রফিকের অফিসে নারীকুলের ভিড়। সবাই এসেছে তাদের হাজব্যান্ডের আমলনামা জানতে। রফিকের কোম্পানির নাম "নো ইউর হাজব্যান্ড"। বাংলায় আপনার স্বামীকে জানুন। রফিক প্রথমে নো ইউর জামাই দিতে চেয়েছিলো কিন্তু কয়েকজন কমপ্লেইন করলো জামাই শুনলে কেমন মেয়ের জামাই মনে হয়। তাই জামাই আউট হাজব্যান্ড ইন।
ভাইয়া আমার স্বামীর গতিবিধি সন্দেহজনক। রফিকের সামনে অতীব সুন্দরী মেয়ে।
রফিক আলতো করে চুলে সিথি কেটে নেয়; রফিকের জীবনে কোনকালে এতো সুন্দরীদের সাথে কথা হয়নি। রফিকের যেসব বন্ধুদের ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিলো মেয়েরা তাদের আশেপাশে ভিড় করতো। রফিক দূর থেকে দেখতো আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়তো। খোদা তার দীর্ঘশ্বাসের ফল দিয়েছেন। রফিকের চারপাশে এখন সুন্দরীদের ভিড়।
লক্ষণ কি?
আগে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতো। কিন্তু এখন বাসায় ফেরার কথা ফোন করে মনে করিয়ে দিতে হয়। আগে আমাকে বলতো তোমাকে অপরূপা লাগছে। এখন বলে আমার দিকে তাকালে প্রথমে নাকি আমার মোচ চোখে পরে। আগে এক রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোন ধরে বলতো বসে আছি পথ চেয়ে। আর এখন ফোন ধরার সময়ই নাকি পায় না। আগে নানা ছুতোয় হাত ধরতে চাইতো, গাল ধরতে চাইতো, আরও কত কিছু করতে চাইতো। আর এখন দুইজন মানুষ এক ঘরে হলের রুমমেটের মতো ঘুমাই। হলের রুমমেটদেরও ঘুমানোর সময় একজনের পা অন্যজনের উপর উঠে যায়। এখানে তাও না। উনার শরীরে স্পর্শ করলে নাকি উনার ঘুম হয় না।
রফিক চুকচুক করে। আহা। আহা।
আগে মোবাইলের, ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ছিলো আমার নাম। আর এখন মোবাইল যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখে। যেন মোবাইল না। আমি তার কিডনি ধরতে চেয়েছি। বাথরুমে গেলেও মোবাইল নিয়ে যায়। এ ছাড়া নাকি তার বাথরুম ক্লিয়ার হয় না।
আপনার কথা শুনে খুব দুঃখিত হলাম। আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন; আমাদের গোয়েন্দা টিম আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে আপনাকে রিপোর্ট দিবে। উনি কার সাথে কথা বলেন, উনার ফোন ট্র্যাকিং, গাড়ি ট্র্যাকিং, ক্রেডিট কার্ডের বিল এনালাইসিস থেকে শুরু করে ম্যাসেঞ্জারে কাকে নক করছেন, সব রিপোর্ট আমরা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আপনাকে দিবো।
কিন্তু তারপর আপনারা কোন একশন নিবেন না?
