What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আলেয়া কি আসলেই পরীর আলো? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কিছু? (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,275
Messages
16,008
Credits
1,460,057
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
FzwcGRa.jpg


ধরুন, রাতের আঁধারে টর্চ নিয়ে পুকুরে আর ডোবার কিনারায় কিনারায় ঘুরছেন মাছ ধরার জন্যে। কিংবা মাছ ধরা নয়, এমনিতেই বাড়ির বাইরে বেরিয়েছেন কোন কাজে। হঠাৎ দেখলেন ডোবার ধারে জঙ্গলের মত জায়গায় এক টুকরো আলেয়া এর আলো ভেসে বেড়াচ্ছে। সেটা এদিক সেদিক বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই আলোর মধ্যে হয়তো আবছা নারীমুর্তি দেখতে পেলেন। আপনি ভাবলেন এটা নিশ্চয়ই পরীর কাজ! যারা সাহসী তারা একটু এগিয়ে গেলেন পরীটাকে ধরতে। কিন্তু দূর্ভাগ্য, কাছে যেতেই আপনার উপস্থিতি টের পেয়ে আলোটা নিভে গেলো। পরী আপনাকে দেখে উড়ে চলে গেলো! আপনি হতাশ হয়ে গেলেন এই ভেবে যে এতো কাছে এসেও পরীর দেখা পেলেন না!

হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই! আপনি আসলে যা দেখছিলেন তা চোখের এক ধরণের বিভ্রম। এর নাম হচ্ছে আলেয়া। অনেকেই যাকে বলে থাকে ভুতের আলো কিংবা পরীর আলো। আজকে আমরা এই ভুতের আলো সম্পর্কে জানবো।

আলেয়া আসলে কি?

ইংরেজিতে এই অদ্ভুত ধরণের আলোকে বলে '
Will-o-the-wisps'. বাংলায় ডাকা হয় 'আলেয়া' নামে। এই আলেয়া এর আবিস্কার হয় একটা ভুতুড়ে ঘটনার সাহায্যে। আজ চলুন সেই ঘটনাটি শুনি।

১৭৭৬ সালের আগ পর্যন্ত "আলেয়া" আসলে কি তা কেউ জানতো না। অনেকেই জঙ্গলের ভেতরের এই ধরণের আলো আর আবছা নারীমুর্তি দেখতে পেয়েছেন বলতেন। তাই মুখে মুখে এই আলোকে অনেকেই পরীর আলো বলে থাকতো। ১৭৭৬ সালে বিক্ষাত বিজ্ঞানী আলেজান্দ্রো ভোল্টা সর্বপ্রথম মিথেন গ্যাস আবিষ্কার করেন। তিনিই সর্বপ্রথম সন্দেহ করেছিলেন আলেয়ার আলোর মত ভূতূড়ে ঘটনার পেছনে মিথেন গ্যাসের হাত আছে। তাঁর সেই তত্ত্বই পরে আধুনিক বিজ্ঞানের ধারণা দিয়ে আরো নিখুঁত ও পরিশোধিত হয়েছে।

পৃথিবীর সব গাছপালা, পশু-পাখি, মানুষ মূলত জটিল হাইড্রোকার্বন জৈবের সমন্বয়ে গঠিত। এইসব জৈবের মূল উপাদান কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন। এরা যখন বদ্ধ পরিবেশে কোন কোন পুকুর বা ডোবার পানির নিচে পঁচছে থাকে তখন কি হবে? তখন বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে তৈরি হবে মিথেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন, ফসফিন ইত্যাদি।

এই মিথেন এবং ফসফিন গ্যাস যখন পানি ছেড়ে বুদবুদের মাধ্যমে ভেসে উঠবে এবং খোলা বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসবে তখন মিথেন গ্যাস ফসফিনের সাথে বিক্রিয়া করে নীল আলো উৎপন্ন করবে। এই নীলচে আলোকে দেখা যাবে আশেপাশের বাতাসে ভেসে বেড়াতে। যখন ফসফিন বাতাসে জ্বলতে থাকে তখন এটা সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। ফলে সেই নীল আলোর চারপাশে একটা ধোঁয়ার মত অবয়ব চোখে পড়াও বিচিত্র কিছু নয়। এটাকেই অনেকে আলেয়ার মাঝে পরীর অবয়ব বলে মনে করে থাকেন। যখন কেউ সেটাকে ধরতে যাবে তখন তার উপস্থিতিতে মিথেন এবং ফসফিন গ্যাসের মিশ্রণটা চারপাশে ছড়িয়ে যাবে। ফলে আলোটাও হারিয়ে যাবে। সুতরাং পরী ধরতে না পারার জন্যে দুঃখ করার কোনো কারণ নেই!

আলেয়া নিয়ে আতংকের কিছু আছে কি?

প্রত্যেকটা দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেই এইসব আলেয়ার আলো নিয়ে অনেক বিচিত্র কিংবদন্তী ও গল্প প্রচলিত আছে। সবকটাতেই এই আলোর বিশাল অলৌকিক ব্যাপার-স্যাপারগুলো বেশ চটকদারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে আমাদের আতংকিত হওয়ার কিছুই নেই। আশাকরি এখন থেকে যদি রাতের বেলা গাছপালার ফাঁকে, ঘাসের উপর কিংবা নদীর তীরে নীলচে আলো এবং সাদা ধোয়া দেখতে পান; তাহলে পরীর আলো মনে করে ভয় পাবেন না!


আজকের মতো এ পর্যন্তই।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top