What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review বাংলাদেশের ভৌতিক সিনেমা ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
AkO2IsR.jpg


ভয় পাওয়ার মাঝেও ভালো বিনোদন আছে। তাই তো মানুষ টাকা খরচ করে ভ‍ূতের সিনেমা দেখে। একজন জাপানী সিনেমা নির্মাতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, "সারাবিশ্বে ভূতের সিনেমার এত চাহিদা কেনো?"। তিনি উত্তরে বলেছিলেন, "দুই শ্রেণীর মানুষ ভূতের ছবি দেখেন, ১. যারা ভূত বিশ্বাস করেন; ২. যারা করেন না"

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে চলচ্চিত্রের পরিমণ্ডলে ভূত একটি বিশাল ফ্যাক্ট। মোটকথা বাস্তবে ভূতের অস্তিত্ব থাক বা না থাক, এবং ভূতের ব্যাপারে বিশ্বাস বা ভয় থাক বা না থাক; ভূতের সিনেমা পছন্দ করে এমন দর্শক সারা দুনিয়ায় ব্যাপক পরিমাণে ছিল, আছে এবং থাকবে।

বিশ্বের প্রথম ভূতের সিনেমার নাম হচ্ছে Le Manoir du diable (The House of the Devil)। ১৮৯৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মাত্র ৩ মিনিটের এই নির্বাক ফরাসি ভূতের ছবিটি দর্শকদের মনে ব্যাপক আনন্দের খোরাক যোগায়। মাত্র তিন মিনিটের ভূতের ছবি যদি এত কিছু করতে পারে, তাহলে ত্রিশ মিনিটের বা তিন ত্রিশে নব্বই মিনিটের ভূতের ছবি যে কি করতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশ তথা বাংলা সাহিত্যের একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে ভূতের বিচরণ। সে রবীন্দ্রনাথ হোক কি হুমায়ূন আহমেদ; ভূত সবাইকে তাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার আমাদের দেশে ভুত-প্রেত নিয়ে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে। এ ব্যাপারে একজন প্রবীণ নির্মাতাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম; তিনি বলেছিলেন, "বাংলাদেশে ভূতের ছবি বানিয়ে লাভ কি? যে দেশে জীবিত মানুষের ছবি চলে না, সে দেশে মরা ভূতের ছবি কে দেখবে ?"। যাহোক পরিমাণে অল্প এবং মানের দিক থেকে স্বল্প হলেও মুষ্টিমেয় কিছু ভৌতিক সিনেমা আমাদের দেশেও নির্মিত হয়েছে। আজ সেগুলো নিয়েই আলোচনা করব। তার আগে বলে রাখি বাংলাদেশে এপর্যন্ত অনেক ফোঁক-ফ্যান্টাসি মুভি নির্মিত হয়েছে, যেগুলোতে ডাইনি, পিশাচ, দৈত্য-দানব, জ্বিন প্রভৃতি দেখানো হয়েছে; এমনকি রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত (১৯৮৭) মুভিতে বুলবুল আহমেদকে শ্মশানের ভূতদের সাথে মারামারিও করতে দেখা গেছে। তারপরও এগুলোকে ভূতের ছবি বলা যাবে না। কারন এগুলোতে ভূতপ্রেত ছিল গুরুত্বহীন সামান্য অংশ মাত্র। আমরা আলোচনা করব পরিপূর্ণ ভৌতিক মুভি নিয়ে যেগুলো ভূতপ্রেতকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হয়েছে। আসুন শুরু করা যাক…

List of Bangladeshi Horror Cinema

t3XfPt6.jpg


১. রাজবাড়ী (১৯৮৪) : রাজবাড়ী নামক একটি অঞ্চলের একটি কলেজে বদলি হয়ে আসেন একজন তরুণ প্রফেসর। কোন এক অজানা টানে পরিত্যক্ত ভূতুড়ে রাজবাড়ীতে গিয়ে সে জানতে পারে এই রাজবাড়ীর চার দেয়ালের মাঝে চাপা পড়ে আছে লম্পট রাজা কর্তৃক অসংখ্য নির্যাতিতা নারীর হাহাকার। তাদেরই একজনের অতৃপ্ত আত্মার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে সেই প্রফেসরের। এদিকে ঐ প্রফেসরের এক ছাত্রীর চেহারাও আবার হুবহু সেই সুন্দরী অতৃপ্ত আত্মার মত। এমনই গল্প নিয়ে কাজী হায়াৎ ১৯৮৪ সালে নির্মাণ করেন "রাজবাড়ী"। সেই তরুণ প্রফেসরের চরিত্রে ছিলেন সোহেল রানা এবং অতৃপ্ত আত্মা ও ছাত্রীর দ্বৈত চরিত্রে ছিলেন অঞ্জনা। ছবিটির থিম নেওয়া হয়েছে রবিঠাকুরের "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্প থেকে। এটাই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ভৌতিক সিনেমা ! এই ছবিটি এবং এর গানগুলো দর্শকদের মনে ইতিবাচক সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়।

