What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেরা কিছু গোপন মিশন ২ (1 Viewer)

mastiguybd

Member
Joined
Oct 13, 2019
Threads
3
Messages
103
Credits
978
মিশন আননোন
৩০ জুলাই, ১৯৪৫। প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে ভেসে চলছে একটি মার্কিন ক্রুজার। গুয়াম থেকে যাত্রা শুরু করেছিল এটি, গন্তব্য ফিলিপাইন্স। হঠাৎ করেই দুটো প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ হলো, মুহূর্তের মধ্যেই উল্টে গেল পুরো জাহাজ। ১২ মিনিটের মধ্যেই সম্পূর্ণ জাহাজ ডুবে গেল কোনোরকম চিহ্ন ছাড়াই।
মাত্র কয়েকদিন আগেই এই পোর্টল্যান্ড-ক্লাস ক্রুজার ইউএসএস ইন্ডিয়ানাপোলিস প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধের সবচেয়ে বড় মিশনটি শেষ করে ফেলেছে। লিটল বয় পারমাণবিক বোমার গুরুত্বপূর্ণ অংশ পৌঁছে দেওয়া ছিল এই জাহাজের দায়িত্ব।
জাহাজের গন্তব্য হলো টিনিয়ান দ্বীপের মার্কিন ঘাঁটিতে। সেখানে পৌঁছে দেওয়ার পরপরই এর নতুন মিশন হলো ফিলিপাইন্সে অবস্থান করা আরেক মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আইডাহোর সাথে যোগ দেওয়া। তখনই জাপানের সাবমেরিন জাহাজটিকে খুঁজে পেলো। ইন্ডিয়ানাপোলিস এতটাই দ্রুত ডুবে গিয়েছিলো যে জাহাজের কেউ বিপদ সংকেত পাঠানোর সময়টুকু পর্যন্ত পায়নি।
তিন দিন পর, মার্কিন বাহিনীর প্যাট্রোল বিমানের কাছে ধরা পড়ে জাহাজের ক্রুদের অবস্থান। ১,১৯৬ জন নাবিকের মধ্যে ৯০০ জন জাহাজ থেকে বের হতে পেরেছিল। উদ্ধার কাজ শুরু হতে হতে পানিশূন্যতা ও হাঙরের আক্রমণে মারা গিয়েছিল আরো ৬০০ জন। শেষে মাত্র ৩১৭ জন নাবিক বেঁচে ফিরতে পেরেছিল। পারমাণবিক বোমার রসদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য মার্কিন বাহিনীকে বেশ চড়া মূল্য দিতে হলো, আর এটিই ছিল মার্কিন নৌবাহিনীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।

অপারেশন গানারসাইড
১৯৪২ সাল। পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের দুই পক্ষ। একদিকে আমেরিকান আর ব্রিটিশরা নিউ মেক্সিকোতে ম্যানহাটন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে, অন্যদিকে নরওয়েতে নাৎসিরা ব্যস্ত একই উদ্দেশ্য নিয়ে।
ভেমর্ক হাইড্রো-কেমিক্যাল কারখানা তখন পৃথিবীর একমাত্র স্থাপনা যেখানে ভারী পানি (D₂O) তৈরি করা হয়। অ্যাটমিক রিঅ্যাকটর বানানোর জন্য ভারী পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আর এর দখলে রয়েছে নাৎসিরা। মিত্রবাহিনী জানতো যে, নাৎসিদেরকে পারমাণবিক বোমা বানানো থেকে বিরত রাখতে হলে এই কারখানা অকেজো করে দিতে হবে, কিন্তু পুরো কারখানাটিই রয়েছে পর্বতের গভীরে, যেখানে বিমান আক্রমণ এককথায় অসম্ভব। 'ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশনস এক্সিকিউটিভ (SOE)' এক বছর আগেই তাদের ৬ জন কমান্ডোকে পাঠিয়েছিল সরাসরি আক্রমণ করার জন্য, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রত্যেকেই মারা যায়। এবার নরওয়েজিয়ানদের পালা।
১৬ ফেব্রুয়ারি, ছয়জন নরওয়েজিয়ান কমান্ডো প্যারাসুটে করে নেমে এলো কারখানার অদূরে থাকা টেলিমার্ক নামক স্থানে। কারখানায় যাওয়ার মাত্র একটি রাস্তা। সরু উপত্যকার মাঝ দিয়ে ৩০০ মিটারের একটি সেতু। বাকি জায়গা মাইন দিয়ে ঘেরা আর স্পটলাইট দিয়ে আলোকিত করে রাখা। কিন্তু কমান্ডোদের পরিকল্পনা ছিল অন্যরকম। তারা সেতুর উপর দিয়ে না গিয়ে উপত্যকার অন্য দিকে নেমে, বরফে ঢাকা নদী পার হয়ে, আবারো পাহাড় বেয়ে কারখানার উল্টো দিক থেকে ঢুকে পড়ল। কারখানার ভেতরে থাকা একজন গুপ্তচরের সহযোগিতায় পুরো কারখানার নীলনকশা দেখে কারখানার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় বোমা পেতে রেখে ফিরে আসে । পুরো কারখানাই ধ্বংস হয়ে যায় এই অপারেশনে, নাৎসিরা হারায় তাদের একমাত্র ভারী পানি উৎপাদনকারী কারখানা। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কমান্ডোদের টিকির সন্ধান পায়নি নাৎসিরা, কমান্ডোরা ততক্ষণে সুইডেনে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে গেছে।

অপারেশন সোর্স
সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করার পরপরই হিটলার তার যুদ্ধজাহাজগুলোকে আদেশ দিলেন আইসল্যান্ড থেকে রসদ ভর্তি সোভিয়েত জাহাজগুলোকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য। এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল জার্মানির সবচেয়ে বড় ও বিধ্বংসী জাহাজকে- স্কামহর্স্ট, লুটজো আর টিরপিটজ। চার্চিলের মন্তব্য অনুযায়ী, তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে সেরা জাহাজ ছিল টিরপিটজ, যার বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল প্রতিপক্ষকে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো।
২০ সেপ্টেম্বর। তিনটি জাহাজই নরওয়ের জার্মান নৌ ঘাঁটিতে অবস্থান করছে। টিরপিটজকে উড়িয়ে দিতে ছয়টি ব্রিটিশ ডুবোজাহাজ স্কটল্যান্ড থেকে নরওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। এগুলোর মধ্যে তিনটি হারিয়ে গেল গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই। বাকি ছিল বহরের ফ্লাগশিপ 'এক্স-৫' এবং আরো দুটো ডুবোজাহাজ। টিরপিটজের গোলার আঘাতে মুহূর্তেই এক্স-৫ ডুবে যায়। কিন্তু বাকি দুটো কোনোমতে তাদের লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে। টিরপিটজ পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও, এর ভয়াবহ ক্ষতি হয়। এটি ঠিক করে আবার সাগরে নামাতে লেগে যায় প্রায় ছয় মাস। বাকি দুটো এক্স-বোট ধরা পড়ে যায় এবং ক্রুদেরকে আটক করা হয়। টিরপিটজকে ছয় মাস কাজের বাইরে রাখার ফলে উত্তর সাগরে বেশ শক্ত অবস্থায় চলে যায় মিত্রবাহিনী এবং নরওয়ে থেকে নাৎসিদের উচ্ছেদকরণও সহজ হয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top