What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মানব সভ্যতা কোনো দূর্ঘটনা নয়, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়া (পর্ব ২) (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
m7rlibm.jpg


প্রথম পর্বের পর আপনাদের আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত। যতটুকু আশা নিয়ে পোষ্ট দিয়েছিলাম আপনাদের আগ্রহ তার চেয়েও অধিক। এটা বেশ ভাল দিক। আকডুম বাগডুম ফেসবুকিং এর পাশাপাশি কিছুটা আকাশ-বিজ্ঞান চর্চা ও নিজেদের আদি-অন্ত জেনে নেয়া যাক তাহলে।

পর্ব-১ এ আমরা জেনেছি কিভাবে সৌরমন্ডল তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাং এর ৯০০ কোটি বছর পর অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি বছর পূর্বে। সেখানে আমরা এটাও জেনেছি কিভাবে শিশু পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল সূর্য্যের জন্মের প্রায় ৫০ কোটি বছর পর, যেই শিশু পৃথিবী সূর্য্য হতে ততটা দূরত্বে ছিল না যেখানে জীবের বিকাশ ঘটতে পারে।

যারা পর্ব-১ মিস করেছেন তারা এখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।

আজ আমরা জানবো কোন সেই বাকী দূর্ঘটনাগুলো যার পর পৃথিবী তার বর্তমান অবস্থায় আসে। জীবের বিকাশ সম্ভব হয়! যা কিছু না ঘটলে পৃথিবীতে কখনোই জীবের অস্তিত্ব দেখা যেত না। এসব ঘটনাগুলো শত কোটি বছর পুরুনো, অত্যান্ত পরিকল্পনামাফিক ও পরিমিত মাপে। আর এখানেই সকল আশ্চার্য্য লাগা নিহিত!

আজ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি বছর পূর্বে পৃথিবী যখন শিশু সেসময় পৃথিবীর আকার ও আয়তন আজকের সমান ছিল না। সূর্য্য থেকে তার দূরত্বও জীবের ক্রমবিকাশের জন্য উপযুক্ত ছিল না। আজ যদি পৃথিবী সেই দূরত্বেই অবস্থান করত পৃথিবীর তাপমাত্রা হত কয়েক হাজার ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড! যেখানে জীবের বিকাশ হত অসম্ভব। সেসময় শিশু পৃথিবীর দিকে প্রায় মঙ্গল গ্রহের সমান একটি গ্রগাণু কক্ষচ্যুত হয়ে ছুটে আসে। এটা অবশ্যই একটি দূর্ঘটনা। সজোরে পৃথিবীর বুকে আঘাত করে উত্তপ্ত গলিত পৃথিবীর পেটে প্রবেশ করে যায় বিশালাকার গ্রহাণুটি সেদিন! আজ এমনটা ঘটলে আমরা হয়ত তাকে কেয়ামত বলব!

উক্ত দূর্ঘটনায় দুটি ঘটনা ঘটে পৃথিবীর সাথে। পৃথিবী সূর্য্য থেকে আরও দূরে ছিটকে গিয়ে গোল্ডি লক্স জোন বা হেবিটেবল জোনে অবস্থান নেয় যার ফলে পৃথিবীর বুকে আজ পানির তরল অস্তিত্ব সম্ভব হয়। উক্ত দূর্ঘটনাটি পরিমিত মাপে না ঘটলে সূর্য্য হতে আজ এই পৃথিবীর দূরত্ব এমন অবস্থানে থাকতো যে পৃথিবীর বুকে পানি হয়ত হিমায়িত নয়ত বাষ্পায়িত হয়ে যেত। ভেবে দেখুন, সেই গ্রহাণুটির আয়তন মঙ্গল গ্রহের চেয়ে অনেক ছোট অথবা অনেক বড়, যার ফলে পৃথিবী হয়ত হেবিটেবল জোনে পৌছায়নি অথবা হেবিটেবল জোনের চাইতেও দূরে ছিটকে পড়েছে, আপনি আপনার অস্তিত্ব খোজে পান কিনা ভাবুন! ভাবুন যেখানে পানি নেই আর সব আছে, ধরুন আপনার ফেসবুকও আছে

জীবন বিকাশের জন্য আরও একটি চমৎকার ঘটনা সেই দূর্ঘটনায় ঘটে যায়। প্রচন্ড বেগে পৃথিবীর বুকে আছরে পরা গ্রহাণুটির কারনে সেদিন পৃথিবীর গর্ভ থেকে একটি বিশালাকার অংশ পৃথিবীর বুক চিড়ে বেড়িয়ে যায় ও পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে যার নাম পরবর্তীতে আমরা দিয়েছি চাঁদ।

