What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review মনের দুয়ার খুলে গেয়ে যাও গহীনের গান! (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
uTvWmaR.jpg


গহীনের গান

ধরন: মিউজিক্যাল রোম্যান্টিক ড্রামা
গল্প ও পরিচালনা: সাদাত হোসাইন
প্রযোজনা: বাংলাঢোল
অভিনয়: আসিফ আকবর, তানজিকা আমিন, সৈয়দ হাসান ইমাম, তমা মির্জা, আমান রেজা, কাজী আসিফ রহমান, তুলনা আল হারুন প্রমুখ।
শুভমুক্তি: ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯

নামকরণ: "পাতা ঝরার শব্দ শুনতে পাই অথচ একে অন্যের হৃদয়ের স্পন্দন শুনতে পাই না। আমাদের হৃদয়ে বয়ে যায় গহীনের গান…" সিনেমায় থাকা এই একটি সংলাপই বোধহয় যথেষ্ট এছবির নামকরণের সার্থকতা বোঝানোর জন্য। এছবিতে দেখানো প্রতিটি চরিত্র তাদের অন্তরের কথা বলছে; তাদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করছে, আনন্দ-বেদনার গান মনের দুয়ার খুলে গাইছে। এরকম কনসেপ্টের একটি ছবির জন্য "গহীনের গান" নামটিই সবথেকে বেশি মানানসই।

কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ: সাধারণত গল্প ও চিত্রনাট্য নিয়ে প্রতিবার শুরুতে আলোচনা করলেও এছবির ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে সংলাপ নিয়েই আগে আলোচনা শুরু করা উচিত। কারণ এছবিতে আপনি এমন কিছু ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ সংলাপ খুজেঁ পাবেন, যেগুলো সিনেমাহল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও বাসায় গিয়ে মনে করতে পারবেন। আসিফ আকবরের মুখে "Some people feel the rain, others just get wet" কিংবা তমা মির্জার মুখে "জগতের সকল গল্প তো একইরকম, ভালোবাসা বা ঘৃণার"… তুলনা আল হারূনের মুখে "শিল্পীদের সাথে কখনো প্রেম করতে নেই। তাদের কথা যেনো গোছানো থাকে, কখন কি বলতে হবে, যাতে রাগটা জল হয়ে যায়"…. কাজী আসিফ রহমানের মুখে "আমি ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা কিনেছি"… সৈয়দ হাসান ইমামের মুখে "প্রতিটা মানুষের জন্য কেউ না কেউ অপেক্ষা করে। আর আমার জন্য অপেক্ষা করে বদ্ধ দরজার তালা!"; কিংবা "তারুণ্যের স্বপ্ন থাকে, সম্ভাবনা থাকে। বার্ধক্য সেখানে নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় ও উচ্ছিষ্ট!"… এরকম বহু সুন্দর এবং একইসাথে অর্থপূর্ণ সংলাপ পাওয়া যাবে যা ছবিটির সাথে দর্শককে জুড়ে রাখতে সাহায্য করে। সাদাত হোসাইন কেন তার লেখালেখির জন্য এতো সমাদৃত তিনি তার এই সুনিপুণ কাজের মাধ্যমেই যেনো প্রমাণ করে গেলেন!

jJRc7y8.jpg


ছবির গল্প খুবই সাদামাটা। একজন কন্ঠশিল্পী এবং তার সহধর্মিণীর মধ্যকার টানাপড়েনের গল্প। সহধর্মিণীর অভিযোগ, তার ভালোবাসার মানুষটি তাকে আর ততটা প্রয়োজনীয় মনে করছেন না। কন্ঠশিল্পী তখন তাকে বৃষ্টিভেজা আবহাওয়ায় বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুজন মানুষের গল্প শোনান। একজন হলেন বাসার নিচে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা বৃদ্ধ ভদ্রলোক, আরেকজন হলেন ভিজতে থাকা বৃদ্ধকে দেখতে পেয়ে মাথার ওপর ছাতা এগিয়ে দেওয়া একজন তরুণীর। তাদের জীবনের দুটি গল্প শোনানোর মাধ্যমে কন্ঠশিল্পী তার সহধর্মিণীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, মানুষের জীবনে প্রিয়জনের অস্তিত্ব থাকা কেন প্রয়োজন। এভাবেই পুরো ছবি গানে গানে এবং কিছু ছোটখাটো টার্ন এন্ড টুইস্টের সাহায্যে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।

