What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected সান্ডার পো সান্ডা (রম্য রচনা) (1 Viewer)

Laal

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Mar 4, 2018
Threads
103
Messages
3,580
Credits
23,677
Lollipop
Red Apple
নোয়াখালীর এক রূপবতীর সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে হুট করেই প্রেম হয়ে গেলো। প্রেম খুব রোমান্টিকতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো মাগার পরপর দুবার ইম্প্রুভ পরীক্ষা দিয়েও ফেল করায় আব্বাহুজুর বললেনঃ
--বাসা থেকে বের হয়ে যা। তোরে আর বসায় খাওয়াতে পারুমনা।
.
-আব্বা আমি না হয় শুয়ে অথবা দাঁড়িয়ে খাবো। একটু এডজাস্ট করেন।
.
--মস্করা করো? সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তোরে যেন না দেখি।
.
আব্বাহুজুর বাড়ি ছাড়ার মৌখিক নোটিশ দিয়ে চলে গেলেন। বিষয়টা প্রেমিকাকে জানালামঃ
-হ্যালো জানু, আমার শীত কালের অতিথী পাখি। একটা সংবাদ আছে। আমার আব্বায় তো আমারে বাসা থেকে বাইর কইরা দিছে। এখন আমি কি করবো?
.
গার্লফ্রেন্ড দুমিনিট চিন্তা করে বললোঃ
--আঁই তোঁরে মেলা ভালোবাসি। সমস্যা নাই তোঁরে বিয়া কইত্তে রাজি আছি। বিয়ার হরে আঙ্গো বাইত রইবা। আঁর আব্বার ব্যবসার দেইহুনা করবা। কি হাইত্তা নয়?
.
-পারবোনা কেন অবশ্যই পারবো। আমি আসতেছি তুমি বৌ সাইজা বইসা থাকো।
.
আব্বাহুজুরকে ফোন দিয়ে জানালাম যে নোয়াখালী চলে যাচ্ছি আর ফিরবোনা। বিয়ে করে ওখানেই থেকে যাবো। আব্বাহুজুর মনে হয় কথাটা বিশ্বাস করেননি। ফোনের মধ্যেই শুনতে পারলাম তিনি কাউকে ডেকে ফোন ধরিয়ে দিয়ে পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে পঞ্চাশটা গালি দিতে বললেন। আমিও কম না সেন্টু ভাইকে ডেকে ফোন ধরায় দিছি। সেন্টু ভাই ফোন ধরে কাদো কাদো কন্ঠে বলতেছেন ওই গালি দিবিনা, খবরদার, আর না, আর না প্লিজ, আমি কি করছি? ও ভাই গালি দিসনা প্লিজ।
বেচারা ফোন না কেটে গালি না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেই যাচ্ছেন।
.
নোয়াখালী যাওয়ার মতো ভাড়ার টাকা নাই, হবু বৌয়ের কাছে চাইতেও লজ্জা লাগছে। এলাকাতো এক বড় ভাইয়ের ট্রাকে করে নোয়াখালী যাওয়ার অনুমতি পেয়ে গেলাম।
ট্রাক টার্মিনালে গিয়ে ভাইকে খুঁজছি ফোন দিচ্ছি ফোন ধরছেনা। এক পুচ্চি দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছিলো, গাড়ির হেল্পার হবে হয়তো। ভাব নিয়া ডাক দিলামঃ
-এ্যাই ছটু এদিক শুন তো।
.
--পারাম না, যা ভাগ সালা।
.
আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ ঘটনাটা দেখে ফেললোনা তো। সে বেল দেয় নাই ঠিক আছে বেইজ্জত হইছি মাগার কেউ দেখে ফেললে ডাবল বেইজ্জত। কপাল খারাপ তাই ডাবল বেইজ্জত হইলাম। দাড়িওয়ালা এক মুরুব্বী সব দেখে ফেলছে। দেখে দূরে দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসছে। আমাকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলেন।
--আব্বা কারে খুঁজেন?
.
-চাচা রাকিব ভাইয়ের ট্রাক কোনটা?
.
--বলতাছি আব্বা নিচে আমার দুইটাকা পড়ছে একটু তুইল্লা দেন। কোমড়ে বেদনা হেলতে পারিনা।
.
