মানুষ তার প্রতিভা, অধ্যবসায় আর পরিশ্রমের সমন্বয়ে কত সৃষ্টিশীল কাজই তো করে থাকে। কেউ করে শখের বসে আবার কেউ বা পেশার অংশ হিসেবে। আমাদের সমাজে এমন অনেক শিল্পী আছেন যারা তাঁদের শিল্পকর্মকে গতানুগতিক ধারায় বন্দী করে রাখেননি বরং নিয়ে গেছেন অবিশ্বাস্য এক পর্যায়ে যেগুলো দেখলে আপনি একবার হলেও ভাববেন কিভাবে সম্ভব! সেটা হতে পারে কোন চিত্রকর্ম আবার হতে পারে কোন ভাস্কর্য। আজকের আয়োজন এমনই বিস্ময়কর কিছু শিল্পকর্ম নিয়ে।
ত্রিমাত্রিক পথচিত্র
রাস্তা দিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখলেন আপনি কোন বিশাল গর্তের ভেতর পড়ে যাচ্ছেন অথবা সামনে দাঁড়িয়ে আছে কোন প্রাগৈতিহাসিক জীব! একবার ভাবুন ঐ মূহুর্তে কি করবেন আপনি! সাহায্যের আশায় চিৎকার করবেন নাকি দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করবেন?
Source: Start for Art
কিছুই করার দরকার নেই আপনার, বরং শুধু উপভোগ করুন। কারণ এইরকম অসংখ্য ত্রিমাত্রিক পথচিত্র আপনার হরহামেশাই চোখে পড়বে বিশ্বের অসংখ্য দেশে। আর এই শিল্পগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন ১৯৬৮ সালে জন্ম নেয়া জার্মানির এডগার মুয়েলার। তিনি একজন ত্রিমাত্রিক চিত্রশিল্পী। পথ চিত্র করতেই ভালোবাসেন তিনি।
Source: 3D Streetpainting
তিনি রঙ তুলির আঁচড়ে রাস্তায় ফুটিয়ে তোলেন বাস্তব দেখতে বিভিন্ন চিত্রকর্মের। এগুলো দেখতে এতো সজীব যে হঠাৎ দেখে যে কারো দৃষ্টিভ্রম হতে পারে। তাঁর বানানো একেকটি চিত্রকর্ম আকারে ২৫০-৩০০ বর্গ মিটারের মতো হয়। রাস্তায় সম্পূর্ণ আঁকার কাজ শেষ করতে তাঁর প্রায় ৫-৬ দিন সময় লাগে যদি তিনি দিনে ১২ ঘণ্টা করে সময় দেন এর পেছনে।
ত্রিমাত্রিক পথচিত্র - Source: themillenniumtiles
এই চিত্রকর্মগুলো কোন জায়গা থেকে দেখলে কেমন দেখা যাবে এসব ভেবে এরপর কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহের সূচনা হয় স্ট্রায়েলেনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি আঁকতে গিয়ে। ১৯৮৮ সালে তিনি "মাস্টার স্ট্রিট পেইন্টার" খেতাব অর্জন করেন।
Source: Webneel
মুয়েলার পথচিত্রের কাজে এক্রেলিক ওয়াল পেইন্ট ব্যবহার করেন। আঁকার সময় তিনি একটি বিশেষ লেন্স ব্যবহার করেন যেটা দেখে তিনি বুঝতে পারেন কোথায় কিভাবে নকশা করতে হবে। প্রতিবছর তিনি বিভিন্ন দেশের সড়ক চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ২০০৯ সালে তিনি আইস এজ সিনেমার একটি দৃশ্য চিত্রায়িত করে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখান। এটি তৈরি করতে ৬ দিন সময় লাগে ও আকার ছিল ৩৩০ বর্গ মিটার!