What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে বর্ষবরণের উৎসব (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Nirjonmela

Administrator
Staff member
Administrator
Joined
Mar 1, 2018
Threads
2,763
Messages
23,266
Credits
825,345
Pistol
Crown
Thread Title Style (One)
Profile Music
ZWeHEFV.gif


পহেলা বৈশাখ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র সার্বজনীন প্রাণের উৎসব। এ দিনটি মানেই পরিবার, বন্ধু ও পরিজনকে নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠা। ছোটদের বৈশাখী মেলায় ঘুরে বেড়ানোর আবদার। মণ্ডা-মিঠাই, বাতাসায় মিষ্টিমুখ করাসহ পুরনো হিসাব চুকিয়ে হালখাতায় নতুন হিসাবের শুরু। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি ও লোক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। এসবই এখন সংকুচিত হয়ে পড়ছে নিরাপত্তার অজুহাতে। নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে পহেলা বৈশাখ, বাঙালির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সারা দেশে উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষের অনুষ্ঠান চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠান চলবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটানোর কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে কোনো মুখোশ ও ভুভুজেলা ব্যবহার করা যাবে না। সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের র‌্যালিতে বা অন্য স্থানে ইভটিজিং রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন। এ ছাড়া উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান চলাকালে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল কাজ করবে। ওই দিন গোটা ঢাকা শহর ও বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত সব অনুষ্ঠানস্থল সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে নারীরা ভ্যানিটি ব্যাগ বহন করতে পারবেন না। বিকেল ৫টার মধ্যে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ৬টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। ৬টার পর বহিরাগতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া মঙ্গল শোভাযাত্রা, রমনা বটমূলসহ বড় বড় অনুষ্ঠানে নারীরা ভ্যানিটি ব্যাগ বহন করতে পারবে না। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। শোভাযাত্রার চারদিকে র‌্যাব, পুলিশ ও সোয়াতের সদস্যরা অবস্থান করবে। কেউ মুখোশ পরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবে না, এমনকি মঙ্গল শোভাযাত্রায় আয়োজক সংস্থা চারুকলা ইনস্টিটিউটের সদস্যরাও মুখোশ ব্যবহার করতে পারবে না। তবে হাতে করে মুখোশ বহন করা যাবে। ধারালো ছুরিসহ দাহ্য পদার্থ বহন করা যাবে না। ডিএমপি কমিশনার বলেন, মোটরসাইকেলের চালকের পেছনে অন্য কেউ থাকবে না। তবে স্ত্রী ও নাবালক সন্তান থাকতে পারে। পহেলা বৈশাখে ইভটিজিং, পকেটমারদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাদা পোশাকধারী বিশেষ টিম কাজ করবে। ওই দিন ডিএমপির বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এসব বিধিনিষেধের কারণে কয়েক বছর ধরে বৈশাখী উৎসবের রংয়ে ভাটা পড়েছে। অজানা আশঙ্কায় ওই দিন লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বৈশাখী নানা ধরনের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত থাকলেও, বিকিকিনি নেই তেমন। এ ছাড়াও বাংলা নববর্ষের চিরাচরিত ঐতিহ্য বৈশাখী মেলা আয়োজনেও মিলছে না অনুমতি। মেলা আয়োজনে অনেকের আগ্রহ থাকলেও প্রসাশনের সেখানেও একই অজুহাত- নিরাপত্তা। ফলে বৈশাখ হারাচ্ছে তার বহুবছরের ঐতিহ্য।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার এ বিষয়ে ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলা থেকে শুরু করে সবই হবে। নিরাপত্তার আশঙ্কা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বায়িত্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা করতে গিয়ে দিনের আলোয় অনুষ্ঠান শেষ করাসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। ভুলে গেলে চলবে না ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র সার্বজনীন প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস ভোরের কাগজকে বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। আমাদের জাতীয় জীবনে এর তাৎপর্য নতুন করে ব্যাখ্যা দেয়ার অবকাশ রাখে না। বিগত কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত সতর্কতা ও কড়া নিরাপত্তা বজায় রাখতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা সংস্থাগুলো মানুষের স্বাভাবিক উৎসব উদযাপনকে সংকুচিত করে ফেলেছে, সাংস্কৃতিক প্রবাহ প্রাণহীন করে ফেলেছে- যা আমাদের ঐতিহ্যবিরোধী। অথচ সরকারের গৃহীত উৎসব উদযাপন কর্মসূচি বহুল প্রশংসিত ও সমাদৃত। আমরা আশা করি, সরকারের উদ্যোগ ও নিরাপত্তা বিধানের পদক্ষেপের বৈপরীত্য ঘুচিয়ে নববর্ষ প্রাণের উৎসব হিসেবে পালিত হবে।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top