যন্ত সিনেমাহলে বোঝা গেছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি অনেক দর্শক-সমালোচক তাদের সমালোচনায় স্রেফ ট্রল-সার্কাজমের বিষয় হিশেবে নিয়েছে। যদিও এটা মানবিক বিষয়।

দ্বিতীয়ত, 'মেন্টাল' সিনেমার থিম ও মেকিং নিয়ে মুক্তির পরে গোলযোগ বেঁধেছে।থিম নিয়ে সিনেমাটির 'উইকি + এনসাইক্লোপিডিয়া'-তে বলা হয়েছে এটি একটি 'রোমান্টিক অ্যাকশন থ্রিলার' জেনর-এর সিনেমা। প্রথমদিকে কান্নাডা 'বচ্চন' সিনেমার রিমেক বলে গুণ্জন উঠলেও সিনেমা দেখার পরে অনেকে আরো দুটি সিনেমার অংশ কপি করার অভিযোগ তুলেছে সমালোচকবৃন্দ। অথচ, তারা সেখানেও ব্যাখ্যা দিয়েছে সিনেমাটি 'মেমেন্টো' (২০০০) সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত যেটি থ্রিলার ছিল। এ সুবাদে 'রোমান্টিক অ্যাকশন থ্রিলার' বলার পরে আবার প্রচারণার সময় সিনেমাটির সংশ্লিষ্ট লোকজনই বলেছেন যে এটি 'সাইকো থ্রিলার' সিনেমা। এদিক থেকে সিনেমার ক্লাসিফিকেশনে সীমাবদ্ধতা তৈরি করা হয়েছে এবং সেটা সিনেমাটির লোকজনই করেছে।

তৃতীয়ত, এ সিনেমার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতার জায়গাটি হচ্ছে public relationship এর দুর্বলতা। যে দর্শক সিনেমাকে হিট বা ফ্লপ বানানোর নেপথ্য কারিগর তাদের সাথে সিনেমাটির সংশ্লিষ্টদের সম্পর্কের সীমাবদ্ধতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যার কারণে ঈদের অন্যতম সেরা সিনেমা হবার কথা থাকলেও টেকনিকের সমস্যার কারণে পিছিয়ে থাকতে হল।

oXbm4JD.jpg


'মেন্টাল' এর থিম নিয়ে অনেক মিশ্র সমালোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে। আরো হয়তো হবে। পার্বত্য অঞ্চলে দেশের অন্যতম খনিজ সম্পদ ইউরেনিয়ামের খনির খোঁজ পাওয়ার পর কুচক্রী সুবিধাবাদী মহল সেটাকে নিজেদের মতো লুটেপুটে খেতে চায়। বাধা দিতে গেলে পারিবারিক হত্যাযজ্ঞ বাঁধায় খুনীর দল। এই থিম খারাপ হতে পারে না।দেশের সম্পদ রক্ষা এবং সেজন্য কাগজে কলমে লড়াই করার বিষয়টি ভালো গল্পকে তুলে ধরে। থিম যথেষ্ট ভালো কারণ এমনই থিমের সিনেমা 'মোস্ট ওয়েলকাম' দর্শক দেখেছে। কথা হল কেন দেখেছে। অনন্ত জলিল সিনেমাটিকে নির্মাণের ক্ষেত্রে তার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে, দর্শক টেকনিক্যাল কাজের জন্যই দেখেছে। 'মেন্টাল' থিমের এ জায়গায় এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত নির্মাণের সীমাবদ্ধতায় থিমটিকে প্রেজেন্ট করতে পারল না তাই এত কথা, এত রাগ বা সমালোচনা।

সিনেমার 'জেনর' নির্ধারণের জন্য যদি 'থ্রিলার' শব্দটির দিকে তাকাই তবে এ সিনেমার জন্য সেটা বিপরীত হয়। কারণ 'থ্রিলার' সিনেমার টুইস্টের বৈশিষ্ট্য এখানে নেই। সাধারণ প্রতিশোধ 'থ্রিলার'-এর সাথে সাংষর্ষিক হয়।হ্যাঁ, প্রতিশোধ যদি টুইস্টে ভরপুর হয় তা 'থ্রিলার' হতে পারে। সিজোফ্রেনিক রোগী হিশেবে শাকিব খান তার পূর্বের স্মৃতিতে থাকা ভালোবাসার মানুষের গল্পটা আর একজনের মাধ্যমে স্মরণ করছে এবং ভিকটিম হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে।এটা হিশেব কষলে 'সাইকোপ্যাথ অ্যাকশন' হয়, 'থ্রিলার' হয় না।তাই গোলযোগ থেকেই যায়।

