What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

‘আসাম টি’ ও বুনো হাতি (1 Viewer)

simon

New Member
Joined
Sep 2, 2018
Threads
19
Messages
99
Credits
1,740
আসামে মানুষ আর বন্যপ্রাণী গা ঘেঁষাঘেষি করে থাকে৷ এদিকে পশু চিকিৎসা কেন্দ্র আর কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে এই এলাকার সবচেয়ে যানবহুল রাস্তা৷ এখানকার মানুষের জীবিকা চলে পর্যটন ও কৃষিকাজ থেকে৷ এছাড়া আছে অসংখ্য কাজের হাতি, পোষা হাতি৷ রাস্তার পাশ থেকেই উঠে গেছে চা-বাগানের পর চা-বাগান৷ সুবিখ্যাত 'আসাম টি' এখানেই তৈরি হয়ে থাকে৷ তবে তার কুফলও আছে৷

চাষি পদ্ম গোগোই জানালেন, ''সমস্যা বেড়েই চলেছে৷ চা-বাগানগুলো ক্রমেই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ওপরে উঠছে আর হাতিদের জন্য আরো কম জঙ্গল বাকি থাকছে৷ কাজেই ওরা এখানে নেমে এসে আমাদের ক্ষেতখামার তছনছ করে, বাড়িঘরদোর ভাঙে, মানুষ মারে৷ বুনো মোষরা ন্যাশনাল পার্ক ছেড়ে বাইরে আসে খাবার খুঁজতে৷ বাঘেরা তাদের পিছনে পিছনে আসে শিকারের খোঁজে৷ কাজেই বাঘের হাতে মানুষও মরে৷''

কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে জীবজন্তুদের স্বচ্ছন্দ বিচরণ৷ এখানে গণ্ডারদের সংখ্যা যতটা স্থিতিশীল, সেটা বিশ্বের আর কোথাও নয়৷ কিন্তু এখানকার মানুষদের মাঝেমধ্যে মনে হয়, সরকারের কাছে যেন মানুষের চেয়ে জীবজন্তুর দামই বেশি!

উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যে কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক, যেখানে গণ্ডার, বাঘ, হাতি আর বুনো মোষদের বাস৷ কিন্তু পার্কের সীমানা ছাড়ালেই মানুষের বাস ও বসতি৷ কাজেই সংঘাত অনিবার্য – কিন্তু তারও সমাধান আছে৷

বাপ-মা নেই, এমন একটি বাচ্চা হাতিকে মানুষ করা সোজা কাজ নয়৷ বন্যপ্রাণী ত্রাণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের কর্মীরা দিনের বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় কাটান বাচ্চা হাতিগুলোকে আদর করে ও তাদের সঙ্গে খেলতে – নয়ত নাকি তারা বাঁচে না, অতীতে যেমন দেখা গেছে৷

বন্যপ্রাণী ত্রাণ কেন্দ্রের চত্বরে ১৩টি ছোট গণ্ডারের ছানা, এছাড়া হগ ডিয়ার, চিতাবাঘ ও নানা ধরনের বানর রাখা আছে৷ এদের অধিকাংশই এসেছে কাছের কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক থেকে৷

এই বাচ্চা হাতিটিকে একটি নালা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে – যা প্রায়ই ঘটে থাকে৷ এছাড়া গাড়ি দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে৷

হাতি পোষা

ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার (আইএফএডাবলিউ) এবং ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া-এর (ডাব্লিউটিআই) ড. পাঞ্জিত বসুমাতারি বললেন, ''বাচ্চা হাতিদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা খুব জোরদার নয়৷ কাজেই আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হয়৷ আগে একটা বাচ্চা হাতির কাছে ২৪ ঘণ্টা একজন পরিচারক থাকত, কিন্তু তাও অনেক ভুল হতে পারে৷ বাচ্চা হাতিরা সর্বত্র তাদের শুঁড় ঢোকায় – মানুষের কাছ থেকে ওরা নানা ধরনের রোগ-জীবাণু পেতে পারে৷''

হাতি ছাড়া আফ্রিকার কী দশা হতো একবার ভেবে দেখেছেন? পর্যটকদের বিরাট একটা আকর্ষণ যেত উধাও হয়ে৷ আফ্রিকাতে গিয়ে মস্ত কানের হাতিগুলোর আর দেখা মিলতো না৷ তবে বাস্তুসংস্থান এবং পরিবেশ রক্ষাতেও এই বিশাল প্রাণিগুলোর অবদান কিন্তু কম নয়৷