নিচু হয়ে টাকা তুলতে গেছি সালা মুরুব্বি মাথার মধ্যে ঠুয়া মেরে দৌঁড় দিছে। হাত দিয়ে মাথা ডলতে ডলতে দাঁড়া হইছি দেখি মুরুব্বির পাঞ্জাবীর পেছন ছেড়া সাথে লুঙ্গিটাও ছেড়া। ব্যাটা পাগলেও ঠুয়া মেরে মজা নিতাছে বুঝলাম সময় ভালো না সাবধানে চলতে হবে। ঠিক সেসময় পিঠের মধ্যে কে যেন থাবা মারলো পেছন ফিরে দিলাম ধমকঃ
-বহুত হইছে, আর না, ফাইলামি পাইছো। আমি কি পাশের বাড়ির কলিং বেল যে টিপ দিয়া দৌঁড় দিবা।
.
--আরে দোস্ত রাগ করো ক্যান। চিনতে পারো নাই। প্রাইমারিতে একসাথে পড়ছিলাম।
.
-না চিনিনাই।
.
--ক্লাস ফোরের পরীক্ষায় তোর পাশে বসছিলাম। তোর দেখে দেখে বাবার কাছে লিখছিলাম শ্রদ্ধেয় প্রধান আব্বা। পরে তুই প্রধান কেটে দিছিলি আমি কাটিনাই। স্যার মারছিলো… মনে পড়ছে?
.
-হ্যাঁ মনে পড়ছে। কেমন আছিস?
.
--ভালো তুই?
.
-ভালো।
.
--এখানে কি?
.
-নোয়াখালী যাবো। রাকিব ভাইয়ের ট্রাক খুঁজতেছি।
.
--আরে আমিই তো রাকিব ভাইয়ের ট্রাকের ড্রাইভার, চল।
.
ট্রাক চলছে, আমাকে অপমান করা সেই ছটু হলো ট্রাকের হেল্পার। আমাকে দেখে বারবার মুখ লুকানোর চেষ্টা করছে। হাজার হলেও ওস্তাদের হাফপ্যান্ট কালের বন্ধু। আমি বসে বসে বিভিন্ন গাড়ির পেছনের লেখাগুলো পড়ছি। এখন যেই ট্রাকটা সামনে আছে সেটার পেছনে লেখা "আগে গেলে বাঘে খায়" বন্ধু ট্রাকটাকে ওভারটেক করলো। সামনে একটা সিএনজি তার পেছনে লেখা "ধাক্কা দিলে বাচ্চা হবেনা" তার সামনের সিএনজির মালিক মনে হয় শিক্ষিত মানুষ সিএনজির পেছনে লিখে রেখেছেন "প্রাক্তন ভাবিয়া ধাক্কা দিবেন না"। বন্ধু যে হিসাবে ট্রাক চালাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে কোন সময় ট্রাকের দুপাশ থেকে দুটো ডানা বের হয়ে ট্রাক উড়তে শুরু করবে।
ট্রাকের ভেতরে গাঞ্জার ধোয়ায় বমি বমি পাচ্ছে। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম বন্ধুর পেছেন ট্রাক বা গাড়িগুলো খুব একটা হর্ণ দিচ্ছেনা। বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলামঃ
-দোস্ত কাহিনী কি পেছনের গাড়িগুলো তেমন হর্ণ বাঁজাচ্ছেনা কেন?
.
--ট্রাকের পেছনে জটিল জিনিস লিখা।
.
-কি লিখছিস?
.
--"হর্ণ দিলে তোর হার্ণিয়া হবে।"
.
-সামনে কি লিখছিস?
.
--"পারলে থামা"
.
কিছু কিছু ট্রাকের পেছনে অবশ্য সতর্কবাণী দেখলাম যেমন "ঘুমাইসনা মইরা যাবি"
"বৌ মারা ঠিক না, খাবারে বিষ দিতে পারে" এই টাইপ।
দোস্ত বললোঃ
--হেডফোনের একটা লাইন দে গান শুনি।
.
হেডফোনের লাইন দিলাম সে কানে গুঁজে গান ধরলো "সুরাইয়া হায়রে তোরা ফান্ডে গেলে ধুরো মরা…
বুঝলাম সে অতিমাত্রায় বাসি গঞ্জিকা সেবন করেছে তাই নষ্ট লাইন দিয়েও গান শুনতে পাচ্ছে। আয়াতুল কুরসি তিনবার পড়ে বুকে থুতু দিয়ে হেলান দিয়ে চোঁখ বুজলাম। খুব ভোরে নোয়াখালী পৌঁছে নামলাম। আফ্রিন তানহাকে কল দিলামঃ
.
