What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review নতুন এক শাকিব খান উপহার দিল শিকারি (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
NozTtkQ.jpg


যৌথ প্রযোজনা নিয়ে যখন বিতর্কের ঝড় একদম তুঙ্গে তখনি বাংলাদেশের নম্বর ওয়ান খ্যাত শাকিব খানকে দেখা গেল জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং এস কে মুভিজের যৌথ প্রয়াস শিকারীতে।পোস্টারে "শিকারি" লেখাটা দেখে খুবই খটকা লাগছিল, বাংলা অভিধানেতো শিকারী লেখা রয়েছে। নাকি বাংলা একাডেমী ঈ-কার বদলে দিয়েছে সেই প্রশ্ন মাথায় রেখেই ঈদের দিন সিনেমা প্রেমীদের লাইনে ভিড়েছিলাম। যখন টিকেট হাতে পেলাম না তখনি বুঝে নিয়েছি এই সিনেমা সারা মাস চলবে এবং বলাই বাহুল্য ৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে দেশের ব্লকবাস্টার সিনেমা হল গুলিতে শিকারী চলছে একেবারে হাউজফুল।

যেহেতু দুই দেশের পরিচালনায় ছবি তাহলে দুটো নাম আশা করতে পারি, কিন্তু প্রমোতে দেখলাম কেবল কোলকাতার পরিচালক জয়দেব মুখার্জির নাম। বাংলাদেশ থেকে আসলে কে পরিচালনা করেছেন তা অবশ্য এখনো উদ্ধার করতে পারিনি, কারণ ইউটিউবে মেকিং-এ দেখলাম জয়দেবদাই সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। সে যাই হোক, সিনেমার কাহিনী লিখেছেন পেলে চ্যাটার্জী এবং আবদুল্লাহ জহির বাবু। অনেকেই কাহিনী নকল বলে উল্লেখ করেছেন সিনেমা রিলিজের আগেই, কিন্তু আমি কাহিনীতে অনেক নতুনত্ব পেয়েছি। একজন পথভ্রষ্ট ছেলের হাতে একজন সৎ বাবার নতুন করে বেঁচে ওঠাকে দেখতে পেয়েছি। যে প্রতিটা মুহূর্তেই জাজ (সব্যসাচী)-কে মেরে ফেলার দৃশ্য রচনা করে আড়ালে বাঁচিয়ে দেয়। খুবই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং একটা চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের শাকিব খান।

শাকিব খান-কে এতো দিন যারা মাখন মার্কা চেহা্রায় দেখেছেন তারা এই ছবি দেখলে নিঃসন্দেহে স্বীকার করবেন-যাক,বাংলাদেশে এতো বড় একজন তরুন অভিনেতা আছেন। কেবল আমাদের দেশের পরিচালকরাই এতোদিন তার ভেতর থেকে অভিনয়টাকে ঠিক টেনে আনতে পারেননি। সুলতান বা রঘু(শাকিব), একই সাথে সন্তান, কখনো খুনী, কখনো বোকা, কখনো চালাক, কখনো কৌশলী, কখনো রোমান্টিক, কখনো আবেগী, কখনো স্ববিরোধী কখনো কমেডিয়ান আবার কখনো প্রতিশোধপরায়ণ। এমন অভিনয়গুণে সমৃদ্ধ শাকিব নায়ক প্রধান এই সিনেমাকে টেনে নিয়ে গেছেন অনেকাংশেই। প্রচন্ড প্রতাপশালী অভিনেতা সব্যসাচীর কাছেও তাকে এতোটুকু ম্লান লাগেনি। সিনেমার শুরুতে শিশুদের গুম করে তাদের কঙ্কাল উদ্ধারের পর জাজ রুদ্র চৌধুরী (সব্যসাচী)-র হাতে বিচারের কাজ এলে তাকে চ্যালেণ্জ নিতে হয়। জাজ তখন শত্রুপক্ষ রাহুল দেব রায়ের টার্গেট হয়ে পড়ে। তখনই তাকে মারার জন্য কিলার হিসেবে সুলতানকে (শাকিব)নিয়োগ করা হয়। শাকিবের পালক পিতা সুপ্রিয় দত্ত এই ডিলটা ঠিক করে দেয়। শাকিব তার শিকারে গিয়ে সব্যসাচীকে মারতে গিয়ে বন্দুক তাক করতেই দেখে-জাজই তার পিতা। ইচ্ছে করেই টার্গেট মিসের পর শাকিব পুলিশের চোখকে ধুলো দিয়ে পালায়। সিনেমার শেষ দৃশ্যে জাজ জানতে পারে যে তাকে মারতে এসেছিল সেই তার হারিয়ে যাওয়া রঘু। বাংলা সিনেমার সেই একইরকম পরিসামাপ্তি নতুন রূপে ধরা দেয় শাকিব খান আর বোম্বের অভিনেতা রাহুল দেবের উত্তেজনা-পুর্ন ফাইটিং দৃশ্যে।

