What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review সত্তা : অভিনয়ে উতরালেও নির্মাণ দোষে দুষ্ট (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
DgNc37W.jpg


অবশেষে মুক্তি পেল শাকিব খান ও পাওলি দাম অভিনীত বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা "সত্তা"। বিগত দুই বছর ধরে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে কাজ করে অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল সিনেমাটি মুক্তির মাধ্যমে। সত্তা সিনেমার মধ্যে দিয়ে পরিচালক সমাজের বৈষম্য, সামাজিক মূল্যবোধ এবং কিছু বৃহত্তর জাতীয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করেছেন এ কথা সিনেমা দেখার পর যে কেউ স্বীকার করতে বাধ্য হবে। সত্তা সোহানী হোসেনের "মা" গল্প অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে। কাহিনী বর্ণানার দিকে না গিয়ে সিনেমাটি সামগ্রিকভাবে একটু আলোচনা করার চেষ্টা করি চলুন। কারন বর্তমান বাংলা চলচ্চিত্র অংগনে উপন্যাস বা গল্প অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণের নিদর্শন দেখা যায় না বললেই চলে। সে দিক থেকে এ ধরনের কাজ বেশ প্রশংসনীয় বলা যায়।

সত্তা সিনেমার কাহিনী মূলত আবর্তিত হয়েছে গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা মা হারা গ্রামীণ মেয়ের জীবনের উপর ভিত্তি করে। জীবন যুদ্ধে বারবার পরাজিত হতে যেয়েও, সে চেয়েছে নিজের অস্তিত্বকে কোনভাবে বাচিয়ে রাখতে। বারবার হোঁচট খেয়েছে কিন্তু আত্নসম্মানের কাছে মাথা নত করেনি। হয়তো পেটের দায়ে রাতের আঁধারে নিজেকে বিক্রি করতে নেমেছে কিন্তু পরক্ষণে নিজের ভালোবাসার মানুষ ছাড়া আর অন্য কাওকে গ্রহন করেনি। আপন সত্তাকে শত কষ্টের মাঝেও সে তিল তিল করে টিকিয়ে রেখেছে।

সত্তা সিনেমাটিকে নিয়ে বেশ কিছু কথা বলার আছে। সিনেমার যেমন রয়েছে কিছু বার্তা, তেমনি রয়েছে কিছু ত্রুটি। সিনেমার ভালো দিকে না হয় পরে আসছি আগে একটু দেখি আসি সত্তাকে কোন সত্তাগুলো নিজ মহিমাতে উজ্জ্বল হয়ে ফুটতে দিলো না।

CCZNxQ2.jpg


সিনেমার সব থেকে বড় সমস্যা হল সিনেমাটি হঠাৎ কিছুক্ষণের জন্য বোরিং বলে মনে হবে। সিকোয়েন্স এ গন্ডগোল নেই তবুও হঠাৎ করে আপনার খাপ ছাড়া মনে হবে।

এছাড়া শাকিব খানের কস্টিউমের সমস্যার কথা তো আছেই। হুট করে চুল ছোট তো হুট করে চুল বড়। মুখ ফোলা তো একবার মুখ শুকনা। বলতে পারেন সিনেমার কাজ শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে। এরপর ২ বছরে ভিন্ন ভিন্ন সময় নিয়ে ৫৬ দিনে শুটিং শেষ করা হয়েছে এজন্য এ অবস্থা। এটাকে আমি সিনেমার ত্রুটি থেকে বলব আমাদের শিল্পীদের পেশাদারিত্বের অভাব। এভাবে কাজ করা আসলেই কোন শিল্পীর পেশাদারিত্বের মধ্যে পড়ে না। আপনাকে দর্শক কিভাবে গ্রহণ করবে বা আপনি ঠিক কি উপায়ে নিজেকে রিপ্রেজেন্ট করবেন সেটার উপর একজন শিল্পীর গ্রহনযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়।

সিনেমার ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিক শেষের অংশ ছাড়া পুরো সিনেমাতে খুবই বাজে লেগেছে। এভাবে ক্রমাগত ঢোলের মত মিউজিক কোন সিনেমার ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিক হতে পারে বলে আমার মনে হয় না।

সিনেমার মূল দৃশ্যপট শিখা চরিত্রের উপর থাকলেও সেখানে সিনেমা সুলভ চিত্রায়ণ ফুটিয়ে তোলার জন্য আনতে হয়েছে গান, নাচ এমন কি কিছু অ্যাকশন দৃশ্যের। যা হয়তো না আনলেও হতো। উপমাহাদেশের ট্রেন্ড ফলো করতে গিয়ে মনে হয় এমন করতে হয়েছে। অথবা বানিজ্যিক কথা চিন্তা করে।

