সাইকোপ্যাথ কি?
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, আবেগ ও সহানুভূতি বর্জিত অপরাধ প্রবণতা, শারীরিক আগ্রাসন , অসামাজিক আচরণ , প্রবল আবেগ দ্বারা পরিচালিত এবং বেপরোয়া ঝুঁকি গ্রহন করা, এসকল আচরণ একজন সাইকোপ্যাথ এর মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। সাইকোপ্যাথ (Psychopath) একটি মানসিক অসুস্থতা যা মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায় "পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার" নামেও পরিচিত।
সাইকোপ্যাথ হবার কারণ সমূহ
সাইকোপ্যাথ মূলত জেনেটিক্স ,পরিবেশগত কারন এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের অসমতা এর কারনেও হতে পারে। যে ৩টি বিশেষ কারণ সাইকোপ্যাথ হবার জন্য দায়ী –
- মা-বাবা দ্বারা সন্তান নির্যাতিত
- মা-বাবা থেকে দূরে থাকা, তাদের অবহেলা বা বিচ্ছেদ
- শিশু শারীরিকভাবে নির্যাতিত বা অবহেলিত
মনোবিজ্ঞানী হেয়ারের গবেষণায় সাইকোপ্যাথদের ২০টি উপসর্গ বা কারণ পাওয়া গেছে –
- বাহ্যিক আকর্ষণীয় কিন্তু আন্তরিকতার অভাব
- নিজের সম্পর্কে বাড়িয়ে বলা
- সবসময় কাজের জন্য উদ্দীপনা প্রয়োজন
- নিজের অসুখ বা অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যা বলা
- নিজের উদ্দেশ্য সাধনে অন্যদেরকে ব্যবহার করা
- অনুশোচনা না অপরাধ বোধের অভাব
- অগভীর আবেগ
- নির্মমতা বা সহমর্মিতার অভাব
- পরজীবী জীবনবোধ
- নিজের আচরনের উপরে নিয়ন্ত্রন নেই
- বাছবিচারহীন যৌনজীবন
- জীবনের প্রথমদিকে আচরণগত সমস্যা
- বাস্তব সম্মত এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের অভাব
- হঠাৎ আবেগপ্রবণ হয়ে পরা
- দায়িত্বহীন আচরণ
- অন্যদের দোষারোপ এবং দায়িত্ব গ্রহনে অস্বীকার
- বহুবিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া
- তরুণ বয়সে কর্তব্য অবহেলা করা
- শর্ত দিয়ে কাজ করানো
- অপরাধ মুলুক কাজ করার প্রবনতা
আপনার সঙ্গী বা বন্ধু কেউ যদি এমন আচরণে অভ্যস্থ থাকে তবে তাদের কাছে থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন। কারণ এই অসুস্থতা নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক কম। তাদেরকে বুঝতে না দিয়ে ধীরে ধীরে তাদের সাথে মেলামেশা কমিয়ে ফেলুন। সঙ্গী হলে তাকে পরিবারের অন্যদের কাছ থেকে আগে দূরে রাখুন। বন্ধু হলে তাকে আপনার বাসায় আসতে বাধা দিন, মোবাইল-ইমেইল নাম্বার পরিবর্তন করে ফেলুন।
কারণ মনোবিজ্ঞানে সাইকোপ্যাথদের সবচেয়ে ভয়ংকর মানুষ হিসাবে বলা হয়েছে যাদের কে জেলে বা মানসিক হাসপাতালে রাখার কথা উলেখ্য করা আছে।
নিজের মধ্যে সাইকোপ্যাথ আচরণ দেখলে কি করবেন ?
নিজের মধ্যে এসব আচরণ দেখলে বাবা-মা কে আগে বলুন, নিজের ইচ্ছা শক্তির উপরে জোর দিন, আপনি অন্যদের ক্ষতি করার চিন্তা করে থাকলে বাইরে অন্যদের সাথে মেলামেশা বন্ধ করুন। নিজের সঙ্গীকে সাহায্যের জন্য বলুন, অপরাধমুলুক কাজে জড়িয়ে গেলে তা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করুন। সর্বোপরি নিজেকে ভালবাসুন।