What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review রাইয়ান : একটি সাইকোলজিক্যাল অ্যাকশন থ্রিলারের অপমৃত্যু (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
IFPm5B0.jpg


চলচ্চিত্র : রাইয়ান

পরিচালক : মাশরুর পারভেজ

কুশীলব : ইউল রাইয়ান (মাশরুর পারভেজ), অর্ষা, সোহেল রানা, ফারুক আহমেদ

মুক্তি : ১১ আগস্ট, ২০১৭

রেটিং : ১.৫/৫

রাইয়ান – এ কেমন নাম। বলাকায় ছবির প্রথম শো দেখতে আসা (মূলত ভয়ংকর সুন্দর ছবিটি দেখতে আসা) দর্শকদের প্রায় সকলের প্রশ্ন ছিল এটা। যাই হোক, এসেই যখন পড়েছি দেখে যাই। নতুন ছবি বলে কথা।

ছবির শুরুতে একজন উঠতি লেখক (মাশরুর পারভেজ) একজন পরিচালককে (ফারুক আহমেদ) গল্প শুনাতে আসেন। লেখক তার গল্প শুরু করে। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারধর্মী এই গল্পের কয়েকটি সংলাপ বাদে বাকি সব সংলাপ ইংরেজিতে। এই অংশে রয়েছে সিরিয়াল কিলিং, পিতার মৃত্যুর ফলে সৃষ্ট হতাশা এবং মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব। কিন্তু এই গল্প শেষ হওয়ার আগেই পরিচালক গল্পটি দুর্বোধ্য এবং শেকসপিয়রীয় ইংরেজির অতি ব্যবহারের দোষে দুষ্ট বলে চলে যান।

এরপর পরিচালকের স্থানে আসে এক যুবতী (অর্ষা)। সে লেখকের পরিচয় জানার পর তার কাছে গল্প শুনতে চায়। এবার শুরু হয় আরেকটি নতুন গল্প। গ্যাংস্টার অ্যাকশনধর্মী গল্পটি শেষ হয় একটি খুনের মধ্য দিয়ে। আর পুরো সিনেমা শেষ হয় যেতে যেতে লেখকের নামের রহস্য উন্মোচন করার মাধ্যমে।

ছবির গল্প এবং পরিচালনা দুটিই ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করা মাশরুর পারভেজের। ছবিতে অসরলরৈখিক গল্প বলার প্রচেষ্টা ছিল। এবার দেখে আসি মাশরুর এতে কতটা সফল হতে পেরেছেন। দুটি গল্পই তিনি খুব ধীরগতিতে বর্ণনা করেছেন। আমাদের দেশে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার খুব একটা হয় না। যারা এই ধরনের ছবি দেখেন তারা জানেন এই ধরনের ছবির শুরু ধীর গতির হলেও পরে একটা উত্তেজনা সৃষ্টি এবং সকল রহস্য উন্মোচন হতে থাকে। কিন্তু এই ছবিতে একটা সময়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও এর সফল পরিসমাপ্তি ঘটে নি। প্রথম গল্পটির জন্য ধীর গতির গল্প উপযুক্ত হলেও দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে তা বিরক্তির উদ্রেক করেছে। পরিচালক যদি প্রথম গল্পটির পূর্ণাঙ্গ এবং পরিপক্ক রূপ দিতেন তাহলে হয়ত অসাধারণ একটি ছবি পেতাম। কিন্তু একই ছবিতে দুটি গল্প দেখানোর পর একটির সাথে অপরটির ধরনগত কিছু মিল ছাড়া আর কোন মিল না থাকাটাই ছবিটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।