সিনেমার সব থেক বড় সমস্যা ছিল গানে। জোর করে মনে হল দুইটা গান হুট করে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। গুলিস্থানের মোড় গানটা তো পুরোপুরি শেষ ও হয়নি। এভাবে হুট করে শুরু করে শেষ করে দেওয়ার মানে আমি বুঝি নি। আইটেম সং এতো নিম্নমানের হবে ভাবতে পারি নি।

ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নেওয়া গানের শটগুলো ছিল খুবই বাজে। মনে হয়েছে যিনি এটা অপারেট করেছেন তিনি খুব একটা এক্সপার্ট না এ ধরনের কাজে। আয়নাবাজিতে এ ধরনের ক্যামেরার কাজ খুব দারুন করে করা হয়েছে। সো এ ধরনের কাজ দেখতে বসলে যে কারো কাছে খারাপ লাগবে।

zi6seg1.jpg


সিনেমার সব থেকে বড় সমস্যা আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে তা হল সিনেমাটি একটু বেশি টেনে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। গল্পটা আসলে বেশি স্ট্রং না। এধরনের গল্পে যে প্রাণ থাকা উচিত ছিল তা ছিল না। সব সময় প্রজেন্টেশনে কেমন যেন একটা মন মরা ভাব ছিল।

অনেক তো হল ত্রুটি দেখার কাজ একটু দেখি ভালো কিছু পাওয়া যায় কি না। ভালো কিছু বলতে গেলে আছে দেখার মত অভিনয়।

শাকিব খান এবং পাওলি দাম ন্যাচারাল অভিনয় বলতে যা বোঝায় সেটা করার চেষ্টা করছেন। যদিও সিনেমা হলে কেউ কেউ বলেছে শাকিব খান নাকি ওভার এক্টিং করছেন। তবে সিনেমার প্রথম অর্ধে কিছু কিছু দৃশ্যতে এমন লাগলেও সিনেমার ২য় অর্ধে শাকিব খানের অভিনয় আসলেই আপ টু দ্য মার্ক ছিল। শিখা চরিত্রের জন্য আসলে পাওলি দামের অভিনয় দেখার পর আমি অনেকক্ষণ চেষ্টা করেছি আমাদের বাংলাদেশে এই চরিত্রের জন্য কেউ আছে কি না খোঁজার। সত্য বলতে কি জয় আহসান ও কুসুম শিকদারের কথা মনে আসলেও তাদের গাত্র বর্ণ কিংবা এক্সপ্রেশন কোনদিক থেকে এই চরিত্রে পাওলির বিকল্প না।

নির্মাতা হিসেবে হাসিবুর রেজা কল্লোল ভাল করার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে শাকিব এবং পাওলির দৃশ্যগুলো তার যত্নের ছোয়া পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু গল্প আর চিত্রনাট্য ভাল না হওয়ার তার চেষ্টা বৃথা গেছে।

সিনেমার কিছু কিছু সংলাপ বেশ ভালো লেগেছে। হঠাৎ করে লোক হাসানোর চেষ্টা করেছেন সংলাপের মাধ্যমে। রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃশ্যপটগুলো স্যাটেয়ারের মাধ্যমে খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। যদিও সিনেমার চিত্রনাট্য আসলে কোনদিকে ফোকাস করে ছিল সেটা বারবার ভাবিয়েছেন।

মোটের উপর বাণিজ্যিক ঘরনায় সামাজিক মূল্যবোধ আর স্যাটেয়ার হিসাবে খারাপ না। মেকিং টা আরো ভালো হলে দূর্দান্ত কিছু হতে পারত।

শুধু মূল্যবোধ আর কিছু ভালো বার্তা দিয়ে আসলে ভালো সিনেমা বানানো যায় না। ভালো সিনেমাতে আপনাকে সব কিছুতে ভালো হতে হবে, হয়তো পুরোপুরি হবে না কিন্তু ৯০% হলেও আপনাকে সবদিকে ভাল হতে হবে। সেদিক থেকে বিচার করলে গল্প, নির্মান ও সিনেমার ফ্লোতে সত্তা বেশ পিছিয়ে রয়েছে। অভিনয়ের দিক থেকে হয়তো শাকিব খান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে যেতে পারে কিন্তু এক শাকিব খান দিয়ে পুরো সিনেমা বিবেচনা করা যাবে না। আমার কাছে সত্তা মোটের উপর খারাপ না এমন ধরনের চলচ্চিত্র। তবে এটাকে কোন মতেই মাস্ট ওয়াচ সিনেমার কাতারে ফেলা যাবে না। সব মিলিয়ে ধরলে ৬ এর বেশি রেটিং দেওয়া যাবে না।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top