What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

করোনা ভাইরাস আপনার শরীরে কি ঘটাচ্ছে? (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
pthMN6a.jpg


ডিসেম্বরে আগমনের পর থেকে কোভিড-১৯ এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অজেয় অবস্থায় আছে। সারা পৃথিবীতে মহামারী আকার ধারণ করা এই রোগে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন অদেখা এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।

কোভিড-১৯ মানুষের শরীরে বেশ কয়েক ধাপে নিজের চরিত্র আর রোগ লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে।

সুপ্তাবস্থা / ইনকিউবেশন পিরিয়ড

এ সময় ভাইরাস মূলত মানুষের শরীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকে। ভাইরাসের কাজ মূলত আপনার শরীরের কোষে প্রবেশ করা এবং তার কার্যক্রম থামিয়ে দেয়া। কোভিড-১৯ সাধারণত আপনার শরীরে নিঃশ্বাসের সাথে প্রবেশ করতে পারে। যদি কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত কেউ আপনার সামনেই হাঁচি কাশি দিয়ে থাকে কিংবা ভাইরাস আক্রান্ত কোন তলে আপনি হাত রাখবার পর যদি তা দিয়ে নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করেন তাহলেই আপনি আক্রান্ত হবেন।

শরীরে প্রবেশের পর শুরুতেই কোভিড-১৯ গলায় থাকা কোষ, নাসারন্ধ্র কিংবা ফুসফুসে আক্রমণ করে। একসময় সেসব হয়ে পড়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসের আদর্শ বাসস্থান। প্রতিনিয়ত ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে হতে আরো অনেক কোষকেই আক্রান্ত করতে শুরু করে এই ভাইরাস।

অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর মাঝে কোন প্রকার লক্ষণই দেখা যায় না। অনেকেই কোনভাবেই অসুস্থতা বোধ করেন না। ইনকিউবেশন পিরিয়ড থেকে লক্ষণ প্রকাশের মধ্যবর্তী সময় ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে লক্ষণ প্রকাশ হতে গড়ে ৫ দিন সময় লেগে থাকে।

মৃদু অসুস্থতা

এই পর্যায়টা সকল রোগীই অনুভব করে থাকেন। প্রতি দশজনের আটজনের জন্যেই কোভিড-১৯ মৃদু অসুস্থতা নিয়ে হাজির হয়। এর মূল লক্ষণ থাকে জ্বর এবং কাশি। এছাড়া শরীরে ব্যাথা, গলা ব্যাথা, এবং মাথা ব্যথাও দেখা যেতে পারে তবে তা একেবারেই নিশ্চিত না।

জ্বরের উপস্থিতি নিশ্চিত করে রোগীর শরীর ধীরে ধীরে ভাইরাসের আক্রমণে সাড়া দিচ্ছে। এটি বাদ বাকি কোষের কাছে সংকেতের মতো কাজ করে। যার প্রভাবে সাইটোকাইনেসিসের ক্ষরণে সমস্যা দেখা যায়। পুরো প্রক্রিয়াটিই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সুগঠিত করে, কিন্তু সেই সাথে শরীরে ব্যথা, ও জ্বরের মত উপসর্গও প্রকাশ করে।

করোনাভাইরাসের কারণে হওয়া কাশি সাধারণত শুকনো কাশি হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কোষকে আক্রান্ত করার কারণে এটি রোগীকে বেশ ভুগিয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু রোগীর কাশিতে মিউকাস থাকতে পারে, এক্ষেত্রে সাধারণত মিউকাসে মৃত ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।

সাধারণত এই রোগ বাড়িতে বিশ্রাম, প্রচুর পানি পান করা এবং প্যারাসিটামল গ্রহণের মাধ্যমেই উপশম করা সম্ভব। এই পর্যায়ে রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

এছাড়াও এই সময় রোগীর মাঝে সর্দি বা স্বাদহীনতার লক্ষণ পেয়েছেন বলে অনেক চিকিৎসক দাবী করেন।