2qi0vgM.jpg


খারাজ মুখার্জির তিন কড়ি চরিত্র এবং পার্থর রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে কমেডি করাটা একটা আলাদা মাত্রা যোগ করাতে এক ধরণের ভিন্নতার স্বাদ পাবে দর্শক। সদা হাস্যময়ী নায়িকা শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি খুব সাধারণ লেগেছে এই সিনেমায়। উঠ ছুরি তোর বিয়ে হবে- গানে তার বাড়তি মেদ দর্শকের চোখের আড়াল হয়নি সেটা নিশ্চিত। বাড়ির বড়মা হিসেবে লিলি চক্রবর্তিকে সাবলীল লেগেছে। বড় ছেলে প্রবীর মিত্র এবং পুলিশ চরিত্রে অমিত হাসানের উপস্থিতি খুবই কম ছিল। বাংলাদেশ থেকে কেবল শাকিব খানকেই প্রাধাণ্য দেওয়া হয়েছে।

সিনেমার সংলাপ অতিরঞ্জিত লাগেনি, প্রয়োজন অনুসারে আঞ্চলিকতা ছিল, কেবল মাঝে মাঝে তিন কড়ির অতি আবেগী উদ্ভট কথা বলা ছাড়া।দৃশ্যায়ন খুবই সুন্দর,চোখে আরাম দেবে প্রত্যেকটি দৃশ্য। এই সিনেমায় সর্বমোট গান ছিল চারটি। বিশেষ করে অরিজিতের কন্ঠে "আর কোন কথা না বলে" গানের সিকোয়েন্স দেখতে খুব স্নিগ্ধ লাগবে। চিত্র গ্রহণ, অঙ্গসজ্জা, রূপসজ্জা , নৃত্য পরিবেশনা, শিল্প নির্দেশনা এবং সঙ্গীত পরিচালনা যারা করেছেন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখেন। একটা বাড়িতে পুরো আস্ত ছবির অর্ধেক শুটিং হলেও গল্পের প্রয়োজনে একঘেঁয়ে লাগেনি কোথাও। বার বার একটার পর একটা দৃশ্যের অবতারনা দর্শকদের ব্যস্ত রেখেছিল হল জুড়ে।

শিকারী এমন একটি ছবি যেখানে পারিবারিক অনেক মেলোড্রামা উঠে এসেছে। বাবার অধিক শাসন, সন্তানকে ক্রমাগত ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দেওয়া, একটি সাধারণ বালক থেকে কিলার হয়ে ওঠা আবার সব শেষে পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ববোধ- সব আমরা এক সাথে এক ছবিতে পেয়েছি। সিনেমার শুরুতে সুলতানের এন্ট্রি দেখলেই বোঝা যায় -হুম, এবার বাংলা সিনেমার দর্শক অন্য এক শাকিব খানকে পাচ্ছে। অর্থাৎ যৌথ প্রযোজনার শিকারী হতাশ করেনি দর্শককে, বোনাস হিসেবে পেয়েছে অভিনেতা শাকিব খানকে। এবার কেবল দেখার পালা দুই বাংলার অভিনেতা এবং পরিচাকদের সমান পাল্লায় মাপা হচ্ছে কিনা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top