What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review পাঠশালা : শিক্ষণীয় শিশুতোষ স্বপ্ন-বাস্তব (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
o7KTkQw.jpg


নাম : পাঠশালা
ধরন : সোশ্যাল ড্রামা
পরিচালক : আসিফ ইসলাম ও ফয়সাল রদ্দি
কাস্ট : হাবিব আরিন্দা (মানিক), এমা আক্তার কথা (চুমকি), নাজমুল হোসেন (কালু), তৌফিকুল সুমন (কেদার আলী), রুমি হুদা (প্রধান শিক্ষিকা), ফারুক (গ্যারেজের ওস্তাদ) প্রমুখ।
প্রযোজনা : রেড মার্ক প্রডাকশন
শুভমুক্তি : ৩০ নভেম্বর, ২০১৮

নামকরণ : 'শেখার ইচ্ছা যদি থাকে, তাহলে এই দুনিয়াটাই একটা পাঠশালা!' ছবিতে ব্যবহার করা এই ডায়ালগটির মাধ্যমে ছবির মূলভাব বোঝা যায়। রঙ্গিন এই পৃথিবীতে হাঁটি হাঁটি করে যত কদম পা ফেলা হয়, ঠিক ততই দুনিয়ার ভালো এবং মন্দ সম্পর্কে জানা যায়। মানুষ তার লক্ষ্যে তখনই পৌছতে পারে যখন সঠিক পথের অনুসারী হতে পারে। তাই এই পৃথিবীতে জানার ও শেখার কোনো শেষ নেই, সে হিসেবে ভালো পথ বেছে নেওয়ার সময় খুব সীমিত। নামকরণ হিসেবে 'পাঠশালা' আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছে।

কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ : ছবির গল্প মূলত গরীব ঘরের সন্তান মানিককে ঘিরে। গ্রামের একটি স্কুলে সে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশুনা করতো। পরিবারের আর্থিক অভাবজনিত কারণে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার অসুস্থ মা তাকে রোজগারের জন্য ঢাকায় পাঠায়। গরীব ঘরের হলেও মানিক খুবই মেধাবী, গাড়ির গ্যারেজে কাজ নেওয়ার পর সে এমন সব কাজও করতে পারছে যা তার মালিকও ঠিকঠাক পারে না। কিন্তু তার মন পড়ে থাকতো গ্যারেজের কাছের এক স্কুলে। মানিকের আরো একটা ইচ্ছা আছে, সে চায় তার রোগাক্রান্ত মাকে ঢাকার সবচেয়ে বড় ডাক্তারের কাছে নিতে। মানিক তার এই ইচ্ছাগুলো পূরণের জন্য কী কী উপায় বের করে এবং যেহেতু সে তার দায়িত্বের তুলনায় বেশ ছোট, তাই ঢাকা শহরের অন্ধকার জগৎ মানিকের ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলে, এগুলোই ছবির বাকি অংশে দেখা যায়।

শিশুতোষ ছবির চিত্রনাট্যের অন্যতম ভালো দিক হলো, এরকম ছবির গল্প ৫ বছরের শিশু হতে শুরু করে ৫০ বছরের বুড়ো অব্দি সবাই উপভোগ করতে পারে। এ ছবির চিত্রনাট্যও খুবই সহজ সরলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ছবিতে বেশ কিছু শক্তিশালী ডায়ালগ ছিল, যেগুলো এরকম ছবির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ডায়ালগের মধ্যে গভীর বার্তা ছিল, যা মানবসমাজের ভালো-খারাপ দিক তুলে ধরে।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৯০।

অভিনয় : এ ছবির মূল তিন চরিত্রের রূপদান করেছেন তিন শিশুশিল্পী হাবিব আরিন্দা, এমা আক্তার ও নাজমুল হোসেন। শিশুশিল্পীদের অভিনয়ে একটা অন্যরকম ন্যাচারাল ভাব পাওয়া যায়, সেটা অনেকক্ষেত্রেই বয়স্কদের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। এ ছবিতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তিনজনই দারুণ অভিনয় করেছেন। মানিক চরিত্রটির কথা আগেই বলেছি, চুমকি হলো এক স্কুলের কেরানির মেয়ে। বয়সে ছোট তাই সেও অনেক বেশি স্বপ্নবাজ, জাদুমন্ত্রের প্রতি তার অনেক আগ্রহ। চরিত্রের সাথে তার চেহারার কিউটনেস খুব ভালো মানিয়েছে।