tHBdkED.jpg


২. রক্ত পিপাসা (২০০৭) : মানবজাতিকে ভ্যাম্পায়ারদের (রক্তচোষাদের)কবল থেকে রক্ষার জন্য মিস্টার টি. নামের একজন অর্ধ-মানব অর্ধ-ভ্যাম্পায়ার ও কিছু সাহসী মানব-সন্তানদের অভিযাত্রার গল্প নিয়ে মাসুম পারভেজ রুবেল ২০০৭ সালে নির্মাণ করেন "রক্ত পিপাসা The Vampire"। বলার অপেক্ষা রাখেনা ছবিটি ওয়েস্লি স্নাইপ্স অভিনীত আমেরিকান মুভি Blade এর আদলে নির্মিত। মিস্টার টি. চরিত্রে রুবেল ছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন শাকিল খান, বিপাশা, মৌমিতা প্রমুখ। আলিফ লায়লা দেখে অভ্যস্ত বাংলাদেশি দর্শকদের ভ্যাম্পায়ারদের কাণ্ডকীর্তি হজম করতে বেশ কষ্ট হয়েছিল।

JtS2HYJ.jpg


৩. ডাইনী বুড়ি (২০০৮) : যমুনা নামে এক মহিলা তান্ত্রিকের বোন শেফালী এক যুবকের প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করে। যমুনার গুরু ডাইনি বুড়ির সহযোগিতায় তার বোনের মৃত আত্মাকে পঞ্চ আত্মার রূপ দিয়ে শিষ্য চাণ্ডালের সহযোগিতায় চালান করে দেয় কলেজ হোস্টেলে বসবাসরত পাচ সুন্দরী যুবতীর ওপর। সেই পাচ সুন্দরী যুবতী রাত গভীর হলেই বীভৎস ভৌতিক রূপ ধারণ করে হোস্টেল রুম থেকে বেরিয়ে আসে রাস্তায় এবং যুবক ছেলেদের হত্যা করে। এমনই গল্প নিয়ে খায়রুন সুন্দরী খ্যাত পরিচালক এ, কে সোহেল ২০০৮ সালে নির্মাণ করেন "ডাইনী বুড়ি"। এই সিনেমায় পরিচালক রোকন, মাহিয়া, জাকির, জুই, খোকন রাজ, মেহবুবা, মাসুদ খাঁন, সিনথিয়া, কবির ও নূর নামে পাঁচ জোড়া নতুন মুখ উপহার দেন। এরা ছাড়াও নাগমা, টেলি সামাদ, দুলারী ও নাম ভূমিকায় বেগম মন্টুসহ প্রমুখ অভিনয় করেন। অনেকদিন পর ভিন্ন স্বাদের ছবি পেয়ে দর্শকরা একে সানন্দে গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, এটাই বাংলাদেশের প্রথম হরর কমেডি মুভি। আর ছবির শেষ দিকে দেখা যায় ভিক্টিমরা জ্যান্ত লাশে (জোম্বিতে) পরিণত হয়। সে হিসেবে এটা উপমহাদেশের প্রথম জোম্বি কমেডি মুভিও।

mYU2fO4.jpg


৪. সেদিন বৃষ্টি ছিল (২০১৪) : বিয়ের পর এক পুরাতন জমিদার বাড়িতে থাকতে আসে সুমিত ও রত্না দম্পতি। সেই পুরাতন বাড়িতে ঘটতে থাকে একের পর এক অদ্ভুতুড়ে ঘটনা। অবশেষে জানা যায় এই সেই বাড়ি যেখানে কিছুকাল আগে এক বৃষ্টির রাতে দুর্ঘটনাবশত জ্যান্ত কবর হয়েছিল রত্নার মনের মানুষ অভি'র। এমনই গল্প নিয়ে পরিচালক যুগল শাহিন সুমন ২০১৪ সালে নির্মাণ করেন "সেদিন বৃষ্টি ছিল"। এটাই বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল ভৌতিক সিনেমা ! সিনেমাটির থিম অনেকটা ভারতীয় Razz অথবা 1920 ফিল্ম সিরিজগুলোর মত। মুক্তির আগে বেশ আলোচনার জন্ম দিলেও দুর্বল নির্মাণশৈলীর কারণে ছবিটি আশানুরুপ সফলতা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