-বাবু আমি চলে আসছি।
.
--যে কোন রিক্সাওয়ালাকে বলো কবিরাজ বাড়ি যাবো নিয়ে আসবে।
.
-কবিরাজ কে?
.
--সেটা না জানলেও চলবে চলে আসো।
ও হ্যা আরেকটা কথা আমার প্রেমিকা বেশিরভাগ সময় শুদ্ধ ভাবে কথা বলে মাঝে মাঝে নোয়াখাইল্লাদের মতো করে কথা বলে তখন বেশিরভাগ কথা বুঝিনা। সে রেগে থাকলে একটা গালি দেয় সান্ডা। সান্ডা মানে কি এখনো জানিনা।
.
গ্রাম সাইডে হলেও বাসাটা খারাপ না। বাসা যেমনি হোক তাতে কি, আফ্রিন তানহা দেখতে যেন রাজকন্যা। বৌ নিয়ে যখন বাসা ফিরবো লোকজন খালি জ্বলবে। আব্বাহুজুর অবাক হয়ে বলবেনঃ কঙ্কাল সিনেমার নায়ককে হুরপরী কে দিলো। বাসায় উঁকি দিচ্ছিলাম কে যেন দরজা ফাঁক করে খপ করে চুল মুঠোর মধ্যে ধরে ফেলছে। রাগের মাথায় বলছি কোন সান্ডা রে?
পরে জানতে পারলাম তিনি আমার হবু শশুড়আব্বা। তাকে প্রেমের সব ঘটনা খুলে বললাম। তিনি সব শুনে বললেনঃ
--তুই বেজ্ঞিন জানিহুনি আঁর মাইয়াকে বিয়া কইত্তে চাও?
.
-জ্বি আব্বা।
.
এর মধ্যে বাসার কাজের মেয়ে এসে নাস্তা দিয়ে গেছে। নাস্তা দেখে চোখ কপালে উঠছে। কাচা চিড়া, নাড়কেলের নাড়ু আর কাচা মুলা। শশুড়আব্বা হাসি মুখে শুদ্ধ বাংলায় বললেনঃ
--বাবা মুলায় লবন মাখিয়ে একটা কামড় দাও তারপর একটা নাড়কেলের নাড়ু মুখে দাও মজা পাবা।
.
-আমি এসব খাবোনা।
.
আমার কথা শুনে কাজের মেয়ে লাঠি হাতে দৌঁড়ে আসছেঃ
--কি অইছে তুঁই খরো না কিল্লাই? আব্বা যন খাইতে কইছে খাইতে তোঁরে অইবে। এক্কিনিও আইডা কইত্তা হাইত্তো নয় বিজ্ঞিন খাইবা।
.
-আমি বেজ্ঞিন তো দূরের কথা এক কামড় ও খাবোনা। আই হেট মুলা।
.
--আব্বা যন খাইতে কইছে খাইতে তোঁরে অইবে। নালে ডান্ডাটা দেখছো পিড়ি এক্কারে সোজা করি হালামু।
.
শশুড়আব্বা বললেনঃ
--ছি মা হবু স্বামীর গায়ে হাত তুলতে হয়না।
.
-হবু স্বামী মানে কি বলতেছেন? আপনার মেয়েকে ডাকেন। আমি কাজের মেয়েকে বিয়ে করবোনা। আফ্রিন তানহাকে ডাকেন। এই মেয়ে কে? হু ইজ সি।
.
--সি ইজ মাই ওয়ান এন্ড অনলি মাইয়া আফ্রিন তানহা।
.
-আমি খেলতাম না, এ ধোকা হ্যায়। ফটোতে এজনকে দেখি হেতি অন্যজন। আমি বিয়া করতাম না।
.
-চুপ… চুপ… অাঁর লগে আঁইয়ো। কোন রকম কথা কইবা না চুপচাপ বঁই থাকো।
.