কি বলছেন। তারপরইতো আমাদের একশন শুরু। আমরা উনাকে ভয় দেখাবো। এমন ভয় দেখাবো যে উনার প্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে। এ ম্যান উইথ নষ্ট প্যান্ট। আমি আপনাকে একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন।
সামিনা আমাদের একজন ভ্যালুড ক্লায়েন্ট। উনি আমাদের শরণাপন্ন হন। এরপরেই আমাদের টিম মাঠে নামে। আমরা এনালাইসিস করে দেখলাম উনার জামাইয়ের আলুর দোষ বেশ প্রবল। উনার সাথে উনার পি এসের প্রেম প্রেম সম্পর্ক। তারা একসাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এরপর আমরা করলাম উনার ফোন এনালাইসিস। দেখা গেলো উনি উনার স্ত্রী সামিনার সাথে দিনে কথা বলেন পাচ মিনিট। কিন্তু জিনিয়া, সোনিয়া, মিষ্টি, পিঙ্কি এদের সাথে গড়ে কথা বলেন আধা ঘণ্টা। উনি প্রতিদিন সকাল বেলায় গড়ে বিশ জনকে শুভ সকাল। পনেরোজনকে শুভ দুপুর এবং দশজনকে শুভ সন্ধ্যা পাঠান। ম্যাসেঞ্জারে উনি গড়ে প্রতিদিন কয়েকজনকে হাই, হ্যালো পাঠান এবং কয়েকজনের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে চ্যাট করেন। আমরা উনার ক্রেডিট কার্ড এনালাইসিস করে দেখালাম গত মাসে উনি উনার একজন গার্লফ্রেন্ডকে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড থেকে বেশ দামী গিফট করেছেন। ভাসাভি থেকেও দামী গিফটের বিল আমরা পেয়েছি। অথচ মিস সামিনা আমাদের বলেছেন উনার জামাই গতমাসে উনাকে গাউছিয়া মার্কেট থেকে থ্রি পিস কিনে দিয়েছেন তাও অনেক চাপাচাপির পর। এরপর মিসেস সামিনার অনুরোধে আমরা একশনে নামি।
আমাদের কয়েকধরনের একশন আছে; প্রথম একশন আধ্যাত্মিক একশন। এই একশনে সেই পুরুষকে বান মারা হয়। তিনি ব্যাঙ্গের মতো লাফাতে লাফাতে এসে বউয়ের পায়ে ঝাপিয়ে পরেন। বলেন আমি ক্ষমা চাই। তারপর কবিতা পড়তে শুরু করেন। সকাল উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।
এরপরের একশন হচ্ছে; বলিউড, ডালিউড একশন। এইদিন আমরা তার সকল গার্লফ্রেন্ডকে একেই দিন একেই জায়গায় ডাকি। তিনি খুব সেজেগুজে আসেন; কিন্তু সকলের হাতে উত্তম মধ্যম খেয়ে কোনমতে ইজ্জত নিয়ে পালান। এই ঘটনা আমরা ভিডিও করি। এবং সেই ভিডিও উনার স্ত্রীর হাতে হস্তান্তর করি। সেই জামাই আর সারাজীবন টু শব্দটিও করে না।
আমাদের এর পরের একশন হচ্ছে প্রতিশোধ একশন। যেহেতু স্বামী চারজন নারীর সাথে প্রেম করছে। আমরা তার স্ত্রীকে ছয়জন পুরুষ প্রেমিক যোগাড় করে দেই প্রেম করার জন্য। এই ক্ষেত্রে সেই নারী মানসিক প্রশান্তি পেতেই পারেন যে উনার স্বামীর থেকে উনার প্রেমিক বেশী। আমাদের কাছে আগ্রহী পুরুষদের একটা লিস্ট আছে। সেখান থেকে স্ত্রী তার প্রেমিক বাছাই করে নিতে পারেন।
এপরের একশন হচ্ছে হিজড়া একশন। একজন হিজড়া ফোনে সেই স্বামীর সাথে প্রেম করেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর তারা দেখা করেন। তারপর বুঝতেই পারছেন স্বামীর অবস্থা। হিজড়া তাকে ছাড়ে না। এবং বাসায় গিয়ে উপস্থিত হয়। এরপর সেই স্বামী জীবনে মোবাইল আর ইউজ করতে চান না। কেননা সেই মোবাইলে তিনি বহুবার হিজড়াকে চুমু খেয়েছেন।
শুধু তাই নয় আমরা ফাইনেন্সিয়াল প্ল্যানিংও করে দেই। যেন হাজব্যান্ড বেতন পাওয়ার পর পুরো বেতন স্ত্রীর হাতে তুলে দেন। স্ত্রী তাকে প্রতিদিন শুধুমাত্র যাওয়া আসার ভাড়া দিবেন। তিনি কত বেতন পেলেন, কত টাকা বোনাস পেলেন। সবকিছু আমাদের মনিটরে থাকবে। পকেটে টাকা না থাকলে কোন মেয়েই তার ধারে কাছে যাবে না। সুতরাং আমাদের ক্লায়েন্ট দিতে পারবেন শান্তির ঘুম।
মেয়েটা আবেগে রফিকের হাত আঁকড়ে ধরে। ইশ এমন হলে কিন্তু খুব ভালো হতো। শুধুমাত্র বাস ভাড়া অথবা ট্যাম্পু ভাড়া দিতাম। প্লিজ আমার জন্য কিছু করুন।
রফিক একটা আত্মতৃপ্তির হাসি দেয়। রফিকের কোম্পানি নিশ্চিত ফুলে ফেপে উঠবে। রফিককে ঘিরে থাকবে সুন্দরীদের মেলা।
(সমাপ্ত)
ভাইয়া আমার স্বামীর গতিবিধি সন্দেহজনক। রফিকের সামনে অতীব সুন্দরী মেয়ে।
রফিক আলতো করে চুলে সিথি কেটে নেয়; রফিকের জীবনে কোনকালে এতো সুন্দরীদের সাথে কথা হয়নি। রফিকের যেসব বন্ধুদের ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিলো মেয়েরা তাদের আশেপাশে ভিড় করতো। রফিক দূর থেকে দেখতো আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়তো। খোদা তার দীর্ঘশ্বাসের ফল দিয়েছেন। রফিকের চারপাশে এখন সুন্দরীদের ভিড়।
লক্ষণ কি?
