What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review যেমন দেখলাম পাসওয়ার্ড, নোলক ও আবার বসন্ত (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
xEkvfkb.jpg


ঈদুল ফিতর ২০১৯ এর তিন সিনেমা মুক্তির একমাস পূর্ণ হল গতকাল (৫ জুলাই)। সিনেমার মুক্তির সাথে সাথে সিনেমার সমালোচনা করলে নাকি বেশ সমস্যা হয় সিনেমার জন্য, এই দেশের অনেকে এটা বলেন। তাই ভাবলাম মুক্তির এক মাস পরে কথা বললে আশা করি কোন সমস্যা নাই। সো হিয়ার আই গো-

iYs95xH.jpg


নোলক : দুই জমিদার ভাই, একজনের সাথে আরেকজনের অতি অসাধারণ সম্পর্ক। ছোট ভাই তো রীতিমত বড় ভাইকে "পীর" বলে ডাকেন! বড় ভাইয়ের ছেলে শাকিব যার কাজ হোন্ডা চালানো, গ্রামের বিভিন্ন গাছের ফল চুরি আর ছাগল চুরি। ছোট ভাইয়ের একমাত্র সন্তান ববি, যার কাজও সেম জাস্ট তিনি 'কলিকালের রাঁধা' নামের গানে নাচেন যা আবার শাকিব করেন না। দুই ভাইয়ের এত টাকা যে খরচ করার জায়গা নেই, তাই তাদের সাথে থাকা কর্মচারীরা তাদের বুদ্ধি দেয়- একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন, মামলা মানেই অনেক টাকার অপচয়, একটা জায়গা পাবেন আপনারা টাকা খরচের। বুদ্ধিটা খুব মনে ধরে দুই ভাইয়ের আর সেভাবেই কাজ শুরু করেন তারা!

২০১৯ সালে এই ধরনের গল্প মানুষ কেন দেখবে আমার জানা নাই! সিনেমার একটা ঘণ্টা শুধু শাকিব আর ববির খুনসুটি দেখতে দেখতেই চলে গেল, কাহিনী আর অন্য কোথাও যায়নি। যে গ্রামে সিনেমার সেটিং, সেই গ্রামে ঘোড়ার গাড়ি চলে, নরমাল গাড়িও চলে আবার ববি স্কুটিও চালান কিন্তু কেউ মোবাইল ব্যবহার করেন না(সাচ্চু বাদে, তাও শুধু ছবি তোলার জন্য)- স্ট্রেঞ্জ না বিষয়টা? সিনেমার পুরো সময়ে একবারও শাকিব আর ববির পড়াশোনা বা তারা অন্য কি করেন সেটা নিয়ে কোন কথা নাই।মনে হচ্ছিল দুইজনের কাজই শুধু ফল চুরি করা। আর এখন কি এই ধরনের ক্যারেক্টারে শাকিব কে মানায় যেখানে বয়স প্রায় ৪০ এর মতো আর যেখানে নিজের শরীরকে তিনি সেভাবে কন্ট্রোল করতেই পারেন না? সিয়াম পূজা হলে নাহয় মেনে নেয়া যায়! যে ছোটভাই বড় ভাইকে পীর মানেন, সেই ছোটভাইয়ের মেয়ে যখন শাকিবের সাথে বিয়ে করে এলেন- ছোটভাই মানতেই চাইলেন না! কিন্তু কেন? ব্যাখ্যা নাই! তাহলে এত পীর, এত ভালোবাসা কই গেল তখন? ওমর সানি আর মৌসুমি জাস্ট ওয়েস্টেড!

নোলকের গল্প দুর্বল, চিত্রনাট্য আরও দুর্বল আর খাপছাড়া। বাকিসব ঠিকঠাক। এটাতেই আফসোস বেশি লাগে নোলকের জন্য। হিউজ সেট, লোকেশন, কালার গ্রেডিং, হিন্দি গোলমাল সিনেমার শুটিং যে বাড়িতে হয়েছে সেই বাড়িতে শুট করা- কোন কমতি রাখেন নাই প্রযোজক এই সিনেমার জন্য। এমনকি শেষের দিকে আগুন লাগার দৃশ্যে ভিএফএক্সের কাজও যথেষ্ট মানসম্পন্ন।গানগুলাও চমৎকার,দারুণ গ্লামারাস লেগেছে শাকিব আর ববিকে।জাস্ট মেইন জায়গায় গলদ।

8rY1P9q.jpg


পাসওয়ার্ড : কোরিয়ান সিনেমার নকল নাকি সুন্দরবনে বসে বানানো মানুষের সিনেমা, পরিচালক আর প্রযোজকের চাপাবাজি এক সাইডে রেখে শুধু সিনেমা নিয়ে কিছু বলি কারণ এসব নিয়ে অলরেডি অনেক কথা বলা হয়ে গেছে।অন্য কিছু বলি। সিনেমার শুরুতেই শাকিব খান আহত হয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন, কিছুক্ষণ মারামারির পর একটা গাড়ি এসে ধাক্কা দিল আর তিনি রাস্তায় পড়ে গেলেন। এরপরে আমরা ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যাই যেখানে শাকিব নিজেই নিজের কাহিনী বর্ণনা শুরু করেন আর যেখানে শুরুতেই "সোয়াগ" গান! কেন কি গান, এই গান দিয়ে শাকিবের পরিচয় কীভাবে তুলে ধরা হল- কোন কারণ নাই! জাস্ট ইচ্ছা হল, তুরস্ক দেখাতে হবে, কত বড় বাজেটের সিনেমা এটা সেটা বারবার প্রমাণ করতে হবে তাই এই গান। গান শেষে দেখা গোল শাকিব নিজের রুমে ঘুম থেকে উঠলেন আর তার পায়ে দেখা গেল জুতো পরা।। জুতা পরে কেউ ঘুমাতে যান- জানা ছিল না। হয়ত এটাই ডক্টরেট করা মানুষের বৈশিষ্ট্য- কে জানে! হাসপাতালে শাকিব ভিলেনদের সাথে মারামারি করছেন, বুবলিকে আটকে রাখছেন আর অমিত হাসান পুলিশ হয়েও হাসপাতালের সিসি ক্যামেরাতে বসে বসে পুরো ভিডিও দেখছেন- মানে কি! গ্রেফতার করবেন কখন? পালানোর সময়?