চাঁদ এই পৃথিবীতে দুইভাবে জীব-বিকাশে সহায়তা করেছে। এই দুইটির কোনটি ছাড়াই পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব অসম্ভব ছিল। চাঁদ ছাড়া পৃথিবীর বুকে পিরিয়ডিক ওয়েদার সৃষ্টি হত না। জীবন স্থিরতা পছন্দ করে। বর্তমান পৃথিবীর বুকে যে সুনির্দিষ্ট সময়ে সামার ও উইন্টারের আগমন ঘটে তা এই চাদের কল্যাণেই। নয়ত পৃথিবীর উত্তপ্ত স্থান উত্তপ্ত হতেই থাকত আর শীতল স্থান ক্রমাগত শীতল!

ঐ সুন্দর চাদটা না হলে পৃথিবীতে আরও একটি স্থিরতা অসম্ভব ছিল। পৃথিবীর আহ্নিক গতি। পৃথিবীর নর্থপোল সর্বদাই নর্থের দিকে থাকত না, সাউথপোল থাকত না সাউথের দিকে। পৃথিবীর চতুর্পার্শ্বের আয়তন ও ওজন সমান নয়। আপনি যদি একটি অসম ওজনের গোলক নিজের আঙ্গুলের মাথায় ঘুড়াতে চেষ্টা করেন সেটা ফুটবলের ন্যায় সুষমভাবে ঘুড়তে থাকবে না। কিঞ্চিত হেলেদুলে ঘুড়বে। পৃথিবীরও তাই হত এবং এর ফলাফল সরূপ নিয়ত সমুদ্রের পানি আপনার মেঝে পরিষ্কার করতে চলে আসত ঘরে! উচু উচু ইমারতগুলো দাঁড়িয়ে থাকত না! ভূকম্পন হত নিয়ত!

সেই দূর্ঘটনায় উপগ্রহ হিসেবে চাঁদ এমন একটি আয়তন নিয়ে পৃথিবীর বুক থেকে বেড়িয়ে গেছে যে আজকের পৃথিবীকে সে দোদুল্যমান হওয়া থেকে বাচিয়ে রাখছে প্রতিনিয়ত। উপগ্রহ অন্যান্য গ্রহেরও রয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপারটা এখানেই। তাদের আকার ও আয়তন অতোটা যথেষ্ট নয় যে তাদের গ্রহের উপর ড্যাম্পিং ফোর্স হিসেবে কাজ করতে পারে! অন্য কোন গ্রহের আহ্নিকগতি তাই সুষমও নয়! দুলছে আর ঘুড়ছে! এই পৃথিবীতে একদিন প্রাণের সঞ্চার ঘটাতে হবে এই পরিকল্পনা বহু পুরুনো এবং নিশ্চয়ই সেটা কোন একজনের! কে সে?

উপরোক্ত ঘটনা সমুহের পরও মানুষের জীবনের জন্য উপযুক্ত একটা পৃথিবীর অনেক কিছুই বাকী রয়ে গেছে তখনো। তখনো আয়রণ ম্যাঙ্গানিজ সহ বহু মিনারেলস, অক্সিজেন ও ওজন লেয়ার, ডায়নাসোরের বিলুপ্তি এই পৃথিবীতে ঘটেনি। যার একটি ছাড়াও এই পৃথিবী মানব সভ্যতার জন্য উপযুক্ত হত না।

আয়রণ বা ম্যাঙ্গানিজের মত মিনারেলস গঠিত হতে যে পরিমান চাপ ও তাপ প্রয়োজন সেরকম কোন ঘটনা তখনো আমাদের সোলার সিস্টেমে বা তার আশেপাশে ঘটেনি। একমাত্র কোন মৃত নক্ষত্রের বিষ্ফোরণেই যা সম্ভব ছিল। যার নাম সুপার নোভা। আজ থেকে চারশো কোটি বছর পূর্বে আমাদের সোলার সিস্টেমের নিকটবর্তী কোন নক্ষত্রের বিষ্ফোরণের মধ্যে দিয়ে জীবের অস্তিত্বের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় এই উপাদানসমূহ পৃথিবীতে আছড়ে পরে। প্রায় একশো কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে হতে থাকে দ্যা লেট হেভি বোম্বার্টসমেন্ট। সে সময় পৃথিবীতে কৃস্টাল রূপে পানি ও মিনারেলস সমূহ সহ জীবের অস্তিত্বের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় এমিনো এসিড এর আগমন ঘটে।