আমাকে টেনে হিঁচড়ে এক ঘরে আটকে রাখা হলো। ও খোদা কি হবে আমার। আমি বিয়া করতাম না। শেষ বিকেলে দরজা খুলে আমাকে দুজন মিয়ে টেনে হিঁচড়ে পুকুর পাড়ে নিয়ে গেলো। আফ্রিন তানহা বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে বলেছিলো তার মাথায় একটু সমস্যা আছে আমি পাত্তা দেইনি। বলছি এটা কোন ব্যাপার হলো। এখন তো দেখছি সেটাই বিরাট ব্যাপার হয়ে গেছে। মেয়ে তো দেখি পুরাই মেন্টাল। কোন মেয়ের ফটো দিয়া আইডি খুলছিলো কে জানে। লোকদুটো চ্যাংদোলা করে বরফ ঠান্ডা পানিতে ছুড়ে দিলো আমাকে নাকানি চুবানি খেয়ে উঠতে গেছি দেখি পুকুর ঘাটে আফ্রিন তানহা। আমাকে উঠতে দেখে বাঁশ উঁচু করে বললোঃ
--হইরে নামি য। গনি গনি একশগা ডুব দিবা। তারহরে কান ধরি কইবা ভুল অইছে আর জীবনেও এক্কা কইত্তান নয়।
.
-আঁই কি কইচ্চি?
.
--আরে কামের বেডি কইচ্চো…
.
বাঁশের বাড়ির ভয়ে গুনে গুনে একশতখান ডুব দিলাম তারপর কান ধরে বললাম ভুল অইছে আর জীবনেও এক্কা কইত্তান নয়।
.
গোসল শেষে আমাকে নতুন লুঙ্গি পাঞ্জাবী টুপি পড়িয়ে হুজুরের পাশে বসানো হলো। বুঝতেছি আমারে বিবাহ দিতেছে। এতো ঠান্ডা লেগেছে যে গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছেনা ফ্যাস ফ্যাস শব্দ বের হচ্ছে। কাজী সাহেব বললেনঃ
-ক কবুল
.
--কইতাম না…
.
শশুড়আব্বা আমার দিকে তাকিয়ে বললেনঃ
--ক কবুল ক" কবুল না কইলে তোঁর খবর আছে। এরে কোনগা এঙ্গা বাশ লই আঁই।
.
আমি কাদো কাদো গলায় বাংলা, ইংলিশ, নোয়াখাইল্লা, হিন্দি মিক্সড করে বললামঃ
-বাশ লই আঁইবে কেন? হোয়াই? আঁই কি কইচ্ছি? হোয়াট ইজ মাই দোষ। হামকো বাতাও হোয়াট ইজ মাই দোষ।
.
কাদতে কাদতে হঠাৎ দাঁড়া হয়ে দৌড় দিছি। শশুড়আব্বা, কাজী সাহেব আমার পিছে পিছে দৌড়াচ্ছেন, তাদের পেছনে আফ্রিন তানহা বাশ নিয়ে দৌড়াচ্ছে। শশুড় আব্বা চিল্লাচ্ছেনঃ
--কোনাই যরি খাড়া,দৌইসনা উন্ডা খাই হইবি তো, খাড়া।
.
-উন্ডা খাই আর পান্ডা খাই আমি থামতেছিনা। সালা সান্ডার পো সান্ডা।
.
এতো কষ্টের পরে আল্লাহ্ মুখ তুলে চেয়েছেন কারন সামনে একটা ট্রাক দেখতে পাচ্ছি ট্রাকের পেছনে জটিল জিনিস লেখা "হর্ণ দিলে তোর হার্ণিয়া হবে।" বুঝলাম বন্ধুর ট্রাক দৌড়ে ট্রাকে উঠছি। বন্ধুকে বললামঃ
-দোস্ত স্টার্ট দাও…
.
--তুই কই থেকে আসলি?
.
-সেটা পরে কমু তুই স্টার্ট দে।
.
--আরে একজন লোক আসবে। আর ওই লোকগুলো কারা তোর পিছে দৌড়াচ্ছিলো।
.
-স্টার্ট দে নাইলে আমারে জোর করে পাগলের সাথে বিয়া দিয়ে দিবে। দোস্ত তোর আল্লাহ্ র কিরা লাগে…
.
ট্রাক চলতে শুরু করেছে শশুড়আব্বা ট্রাকের পেছন পেছন দৌঁড়াচ্ছেন। দোস্তকে বললামঃ
-দোস্ত ধীরে চালাও ক্যান ধরে ফেলবে তো। স্পিড বাড়াও।
.
বন্ধু স্পিড না বাড়িয়ে কষে ব্রেইক করলো। শশুড়আব্বা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা খেয়ে "ওরে সান্ডারে" বলে উপুত হয়ে পড়লেন। ট্রাক চলছে, আমি কান্না করতেছি, আজ এদের দেখা না পেলে কি হতো। আর কোন মেয়ের লগে কথা কইতাম না তওবা তওবা।।

(সংগৃহিত)​
 

Users who are viewing this thread

Back
Top