What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বাংলাদেশের রকমারি ভর্তা (1 Viewer)

Nirjonmela

Administrator
Staff member
Administrator
Joined
Mar 1, 2018
Threads
2,762
Messages
23,256
Credits
825,322
Pistol
Crown
Thread Title Style (One)
Profile Music
7gdKtAi.jpg


বাঙালী মানেই তো ভাত, ভর্তা, ডালের রকমারি সম্ভারের খাবারের আয়োজন। এক থালা গরম ভাতের পাশে একটুখানি আলু ভর্তা, তেলে ভাজা মুচমুচে মরিচ আর ওপরে ছড়িয়ে দেওয়া এক চামচ খাঁটি ঘি… আহা! যখন আপনি ক্ষুধার্ত, তখন এই খাবারটুকুই আপনার কাছে অমৃত। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের টেবিলে তো বটেই, নতুন বছর বরণে বা অতিথি আপ্যায়নেও নানা ধরনের ভর্তার জুড়ি মেলা ভার।

ভর্তার উৎপত্তি ঠিক কোথায় এটি নিয়ে নানা মুনির নানা মত থাকতেই পারে, আমরা এখন সেই আলোচনায় না গিয়ে ঘুরে আসি আমাদের হেঁসেল থেকে, জেনে নেই সাত পদের ভীষণ জনপ্রিয় বাংলাদেশী ভর্তার রেসিপি।
১) আলু ভর্তা

ইতিহাস বলে এটি ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে প্রাচীনতম ভর্তা। কারণ সেই ১৭৪৭ সালে হান্না গ্লাসের লেখাদ্যা আর্ট অভ কুকারিতে আলুভর্তা তৈরীর পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। বইয়ের ভাষায়- সিদ্ধ নরম আলু মরিচ, পেঁয়াজ ও তেল মিশিয়ে পিষে তৈরিকৃত এক ধরনের খাদ্যই হলো আলু ভর্তা।
উপকরণ

আলু, কাঁচা পেঁয়াজ কুঁচি/পেঁয়াজ বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ কুঁচি, লবণ, সরিষার তেল, ভাজা শুকনা মরিচ।
প্রণালী

আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। ভাজা পেঁয়াজ কুঁচি (বেরেস্তা) ভর্তাকে করে ভীষণ সুস্বাদু, তাই মুচমুচে করে ভেজে তোলা পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ কুঁচি, একটা ভাজা শুকনা মরিচ, লবণ, সরিষার তেল আলাদা একটা পাত্রে খুব ভালো করে মাখিয়ে নিন। এবার সিদ্ধ আলু এই মিশ্রণের সাথে আবার মেখে নিন। খুব ভালোভাবে মাখাতে হবে। যদি বাড়তি স্বাদ চান, যোগ করুন এক চামচ ঘি এবং সামান্য একটু ধনিয়াপাতা। ব্যাস, হয়ে গেল, আলু ভর্তা। এক প্লেট ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করেই দেখুন, কত লোভনীয়!

bHS3EVN.jpg


মজাদার আলু ভর্তা

২) পোড়া বেগুনের ভর্তা

আরেকটি পরিচিত এবং বেশ জনপ্রিয় রেসিপি হলো পোড়া বেগুন ভর্তা। বেগুন আগে থেকে পুড়িয়ে নিয়ে তারপর বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে এ ভর্তাটি করা হয়।
উপকরণ

বেগুন, কাঁচা পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, লবণ, সরিষার তেল, ভাজা শুকনা মরিচ।
প্রণালী

চুলা জ্বালিয়ে একটা তাওয়ার ওপর ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখা আস্ত বেগুনটি দিয়ে দিন। তবে তার আগে বেগুনের গায়ে কাঁটা চামচ দিয়ে কয়েকটি ছিদ্র করে দিন। মাঝারি আঁচে একটু সময় নিয়ে পোড়াতে হবে, নাহলে ভেতরে কাঁচা রয়ে যাবে। প্রতিটি পাশ যেন ভালোভাবে পুড়ে যায়, সেজন্য বারবার বেগুনটি ঘুরিয়ে দিতে হবে।
প্রতিটি পাশ যখন কালো হয়ে আসবে, তখন বুঝতে হবে পোড়ানো হয়ে গেছে। এক বাটি ঠাণ্ডা পানির মধ্যে এই বেগুনটি কিছুক্ষন রাখুন এবং খোসাটা ছাড়িয়ে নিন। ঠাণ্ডা পানিতে রাখার কারণ হলো এতে খুব সহজে বেগুনের খোসা ছাড়ানো যায়। এবার বেগুনটি হাত দিয়ে চেপে একটু হালকা করে মাখিয়ে নিন।

