What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review “জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার” নিয়ে জুরি বোর্ডের যত “কমেডি” (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
7uAn3qT.jpg


বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে শিল্পীদের কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার"কে। তবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বারবার এই পুরষ্কার হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ! সম্প্রতি ভারতীয় এক নাগরিককে "শ্রেষ্ঠ সম্পাদক" হিসেবে এবং টিভি ও বড় পর্দার শক্তিশালী অভিনেতা মোশাররফ করিমকে "সেরা কৌতুক অভিনেতা" হিসেবে জাতীয় পুরস্কার দেয়াতে আবারও সবার সামনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের দৈনদশা নগ্নভাবে উঠে এসেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে চলুন ইতিপূর্বে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে ঘটা কিছু প্রশ্নবোধক 'ঘটনা' বা 'দুর্ঘটনা' আপনাদের মনে করিয়ে দেই।

২০১০ সাল—নকল ছবিতে দেয়া হয়েছিল পুরষ্কার!

সময়টা ছিল ২০১০, সে বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছিলেন পূর্ণিমা এবং মিজু আহমেদ। তবে দ্বন্দ্ব তাদের নিয়ে নয়, তারা যে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পুরষ্কার পেয়েছিলেন সেটি নিয়ে। তারা দুইজনই "ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না" নামক একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য যথাক্রমে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরষ্কার লাভ করেন। অথচ কাজি হায়াত পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি ছিল ভারতীয় চলচ্চিত্র "বিচ্ছু" এর নকল!

কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারের নিয়ম হল, কোন ছবি যদি নকল হয়ে থাকে তাহলে সেটি পুরষ্কারের জন্য বিবেচিত হবে না। তবে চাঞ্চল্যকর সেই বছরের ঘটনা এটুকুতেই শেষ হয়ে যায় নি বরং সেই ২০১০ সালেই "নিঃশ্বাস আমার তুমি" নামক একটি নকল ছবিতে কৌতুক অভিনয়ের জন্য পুরষ্কার পেয়েছিলেন আফজাল শরীফ। এই ছবিটি ছিল কলকালতার "আই লাভ ইউ" চলচ্চিত্রের নকল।

২০১৪ সাল—চুরি করা কাহিনীর চলচ্চিত্রে দেয়া হয়েছিল পুরষ্কার!

বৃহন্নলা নামের একটি চলচ্চিত্র যেন সেই বছর ছেয়ে গিয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার কমিটিতে। যথাক্রমে সংলাপ, কাহিনী এমনকি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতেও ছবিটি পুরষ্কার লাভ করে। তবে জুরি কমিটি এই পুরষ্কার দেয়ার পর বেশ অস্বস্তিতে পড়েন এবং তীব্র সমালোচনার শিকার হন। কেননা মুরাদ পারভেজ নির্মিত এই চলচ্চিত্রটির কাহিনী ছিল চুরি করা। এর আগেও ২০০৮ সালে মুস্তফা সিরাজির আরেকটি কাহিনী "রানী ঘাটের বৃত্তান্ত" থেকে চুরি করে মুরাদ তৈরি করেছিলেন "চন্দ্রগ্রহণ" চলচ্চিত্রটি। চন্দ্রগ্রহণ চলচ্চিত্রটিও বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরষ্কার লাভ করেছিল।

২০১৪ সালে আরেকটি অবাক করা ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েছিল চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি। তারাকাটা নামক একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার দেয়া হয়েছিল মৌসুমিকে, অথচ তিনি ছবিটির মূল চরিত্রই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একটি কেবল মাত্র একজন "সাইড ক্যারেক্টার"! সেই ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন "মিম"।

২০১৫ সাল—ম্যাকআপ ম্যান নিয়ে নতুন দুর্ঘটনা

২০১৫ সালে জালালের গল্প ছবিতে শফিক নামক একজন ম্যাকআপ ম্যান পেয়েছিলেন সেরার পুরষ্কার! অথচ জানা গিয়েছিল সেই ছবিতে তিনি কেবল মাত্র তৌকির আমহেদের গোঁফ লাগানো ছাড়া আর কোন কাজই করেননি। এমনকি দীর্ঘ এই শুটিং ইউনিটে তিনি কেবল মাত্র চারদিনের জন্য ছিলেন। পরবর্তীতে কাউকে কিছু না জানিয়েই তিনি শুটিং ইউনিট পরিত্যাগ করেন। সবচাইতে অবাক কাণ্ড হল বাকি শুটিং হয়েছিল কোন ধরনের ম্যাকআপ ম্যান ছাড়াই! এখন প্রশ্ন হল এই ধরনের একটি কাজ করার পরেও তিনি কীভাবে শ্রেষ্ঠ ম্যাকআপ ম্যানের পুরষ্কার পান? যেখানে ম্যাকআপ ম্যান না থাকার কারণে ছবিতে তৌকিরকে একরকম বাধ্য হয়ে সেই গোঁফই কেটে ফেলতে হয়েছিল।

২০১৬ সাল—চলচ্চিত্রে কাজ না করার পরেও দেয়া হয়েছিল পুরষ্কার!

