What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected মুখোস (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
→এই উঠে পড়ো আটটা বাজে! আমি কিন্তু আজ তোমায় নাস্তা না খেয়ে যেতে দিবো না। কী হলো উঠো বলছি উঠো
→উফ! এভাবে ডাকাডাকি করছো কেন? আর একটু ঘুমাতে দাও
→ আর ঘুমাতে হবে না, সারা রাত ই তো ঘুমিয়েছো একটু তাড়াতাড়ি উঠলে কী হয়। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় দৌড়াদৌড়ি করো নাস্তা ও তো খেতে পারো না ঠিকমত। আজ কিন্তু আমি তোমায় ছাড়ছি না, নাস্তা করেই তারপর অফিসে যাবা। এখন উঠো!


রাগে গজগজ করতে করতে ঘুম থেকে উঠে বসলো আসিফ। রোজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে কী যে কষ্ট হয় তা একমাত্র আসিফ ই জানে। হাত-মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে আসতেই দেখলো তানিশা খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছে আসিফের জন্য।

→ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে অফিস নিয়ে দৌড়াদৌড়ি কি যে কষ্টের আমায় জায়গায় তাকলে বুঝতা ( আসিফ)
→ তাই বুঝি! আপনার অবগতের জন্য জানানো যাইতেছে যে আপনার আগে আমি ই ঘুম থেকে আগে উঠি এবং বাসার সব কাজ গুলো করি। (তানিশা)
→ সকাল সকাল উঠো আর আমার ঘুমের বারোটা বাজাও আর কী ( আসিফ)
→ এই কী বললা তুমি? ( তানিশা)
→ কই কী বললাম, কিছু বলিনিতো

আর কোনো জবাব না পাওয়ায় চুপ করে গেল আসিফ। এমনিতেও সে কখনো বউয়ের কথার উপর ঠিকতে পারে নি কখনো...

অফিস যাওয়ার সময় প্রতিদিনের মত দরজার কাছে এগিয়ে এলো আসিফ
→ উফ! কী যে করো তুমি প্রতিদিন, কেউ দেখবে তো! (তানিশা)
→ দেখলে দেখুক! আমি আমার বউকে চুমু খাব এতে কারো অনুমতি নিতে হবে নাকি! ( আসিফ)
→ আচ্ছা শুনো তাড়াতাড়ি চলে আসি ও পিল্জ ( তানিশা)
→ আচ্ছা আসবো, আমার লক্ষি বউয়ের কথা কী আমি ফেলতে পারি!

কোনমতে আসিফ কে বের করে ঘরে আসলো তানিশা।
→ বিলকিস্ নোংরা কাপড় গুলো ধুয়ে নিস। আর আমি দুপুরে কিছু খাবো না তুই খেয়ে নিস। বাসা খোলাই তাকলো কোথাও যাসনে কিন্তু আবার। আমি একটু বেরোবো ( তানিশা)
→ ঠিক আছে আপা ( মুখ গুমড়া করে বলল বিলকিস)

এই বিলকিস্ কিশোরী মেয়েটা দিন দিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে। আমার বিয়ের সময় মা ওকে আমার সঙ্গে পাঠিয়েছিলো। মা ভেবেছিল যে মেয়ে ভাত বেড়ে খেতে পারেনা সে আবার সংসার সামলাবে কী করে? কিন্তু বিয়ের পর পর আমি আমার সংসারে সব দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি তেমন অসুবিধে হয়নি আমাদের এই দুজনের সংসারে। সেই থেকে আজ অবধি বিলকিস আমাদের সাথেই আছে ওকে নিজের বোনের মতই দেখি আমি কাজ না তাকলে দুজনেই গল্প করে কাটিয়ে দিই। প্রথম প্রথম ও বেশ হাসি খুশি ই ছিল। সারাদিন আমার সাথে এটা ওটা নিয়ে কথা বলতো কিন্তু ইদানিং বেশ কিছু দিন যাবত ওর মধ্য কিছু পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি আগের মত তেমন কথা বলে না, কাজ না তাকলে সারাদিন শুয়ে তাকে আর সব সময় গোমড়া মুখ করে বসে থাকে।
ওকে কয়েক বার জিজ্ঞাসা ও করেছি কী হয়েছে? বাড়ির কথা মনে পড়ছে কিনা? মন খারফ কেন?
কিন্তু ও কোনো জবাব দেয় নি। ওর এসব আচরণ দেখলে খুব বিরক্ত লাগতো আদর যত্ন তো ওকে আর কিছু কম করছি না.....

রাস্তায় বেরিয়ে আসিফের কথা মনে পড়লো, ও কী করছে কল দিয়ে জানতে ইচ্ছা হলো কিন্তু ও অফিসে কাজ নিয়ে ব্যাস্ত তাকবে ভেবেই আর কল দিলাম না ওকে।
প্রায় বিশ মিনিট যাবত দাড়িয়ে আছি রাস্তায় সিএনজির জন্য কিন্তু একটা ও পাচ্ছিনা। অন্য সময় এই রোড়ে লাইন ধরে সিএনজি দাড়িয়ে তাকতে দেখা যায়..
দীর্ঘ আধ ঘন্টা অপেক্ষার পর অবশেষে একটা সিএন জি কে পেলাম। হাসপিটাল যেতে হবে একটু ইদানিং শরীর টা কেমন যেন খারাফ যাচ্ছে। অবশ্য এই কথাটা এখনো আসিফ কে বল হয়নি ও জানলে শুধু শুধু আমার জন্য টেনশন করবে....