wgUti11.jpg


পোড়া বেগুনের ভর্তা

অন্য একটি পাত্রে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কুঁচি, একটা ভাজা (অথবা পোড়ানো) শুকনো মরিচ, প্রয়োজন মতো লবণ এবং সরিষার তেল একসাথে খুব ভালো করে মাখিয়ে নিন, চাইলে দিতে পারেন ধনিয়া পাতা। এবার খোসা ছাড়িয়ে রাখা বেগুনটা মিশিয়ে নিয়ে আবারও মাখিয়ে পরিবেশন করুন চমৎকার পোড়া বেগুনের ভর্তা।

৩) সিদ্ধ ডিমের ভর্তা

ডিমের আবার ভর্তা হয় নাকি! হয়, হয়! করেই দেখুন না। সহজ কিন্তু ভীষণ মজাদার এই সিদ্ধ ডিম ভর্তা।
উপকরণ

সিদ্ধ ডিম,কাঁচা বা ভাজা পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, লবণ, সরিষার তেল, ভাজা শুকনা মরিচ।
প্রনালী

ডিম সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে রাখুন। পছন্দ অনুযায়ী কাঁচা অথবা ভাজা পেঁয়াজ নিন। এর সাথে আরও লাগবে কাঁচা মরিচ কুঁচি, একটা মুচমুচে করে ভেজে তোলা শুকনো মরিচ, লবণ ও সরিষার তেল। একসাথে ডিম দিয়ে খুব ভালো করে মাখিয়ে নিন।

ভীষণ সহজ তবে অনেক মজাদার ডিমের ভর্তা

যারা ঘি খেতে পছন্দ করেন তারা অবশ্যই একটুখানি ঘি দেবেন। এবার খেয়ে দেখুন, মোঘলাই, পোলাও, বিরিয়ানি থেকে কোনো অংশেও কম নয় সিদ্ধ ডিমের ভর্তা!

৪) মসুর ডালের ভর্তা

ডালের বিভিন্ন ধরণের রেসিপির মাঝে এটি তৈরী বোধহয় সবচেয়ে সহজ। গরম ভাতে দারুণ সুস্বাদু!
উপকরণ

সিদ্ধ মসুর ডাল, পেঁয়াজ কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, লবন, সরিষার তেল, ভাজা শুকনা মরিচ, ধনিয়া পাতা।

মসুর ডালের ভর্তা
প্রণালী

পরিমাণ মতো পানি দিয়ে এমনভাবে ডাল সিদ্ধ করে নিতে হবে যেন বাড়তি পানি না থাকে। ভাজা পেঁয়াজ, মরিচ কুঁচি, লবণ, সরিষার তেল ও ধনিয়া পাতা দিয়ে মাখিয়ে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন এই চমৎকার মজাদার ভর্তাটি।

৫) চিংড়ি মাছের ভর্তা

এটিও ভীষণ মজাদার এবং জনপ্রিয় আরেকটি ভর্তার পদ।
উপকরণ

চিংড়ি মাছ লাগবে একটু ছোট আকারের, পেঁয়াজ কুঁচি, সামান্য রসুন কুঁচি, কাঁচা মরিচ, কয়েকটি শুকনা মরিচ ভাজা, লবণ, সরিষার তেল, ধনিয়াপাতা
প্রণালী

চিংড়ি মাছগুলি প্রথমে ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে, সামান্য তেল দিয়ে হালকা করে ভেজে নিন। ভাজা হলে তুলে রাখুন। ঐ একই পাত্রে পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ ও শুকনা মরিচগুলি ভেজে তুলুন। শুকনা মরিচগুলো একটু মুচমুচে করে ভাজতে হবে, তাহলেই পাওয়া যাবে এই ভর্তাটির আসল মজা!

