গহীন অরণ্যে যৌনতা
মন খারাপ করে জানালার ধারে বসে আছে রিশান । সামনে লম্বা গ্রীষ্মের ছুটি পড়বে । বাবা-মা ট্যুর এ যাচ্ছে অথচ তাদের দুই ভাই-বোনকে সাথে নিতে চাইছে না । সরাসরি মুখে না বললেও ভাবে-সাবে যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে, তোমরা সাথে না আসলেই আমারা খুশি, নিজেদের বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরে বেড়াও, ফুর্তি কর । কি দরকার আমাদের রোমান্টিক ট্যুর এ বাধা দেওয়ার ? এখন মন খারাপ করলেও বাবা-মার মধ্যে যে এতো মিল, এতো ভালোবাসা তা রিশান বেশ উপভোগই করে । আমেরিকান অনেক দম্পতির মধ্যেই এমনটা দেখা যায়না । তাছাড়া রিশানের অনেক বন্ধুর বাবা-মার ই যে ডিভোর্স হয়ে গেছে সেটা তো সে নিজের চোখেই দেখেছে । আসলে তাদের মধ্যে আমেরিকান সংস্কৃতি দেখা না যাওয়ারই কথা, কারণ তারা তো আর আমেরিকান না, বাঙ্গালী । রিশানের বাবা-মা আর বড় বোন রাত্রি তিনজনের জন্মই বাংলাদেশে হলেও তার জন্ম আমেরিকাতেই । এমনকি রিশান কোনদিন বাংলাদেশে যায়ও নি, কেননা বাংলাদেশে তাদের কোন আত্মীয়-স্বজন থেকেও নেই। রিশানের বাবা-মা প্রেম করে বিয়ে করে, কিন্তু তাদের বিয়ে কারো পরিবার থেকেই মেনে নেয় না । বাবা শরিফ আর মা মিত্রা দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রির একই বর্ষের স্টুডেন্ট ছিল । প্রথম দিনই শরিফ মিত্রাকে দেখে প্রেমে হাবু-ডুবু খায় । আর খাবেই না কেন, এরকম লম্বা, ফর্সা, সুন্দর আর হ্যাঁ, সেক্সি কটি মেয়েই বা ভার্সিটিতে আসে ? সুন্দরী গুলোর তো আগেই বিয়ে হয়ে যায় । ভার্সিটি পর্যন্ত আসে শুধু বিদঘুটে টাইপ মেয়ে গুলো । অবশ্য শরিফ ও বেশ আকর্ষণীয় চেহারার ছিল । মেয়েদের পটানোর আশ্চর্য রকমের ক্ষমতা ও ছিল তার । ফলে যা হওয়ার তাই হল । ছ'মাসের মধ্যেই সুন্দরী মিত্রাকে পটিয়ে ফেলল শরিফ । চতুর্থ বর্ষে থাকতেই তারা বিয়ে করে ফেলে । পরের বছর রাত্রি জন্ম নেয় । মাত্র পাস করে বের হয়ে কম বেতনের নতুন চাকরি, পরিবার থেকে কোন সাহায্য নে, টাকা পয়সার টানাটানি সব মিলিয়ে খুব খারাপ অবস্থায়ই পড়ে তারা । কিন্তু রাত্রি ভাগ্য নিয়েই জন্মেছিল বটে । তার পৃথিবীতে আগমনের দুই বছরের মাথায়ই শরিফ আর মিত্রা দুজনেই আমেরিকাতে স্কলারশিপ পায় । এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না তাদের । আমেরিকায় আসার আরো দু বছর পর রিশানের জন্ম হয় । ধীরে ধীরে তারা পড়ালেখা শেষ করে ওখানেই ভালো চাকরি পায় । এরপর আমেরিকার সিটিজেনশীপ পেয়ে গেলে এখানেই স্থায়ী হয়ে যায় । বিয়ের পর এতো সমস্যার কারণে নিজেদের দিকে তাকানোর সময়ই পায়নি তারা । সব সমস্যা কেটে যাওয়ায় তারা আবার তাদের রোমান্টিক জীবন ফিরে পায় । ফিরে পায় যেন ভার্সিটিতে পড়া দিনগুলো । কিন্তু ছেলেমেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে ততদিনে । তাতেই বা কি ? দুজনেই চাকরি করায় উইকেন্ডের দিনগুলো তারা একসাথে ঘুরে বেড়ায় । আর লম্বা ছুটি পেলেই চলে যায় ট্যুরে । প্রথম প্রথম ছেলে-মেয়েদের ও সঙ্গে নিতো । কিন্তু এখন তো তারা বড় হয়েছে, নিজেদের আলাদা জগত হয়েছে, আর কত ঘুরবে বা-মার পেছন পেছন ?
কিরে চুপ করে বসে আছিস কেন ? মন খারাপ ?
কখন যে রাত্রি পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে টের পায়নি রিশান ।
কিরে চুপ করে বসে আছিস কেন ? মন খারাপ ?
কখন যে রাত্রি পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে টের পায়নি রিশান । তাই চমকে পেছনে ফিরল সে । আর সাথে সাথে অনিচ্ছাকৃত ভাবে তার বাম হাতটা ছুঁয়ে গেল বোনের সুডৌল স্তন । মনে দোলা লাগলো রিশানের । তবে রাত্রিও দু'পা পিছনে সরে গিয়ে আবার প্রশ্ন করল, কিরে কি হল তোর ?
না কিছু না । কিছু বললে ? এতক্ষণে হুঁশ ফিরল রিশানের ।
রাত্রি বুঝতে পারল ভাইয়ের মন খারাপের কারণ । বাবা-মা ট্যুরে যাচ্ছে, এ নিয়ে তোর মন খারাপ তাই না ?
Hidden content
You need to reply to this thread or react to this post in order to see this content.
Hidden content
You need to reply to this thread or react to this post in order to see this content.