লেখালিখির ভালো দিক এ পর্যন্তই। এরপর আসা যাক এছবির অন্যতম বড় নেতিবাচক দিকে, সেটি হলো গল্পে গভীরতার অভাব এবং বাস্তবতা থেকে কিছুটা দুরে সরে যাওয়া। যদিও এটি একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম, তাই গানের ওপর গুরুত্ব বেশি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দিনশেষে একটি ভালো গল্পই কোন ছবি কতটা ভালো তা নির্ধারণের প্রধান শর্ত। এক্ষেত্রে লেখনীটা গানের সাহচর্য্যে এসে গল্পকে দূর্বল করে দিয়েছে বলে মনে হলো। শুরুর ১৫-২০ মিনিট দেখেই আপনি প্রেডিক্ট করে ফেলতে পারবেন সামনের দেড়-দুই ঘণ্টা কি দেখতে পাওয়া যাবে। সেইসাথে চিত্রনাট্য বেশ খানিকটা ধীরগতির হওয়ায় গানগুলি বাদে সিনেমার বাকি দিক যেকোনো দর্শককে বিরক্তির উদ্বেগ জাগাতে পারে। সিনেমার থাকা শক্তিশালী সংলাপ হয়তো কিছু কিছু জায়গায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ দেয়, কিন্তু একটা ছবির সব সংলাপ তো সমানভাবে শক্তিশালী হয় না… আমার মতে যদি "আগে গল্প পরে গান" পদ্ধতি অনুসরণ করা হতো, তবে গল্প এবং গান দুটিকেই শক্তিশালী রূপে পাওয়া যেতো।

দ্বিতীয় যে দিকটি দূর্বল লাগলো সেটির কথা বললে খানিকটা স্পয়লার হয়ে যাবে, তাই ইঙ্গিত দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি। ছবিতে সৈয়দ হাসান ইমামের যে যৌবনকাল দেখানো হয়েছে সেটা বড়পর্দায় দেখলে সেই ঘটনা যে আজ থেকে চল্লিশ বৎসর আগের… সেই অনুভুতি কেন জানি পাওয়া যায় না; মনে হয় এখনকার সময়ের কোনো ঘটনা দেখছি। অন্যদিকে শেষ গল্পটির যেখানে পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে সেটার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ পেলাম না। ছেলেটি মেয়ের পরিবারের সাথে দেখা করে গেলো, পরিবারের মানুষেরা তার সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাকে পছন্দও করলো, ছেলেটি যাওয়ার আগে কথা দিয়ে গেলো সে আবার আসবে… এতোকিছুর মাঝে কেন পরিবারের সদস্যরা তার বর্তমান ঠিকানাটি সংগ্রহ করে রাখলো না… এই বিষয়টি আমার ঠিক বুঝে আসলো না।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৪০

hN81fTy.jpg


পরিচালনা: বিশিষ্ট লেখক সাদাত হোসাইন এর এটিই প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনা। এর আগে তিনি বহু উপন্যাস লিখেছেন, পাঠকদের মাঝে তিনি বেশ জনপ্রিয়। তার প্রথম ছবি "গহীনের গান" এ গল্প উপস্থাপনার দিক থেকে তিনি কিছুটা কাব্যিক পন্থা অবলম্বন করেছেন, যেটি বেশ অন্যরকম এবং উপভোগ্য লেগেছে। গল্প বলার গতানুগতিক নিয়ম অনুসরণ না করায় ধীরগতির সিনেমা হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘসময় ধরে সিনেমার সাথে জুড়ে থাকা সম্ভব হয়েছে। তাই গল্পকার ও চিত্রনাট্যকার সাদাত হোসাইন ফেইল করলেও সংলাপ রচয়িতা এবং পরিচালনায় তিনি পাশ। ভবিষ্যতে চাইবো তিনি আরো শক্তিশালী গল্প নিয়ে নির্মাণপেশায় হাজির হোক।