yczb5IT.jpg


চিংড়ি মাছের ভর্তা

এবার তুলে রাখা চিংড়ি মাছের সাথে এই মিশ্রণটি মিশিয়ে সাথে দিন স্বাদ অনুযায়ী লবণ, সরিষার তেল এবং ধনিয়া পাতা। ব্লেন্ডার এ ব্লেন্ড করে নিন মিহি হওয়া পর্যন্ত। চাইলে কিন্তু শিলপাটাতেও বেটে নিতে পারেন। হয়ে গেল, দারুণ মজার চিংড়ি ভর্তা।

৬) টাকি মাছের ভর্তা

বাংলাদেশের হরেক রকমের সুস্বাদু মাছের মধ্যে টাকি মাছ একটি। দেশী খাবারের রেস্টুরেন্টগুলিতে দারুণ জনপ্রিয় এই টাকি মাছের ভর্তা।
উপকরণ

টাকি মাছ, পেঁয়াজ কুঁচি, রসুন কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, শুকনা মরিচ ভাজা, সামান্য পরিমাণে হলুদ গুড়া, সরিষার তেল, পরিমাণ মতো লবণ,ধনিয়া পাতা
প্রণালী

মাছগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে ছুরি দিয়ে কেঁচে নিন, যেন ঠিকমতো সিদ্ধ হয়। এবার অল্প তেলে সামান্য হলুদ ও লবণ মাখিয়ে মাছ ভেজে তুলে রাখুন। ঠাণ্ডা হয়ে এলে কাঁটা বেছে মাছগুলো একটি পাত্রে রেখে দিন। একই তেলে পেঁয়াজ, রশুন ও শুকনা মরিচ ভেজে নিন, চেষ্টা করবেন একটু মুচমুচে করে ভাজতে।

মজাদার টাকি মাছের ভর্তা

এবার আগে থেকে তুলে রাখা মাছ, পেঁয়াজ রসুনের এই মিশ্রণ, স্বাদ অনুযায়ী কাঁচা মরিচ, লবণ, তেল ও ধনিয়া পাতা একসাথে মিক্সারে মিক্স করে নিন। মিক্সার হাতের কাছে না থাকলে শিলপাটাতেও বেটে নিতে পারেন। এবার হাতে একটু সরিষার তেল মেখে নিয়ে ছোট ছোট বল আকারে তৈরি করে পরিবেশন করুন এই দারুণ মজাদার ও লোভনীয় ভর্তাটি।

৭) টমেটো ভর্তা

এই আইটেমটি তৈরি করার জন্য প্রথমে টমেটো পুড়িয়ে নেওয়া হয়। এরপর যোগ করা হয় বাকি উপকরণগুলি।
উপকরণ

টমেটো প্রয়োজন মতো, পেঁয়াজ কুঁচি, শুকনা মরিচ, সরিষার তেল, পরিমাণ মতো লবন, ধনিয়া পাতা।

টমেটো ভর্তা
প্রণালী

একটা তাওয়ার ওপর টমেটোগুলি রেখে মাঝারি আঁচে পুড়িয়ে নিতে হবে। যখন দেখবেন চারপাশে কালো রঙ হয়ে এসেছে এবং টমেটো নরম হয়ে গেছে, সেই পর্যায়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিতে হবে। একটু ঠাণ্ডা হয়ে এলে টমেটোর খোসা ছাড়িয়ে রাখুন। এখন একটি শিক বা কাঁটা চামচে কয়েকটি শুকনা মরিচ গেঁথে নিয়ে সরাসরি চুলার আঁচে পুড়িয়ে নিন, অন্যরকম স্বাদ যোগ করবে এই ভর্তাটিতে। অন্য একটি পাত্রে পেঁয়াজ কুঁচি, পোড়ানো শুকনা মরিচ, লবণ, সরিষার তেল ও ধনিয়া পাতা একসাথে খুব ভালো করে মাখিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণের সাথে ছাড়িয়ে রাখা টমেটো মিশিয়ে নিলেই তৈরি মজাদার টমেটোর ভর্তা।

সামনে আসছে নতুন বছর, নববর্ষে বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে অন্যান্য নানান খাবারের পাশাপাশি দেশী এই ভর্তাগুলিও কিন্তু দারুণ জনপ্রিয়। গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতের পাশে পরিবেশন করেই দেখুন, অতিথিরা আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে বাধ্য!

বাংলাদেশী খাবার সম্ভারের নানা রকমের ভর্তা

afYvcol.jpg
 

Users who are viewing this thread

Back
Top