যে কারণে ডক্টর বসুমাতারি বাচ্চা হাতিদের সঙ্গে তাদের মানুষ বাপ-মায়েদের ঘাঁটাঘাটি যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করেন৷ তবে মায়ের শরীরের তাপ আবার বাচ্চা হাতিদের গরম রাখে – তাই বিকল্পের ব্যবস্থা করতে হয়েছে৷ দু'টি করে বাচ্চা হাতিকে এখন একটি কাঠের বেড়া দেওয়া চত্বরে রাখা হয় – দক্ষিণ আফ্রিকার মতো যাকে এখানেও 'ক্রাল' বলা হয়৷ 'ক্রালে' খেলবার জায়গা তো আছেই, এছাড়া ঢাকা দেওয়া একটি শোবার জায়গাও আছে৷ শীতের রাত্রে বাচ্চা হাতিদের গায়ে কম্বল ও পায়ে মোজা পরানো হয়৷
ড. বসুমাতারি জানালেন, ''আমরা চেষ্টা করি, বাচ্চা হাতিগুলোকে যতদূর সম্ভব স্বাভাবিক ভাবে রাখতে, অর্থাৎ বাড়িতে না রেখে বাড়ির বাইরে রাখতে৷ সেটা অন্তত কিছুটা মুক্ত প্রকৃতির মতো, যখন ওরা ওদের মায়েদের সঙ্গে ছিল৷ এর ফলে পরে ওদের আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া সহজ হয়৷''

চা-বাগান বাড়ছে

আসামে মানুষ আর বন্যপ্রাণী গা ঘেঁষাঘেষি করে থাকে৷ এদিকে পশু চিকিৎসা কেন্দ্র আর কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে এই এলাকার সবচেয়ে যানবহুল রাস্তা৷ এখানকার মানুষের জীবিকা চলে পর্যটন ও কৃষিকাজ থেকে৷ এছাড়া আছে অসংখ্য কাজের হাতি, পোষা হাতি৷ রাস্তার পাশ থেকেই উঠে গেছে চা-বাগানের পর চা-বাগান৷ সুবিখ্যাত 'আসাম টি' এখানেই তৈরি হয়ে থাকে৷ তবে তার কুফলও আছে৷

চাষি পদ্ম গোগোই জানালেন, ''সমস্যা বেড়েই চলেছে৷ চা-বাগানগুলো ক্রমেই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ওপরে উঠছে আর হাতিদের জন্য আরো কম জঙ্গল বাকি থাকছে৷ কাজেই ওরা এখানে নেমে এসে আমাদের ক্ষেতখামার তছনছ করে, বাড়িঘরদোর ভাঙে, মানুষ মারে৷ বুনো মোষরা ন্যাশনাল পার্ক ছেড়ে বাইরে আসে খাবার খুঁজতে৷ বাঘেরা তাদের পিছনে পিছনে আসে শিকারের খোঁজে৷ কাজেই বাঘের হাতে মানুষও মরে৷''

কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে জীবজন্তুদের স্বচ্ছন্দ বিচরণ৷ এখানে গণ্ডারদের সংখ্যা যতটা স্থিতিশীল, সেটা বিশ্বের আর কোথাও নয়৷ কিন্তু এখানকার মানুষদের মাঝেমধ্যে মনে হয়, সরকারের কাছে যেন মানুষের চেয়ে জীবজন্তুর দামই বেশি!

তাই মানুষজন নিজেরাই যেটুকু পারেন, তা করেন৷ গাঁয়ের পুরুষরা প্রতি রাত্রে জাতীয় উদ্যান আর তাদের ক্ষেতখামারের মাঝখানের সীমানায় টহল দেন৷ টর্চের আলো ফেলে তারা বুনো জন্তুদের পার্কে ফেরৎ পাঠানোর চেষ্টা করেন৷ সত্যিকারের বিপদ দেখা দিলে অবশ্য তাদের বিশেষ কিছু করবার নেই – তবে এই টহলদারির ফলে তাদের পরিবারের লোকজনেরা নাকি স্বস্তিতে ঘুমোতে পারেন৷
 

Users who are viewing this thread

Back
Top