অভিনয়: অভিনয়ের দিক থেকে আমার দৃষ্টিতে "গহীনের গান" এর দুই প্রধান নারী চরিত্র তানজিকা আমিন ও তমা মির্জা পুরো সিনেমাজুড়ে সৌন্দর্য্য ছড়িয়েছেন, রূপে-গুণে দুই দিক থেকেই। তাদের কথা বলার বাচনভঙ্গি এতো বেশি আকর্ষণীয় যে বারবার শুধু তাদের মুখেই বাংলা ভাষা শুনতে ইচ্ছে করবে। তানজিকা আমিনের মেকআপের ভারসাম্য যদি একটু বজায় রাখা যেতো তবে আরো ভালো হতো।

সৈয়দ হাসান ইমাম এই বয়সে এসে যেভাবে বৃষ্টিতে ভিজে অভিনয় করার ডেডিকেশন দেখাচ্ছেন তা সত্যিই অবাক করার মতো! এনাকে দেখে কে বলবে, আর ১৫-১৬ বছর পর তিনি তার শততম জন্মদিন উৎযাপন করবেন! শরীরের দিক থেকে তিনি এখন ৭০, আর মনের দিক থেকে তিনি এখনো চল্লিশেই আছেন। তিনি যেনো আমাদের মাঝে আরো ভালো ভালো কাজ উপহার দিয়ে যেতে পারেন সেই প্রত্যাশা কামনা করছি।

ছবিতে আসিফ আকবরের অভিনয় কিছুটা দূর্বল ছিল, তবে যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম ততটা নয়। প্রথমার্ধ তিনি বেশ ভালোভাবেই সামলে নিয়েছেন, সেই সাথে পরিচালক এবং চিত্রগ্রাহক তাকে যেভাবে পর্দায় উপস্থাপন করেছেন সেটিও আসিফ আকবরকে সাহায্য করেছে তার দূর্বলতা ঢাকার। ভালোভাবে যদি খেয়াল করা যায় তবে বোঝা যাবে, আসিফ আকবরের সামনাসামনি ক্যামেরা ধরা হয়েছে এমন সিক্যুয়েন্স ছবিতে খুবই কম। কখনো পাশ থেকে কিংবা কখনো দূর থেকে… এরকম বুদ্ধিমত্তার সহিত তাকে পর্দায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

গল্পের বাকি ছোট ছোট চরিত্রগুলোতে আমান রেজা, কাজী আসিফ রহমান, তুলনা আল হারূন সহ অন্যান্যরা মোটামুটি ভালোই অভিনয় করেছেন।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৭৫

কারিগরি: এ ছবির আবহ সঙ্গীতের প্রশংসা করতে হবে সবার আগে, যে কাজ সিনেমাহলে দেখতে যাওয়া সবাইকে এক অন্যজগতে প্রবেশ করিয়ে দিবে। রেজাউল করিম লিমনের কথা দারুণ কাজ আপনাকে দুই ঘণ্টা মোহনীয় করে রাখবে। এছাড়া সিনেমাটোগ্রাফি কিংবা সম্পাদনার কাজও আবহ সঙ্গীত থেকে কম পিছিয়ে নেই। বিদ্রোহী দীপনের দেখানো অভিনেতা আসিফ আকবর এর প্রশংসা তো আগেই বললাম… সেইসাথে বৃষ্টিভেজা সিক্যুয়েন্সগুলি যেভাবে সুন্দর ও সাবলীলভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা দেখতে খুবই সুন্দর! লিমন রোজারিও এর করা সম্পাদনার কাজও বেশ ভালো ছিল, কালার গ্রেডিং এর মান ছিল মোটামুটি ঠিকঠাক। কস্টিউম ডিজাইন, লোকেশন ইত্যাদি আনুসাঙ্গিক দিক থেকে কোনো কমতি নজরে পড়েনি।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৯০