নিয়তি নামক একটি চলচ্চিত্রের জন্য হাবিব নামক একজন নৃত্য শিল্পীকে দেয়া হয়েছিল "সেরা নৃত্য পরিচালক" ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার। অথচ পরবর্তীতে জানা গিয়েছিল যে তিনি সেই নিয়তি ছবিতে কোন কাজই করেন নি। তীব্র সমালোচনার শিকার হওয়ার পর অবশ্য সেই পুরস্কারটি বাতিল বলে গণ্য করা হয়েছিল।

২০১৭ সাল—ভারতীয় নাগরিক পেলেন পুরষ্কার!

২০১৭ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যেটি চলচ্চিত্র পুরষ্কারের ইতিহাসে এর আগে কখনো ঘটেনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নীতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে "কেবলমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকরাই এই পুরষ্কার এর জন্য বিবেচিত হবেন"। কিন্তু এসব বিবেচনায় না রেখে শ্রেষ্ঠ সম্পাদক পুরষ্কার নিয়ে করা হয়েছে শ্রেষ্ঠ প্রহসন! অবাক করার মতো হলেও সত্য যে, ২০১৭ সালের চলচ্চিত্র "ঢাকা এট্যাক" এ কাজ করার জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পাদকের পুরস্কার দেয়া হয়েছে মোঃ কালাম নামক একজন ভারতীয় নাগরিককে।

২০১৮ সাল— পুরষ্কার গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালেন অভিনেতা!

চলতি বছরের নভেম্বরের সাত তারিখ, ২০১৮ সালের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। "কমলা রকেট" চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা মোশারফ করিম পেয়ে যান "শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতার" পুরষ্কার। কিন্তু এরপরই শুরু হয় যত দুর্ঘট! এই পুরষ্কার গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মোশারফ করিম। তার ভাষ্য অনুযায়ী এই চরিত্রটি কোন কৌতুক চরিত্র ছিল না। যারা কমলা রকেট ছবিটি দেখেছেন তাদের কেউই মোশারফ করিমের সাথে দ্বিমত করতে পারেন নি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিন্দার ঝড় তুলেছেন অনেক দর্শক।

সবার কথা ছিল একটাই, মোশারফ করিমের চরিত্রটি মোটেও কোন কৌতুক চরিত্র ছিল না। মোশারফ করিম সংবাদ মাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান এবং নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার বিষয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার কমিটিকে অনুরোধ করেন। উল্লেখ্য যে বিশিষ্ট সাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের গল্প অবলম্বনে "কমলা রকেট" চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়, যেখানে "মফিজুর" চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মোশারফ করিম।

এদিকে ২০১৭ সালের চলচ্চিত্র "গহীন বালুচর" চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে নির্বাচিত ফজলুর রহমানের কাছ থেকেও একই ধরনের মন্তব্য শোনা গেছে। ফজলুর রহমান বাবুর মতে এই চরিত্রটি ছিল একটি খল চরিত্র, মোটেও কৌতুক চরিত্র নয়। কৌতুক চরিত্র নিয়ে কেন এই কৌতুক? এই প্রশ্নের উত্তরে ফজলুর রহমান বাবুর বক্তব্য ছিল কিছুটা এমন, "পরিচালক বা প্রযোজক হয়ত এই ক্যাটাগরিতে তার নাম দিয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলেন জুরি বোর্ডের কাছে"।

yqnFloN.jpg


চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীদের কাছে এখনো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার একটি সন্মান ও গৌরবের নাম। কিন্তু এই পুরস্কার নিয়ে অভিযোগের তালিকা এখানেই শেষ নয়। স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তো আরও পুরোনো। হুমায়ূন আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, মাটির ময়নার মত চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পরও তারেক মাসুদকে যেই পুরষ্কার দেয়া হয়নি, সে পুরস্কারের কার্যত কোন মূল্য নেই। পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম তো বলেই ফেলেছিলেন, জুরি বোর্ডে যারা থাকেন তারা ফিল্ম কি জিনিস সেটা বোঝেন না

[বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top