মাশরুর মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানার ছেলে এবং রুবেল তার চাচা। মাসুদ পারভেজ প্রথম বাংলাদেশী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'ওরা ১১ জন' (১৯৭২) এবং গোয়েন্দা চলচ্চিত্র 'মাসুদ রানা' (১৯৭৪) নিয়ে এসেছিলেন দর্শকের সামনে। আর রুবেল বাংলাদেশীতে ছবিতে প্রথম কুংফু নিয়ে আসেন এবং আরও বহু সফল অ্যাকশন ছবি উপহার দেন। সাইকোলজিক্যাল গল্পটা শুরুর সময় মনে হয়েছিল বাবা-চাচার মত সেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য নতুন এই ধারা দিয়েই চলচ্চিত্রে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে যাচ্ছে। গল্পেও নতুনত্ব ছিল তবুও এটাকে সফল বলতে পারছি না। মাশরুর বলেছেন ছবিটা একটা নির্দিষ্ট শ্রেণির দর্শকের জন্য। তা অবশ্যই, কারণ প্রথম অংশ শুধুমাত্র ইংরেজি জানা এবং যারা সাইকো-থ্রিলার পছন্দ তাদের জন্য। দ্বিতীয়াংশে বাংলা সংলাপগুলো শুনার পর মনে হয়েছে ছবির চিত্রনাট্য ইংরেজিতে লেখার পর গুগল ট্রান্সলেটর দিয়ে তার বাংলা করা হয়েছে। যেমন সচরাচর ইংরেজি ছবিতে কোন অপরাধীকে ধরে নিয়ে আসার পর তদন্তকারী অফিসারের মুখে শুনে থাকি 'লেট্‌স মিট আওয়ার গেস্ট', এই ছবিতে যার বাংলা করা হয়েছে 'আমাদের গেস্টের সাথে দেখা করে আসি' এই ধরনের।

ছবিতে কিছু জীবনধর্মী সংলাপ ছিল। 'তাসের ঘর। ইটস বিউটিফুল, অনেক ধৈর্য আর কষ্ট এবং সময় নিয়ে এটাকে তৈরি করতে হয়। এবং তৈরি করার পর একটা অপূর্ব সুন্দর জিনিস হয়ে যায়। বাট ইটস ফ্রেজাইল, ছোট্ট একটা টোকা দিলে এটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে', 'যখন হাসবে পৃথিবী তোমার সাথে হাসবে, যখন কাঁদবে তুমি একাই কাঁদবে', 'যতক্ষন জীবন আছে তুমি মাটির উপরে স্বাধীন আর যখন মরে যাবে মাটি তোমার উপরে চলে আসবে'। প্রথমটি সোহেল রানার এবং পরের দুটি মাশরুরের। কিন্তু মাশরুরের উচ্চারণজনিত সমস্যা আর পর্দায় উপস্থাপনের কারণে সংলাপগুলো হাসির খোরাক হয়েছে।

yd6wdyU.jpg


'আয়নাবাজি'র সাফল্যের পর ইদানিং প্রায় ছবিতে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঢাকা শহর দেখাতে ড্রোনের কাজ দেখা যায়। এই ছবিতে দেখানো হয়েছে। কিন্তু কয়েকটা শট ছাড়া বাকিগুলোতে ক্যামেরার কাজ তেমন একটা ভালো লাগে নি বা ভালো লাগার মত ছিল না। দিয়া বাড়িতে হেঁটে যাওয়ার দৃশ্যটি দুই সেকেন্ড থেমে থেমে শট না নিয়ে একটি লং শটে করা যেত। সাইকোলজিক্যাল অংশের শেষের দিকের শব্দগ্রহণ আর সম্পাদনার কাজ খুব ভাল ছিল।

পরিচালক হিসেবে মাশরুর পারভেজ একেবারে নতুন নয়। বছর তিনেক আগেও তিনি 'অদৃশ্য শত্রু' (২০১৪) নামে একটি ছবি নির্মাণ করেছিলেন (যৌথভাবে আকিব পারভেজের সাথে)। ধীর গতির এবং সাধারণ দর্শকের জন্য দুর্বোধ্য ছবির নির্মাণের আগে দর্শকের কথাও ভাবতে হবে। কারণ তিনি নিজেই ছবিতে বলেছেন, 'আমাদের দেশের লোক চিন্তা করার জন্য ছবি দেখে না, আনন্দ করার জন্য ছবি দেখে'। আপনি যে শ্রেণির জন্য ছবি বানিয়েছেন বললেন সেই শ্রেণির পাশাপাশি সাধারণ দর্শকের কথাও মাথায় রেখে ছবি বানান। এটাই কামনা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top