LB1OaGo.jpg


৫. আমরা করবো জয় (২০১৪) : একদল কিশোর-কিশোরীর একটি ভয়ানক জমিদার বাড়িতে যাত্রা ও এর সাথে ঘটা কিছু ভয়ংকর ঘটনার গল্প নিয়ে আহসান সারোয়ার ২০১৪ সালে নির্মাণ করেন দেশের প্রথম শিশুতোষ হরর মুভি "আমরা করবো জয়"। ছবিটিতে তাজবিহ, আহসান সাদাফ, আকিক অর্ণব, নিপা প্রমুখ অভিনয় করেন। সিনেমাটি মাত্র একটি সিনেমা হলে মুক্তি পায়, তাই আশানুরুপ সফলতা পেতে ব্যর্থ হয়।

bhyeeJ1.jpg


৬. অমি ও আইসক্রিমওয়ালা (২০১৫) : পুরাতন জমিদার বাড়িতে বেড়াতে আসা যুবক অমি'র সাথে পরিচয় হয় এক আইসক্রিম বিক্রেতার। বাস্তবে এই আইসক্রিমঅলা হচ্ছেন সেই জমিদার বাড়ির দেশপ্রেমিক জমিদার যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি দোসরদের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। এখন তার আত্মা অমি'র কাছে প্রতিশ্রুতি চায় সেই যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির জন্য। ফরিদুর রেজা সাগরের এমনই গল্প নিয়ে সুমন ধর ২০১৫ সালে নির্মাণ করেন "অমি ও আইসক্রিম'অলা"। ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন তারিক আনাম খান, আবুল হায়াত, নয়ন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এই ছবিটি টিপিক্যাল কোন ভয়ানক ভুতের ছবি নয়। এর থিম কিছুটা অমিতাভ বচ্চনের Bhoothnath সিনেমার মত। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়।

SDEU2Rf.jpg


৭. দ্যা স্টোরি অব সামারা (২০১৫) : পৃথিবীর বাইরের সামারা নামের এক গ্রহের বাসিন্দাদের আরাকান নামের এক অপশক্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পৃথিবীর পাঁচ তরুণ শুভশক্তির লড়াইকে কেন্দ্র রিকিয়া মাসুদো ২০১৫ সালে নির্মাণ করেন সাই-ফাই হরর এডভেঞ্চার মুভি "দ্যা স্টোরি অব সামারা"। সিনেমাটির মূল পাঁচটি চরিত্রে ছিলেন সাঞ্জ জন, সিবা আলী খান, আমান, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া ও ইমু; খল চরিত্রে ছিলেন পরিচালক নিজেই। ছবিটা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হলেও শেষপর্যন্ত তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

NYq641B.jpg


৮. মায়াবিনী (২০১৭) : জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন হয় একজন হিজড়া ও তার পরিবার। প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সেই হিজড়ার আত্মা ভর করে এক ভীতু যুবকের শরীরে। ঘটতে থাকে একের পর এক হাস্যরসাত্মক ভৌতিক ঘটনা। এমনই গল্প নিয়ে আকাশ আচার্য্য ২০১৭ সালে নির্মাণ করেন কমেডি হরর মুভি "মায়াবিনী"। সাইমন সাদিক, আইরিন সুলতানা, অমিত হাসান, শিবা সানু প্রমুখ অভিনীত এই ছবিটি মূলত রাঘব লরেন্স রচিত, প্রযোজিত, পরিচালিত ও অভিনীত ২০১১ এর ব্লকবাস্টার তামিল মুভি Muni 2: Kanchana এর অনুকরণে নির্মিত। সিনেমাটি আলোচিত হলেও ব্যবসাসফল ছিলো না।

প্রায় ৬২ বছর বয়সী আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রিতে ভৌতিক সিনেমা মাত্র ৮টি। এ যেন ৬২ জন মেহমানের প্লেটে ৮ চামচ ভাতের মত। অথচ হলিউড-বলিউড অহরহ ভৌতিক সিনেমা নির্মাণ করে সফলতা পাচ্ছে। একটি সফল ভৌতিক সিনেমার জন্য আহামরি বাজেট কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। দর্শকদের আকর্ষিত করতে পারে এমন গল্প এবং সাউন্ড,লাইটিং ও রুপসজ্জার উপযুক্ত ব্যবহার ভাল ভৌতিক মুভির অন্যতম নিয়ামক। এমনকি বিগ বাজেটের ভিএফএক্স ছাড়াও অনেক ভাল মানের হরর সিনেমার নজির রয়েছে। আমাদের সিনেমার গড় বাজেট এক কোটি টাকা। সদিচ্ছা থাকলে এই বাজেটের মধ্যেই ভালো মানের হরর মুভি বা ভৌতিক সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব। আশা করি আমদের ঢালিউডে ভূতদের বিচরণ দিন দিন বাড়বে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top