What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঢাকার প্রাচীনতম দালান রোজ গার্ডেন প্যালেসের ইতিহাস (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
1qf4xAL.jpg


আজ আর সেই বাগানটি অবশিষ্ট নেই ! শান বাধানো পুকুরঘাট আছে ঠিকই, কিন্ত তাতে আর আগের মত জল টলমল করেনা। বড় অনাদর ও অবহেলায় নিঃসঙ্গতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রোজ গার্ডেন প্যালেস ! শহরের এই প্রাচীনতম দালানটি সম্পর্কে অনেকেই হয়ত জানেন না। আর জানলেও এই দালানের পেছনকার ইতিহাসগুলো বলতে গেলে একালের প্রায় সবারই অজানা। চলুন সংক্ষেপে কিছু জেনে নেয়া যাক…

রোজ গার্ডেন প্যালেসের ইতিহাস

১৯ শতকের শেষের দিকে ঢাকার এক সময়কার ধণাঢ্য ব্যবসায়ী ও হিন্দু জমিদার হৃষিকেস দাস রোজ গার্ডেন প্যালেসটি নির্মাণ করেন। সেসময় বলধা গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হওয়া জলসাগুলো শহরের বিত্তবান হিন্দুদের সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। বলধা গার্ডেনের এমনই এক জলসায় হৃষিকেস দাস নামক এক নিম্নবর্ণের জমিদারকে অপমান করা হয় এবং এর ফলে তিনি নিজেই বাগানবাড়ি স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। হৃষিকেস দাস তাঁর নিজস্ব বাগানবাড়িতে জলসার আয়োজন করতেন। তাঁর বাগানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি নয়নাভিরাম সাজঘর। তবে বাগানবাড়িটি শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছিলো, যদিও পরবর্তী মালিকরা এটি বসবাসের জন্যও ব্যবহার করতেন।

একটা সময় বিলাসবহুল জীবনযাপনের কারণে হৃষিকেস দাস দেউলিয়া হয়ে যান। এর ফলশ্রুতিতে তাঁকে তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হয়েছিলো। ১৯৩৬ সালে খান বাহাদুর কাজী আব্দুর রশিদ এই প্রাসাদটি হৃষিকেস দাসের কাছ থেকে কিনে নেন। তিনি প্রাসাদটির নামকরণ করেন রশিদ মঞ্জিল। তাঁর বড় ছেলে কাজী মোহাম্মদ বশির (হুমায়ুন) আজ অবধি তাঁদের নাম ও খ্যাতিকে ধরে রেখেছেন। এখনো পর্যন্ত ব্যক্তিগত সম্পত্তির এই ভবনটির মূল সৌন্দর্য ধরে রেখে ভবনটিকে রক্ষনাবেক্ষন করা হচ্ছে। বর্তমানে এই প্রাসাদটির মালিক ব্যারিস্টার কাজী আব্দুর রকিব প্রাসাদটি একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা কোম্পানির কাছে ভাড়া দিয়েছেন।

রোজ গার্ডেনের অনন্য স্থাপত্যশৈলী

রোজ গার্ডেনের পশ্চিম ও উত্তর দিকের দেয়ালের মধ্যবর্তী অংশে দুটি মূল ফটক আছে। প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য পশ্চিম দিকের ফটক দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমেই আছে একটি বিস্তীর্ণ খোলা প্রাঙ্গণ। এখানে মঞ্চের ওপর দণ্ডায়মান রয়েছে কয়েকটি সুদৃশ্য নারী মূর্তি। পূর্বাংশের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে একটি আয়তকার পুকুর। পুকুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের মাঝামাঝি একটি করে বাঁধানো পাকা ঘাট আছে। এর পূর্ব দিকে আছে পশ্চিমমুখী একটি দোতলা ইমারত। যার বর্তমান নাম 'রশিদ মঞ্জিল'

রশিদ মঞ্জিলের প্রবেশপথের সামনের চত্বরে ইট ও সিমেন্ট নির্মিত একটি সুন্দর ফোয়ারা রয়েছে। একটি সাত ধাপ বিশিষ্ট সিঁড়ি দিয়ে রশিদ মঞ্জিলের প্রথম তলায় যেতে হয়। এর সামনের দিকের মাঝামাঝি অংশের প্রতি কোঠার পাশাপাশি তিনটি খিলান দরজা আছে। ওপরের তলায় প্রতিটি খিলানের ওপর একটি করে পোডিয়াম আছে। টিমপেনামের লতাপাতার নকশা এবং রঙিন কাচ দিয়ে শোভিত। এর সামনে আছে বাইরের দিকে উপবৃত্তাকার বেলকনি। দুপাশে রয়েছে একটি করে করিনথীয় পিলার !

eSn7dHz.jpg


Sculpture in Rose Garden Palace

পিলারগুলোর দুই পাশের অংশে প্রতি তলায় আছে একটি করে দরজা। এদের প্রতিটির কাঠের পাল্লার ভ্যানিশিং ব্লাইন্ড ও টিমপেনামে লতাপাতার নকশা দেখা যায় এবং সামনেই অপ্রশস্ত খোলা বেলকনি আছে। এর ওপরের অংশে কার্নিস বক্রাকার যা বেলস্ট্রেড নকশা শোভিত। মধ্যবর্তী অংশ ছাদের সামনের ভাগে আছে আট কোনাকার এবং খিলান সংবলিত বড় আকারের ছত্রী। এর ছাদ একটি আধাগোলাকার গম্বুজ ঢাকা। ইমারতটির দুই কোণে দুটি করিনথীয় পিলার আছে এদের ওপরে দিকেও ছত্রী নকশা আছে। রোজ গার্ডেন প্যালেসের প্রতিটি তলায় মোট ১৩টি করে ছোট ও বড় আকারের কোঠা আছে। প্রথম তলায় প্রবেশের পর পশ্চিমাংশের বাঁ দিকে আছে ওপরের তলায় যাওয়ার জন্য ঘূর্ণায়মান সিঁড়ি।

ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন প্যালেসটি নব্বই দশকের অধিকাংশ টিভি নাটকের শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। শৈশবকে ফিরে পেতে একবার গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। প্রাসাদটির বিভিন্ন কক্ষ আর ছাদ দেখে মনে হবে, দালানটা কোথায় যেনো দেখেছেন ! আর এই ভাবনার মাঝেই খুঁজে পাবেন শৈশবে টিভিপর্দায় দেখা টিভি নাটকের সেই সোনালী দিনগুলো !

রোজ গার্ডেন প্যালেস এর ঠিকানা

ঢাকা শহরস্থ সূত্রাপুর থানা এলাকাধীন ১৩ নং কে.এ. দাস লেন এই ঠিকানায় রোজ গার্ডেন অবস্থিত। বর্তমানে এটি রশিদ মঞ্জিল নামেই পরিচিত।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top