কালু চরিত্রটি হলো মানিকের সম্পূর্ণ বিপরীত। সে মানিকের মতো এতটা ভাগ্যবান নয়, তাই ঢাকার অন্ধকার রূপটাই তার সামনে ধরা দিয়েছে। সে বিশ্বাস করে, এই শহরে টিকতে হলে শর্টকাট ছাড়া গতি নাই। কেউ কারো ভালো দেখে না। কেউ নিজে ওপরে ওঠার চেষ্টা করে না, যে ওপরে ওঠে সবাই মিলে তাকে নিচে নামায়।

ছবির অন্যতম নেগেটিভ পয়েন্ট হলো এর পার্শ্বচরিত্রগুলো। চুমকির বাবার চরিত্রে থাকা তৌফিকুল সুমন ছাড়া আর কারো অভিনয়ই আমার তেমন ভালো লাগেনি, কেমন যেন মেকি ভাব ছিল। যদিও চরিত্রগুলোর গুরুত্ব তেমন নেই, কিন্তু তবুও এসব চরিত্রে থাকা অভিনেতাদের অভিনয় আরেকটু ভালো হলে সবকিছু পূর্ণতা পেতো।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৬০।

Y9tHHMQ.jpg


কারিগরি : এই অংশের সবচেয়ে ভালো দিক ছিল এ ছবির লোকেশন। বিশেষ ধন্যবাদ তাদের যারা এমন চোখ জুড়ানো সুন্দর লোকেশনে শ্যুট করার আইডিয়া বের করেছেন।

ছবির সিনেমাটোগ্রাফি মোটামুটি চলনসই। এডিটিং ও মোটামুটি ভালো। কালার গ্রেডিং ভালো ছিল। প্রায় ৩ মিনিটের এনিমেটেড সিন ছিল কিছু, সেগুলোর কাজ বেশ ভালো হয়েছে।

ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজটি খুব একটা ভালো লাগেনি, গল্পের ইমোশনটা কেন জানি বিজিএমের সাহায্যে পূর্ণতা পাচ্ছিল না।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৬০।

বিনোদন : যেহেতু এটা শিশুতোষ ছবি, তাই বিনোদনের মাত্রাটাও একজন শিশুর দিক থেকেই বিবেচনা করা উচিত। সেক্ষেত্রে এছবি যারা লেখাপড়ায় অমনোযোগী, তাদের উদ্দেশ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দিয়েছে। 'লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে সে' এই প্রবাদের অন্যতম উদাহরণ হলো এই ছবি। এছাড়া অনেকের ক্ষেত্রে এছবি একধরনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, যারা প্রতিনিয়ত পদে পদে ব্যর্থ হচ্ছে। নিজে যা চাচ্ছে পা পাচ্ছে না।

ছবিতে একটি গান রয়েছে, পুরো গানটি এনিমেটেড। ছোট বাচ্চারা গানটি দেখে অনেক মজা পাবে আশা করি।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৬৫।

ব্যক্তিগত : শিশুতোষ ছবির কথা বললেই বরেণ্য পরিচালক মোরশেদুল ইসলামের কথা টানতেই হবে। উনি যেনো এই জনরায় একাই একশো! দীপু নাম্বার ২, আমার বন্ধু রাশেদ, আখি ও তার বন্ধুরা'সহ আরো অনেক জনপ্রিয় ছবি তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন; যার ফলে এই জনরায় ভালো ছবির অভাব কখনোই তেমন উপলব্ধি হয়নি। ফয়সাল রদ্দি ও আসিফ ইসলাম এই ভালো কাজের সাফল্যে আরেকটি পালক যুক্ত করলেন। মোরশেদুল ইসলামের মতো ওমন দূর্দান্ত পরিচালনা পাইনি, তবে নবীন পরিচালক হিসেবে যতটুকু পেয়েছি যথেষ্ট।

সবমিলিয়ে বলবো ছবিটি ট্রেইলারের তুলনায় ভালো হয়েছে। ট্রেইলারটি দেখে আমার তেমন আগ্রহ জন্মায়নি বা খুব একটা ভালো লাগেনি। সে তুলনায় ছবিটি মোটামুটি ভালো লেগেছে। পার্শ্বচরিত্রের কাজগুলো মনমতো হলে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজ আরেকটু ভালো পেলে আরো বেশি ভালো লাগতো।

রেটিং : ৭/১০

ছবিটি কেন দেখবেন : এ ছবির ট্যাগলাইন হলো 'সব মানিকের জন্য স্কুল চাই'। আমিতো বলবো এ সব ছবির জন্য ক্ষুদে দর্শক চাই! স্টার সিনেপ্লেক্সে হাতে গোনা ৩/৪ জন ক্ষুদে দর্শক ছিল। আশা করি যারা শিক্ষার্থী, বিশেষকরে স্কুলপড়ুয়া, তারা সবাই এই ছবিটি দেখবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top