বিনোদন ও সামাজিক বার্তা: ছবিতে মোট নয়টি গান রয়েছে, যার চারটি রয়েছে প্রথমার্ধে আর বাকি পাঁচটি দ্বিতৗয়ার্ধে। এই মুহূর্তে যে গানটি আমি গুণগুণ করে গাইতে গাইতে লিখছি সেটি হলো "মুক্ত হয়েও আমি বন্দী"। সিনেমার শুরুর দিকে দেখানো এই গানটি আমার সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে। গানটিতে সুন্দর কথা ও সুরের পাশাপাশি দারুণ ভিজ্যুয়ালাইজেশন দেখতে পাওয়া গেছে। "এমনও বর্ষায়" গানটিতেও অর্ধপূর্ণ গ্লাস এবং পাশাপাশি রাখা দুটি কাপের মাধ্যমে অর্থপূর্ণ অনুভূতি বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। গানগুলোর কোরিওগ্রাফি যিনি করেছেন তার তারিফ আলাদাভাবে করতেই হয়।

mXIaG0Y.jpg


ছবিতে থাকা বাকি গানগুলির মধ্যে "তোর জন্যে কান্না পাচ্ছে খুব", "আমি তোমার জন্য বাঁচি", "আমি জানি তুমি কাঁদো" এবং "ও বাবা আমার হাতটা একটু ধর" গানগুলি বেশ উপভোগ করেছি। এই চার গানের মধ্যে প্রথম তিনটি এখনো ইউটিউবে আসেনি, আশাকরি খুব শীঘ্রই আসবে। ছবিতে থাকা বাকি দুটি গান আমার কাছে এভারেজ লেগেছে। সবগুলো গান গেয়েছেন আসিফ আকবর। গীতিকার হিসেবে ছিলেন আসিফের হিট গানগুলোর পেছনে থাকা পরিচিত নাম তরুণ মুন্সী; এছাড়া রাজীব আহমেদ এবং পরিচালক সাদাত হোসাইন নিজেও কিছু গানের কথা সাজিয়েছেন। সংগীত পরিচালনা করেছেন তরুণ মুন্সী ও পার্থ মজুমদার।

সুন্দর মন ভালো করে দেওয়া গানের পাশাপাশি এছবি ভালোবাসার মানুষের সাথে সম্পর্ক জোড়দার করার মতো গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দেয়। মানুষ যেমন প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু ছাড়া এক মুহুর্ত কাটাতে পারে না, তেমনি প্রিয় কিছু যদি জীবন থেকে হারিয়ে যায় সেই মানুষ আর পূর্বের মতো পৃথিবীর বুকে আনন্দ খুজেঁ পায় না। জীবিত অবস্থায় চলাচল করলেও অন্তরের দিক থেকে সে হয়ে যায় মৃত।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ৬০

ব্যক্তিগত: এ ছবির প্রচারণায় একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে যেটি প্রথমবার শুনে আমি বেশ অবাক হয়েছি। বলা হয়েছিল, "গহীনের গান" বাংলাদেশের প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম। আদতে সেটি সম্পূর্ণ ভুল।

মিউজিক্যাল ফিল্ম বলতে আমরা বুঝি এমন একটি জনরা যেখানে গানে গানে গল্পকে বিশ্লেষণ করা হবে, পর্দায় কি চলছে সেটা বোঝানো হবে। সাধারণত মিউজিক্যাল ফিল্ম তৈরি করতে ৭ কিংবা এর অধিক গান ব্যবহৃত হয়, তবে এই পরিমাণ গানই যে ব্যবহার করতে হবে এমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই, কোনো চিত্রনাট্যকার চাইলে মাত্র একটি গান ব্যবহার করেও মিউজিক্যাল ফিল্মের পুরো চিত্রনাট্য সাজাতে পারবেন।