মিশা সওদাগরের ক্যারেক্টারটা কমেডি টাইপ হয়ে গেছে জাস্ট। ইমনের সুযোগ ছিল ভাল করার এই ক্যারেক্টারে, কিন্তু সেভাবে স্পেশাল কিছুই করতে পারেননি। সেই তুলনায় বুবলিকে দেখে আসলেই কিছুটা সারপ্রাইজড। বিশেষ করে একশন দৃশ্যে বেশ ভালো করেছেন। এই সিনেমার স্ক্রিপ্টেও যথেষ্ট লুপহোল, কিন্তু তারপরেও মোটামুটি এঞ্জয় করেছি বিশেষ করে সিনেমার সেকেন্ড হাফ। মালেক আফসারির সিনেমার লাইটিং আমি আগে সেভাবে খেয়াল করি নি, কিছু জায়গায় বেশ ভাল লাগলো সিনেমার লাইটিং বিশেষ করে সিনেমার শুরুতে আর ইমনের পরিণতির পরে সেই জায়গার লাইটিং। সিনেমার গানগুলো চমৎকার আর বোঝাই যাচ্ছে সিনেমার প্রায় সব বাজেট গেছেই এই গানগুলোতে। তবে শাকিবের ভাই ইমন বুবলির বোনকে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে, শাকিব আর বুবলির পেছনে গুন্ডা আর পুলিশ তাড়া করছে, এর মাঝেও বারে গিয়ে মদ পান করে কীভাবে তারা একটা আস্ত গানে নাচানাচি করে ফেলেন- আমার মাথায় আসে না। গান দেন সিনেমাতে, কিন্তু গানের প্লেসমেন্টটা ঠিক করেন অন্তত!

no2UDr7.jpg


আবার বসন্ত : ঈদের তিনটা সিনেমার মাঝে সবচেয়ে ভাল গল্প ছিল সম্ভবত এই সিনেমার, কিন্তু মেকিং আর চিত্রনাট্য এত দুর্বল যে অসহায় হয়ে দেখছিলাম এরকম দারুণ কনসেপ্টের একটা সিনেমা কীভাবে নষ্ট হয়ে গেল চোখের সামনে! অনন্য মামুনের এর আগের সিনেমাগুলোতে মেকিং সবসময় একটা লেভেলে থাকতো, এবারের সিনেমার এই অবস্থা কেন কে জানে! কিছু দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল আজকাল আমাদের নাটকের সেট ডিজাইন এর চেয়ে ভাল হয়।

সিনেমা নির্মাণের সময় টিম কতটা অমনোযোগী থাকলে সিনেমাতে কিছু হাস্যকর ভুল হয় তার কিছু উদাহরণ দেই। তারিক আনাম খান ঘুমিয়ে আছেন আর তাকে ঘুম থেকে ওঠাতে এসেছেন তার বাড়ির চাকর।সেই চাকরের হাতে দেখলাম দামি ঘড়ি পরা। শুধু তাই নাই, একদম ঝকঝকে গামছা আর লুঙি পরা তিনি। বাসার কাজের বুয়ার ভ্রু এমনভাবে প্লাগ করা যেন সদ্য পার্লার থেকে এসেছেন।তারিক আনাম খান নিজের সন্তানদের সাথে কথা বলছেন এরকম ইম্পরট্যান্ট একটা সিকুয়েন্সে শুধু মিড শট আর ক্লোজআপ নিয়েই পুরা সিকুয়েন্স শেষ! আর এক একটা সিকুয়েন্স ১০ থেকে ১২ মিনিট- ধৈর্যের পরীক্ষা কাকে আর বলে! বিজিএম এর অবস্থা যাচ্ছেতাই।লাইটিং কিছু জায়গায় খুবই বাজে।

তারিক আনাম খান ঠিকঠাক তবে স্পর্শীয়াকে খুব ভাল মানিয়েছে এই ক্যারেক্টারে। এই দুইজন পারফেক্ট কাস্টিং ছিলেন এই সিনেমার জন্য মানতেই হবে।বাকিসব কাস্টিং এর অবস্থা খুবই করুন আর কিছু জায়গায় ভয়ানক। যেমন- তারিক আনাম খানের মেয়ের চরিত্রে কিছুতেই মুনিরা মিঠুকে মানতেই পারছিলাম না! সিনেমার সেকেন্ড হাফ ফার্স্ট হাফের চেয়ে কিছুটা বেটার বিশেষ করে প্রধান দুই চরিত্র বিদেশে যাওয়ার পরে। সেকেন্ড হাফে বেপরোয়া মন টাইটেলের চমৎকার একটা গান আছে, আমি জানিনা কেন এই গানটা সিনেমা রিলিজের আগে রিলিজ করা হল না! খুব কাজে আসতো গানটা সিনেমার প্রচারের ক্ষেত্রে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top