সিনেমা দেখার পর আঁচলের জীবনের গল্পটা তিশার গল্প হয়ে দেখানো হয়েছে। দর্শক বিরক্ত হয়ে বলেছে এক দৃশ্য কেন বারবার দেখানো হচ্ছে। এটা ছিল পরের ঘটনাটা আগে দেখানো।'remind' করার মাধ্যমে একটা 'similar story telling' কে দেখানো হয়েছে যার কারণে আঁচল কে, তার মা-বাবা কে, শাকিব খান কে, তার মা-বাবা কে, তার প্রেমিকা কে, কে কাকে খুন করেছে এসব নিয়ে একই গল্পের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। সেখানে ইউরেনিয়াম খনি আবিষ্কার, রিপোর্ট তৈরি করা বা খুন এসবের পাশাপাশি শাকিব-তিশা-আঁচলের প্রেম রোমান্টিক একটা আবহ এনেছে। দর্শকের কাছে এই পুনরাবৃত্তিটা বিরক্তিকর লেগেছে কারণ তারা বাংলা সিনেমায় এভাবে গল্প কম দেখেছে বা কেউ কেউ দেখেনি কখনো। তার জন্য 'বস্তাপচা' বা 'খারাপ' গল্প বলাটা অবিচার হবে।

ব্যতিক্রম গল্পকে তুলে ধরতে না পারাটাই মূল সমস্যা। অভিনয়ের জায়গায় শাকিব খান পেশাদার ছিল বিশেষ করে প্রতিশোধপর্বে। মাথা ঘুরিয়ে তার সংলাপ 'আমি প্রতিবাদ, আমি প্রতিশোধ, আমি মহাকাল, আমি মেন্টাল' ভয়েস পরিবর্তন করে দেয়া এ সংলাপের ডেলিভারি অসাধারণ।লুকের ভেরিয়েশনে শাকিব খান এ সিনেমা দিয়েই আলোচনায় আসে বছর দুয়েক আগে। মিশা সওদাগর তার নিজের পর্দা শাসনের অভিনয় বরাবরের মতোই করেছে। সিনেমার অন্যতম চালিকাশক্তি তিনি। তার অনবদ্য সংলাপ ছিল -'আমি সেই শিকারী যে শিকার ধরার জন্য দশ পা পিছিয়ে গিয়ে লাফ দিয়ে দশ পা সামনে এসে শত্রুর টুটি চিপে ধরে।' এন্ট্রি সিনে হেলিকপ্টার থেকে নামার সময়টা ছিল মিশার সেরা। তিশা যতক্ষণ ছিল নিজের সহজাত অভিনয় করেছে। আঁচলের স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় ছিল এবং স্পেস বেশি থাকায় তার অভিনয়ের জায়গাটা ভালো ছিল। কাবিলা তার স্বভাবজাত অভিনয় করেছে। আমির সিরাজী, ডন, শিবা সানু ভালো করেছে। আনকোরা ছিল প্রযোজক পারভেজ চৌধুরীর অভিনয় এবং অভিনয়ের দিক থেকে সিনেমায় সেটা মাইনাস পয়েন্ট।গল্প ভালো ছিল কিন্তু যে ধরনের material elements এ ধরনের সিনেমাকে দর্শকের কাছে প্রেজেন্ট করার জন্য দরকারি অভাব ছিল সেখানেই।

lRizQNL.jpg


সিনেমাটির অন্যতম আকর্ষণ ছিল গান। গানের জন্য আলোচিত ছিল বছর দুয়েক ধরেই।গুরুত্বপূর্ণ এ জায়গাটিতে কিছু কাজ দেখা গেছে। 'উড়েছে ধুলো' গানে শাকিব-তিশার রোমান্টিক প্রেজেন্টেশন প্রশংসনীয়। তিশা আবেদনময়ী ছিল।'আমার মতোন কে আছে বলো' গানটিতেও শাকিব-তিশার রোমান্স অনবদ্য। লোকেশনে ভেরিয়েশন যদিও দরকার ছিল তারপরেও ভালো প্রচেষ্টা। উল্লেখ করার বিষয় শাকিব খান ও তিশা দুজনই এ দুটি গানে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছে। এক্সপ্রেশনের মনোযোগ দেখলে বোঝা যায়। পড়শী ও আঁচলের সাথে 'মন নাজেহাল' এবং 'প্রেমটা তোদের নেশা' গান দুটোর নির্মাণ স্মার্ট হওয়ার কথা অথচ তা হয়নি। মেন্টাল টাইটেল সং-টি শুধুমাত্র ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিশেবে ব্যবহার করা অনেক বড় অদক্ষতা। এরকম দুর্দান্ত লিরিক্যাল সং ভিডিও হিশেবে রিলিজ না দিতে পারাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে সীসাবদ্ধতাকেই তুলে ধরে। তারপরেও সিনেমাটির দর্শক চাহিদায় গানই প্রভাব ফেলেছে। গানের জন্যই দেখছে অনেকে।

'মেন্টাল' এভাবেই একটা ভালো থিম থেকে শুরু করা টেকনিকে পেছানো যাবতীয় ঝড়-ঝাপটা পার করানো একটি বাণিজ্যিক সিনেমা। এর মধ্যে বাণিজ্যিক সিনেমার রসদটাকে গড়েপিটে ঠিকমত নিলেই সেরা কাজ হবার সুযোগ ছিল। পিছিয়ে গেল ঐ একটা জায়গায় বাণিজ্যিক সিনেমায় দর্শক যে refreshment চায় সেটাকে স্পর্শ করতে না পারা বা মসলাদার হতে না পারা।এতকিছুর পরেও 'মেন্টাল' আলোচনা-সমালোচনায় ২০১৬ সালের সিনেমা ক্যালেণ্ডারে টক অব দ্য ইয়ার হয়ে থাকল এটুকু বলা অবান্তর নয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top