What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review যৌন ঈর্ষা আর একাকী বারান্দার আখ্যান (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,016
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
0AqQfT9.jpg


বারান্দা

পরিচালক- রেশমি মিত্র

অভিনয়- ব্রাত্য বসু, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, মানালি দে

গিরিজাপতি বিশ্বাস ইউনিভার্সাল মোটরস-এর বাতিল ফোরম্যান। দুর্ঘটনায় পা বাদ গিয়েছে। দু্'কামরার ঘর আর এক চিলতে বারান্দায় দিনাতিপাত হয় তার। অলস মস্তিষ্কে যৌন ঈর্ষার নয়া কারখানা চালু হয়।

স্ত্রী রুনু (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) চাকরি করে। গিরিজাদের সংসার চলে। তারা পয়সা বুঝলে গেস্ট-ও রাখেন— গিরিজার দুঃসম্পর্কের ভাই অম্বর (সাহেব ভট্টাচার্য)। তার সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে গিরিজার ঈর্ষা। ঈর্ষা বন্ধু মোহনকে ঘিরেও। পরিচালক রেশমি মিত্র প্রথমার্ধে সন্দেহের মোড়ক ছাড়িয়ে নাগরিক মানুষের যৌন ঈর্ষাকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে যতটা বোর করেছেন দর্শককে, তা কহতব্য নয়।

কিছুক্ষণ বসে থাকার পরেই দর্শকের মুখ দিয়ে আপনাআপনি বেরিয়ে আসবে, "এত স্বগতোক্তি কেন?" মানে কেন? একটা লোক বারান্দায় বসে বউকে সন্দেহ করবে আর চারপাশের পুরুষদের ঈর্ষা করবে আর আবহে বেজে উঠবে করুণ সুর! বাপরে!

এহ বাহ্য। ইন্টারভাল।

ZVMhPAr.jpg


আর ইন্টারভালের পরে সত্যি গল্পটা মোড় নেয়। সেটা দেখা দরকার। রিভিউয়ে বলে দিলে অর্ধেক মাটি হয়ে যাবে। দেখুন। মোদ্দা কথায়, এক জন নাগরিক মানুষ, প্রথম যৌবনে গণিকাগৃহে যার যৌনতার পরিচয় ঘটে গিয়েছে, নারীসঙ্গে সমস্ত জীবন শুধু সে বিস্মিত হতে পারে না। বিস্ময় নয়, তার নিজের পরিচয়ের সমস্ত সঙ্কট দলা পাকিয়ে যৌনতার ভাষায় প্রকাশ পায়। কী ভাবে, তা অনেকটাই দেখিয়েছেন রেশমি।

বোর করেছেন বিস্তর, কিন্তু তার মধ্যে দিয়েও অনেক কিছু বলেছেন। যে সমস্ত সঙ্কট হালফিলের বাংলা ছবির রসদ, তাতে পয়সা দিয়ে শুধু ইন্টারভালের পরের বেশ কিছুক্ষণের জন্যই বারান্দা দেখতে পারেন।

MNsMNY5.jpg


ছবির একটি দৃশ্যে মানালী ও ব্রাত্য।

চিত্রনাট্যে বেশ কিছু দুর্বলতা রয়েছে। ক্যামেরাতেও। ছবিতে যে বারান্দা দেখবেন, সেটা অদ্ভূত একটা জায়গা থেকে। উত্তর কলকাতার বাড়ি তো, গায়ে গায়ে লাগা সব। তার মধ্যেই একটা লম্বা বারান্দা। তার ঠিক বাইরে ক্যামেরা, মানে দর্শকের চোখ। মনে হবে জিরাফের গলায় চড়ে অদৃশ্য আপনি যুগলকে বারান্দায় বিশ্রম্ভালাপ করতে দেখছেন। অথবা রেলিং-এর জাফরির ওপারে বসে, দাঁড়িয়ে আত্মগত ঈশ্বরের কাছে স্বীকারোক্তি করছে গিরিজা।

বারান্দা আদপে একটা বহুমাত্রিক ব্যাপার। জীবনে ব্যথাট্যাথা পেয়ে হে দর্শক, আপনি যদি বারান্দায় একেবারে একা একা দিনপাত করে থাকেন, তা হলে নিশ্চই জানেন, বারান্দার কোণায় কোণায় গল্প থাকে। সেখানে বাইরে থেকে ক্যামেরা দেখায় বারান্দার ভিতরের কয়েক বর্গফুট জায়গা। আর বারান্দায় দাঁড়িয়ে নীচ দিয়ে চেনা স্কুটার, চেনা যুবতীদের রাস্তায় দেখায়। ওই ব্যাপারটাই আরও দেখালে ভাল হত। অনেক কম বোরিং হত। সত্যি। নাম 'বারান্দা' রাখার পরেও পরিচালক যে কী করে এমনটা করলেন, কে জানে!

wJPYtBq.png


দৃশ্য ধরতে না পারলেও শব্দ ধরা পড়েছে সুন্দর। উত্তর কলকাতা এক দুর্দান্ত সাউন্ডস্কেপ। সেখানে ফিরিওয়ালা, ভেসে আসা হিন্দি গান, সন্ধ্যায় পড়শি বাড়িতে কিশোরীর রেওয়াজ, যথাসময়ে কোকিল— সব যুতসই ভাবে আছে এই ছবিতে। শুধু এই ধ্বনি-আবহটাই নিখুঁত।

অভিনয় নিয়ে বিশেষ বলার নেই। ব্রাত্য ভাল করেছেন। মানালি দে-ও।

শেষকালে যেটা বলার, দু'টো হাফ মানুষ জুড়ে একটা আস্ত মানুষ হয় না। একটা আস্ত সংসার হয় না। আস্ত সম্পর্ক হয় না। আস্ত সিনেমাও হয় না।

শুধু গিরিজার গল্পে থেকে গেলেই আরও স্মার্ট হত ছবিটা। আধাখ্যাঁচড়া ভাবে রুনুর নিজের গল্পটাও শেষে জোড়ার কোনও দরকার ছিল না।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top