q0I4Xml.jpg


মিউজিক্যাল ফিল্মের ইতিহাস এই ঢালিউডে বেশ পুরোনো। আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ষাটের দশক হতে শুরু করে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত অনেক মিউজিক্যাল ফিল্ম তৈরি হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ষাটের দশকের কালজয়ী ছবি "রূপবান" এর কথা বলা যায় যেখানে মোট ১১ টি গান ব্যবহৃত হয়েছিল। এছাড়া "বেহুলা", "সাত ভাই চম্পা" প্রভৃতি কাজগুলি ষাট এবং সত্তর দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আশির দশকের মাঝের দিকে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লাকে ঘিরে "শিল্পী" নামে একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম মুক্তি পেয়েছিল। সেই আশির দশকের শেষভাগে এসে আমরা পেয়েছি সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল সিনেমা "বেদের মেয়ে জোসনা", যে ছবিতে সর্বমোট ১২ টি গান ছিল। ছবিটি অনেক সিনেমাহলেই টানা একবছর চলেছিল। এছাড়াও গত দশকের মাঝের দিকে আরেকটি জনপ্রিয় সিনেমা "খায়রুল সুন্দরী" তে গান ছিল ৭ টি, এটিও একটি মিউজিক্যাল ড্রামা ফিল্ম। কাছাকাছি সময়ে মুক্তি পাওয়া উত্তম আকাশ পরিচালিত "মমতাজ" ছবিতে মমতাজ একাই ৯ টি গান গেয়েছেন এবং সবগুলো গানে তিনি অভিনয় করেছেন।

ডিজিটাল সিনেমায় এসেও আমরা মিউজিক্যাল ফিল্ম পেয়েছি, যদিও সেগুলো মানের দিক থেকে ততটা জনপ্রিয়তা পায়নি। ২০১৭ সালে জাহাঙ্গীর কবির সুমন পরিচালিত "সোনা বন্ধু" মুক্তি পায়, যেখানে সর্বমোট ১৩ টি গান ছিল। এছাড়া গতবছর "প্রেমের কেন ফাঁসি" নামে আরো একটি মিউজিক্যাল ফিল্ম মুক্তি পায়, সেখানে গান ছিল ৯ টি। সুতরাং, "গহীনের গান" চলচ্চিত্রের সাথে "প্রথম" শব্দটি যুক্ত করার পেছনে কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। মিউজিক্যাল ফিল্ম নিয়ে কাজ যেমন সাদাকালো যুগে হয়েছে, তেমনি রঙিন ৩৫ মিমি. পর্দাতে হয়েছে এবং সেইসাথে ডিজিটাল ক্যামেরাতেও হয়েছে।

সবমিলিয়ে বলবো "গহীনের গান" উপভোগ করার মতো ছবি, মন থেকে অনুভুতি করার মতো ছবি। চিত্রনাট্য কিছুটা ধীরগ‌তির, তবে যদি গল্পের পেছনে নিজের মস্তিষ্ককে বেশি চাপ না দেন, তবে এই ছবি খুব একটা খারাপ লাগবে না।

রেটিং: ৬.৫/১০

ছবিটি কেন দেখবেন: মন-মেজাজ খারাপ থাকলে এছবি দেখে আসতে পারেন, মন ভালো হয়ে যাবে। "গহীনের গান" এর মধ্যে সেই ফিল গুড ব্যাপারটি আছে। সদ্য বিবাহিত যুগলের জন্য এছবি একদম উপযুক্ত, সম্পর্ক মজবুত রাখার গুরুত্ব উপলব্ধি করা যাবে। প্রেমিক-প্রেমিকারাও চাইলে নিকটস্থ সিনেমাহলে গিয়ে এই ঠান্ডায় বর্ষাকালের অনুভুতি নিতে পারবেন। আর আসিফ আকবরের পাগলা ফ্যানদের জন্য এছবি মাস্টওয়াচ! দুই ঘণ্টা শুধু গানগুলির সাথে গলা মেলাবেন, আর প্রিয় গায়কের অভিনয় দেখবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top