গুরুতর পরিস্থিতি

রোগীর পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হতে থাকে তবে তা মূলত ভাইরাসের প্রতি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতি সংবেদনশীলতার ফলাফল হিসেবে দেখা যায়। কিংস লন্ডন কলেজের ডাক্তার ন্যাথালিয়া ম্যাকডের্মট বলেন, "এই ভাইরাসটি মূলত দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় একটি অসামঞ্জস্য তৈরি করছে এবং সেটিও অনেক উপায়েই হচ্ছে যা আমাদের অজানা।"

ফুসফুসের সংক্রমণ সাধারণ হিসেবে নিউমোনিয়া নামেই পরিচিত। সাধারণত বায়ু আমাদের নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে শ্বাসনালী হয়ে ফুসফুসের বায়ুথলিতে পৌঁছায়। সেখানেই বায়ুথলিগুলো রক্তে অক্সিজেন পৌছে দেয় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে তা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বের করে দেয়।

কিন্তু নিউমোনিয়া হলে বা কোভিড-১৯ রোগের গুরুতর পরিস্থিতিতে এই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং বায়ুথলিতে পানি জমতে শুরু করে। এই পর্যায়ে রোগীর জন্য ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার প্রয়োজন।

চরম সংকটাবস্থা

এই পর্যায়ে এসে শরীর হাল ছেড়ে দিতে শুরু করে এবং মৃত্যু অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে নিজের কার্যক্রম শুরু করে এবং তাতে সারা শরীরে ক্ষতি আরো বেড়ে যেতে শুরু করে। এই অবস্থা শুরু হলে রক্তচাপ ক্রমাগত কমে গিয়ে সেপ্টিক শক হতে পারে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়ে, ক্ষেত্র বিশেষে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

শ্বাসযন্ত্রের এই তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয় মূলত যখন ফুসফুস দেহের পুরো প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করতে সক্ষম হয় না। এতে করে রোগীর দেহের কিডনিও বিকল হয়ে যেতে পারে, প্রায় সাথে সাথে নাড়ির উপরেও ব্যাপক চাপ পড়ে।

আমাদের দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি কোভিড ১৯ এর বিরুদ্ধে শুরুতেই কার্যকরী হতে না পারে, পরবর্তীতে তা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে যাতে শরীরে ভাইরাসজনিত রোগের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।

এই পর্যায়ে চিকিৎসাপদ্ধতি বেশ আক্রমণাতমক হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই "এক্সট্রা কর্পোরাল মেমব্রেন অক্সিজেনাশন" প্রয়োগ করা হয়। এটি মূলত একটি কৃত্রিম ফুসফুস, যা রক্তকে দেহের বাইরে নিয়ে অক্সিজেন সমৃদ্ধ করে আবার দেহের মাঝে প্রবেশ করিয়ে থাকে।

কিন্তু সাধারণত এই সময় ভাইরাসের সংক্রমণ এত বেশি হয়ে থাকে যে, অন্যান্য অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে, যা রোগীর মৃত্যু ঘটাতে যথেষ্ট।

প্রথম দুই মৃত্যু

একেবারেই প্রথম দুই রোগী কিভাবে ডাক্তারদের সবরকম চেষ্টার পরেও মারা গিয়েছেন, তার বর্ণনা স্বয়ং ডাক্তাররাই দিয়েছেন সাংবাদিকদের।

প্রথম মৃত্যু হয় ৬১ বছর বয়েসী এক পুরুষ। যিনি প্রচন্ড নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি গুরুতর পর্যায়ের রোগী ছিলেন। শুরুতেই তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তার ফুসফুস একবারেই কাজ করা থামিয়ে দেয়, যেখান থেকে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে আসার ১১ দিনের মাথায় মারা যান তিনি।

দ্বিতীয় রোগী ছিলে ৬৯ বছরের একজন। তিনি চরম সংকটাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। এবং তাকে কৃত্রিম ফুসফুসের আওতায় আনা হলেও বাঁচানো যায়নি। রক্তচাপ ক্রমাগত পড়তে শুরু করলে তার সেপ্টিক শক দেখা যায়। আর তারপর থেকেই কোভিড-১৯ আজো ছুটছে পাগলাটে ঘোড়ার মত করে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top