আগে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতো। কিন্তু এখন বাসায় ফেরার কথা ফোন করে মনে করিয়ে দিতে হয়। আগে আমাকে বলতো তোমাকে অপরূপা লাগছে। এখন বলে আমার দিকে তাকালে প্রথমে নাকি আমার মোচ চোখে পরে। আগে এক রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোন ধরে বলতো বসে আছি পথ চেয়ে। আর এখন ফোন ধরার সময়ই নাকি পায় না। আগে নানা ছুতোয় হাত ধরতে চাইতো, গাল ধরতে চাইতো, আরও কত কিছু করতে চাইতো। আর এখন দুইজন মানুষ এক ঘরে হলের রুমমেটের মতো ঘুমাই। হলের রুমমেটদেরও ঘুমানোর সময় একজনের পা অন্যজনের উপর উঠে যায়। এখানে তাও না। উনার শরীরে স্পর্শ করলে নাকি উনার ঘুম হয় না।
রফিক চুকচুক করে। আহা। আহা।
আগে মোবাইলের, ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ছিলো আমার নাম। আর এখন মোবাইল যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখে। যেন মোবাইল না। আমি তার কিডনি ধরতে চেয়েছি। বাথরুমে গেলেও মোবাইল নিয়ে যায়। এ ছাড়া নাকি তার বাথরুম ক্লিয়ার হয় না।
আপনার কথা শুনে খুব দুঃখিত হলাম। আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন; আমাদের গোয়েন্দা টিম আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে আপনাকে রিপোর্ট দিবে। উনি কার সাথে কথা বলেন, উনার ফোন ট্র্যাকিং, গাড়ি ট্র্যাকিং, ক্রেডিট কার্ডের বিল এনালাইসিস থেকে শুরু করে ম্যাসেঞ্জারে কাকে নক করছেন, সব রিপোর্ট আমরা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আপনাকে দিবো।
কিন্তু তারপর আপনারা কোন একশন নিবেন না?
কি বলছেন। তারপরইতো আমাদের একশন শুরু। আমরা উনাকে ভয় দেখাবো। এমন ভয় দেখাবো যে উনার প্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে। এ ম্যান উইথ নষ্ট প্যান্ট। আমি আপনাকে একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন।
সামিনা আমাদের একজন ভ্যালুড ক্লায়েন্ট। উনি আমাদের শরণাপন্ন হন। এরপরেই আমাদের টিম মাঠে নামে। আমরা এনালাইসিস করে দেখলাম উনার জামাইয়ের আলুর দোষ বেশ প্রবল। উনার সাথে উনার পি এসের প্রেম প্রেম সম্পর্ক। তারা একসাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এরপর আমরা করলাম উনার ফোন এনালাইসিস। দেখা গেলো উনি উনার স্ত্রী সামিনার সাথে দিনে কথা বলেন পাচ মিনিট। কিন্তু জিনিয়া, সোনিয়া, মিষ্টি, পিঙ্কি এদের সাথে গড়ে কথা বলেন আধা ঘণ্টা। উনি প্রতিদিন সকাল বেলায় গড়ে বিশ জনকে শুভ সকাল। পনেরোজনকে শুভ দুপুর এবং দশজনকে শুভ সন্ধ্যা পাঠান। ম্যাসেঞ্জারে উনি গড়ে প্রতিদিন কয়েকজনকে হাই, হ্যালো পাঠান এবং কয়েকজনের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে চ্যাট