লেট হেভি বোম্বার্টস এর পর পৃথিবীতে আইস এজ আসে। হেভি বোম্বার্টসের ফলে পৃথিবীর চারপাশে এত পুরু ডাস্ট ক্লাউড জমে যায় যা ভেদ করে লক্ষ কোটি বছর পৃথিবীতে কোন আলো আসে না। পৃথিবী ধীরে ধীরে হিমায়িত হয়ে স্নো বলে পরিণত হয়।প্রায় পঞ্চাশ কোটি বছর স্নো বল হয়ে থাকা পৃথিবীর বরফ গলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সাগর মহা সাগর তৈরি করে আজ হতে প্রায় তিনশো কোটি বছর পূর্বে। সে সময় পৃথিবীতে পানি বর্তমান। ধীরে বিভিন্ন আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে লাভা নির্গত হচ্ছে। অনুমান করা হয় এক কোষী প্রাণী সায়ানো ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম সে সময়। পানিতে জন্ম নেয়া এই এক কোষী ব্যাক্টেরিয়া খাবার গ্রহণের জন্য সূর্য্যের আলো এবং পানিকে ভেঙ্গে হাইড্রোজেন গ্রহণ করতো। বাই প্রোডাক্ট হিসেবে রয়ে যেত অক্সিজেন। যা পানি হতে বুদবুদ আকারে প্রায় একশো কোটি বছর ধরে আমাদের বায়ুমন্ডলে জমতে শুরু করে এবং তৈরি করে ওজন লেয়ার। যেই ওজন লেয়ার ব্যাতীতে পৃথিবীতে ছয় সেকেন্ডর জন্যও জীবের বেঁচে থাকা অসম্ভব! সূর্য্যের ক্ষতিকারক রশ্মি সমূহ জীবের অস্তিত্ব শেষ করে দিবে। যেই অক্সিজেন ব্যাতিত জীবের অস্তিত্ব এক মিনিটও অসম্ভব। সেই অক্সিজেনের সৃষ্টি হয় তখন। এর মাঝে আরও বহু ছোট ছোট ঘটনা রয়েছে যা ব্যাতীত মানব সভ্যতা এখানে কোনদিন পৌঁছাতো না। প্রায় তিনশো কোটি বছর পূর্বে এক কোষী অনুজীব সায়ানো ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব শুরু হলেও, প্রকৃতভাবে পৃথিবীর বুকে জীবের বিচরণ শুরু হয় আরও আনেক পরে। জীবের উতপত্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের সঠিক কোন সিদ্ধান্ত না থাকায় উক্ত বিষয়ে ধর্মীয় মতবাদই এখন পর্যন্ত সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। তারপর পৃথিবীতে জীবের বিচরণ শুরু হলে শুরু হয় ডায়নাসোর যুগের। যেই ডায়নাসোরের বিলুপ্তি ব্যাতী মানব সভ্যতা অসম্ভব ছিল। আজ থেকে প্রায় ৫৬ কোটি বছর পূর্বে এক গ্রহাণুর আছড়ে পড়ার মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সেই ডায়নাসোর যুগের। তারপর আজ পর্যন্ত আর এত বড় কোন গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পরেনি পৃথিবীর বুকে। ডায়নাসোরের বিলুপ্তি ছিল পৃথিবীর বুকে মানব সভ্যতা শুরুর সর্বশেষ শর্ত যা প্রাকৃতিক দূর্ঘটনার মধ্য দিয়েই সেসময় পূরণ হয়। এই পৃথিবীর সাথে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি পরিমিত ও পরিকল্পিত দূর্ঘটনার ফসল আজকের মানব সভ্যতা। যেটা আমরা কোন ভাবেই দূর্ঘটনা ভাবতে পারি না। এর পেছনে অবশ্যই কারো ইশারা রয়েছে। কে সে? গল্পের ছলে পৃথিবীর ইতিহাস জেনে যদি আপনাদের ভাল লাগে, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন প্লিজ। আপনাদের উতসাহ পেলে ইউনিভার্স নিয়ে আরও লিখবো। দিস ইউনিভার্স ইজ রিয়েলি ইন্টারেস্টিং।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top