→ আপনি তো মা হতে চলেছেন!

ডাক্তারের মুখ থেকে এইরূপ কথা শুনে আনন্দে হেসে উঠলো তানিশা। প্রথম বারের মত সে মাতৃত্বের স্বাদ নিতে যাচ্ছে ওর মনে এখন কি যে অনুভূতি হচ্ছে ও তা কাউকে বলে বোঝাতে পারবেনা। ওর মন চাইছিলো ছুটে গিয়ে এক্ষুণি সে আসিফ কে এই খুশির সংবাদটা দিক কিন্তু পরক্ষণেই সে থেমে গেলো। বিশেষ ঘটনা জানাতে তো বিশেষ সময়ের প্রয়োজন। তাই সে আসিফ কে সারপ্রাইজ দিবে বলে একটু বিশেষ সময়ের অপেক্ষা করতে লাগলো...

এভাবে কেটে গেল বেশ কিছুদিন...

রাতে হঠাৎ করে তানিশার ঘুম ভেঙ্গে যায় কেন ঘুম ভাঙলো তানিশা নিজে ও বুঝতে পারলো না একটু একটু বমি বমি লাগছে ওর। আসিফ কে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে যাবে কিন্তু ও পাশে নেই। কোথায় গেল আসিফ? বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে খুজে দেখলো আসিফ কে কিন্তু একি আসিফ তো বাথরুমে ও নেই। এমন সময় তানিশার মনে হলো রান্নাঘর থেকে কারো কান্নার আওয়াজ আসছে। দৌড়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল তানিশা। কিন্তু একি রান্না ঘরের দরজা তো দেখি বন্ধ। জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দিতে লাগলো তানিশা

→ বিলকিস, এই বিলকিস কী হয়েছে তোর? দরজা খুল

দরজা খুলল না, মুহুর্তেই অজানা এক ভীতি কাজ করছে তানিশার মনে। কেউ যেন ওর হ্নদয়ে জোরে জোরে বাড়ি মারতে লাগলো

→ বিলকিস দরজা খুল, নাহয় কিন্তু আমি দরজা ভেঙ্গে ফেলবো

শেষ পর্যন্ত আস্তে আস্তে দরজা খুলল। তানিশা যা নিয়ে ভয় পাচ্ছিল তায় ই হলো। দরজা খুলার পর তানিশা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ওর মাথার উপর দিয়ে এখন ভয়ে যাচ্ছে মারাত্মক রকমের ভূমিকম্প ও ওর চোখ দুটোকে কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারছেনা। তারপর বুকে পাথর রেখে হলে ও এই সত্য ওকে মেনে নিতেই হবে।

দরজা খুলে দাড়িয়ে আছে আসিফ ভিতরে গুটিসুটি হয়ে বসে আছে বিলকিস্। তানিশাকে দেখা মাত্র বিলকিস দোড়ে এসে তানিশাকে জোড়িয়ে ধরল

→ শুনো তানিশা, তুমি আসলে যা ভাবছো তা নয়। আমাকে একবার বুঝানোর সুযোগ দাও (আসিফ)
→ ছিঃ তুমি এত খারাফ, এত জঘণ্য! আমার ভাবতেই ঘৃর্ণা হচ্ছে আমি এতদিন একটা নোংরা মানুষের সাথে এক ছাদের নিচে বাস করেছি ( তানিশা)
→ আমার কথাটা একটিবার শুনো (আসিফ)
→ কী শুনবো তোর কথা, কী আর বলার আছে তোর। আমি আর তোর সাথে এক মুহুর্ত ও তাকবোনা। আমি এখনি পুলিশের কাছে যাচ্ছি

তানিশা বিলকিস কে নিয়ে ঘর থেকে বাহির হাওয়ার জন্য হাঁটা দিল। আসিফ এখন কী করবে কিছুই বুঝতেই পারছেনা। ওর মাথা এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।তানিশার আড়ালে ও যে অপকর্ম করতো তা আজ ধরা পড়ে গেছে।আর তানিশা তা প্রকাশ করতে যাচ্ছে এত দিনের মান সম্মান ও এখন হারাতে বসেছে। এত সহজেতো আর এগুলো হারাতে দেওয়া যায় না।এমন সময় টেবিলের উপর রাখা চাকুটায় দৃষ্টি গেল ওর....

রক্তাক্ত দুইটা নিথর দেহ পড়ে আছে মেঝেতে। হ্যাঁ আসিফ খুন করেছে তানিশা আর বিলকিস কে সেই সাথে খুন হয়েছে তানিশার দেহে তাকা আর একটি নিস্পাপ প্রান। আসিফের এখন আনন্দ হচ্ছে পৈশাচিক আনন্দ সেই হা হা করে আসছে। ওর এতদিনকার ভাল মানুষের আড়ালে লুকিয়ে তাকা মুখোস টি আজ প্রকাশ পেয়েছে...

 

Users who are viewing this thread

Back
Top