করেন। আমরা উনার ক্রেডিট কার্ড এনালাইসিস করে দেখালাম গত মাসে উনি উনার একজন গার্লফ্রেন্ডকে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড থেকে বেশ দামী গিফট করেছেন। ভাসাভি থেকেও দামী গিফটের বিল আমরা পেয়েছি। অথচ মিস সামিনা আমাদের বলেছেন উনার জামাই গতমাসে উনাকে গাউছিয়া মার্কেট থেকে থ্রি পিস কিনে দিয়েছেন তাও অনেক চাপাচাপির পর। এরপর মিসেস সামিনার অনুরোধে আমরা একশনে নামি।
আমাদের কয়েকধরনের একশন আছে; প্রথম একশন আধ্যাত্মিক একশন। এই একশনে সেই পুরুষকে বান মারা হয়। তিনি ব্যাঙ্গের মতো লাফাতে লাফাতে এসে বউয়ের পায়ে ঝাপিয়ে পরেন। বলেন আমি ক্ষমা চাই। তারপর কবিতা পড়তে শুরু করেন। সকাল উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।
এরপরের একশন হচ্ছে; বলিউড, ডালিউড একশন। এইদিন আমরা তার সকল গার্লফ্রেন্ডকে একেই দিন একেই জায়গায় ডাকি। তিনি খুব সেজেগুজে আসেন; কিন্তু সকলের হাতে উত্তম মধ্যম খেয়ে কোনমতে ইজ্জত নিয়ে পালান। এই ঘটনা আমরা ভিডিও করি। এবং সেই ভিডিও উনার স্ত্রীর হাতে হস্তান্তর করি। সেই জামাই আর সারাজীবন টু শব্দটিও করে না।
আমাদের এর পরের একশন হচ্ছে প্রতিশোধ একশন। যেহেতু স্বামী চারজন নারীর সাথে প্রেম করছে। আমরা তার স্ত্রীকে ছয়জন পুরুষ প্রেমিক যোগাড় করে দেই প্রেম করার জন্য। এই ক্ষেত্রে সেই নারী মানসিক প্রশান্তি পেতেই পারেন যে উনার স্বামীর থেকে উনার প্রেমিক বেশী। আমাদের কাছে আগ্রহী পুরুষদের একটা লিস্ট আছে। সেখান থেকে স্ত্রী তার প্রেমিক বাছাই করে নিতে পারেন।
এপরের একশন হচ্ছে হিজড়া একশন। একজন হিজড়া ফোনে সেই স্বামীর সাথে প্রেম করেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর তারা দেখা করেন। তারপর বুঝতেই পারছেন স্বামীর অবস্থা। হিজড়া তাকে ছাড়ে না। এবং বাসায় গিয়ে উপস্থিত হয়। এরপর সেই স্বামী জীবনে মোবাইল আর ইউজ করতে চান না। কেননা সেই মোবাইলে তিনি বহুবার হিজড়াকে চুমু খেয়েছেন।
শুধু তাই নয় আমরা ফাইনেন্সিয়াল প্ল্যানিংও করে দেই। যেন হাজব্যান্ড বেতন পাওয়ার পর পুরো বেতন স্ত্রীর হাতে তুলে দেন। স্ত্রী তাকে প্রতিদিন শুধুমাত্র যাওয়া আসার ভাড়া দিবেন। তিনি কত বেতন পেলেন, কত টাকা বোনাস পেলেন। সবকিছু আমাদের মনিটরে থাকবে। পকেটে টাকা না থাকলে কোন মেয়েই তার ধারে কাছে যাবে না। সুতরাং আমাদের ক্লায়েন্ট দিতে পারবেন শান্তির ঘুম।
মেয়েটা আবেগে রফিকের হাত আঁকড়ে ধরে। ইশ এমন হলে কিন্তু খুব ভালো হতো। শুধুমাত্র বাস ভাড়া অথবা ট্যাম্পু ভাড়া দিতাম। প্লিজ আমার জন্য কিছু করুন।
রফিক একটা আত্মতৃপ্তির হাসি দেয়। রফিকের কোম্পানি নিশ্চিত ফুলে ফেপে উঠবে। রফিককে ঘিরে থাকবে সুন্দরীদের মেলা।
(সমাপ্ত)
