What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হিলসবরো স্টেডিয়াম বিপর্যয় (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
HNn0LIO.jpg


১৯৮৯'র এপ্রিলে শেফিল্ডের এক বিকেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে লিভারপুল বনাম নটিংহ্যাম ফরেস্টের এফএ কাপের সেমিফাইনাল খেলা। প্রায় ৫০০০০ লিভারপুল সমর্থক হাজির হয়েছিল স্টেডিয়ামে। কিন্তু তাদের মধ্যে ৯৬ জন লিভারপুল সমর্থক সেদিন হিলসবরো স্টেডিয়াম থেকে ফিরে আসেননি, কখনো ফিরবেনও না।

হিলসবরো স্টেডিয়াম বিপর্যয়

নিউট্রাল ভেন্যুতে খেলা হওয়ায় দু দলের জন্য গ্যালারি দুইভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। নিয়মমাফিক ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিট আগেই খুলে দেয়া হয় স্টেডিয়ামের প্রবেশদ্বার। চোখের পলকে শেফিল্ডের ২৯৮০০ সিটের গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু হায় ! শুধুমাত্র লিভারপুল এর সমর্থকই যে ছিল ৫০,০০০। চারদিকে মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে ভেতরে প্রবেশের অবরুদ্ধ হয়ে যায়।

5Vx7ieI.jpg


প্রায় ৫,০০০ মানুষ ওই ঘূর্ণায়মান দরজাগুলো দিয়ে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ বের হয়ে যাবার গেইট সি খুলে দেয় যাতে ভিতরের অতিরিক্ত সমর্থকরা বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু হিতে বিপরীত। বের হওয়া তো দূরের কথা, গ্যালারিতে দাঁড়ানোর পর্যন্ত জায়গা ছিল না। অথচ গেইট সি দিয়ে হুড়মুড় করে আরো বিশখানেক দর্শক ঢুকে পড়ে। অতঃপর দর্শকদের চাপ কমানোর জন্য Exit Gate A ও B খুলে দেয় পুলিশ। ওই দুই গেট দিয়েও দর্শকরা ঢুকে যায়। গ্যালারিতে এতোটাই চাপাচাপি হয় যে শ্বাসকষ্টের শিকার হয়ে মারা যায় কয়েকজন।

সময়মত শুরু হয় খেলা। ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় লিভারপুল এর পিটার বার্ডসলির শট গোলপোস্টে আঘাত হানে। সেই উত্তেজনায় গ্যালারির ৩ নম্বর পেনে দর্শকদের একটি ঢেউ নিরাপত্তা বেড়ায় আছড়ে পড়ে। জনস্রোতের চাপে এক পর্যায়ে ভেঙে যায় বেস্টনী। একজনের গায়ের উপর অন্যরা উঠে পড়ে মাঠের মধ্যে লাফিয়ে পড়তে থাকে দর্শকরা। পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট দ্রুত রেফারিকে ম্যাচ থামাতে বলেন। সাত মিনিটের মাথায় রেফারির নির্দেশে থেমে যায় খেলা। গ্যালারির ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচার জন্য বেষ্টনী অতিক্রম করে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে দর্শকরা। পুলিশ তাদের মাঠে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। পেছনে অসংখ্য মানুষের চাপ আর সামনে ফাঁকা মাঠ থাকা সত্তেও পুলিশের বাধা। হতবিহবল দর্শকরা পৃষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হতে থাকে।

খেলোয়াড়দের সাথে সাথে ড্রেসিংরুমে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ৩০ মিনিটের বিরতির কথা বলা হয়। অন্যদিকে নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য লিভারপুল সমর্থকদের নটিংহ্যাম সমর্থকদের গ্যালারিতে ঠাঁই নিতেও বাধা দেয় পুলিশ। ৪২ টি এম্বুলেন্স নিয়ে সাউথ ইয়র্কশায়ার এম্বুলেন্স সার্ভিস উদ্ধার কাজ শুরু করে। আহতদের পার্শ্ববর্তী ৩টি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি

হিলসবরো স্টেডিয়াম ডিজাস্টারে সেদিন মোট ৭৬৬ জন আহত হন এবং ৯৪ জন সেদিনই মাঠে, অ্যাম্বুলেন্সে এবং হাসপাতালে প্রাণ হারান। ৪ দিন পর ১৪ বছর বয়সী কিশোর লি নিকোল এবং ৪ বছর পর কোমায় থেকে মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ছিল ৮৯ এবং মহিলার সংখ্যা ছিল ৭। স্টিভেন জেরার্ডের ১০ বছর বয়সী চাচাতো ভাই পল মৃতদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিল। আরেক লিভারপুল খেলোয়াড় কেভিন ব্যারনের ৬৭ বছর বয়সী বড় ভাই মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজেষ্ঠ ছিল।

MyTQB4u.jpg


প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং মামলার নিষ্পত্তি

নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, পোপ জন পল সহ আরো অনেকেই। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত পত্রিকা দ্যা সান পুরো ঘটনার জন্য দায়ী করেছিল লিভারপুল সমর্থকদের। তৎকালীন উয়েফা প্রেসিডেন্ট জ্যাক জর্জ লিভারপুল সমর্থকদের দায়ী ভেবে তাদের "জন্তু" উপাধি দেন। তদন্ত প্রতিবেদনে এটাকে নিছকই দুর্ঘটনা বলা হয়, যাতে ছিল পুলিশের গাফিলতি এবং মদ্যপ লিভারপুল সমর্থকদের বিনা টিকেটে মাঠে প্রবেশের চেষ্টা। এতে সন্তুষ্ট হয়নি স্বজনহারা পরিবাররা। ২৫ বছর পর আবার শুরু হয় মামলা। অতঃপর ২০১৬ সালের এপ্রিলে নিষ্পত্তি হয় মামলার। আদালত রায় দেয়, হিলসবরো ট্র্যাজেডি কোনো দুর্ঘটনা নয়, ওটা ছিল 'বেআইনি হত্যা', যার জন্য দায়ী ছিল পুলিশ !

পরবর্তীতে হিলসবরো ট্র্যাজেডিতে মৃত ৯৬ ফুটবল সমর্থকদের মরণোত্তর ফ্রিডম অফ দা সিটি অফ লিভারপুল ঘোষণা দেয়া হয় এবং তাদের স্মৃতিতে লিভারপুল ও শেফিল্ড সহ বিভিন্ন স্থানে স্মারক স্থাপন করা হয়।

১৯৯৬ সালে এই মর্মান্তিক বিপর্যয় নিয়ে BAFTA অ্যাওয়ার্ড জয়ী ড্রামা ফিল্ম "Hillsborough" তৈরি করা হয়। আজও শেফিল্ডের বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় অকালে হারিয়ে যাওয়া প্রাণের তীব্র আকুতি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top